মার্ঘেরিটা
মার্ঘেরিটা | |
---|---|
মহকুমা | |
ভারতর অসমএ মার্ঘেরিটার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৭°১৭′ উত্তর ৯৫°৪১′ পূর্ব / ২৭.২৮° উত্তর ৯৫.৬৮° পূর্ব | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | অসম |
জেলা | তিনসুকীয়া |
উচ্চতা | ১৬২ মিটার (৫৩১ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ২৩,৮৩৬ |
ভাষা | |
• সরকারী | অসমীয়া |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় মান সময় (ইউটিসি+5:30) |
পিন | ৭৮৬১৮১ |
টেলিফোনিক কোড | ৯১ - (০) ৩৭৫১ - XX XXXX |
যানবাহন নিবন্ধন | AS-23 |
মার্ঘেরিটা (ইংরেজি: Margherita) ভারতবর্ষের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্য অসম এর তিনসুকীয়া জেলার অন্তর্গত তিনটি মহকুমার মধ্যে অন্যতম। ব্রিটিশ শাসনকালেই এখানে গড়ে ওঠা কয়লাক্ষেত্রসমূহর অবদানের জন্য উত্তর পূর্বের কয়লাক্ষেত্রের মধ্যে মার্ঘেরিটার নাম কয়লারাণী হিসাবে জানা যেত। ব্রহ্মপুত্রর উপনদী বুঢ়ীদিহিং, পাটকাই পাহাড়, বনাঞ্চলসমূহ ও চা-বাগিচার সৌন্দর্যই সমগ্র অঞ্চলটিকে এক অনন্য মাত্রা প্রদান করেছে। উনিশ শতকে ইটালীর রাণী মার্ঘেরিটা মারিয়া টেরেছা জ্যোভানা (Margherita of Savoy)র নামে মার্ঘেরিটার নামকরণ করা হয়েছিল। কোল ইণ্ডিয়া লিমিটেড ও কীটপ্লাই অঞ্চলটির উদ্যোগিক ক্ষেত্রটির পুরানো ও প্রতিষ্ঠিত উদ্যোগিক প্রতিষ্ঠান। এর বাহিরেও এখানে ছোট-বড় বহু চা উদ্যোগ গড়ে উঠেছে।
ভৌগোলিক তথ্য
[সম্পাদনা]মার্ঘেরিটা ২৭°১৭′ উত্তর ৯৫°৪১′ পূর্ব / ২৭.২৮° উত্তর ৯৫.৬৮° পূর্ব.[১] অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা প্রায় ১৬২ মিটার। রাংরি পাহাড় ও পাটকাই পাহাড়ের শাখা-প্রশাখা এর ক্রমে দক্ষিণ ও পূর্ব দিক জুড়ে আছে। মার্ঘেরিটার উত্তর দিকে আছে তিনসুকীয়া মহকুমা, পূর্বে ও দক্ষিণে অবস্থিত অরুণাচল প্রদেশ ও পশ্চিম দিকে অবস্থিত ডিব্রুগড় জেলা। বুঢ়ীদিহিং নদী মার্ঘেরিটার মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে।
জনসংখ্যা
[সম্পাদনা]২০১১র জনগণনা মতে, (India census),[২] মার্ঘেরিটার সর্বমোট জনসংখ্যা হল ২৩৮৩৬ জন। মোট জনসংখ্যার ৪৮% ও ৫২% ক্রমে পুরুষ ও মহিলা। স্বাক্ষরতার হার হ'ল ৭৬%; তার মধ্যে শিক্ষিত পুরুষের হার হ'ল ৮১% ও শিক্ষিত মহিলার হার হ'ল ৭১% ও মোট জনসংখ্যার ১১ শতাংশই ৬বছরের কম শিশু।
বিভিন্ন ভাষার জনগোষ্ঠী সম্প্রদায়ে মার্ঘেরিটার জনমন্ডলী গঠিত। অঞ্চলটির মুখ্য সম্প্রদায়সমূহ হ'ল আহোম জনগোষ্ঠী, মরাণ, মটক, চিংফৌ, বাঙালী, নেপালী, চা-জনগোষ্ঠী, বিহারী ইত্যাদি।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]বর্তমান নামটির আগে মার্ঘেরিটার নাম ছিল মা-কুম( মূল:চিংফৌ, অর্থ: সকল জনগোষ্ঠীর থাকার স্থান)। ১৮৭৬ সালে লিডু ও মার্ঘেরিটাতে কয়লা আবিষ্কার করা হয়। তার পরে ১৮৮৪ সালের ১৮ ফেব্রুবারীর দিন সরকারীভাবে মার্ঘেরিটার কয়লাক্ষেত্রর শুভ উদ্বোধন করা হয় ও কয়লার রপ্তানির জন্য ডিব্রুগড় থেকে লিডুর কয়লাক্ষেত্র অবধি একটি রেল চলাচল সেইদিন আরম্ভ করা হয়। সেইদিনই বুঢ়ীদিহিং নদীর ওপর প্রথমটি কাঠের সেতু তৈরি ও বুড়ীদিহিঙের দুপারে রেলওয়ে লাইন সম্প্রসারণের কার্য সফল করবার জন্য ইতালীয় মুখ্য প্রকৌশলী Chevalier Roberto Paganiniকে সম্মাননা দেওয়া হয় ও ইটালীর তখনকার রাণী মার্ঘেরিটা মারিয়া টেরেসা জ্যোভানা (Margherita of Savoy)র সম্মান স্বরূপ তার নামানুসারে স্থানটির নাম মা-কুম বদলে মার্ঘেরিটা রাখা হয়।
ধর্ম ও উৎসবসমূহ
