মুনশী মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ
মুনশী মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ | |
---|---|
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | |
মৃত্যু | ৭ মে ১৯০৭ | (বয়স ৪৫)
ধর্ম | ইসলাম |
জাতিসত্তা | বাঙালি |
উল্লেখযোগ্য কাজ | এখানে দেখুন |
পেশা | কবি, ধর্মপ্রচারক ও সমাজ-সংস্কারক |
মুসলিম নেতা | |
পেশা | কবি, ধর্মপ্রচারক ও সমাজ-সংস্কারক |
মুনশী মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ (জন্ম: ২৬ ডিসেম্বর ১৮৬১ - মৃত্যু: ৭ মে ১৯০৭) ব্রিটিশ ভারতের বাঙালি ইসলাম প্রচারক, তুলনামূলক ধর্মতাত্ত্বিক ও ব্যবসায়ী ছিলেন।[১][২][৩][৪][৫] মেহেরুল্লাহর আনুষ্ঠানিক লেখাপড়া কতটুকু ছিল সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় না, তবে তাঁর লেখা প্রতিটি বই এতই পান্ডিত্যপূর্ণ ও সুলিখিত যে,বিজ্ঞ পাঠকমাত্রকেই তা অভিভূত করে ফেলে। তার তীক্ষ্ণবুদ্ধি এবং প্রত্যুৎপন্নমতিত্বের সাহায্যে তৎকালীন উচ্চ শিক্ষিত এবং সরকারি মদদপুষ্ট খ্রিষ্টান পাদ্রিদের ধর্ম প্রচারের গতিকে বিঘ্নিত করেছিলেন। তিনি ইসলাম ধর্ম সহ বিভিন্ন ধর্ম বিষয়ক গ্রন্থ রচনা করেছেন।
জন্ম ও শৈশব
[সম্পাদনা]মেহেরুল্লাহ ১৮৬১ সালে যশোরের ছাতিয়ানতলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। যশোর শহরে সামান্য দর্জিগিরি করে জীবকা নির্বাহ করতেন।[৬] এ সময় খ্রিষ্টান পাদ্রিরা ইসলাম ধর্ম বিরোধী প্রচারে এবং ইসলামের কুৎসা রটনায় তৎপর ছিল। মুন্সী জমির উদ্দিন নামে এক মুসলমান, পাদ্রিদের প্ররোচনায় পড়ে খ্রিষ্টানধর্ম গ্রহণ করে এলাহাবাদের ডিভিনিটি কলেজের উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে তিনি রেভারেন্ড জন জমির উদ্দিন নাম ধারণ করেন। পাদ্রি জমির উদ্দিন ইসলাম ও কোরআনের বিরুদ্ধে লিখতে শুরু করেন। তখন মুনশী মেহেরুল্লাহ সাথে এক বিতর্কে তিনি পরাজিত হয়ে পুনরায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় তিনি নিরপেক্ষ থাকেন।[৭] তিনি ১৯০৭ সালে মাত্র ৪৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। ইংরেজরা এক সভায় ভারতবর্ষের মানুষকে বলতেছিলো তোমাদের দেশের মানুষ-বাটু,লম্বা,খাটো,বড়,কালো,ধলো কেন। আর আমাদের দেশে সব সাদা। ইংরেজদের কথার উওরে তিনি বলেনঃ "শুওরক্য বাচ্ছা এক কিছিম হ্যায়- টাট্টু ক্যা বাচ্ছা হ্যারেক রকম হ্যায়"
বই
[সম্পাদনা]মুনশি মেহেরুল্লাহ তার তাবলিগি মিশনের সহায়ক হিসেবে যে সব বই লিখেছেন তা হল:
- খৃষ্টীয় ধর্মের অসারতা
- মেহেরুল ইসলাম
- বিধবা গঞ্জনা
- হিন্দু ধর্ম রহস্য বা দেবলীলা (১৯০৮)
- রদ্দে খৃষ্টান ও দলিলুল ইসলাম
- পান্দেনামা
- জওয়াবে নাসারা।
মৃত্যুর পর ১৯০৯ সালে তৎকালীন সরকার তাঁর বিধবা গঞ্জনা ও হিন্দু ধর্ম রহস্য বই দুটি বাজেয়াপ্ত করে।
বর্তমানে সুহৃদ প্রকাশন (৪৫, বাংলাবাজার, ঢাকা) হতে দু'খণ্ডে মুন্সী মেহেরউল্লা রচনাবলী প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও মুন্সী মেহের উল্লাহ রিসার্চ একাডেমি হতেও তার রচনাবলী প্রকাশিত হয়েছে।
ইসলামিক কাজসমূহ
[সম্পাদনা]বিপুলভাবে ইসলামিক প্ৰচারকাজ চালান। এক ঈদগাহে হানাফি ও অন্যান্য মাজহাবের বিরোধ নিরসনে উদ্যোগী হোন। এছাড়া পাদ্ৰিদের অপপ্ৰচার থামাতে মাঠে নামেন।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- শতাব্দীর দর্পন, ফজলুর রহমান, পৃষ্ঠা ৫২, প্রকাশ ১৯৯৫।
- ↑ মুহম্মদ আবূ তালিব (ডিসেম্বর ১৯৮৩)। মুনশী মোহাম্মদ মেহেরউল্লাহ: দেশ কাল সমাজ। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
- ↑ বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান। ১৯৯৭। পৃষ্ঠা ২৯৩-২৯৪।
- ↑ "মুনশী মেহেরুল্লাহ এক অসামান্য ব্যক্তিত্ব"। DailyInqilabOnline (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
- ↑ "বাংলায় মুসলিম জাগরণের অগ্রপথিক ছিলেন যিনি"। www.kalerkantho.com। জুন ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০২১।
- ↑ "Munshi Meherullah of Jessore and religious identity in 19th century Bengal"। The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ৩০ জানুয়ারি ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ মহসিন হোসাইন (২০১২)। "মেহেরুল্লাহ, মুনশি মোহাম্মদ"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ মুসলিম বাংলার মনীষা