[সম্পাদনা]মার্ঘেরিটার জনসংখ্যার অধিকাংশ লোকই হিন্দু, মুসলিম নয়তো খৃষ্টান ধর্মালম্বী। এর মধ্যে কিছু এলাকায় বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত লোকের বসতিও বিদ্যমান। মহকুমাটিতে পালন করা প্রধান উৎসব হল বহাগ বিহু (চৈত্র-বৈশাখ মাসের সংক্রান্তির দিন পালন করা হয়), কাতি বিহু (আশ্বিন-কার্তিক মাসে সংক্রান্তির দিন পালন করা হয়) ও মাঘ বিহু (পৌষ-মাঘ মাসের সংক্রান্তির দিন পালন করা হয়); তাছাড়া ঈদ, খ্রীষ্টমাস, হোলি, দীপান্বিতা, ছট পূজা, বুদ্ধ পূর্ণিমা, মে-ডাম-মে-ফি ইত্যাদি এখানে সমান উৎসাহে পালন করা হয়।
যাতায়াত
[সম্পাদনা]অসমের মুখ্য শহরসমূহের সাথে চুবুরীয়া রাজ্য অরুণাচল প্রদেশের চাংলাং জেলার সঙ্গে মার্ঘেরিটার যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সন্তোষজনক; রেল ও বাস পরিষেবা উন্নত। জেলার সদর তিনসুকীয়াতে অবস্থিত একমাত্র জংশনটি সংযোজিত হওয়ায় রেলপথ ও বাসের যোগাযোগ আছে। ৩৮ নং রাষ্ট্রীয় সড়ক অঞ্চলটির মাঝ দিয়ে গেছে । এর সমীপবর্তী বিমানকেন্দ্রটি হল ডিব্রুগড় জেলার মোহনবারী।
অর্থনীতি
[সম্পাদনা]উঃ পূঃ কয়লাক্ষেত্রNorth Eastern Coalfields এই মহকুমাটির অর্থনীতিকে সবল করেছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রটিতে উল্লেখযোগ্য উদ্যোগসমূহ হ'ল চা ও প্লাইউড উদ্যোগ। এরপরেও ধান চাষের ওপরে একাংশ নির্ভরশীল।
উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
[সম্পাদনা]- ডিগবয় মহাবিদ্যালয়
- ডিগবয় মহিলা মহাবিদ্যালয়
- মার্ঘেরিটা মহাবিদ্যালয়
- লিডু মহাবিদ্যালয় ইত্যাদি ।
উল্লেখযোগ্য স্থানসমূহ
[সম্পাদনা]মুখ্যতঃ কয়লা, প্লাইউড উদ্যোগ ও চা বাগিচার জন্য মার্ঘেরিটা বিখ্যাত। মার্ঘেরিটার নামদাং ও ডিগবয়ের পাবৈর গল্ফ ফিল্ড পর্যটকদের জন্য আরেক আকর্ষণ। তলায় মার্ঘেরিটার অন্তর্গত কয়েকটি স্থানের নাম উল্লেখ করা হ'ল।
দিহিং-পাটকাই অভয়ারণ্য
[সম্পাদনা]অসমের একটি চিরসবুজ অরণ্য। জেলাটির দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত এই অরণ্যের বিস্তৃতি প্রায় ৩০০ বর্গকিলোমিটার। এখানে হলৌ বাঁদর, গাহরি-নেজীয়া বাঁদর, বাঘ, হাতী ইত্যাদি প্রাণী পাওয়া যায়। সাথে পাখির বিভিন্ন প্রজাতিরও এটি রম্যভূমি।
ডিগবয়
[সম্পাদনা]একশো বছরেরও পুরানো তৈলখনি ও বিশ্বের অন্যতম পুরানো কার্যক্ষম তেল শোধনাগারের জন্য ডিগবয় বিখ্যাত । তদুপরি এখানে ১৮ হোল গল্ফ কোর্স ও দেশের ভিতরে প্রথম তৈল সংগ্রহালয় পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্র। নগরটিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধর এক সমাধিও অবস্থিত।[৩] ইয়ার উপরিও ডিগবয়র সংরক্ষিত বণাঞ্চল পাকৈঢোঁরার প্রজাতির জন্য জনাজাত।
স্টিলওয়েল পথ
[সম্পাদনা]স্টিলবেল পথএর পুরানো নাম লিডু রোড। ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে সহায়ক হওয়ার রাস্তা স্বরূপ এই পথটির নির্মাণ করা হয়েছিল ও জেনারেল জোসেফ স্টিলওয়েল (Joseph Stilwell)র নামানুসারে পথটির নাম রাখা হয়। লিডুতে আরম্ভ হওয়া এই পথ ম্যানমারএর কোচিন প্রদেশের শ্বিংব্বিয়াং, ম্যিট্ক্যিনা ও ভামো হয়ে চীনদেশের য়ুনান প্রদেশের কুনমিঙে শেষ হয়েছে।[৪]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Falling Rain Genomics, Inc - Margheritaেত
- ↑ "Census of India 2001: Data from the 2001 Census, including cities, villages and towns (Provisional)"। Census Commission of India। ২০০৪-০৬-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১১-০১।
- ↑ Paresh kumar sahu (জুন ২৯, ২০১১)। "Tourism in Tinsukia District of Assam"। Assam Spider। সংগ্রহের তারিখ জুন ১৭, ২০১২।
- ↑ Bhaumik, Subir (২০০৯-০৮-১১)। "India not to reopen key WWII road"। BBC News। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৫-০৭।