মানিকলাল সিনহা
মানিকলাল সিংহ | |
---|---|
জন্ম | ১৩ জানুয়ারি ১৯১৬ |
মৃত্যু | ২১ মার্চ ১৯৯৪ | (বয়স ৭৮)
পেশা | শিক্ষক |
দাম্পত্য সঙ্গী | জুঁই রানী সিংহ |
সন্তান | ৫ |
মানিকলাল সিংহ, (মানিকলাল সিনহা ) (১৩ জানুয়ারি ১৯১৬- ২১ মার্চ ১৯৯৪) [১] একজন ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ববিদ, [২] লেখক, [৩] কবি, [৪] লোক-সংস্কৃতিবিদ, [১] ঔপন্যাসিক [৫] এবং বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহ শিক্ষক ছিলেন। ১৯৫১ সালে বিষ্ণুপুরে আচার্য যোগেশ চন্দ্র পুরাকীর্তি ভবন [২] (জাদুঘর) এবং বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ - বিষ্ণুপুর শাখা স্থাপন করার প্রধান উদ্দোক্তা ছিলেন ও প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক [২] [৬] ছিলেন। একজন প্রত্নতাত্ত্বিক, লেখক এবং ঔপন্যাসিক হিসেবে অবদানের জন্য ১৯৮৯ সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি সাম্মানিক ডিলিট উপাধি পান।
জীবনী[সম্পাদনা]
অমূল্যরতন সিনহা ও নারায়ণী দেবীর পুত্র মানিকলাল সিনহা, ১৯১৬ সালের ১৩ জানুয়ারি বিষ্ণপুরের কাছে জয়কৃষ্ণপুরে জন্মগ্রহণ করেন।[১] ১৯৩৪ সালে, তিনি বিষ্ণুপুর হাই স্কুল (ইংরেজি মাধ্যম) থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন এবং তারপরে বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজ থেকে আই.এস.সি। ১৯৩৬ সালের ১৬ জুন, সিনহাকে স্বদেশী আন্দোলন করার অপরাধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে জয়কৃষ্ণপুরে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিন তাঁকে বিষ্ণুপুর জেলে রাখা হলেও পরের দিন অর্থাৎ ১৭ জুন সিনহাকে মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।[১][৭] এরপর ৪ সেপ্টেম্বর তাকে আবার ময়মনসিংহের মাদারগঞ্জে বদলি করা হয়। শেষ পযর্ন্ত ২২ শে ডিসেম্বর ১৯৩৭ তিনি জেল থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। ১৯৩৮ সালে, তিনি জুঁই রানী সিনহাকে বিয়ে করেন এবং পরবর্তীতে ১৯৪২ সালে, তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি (১৯৪৫) লাভ করেন এবং বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, বিটি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন ১৯৫২ সালে ডেভিড হেয়ার ট্রেনিং কলেজ [১] থেকে।
৭৮ বছর বয়সে, মানিকলাল সিনহা [১] বাড়িতে বার্ধক্যজনিত শারীরিক অসুস্থতার কারণে মারা যান। ২০১৬ সালে, এসডিও, বিষ্ণুপুর এবং বাঁকুড়ার ডিএম, বিষ্ণুপুর এবং বাঁকুড়ায় তাঁর ১০১ বছর জন্মদিন উদযাপনের জন্য কয়েকটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। [৮]
মানিকলাল সিনহা ও জুঁই রানী সিনহার পাঁচ ছেলে। তাদের মধ্যে প্রদীপ কুমার সিনহা [৯] এবং প্রণব কুমার সিনহা [১০] বিশিষ্ট লেখক, সুকান্ত সিনহা একজন প্রকাশক, [১১] ড. শ্রীকান্ত সিনহা [১২] একজন বিজ্ঞানী, ইসরো, স্যাটেলাইট সেন্টার, ব্যাঙ্গালোর, ভারত এবং শ্রীকৃষ্ণ সিনহা [১৩] একজন স্বাধীন গবেষক।
গবেষণামূলক ক্রিয়াকলাপ[সম্পাদনা]
১৯৭০-এর দশকে, মানিকলাল সিনহা দ্বারকেশ্বর নদীর উত্তর তীরে বিষ্ণুপুরের উত্তরে ডিহরে[২][১৪][১৫] একটি চালকোলিথিক স্থাপনা আবিষ্কার করেন। যেখানে মুদ্রা, পুঁতি, মূল্যবান পাথরের গহনা এবং মৃৎপাত্র খনন করে পাওয়া গিয়েছিল। পরবর্তীকালে সিনহা প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব নিতে চিঠি দিয়েছেন। তদুপরি, তাঁর প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা এই বইগুলির মাধ্যমে মূর্ত হয়েছে যেগুলি হল: কাঁসাই সভ্যতা,[১৬] পশ্চিম রাঢ় তথা বাঁকুড়া সংস্কৃতি,[৩] রাঢ়ের জাতি ও কৃষ্টি,[১১] সুবর্ণরেখা হইতে ময়ূরাক্ষী,[১৭] রাঢ়ের মন্ত্রযান[১৮] ইত্যাদি । এই বই গুলি লেখকের আজীবন পরিশ্রমের ফসল এবং রাঢ় অঞ্চলের প্রতি অগাধ ভালোবাসার নমুনা।[১৯] তাছাড়াও, তিনি ঝুমুর গানের কথা, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গের মালভুমি এলাকার ঝুমুর গান[২০][২১] বিশ্বদরবারে তুলে ধরেন।
সম্মাননা[সম্পাদনা]
- ১৯৭৯ সালে জাতীয় শিক্ষক রূপে মর্যদা পান।
- স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসাবে তার অবদানের জন্য ভারত সরকার কর্তৃক তাম্রপত্র প্রদান করা হয়।
- ১৯৮২ সালে ভারতীয় ভাষা পরিষদ থেকে রাঢ়ের মন্ত্রযান-পুস্তকের জন্য রামকুমার ভুয়ালকা পুরস্কার দ্বারা ভূষিত হন।
- ১৯৮৬ সালে রাঢ়ের জাতি ও কৃষ্টি-পুস্তকের জন্য মধুসূদন পুরস্কার দ্বারা ভূষিত হন।
- ১৯৮৯ সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিলিট উপাধি পান।
- ১৯৯৪ সালে অনুশীলন সমিতি পুরস্কার দ্বারা ভূষিত হন।
প্রকাশনা[সম্পাদনা]
কবিতার বই[সম্পাদনা]
নাটক[সম্পাদনা]
- হ্যামার[২৪]
লিটিল ম্যাগাজিন[সম্পাদনা]
সমালোচনা মূলক বই[সম্পাদনা]
- আধুনিক বাংলা সাহিত্য
রাঢ় অঞ্চলের উপর বই[সম্পাদনা]
- কাঁসাই সভ্যতা[২৭]
- পশ্চিম রাঢ় তথা বাঁকুড়া সংস্কৃতি[৩]
- রাঢ়ের জাতি ও কৃষ্টি[১১]
- রাঢ়ের মন্ত্রযান
- সূর্বণরেখা হইতে ময়ূরাক্ষী
এছাড়াও দেখুন[সম্পাদনা]
- বিষ্ণুপুর
- বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয়
- বাংলা ভাষার লেখকদের তালিকা (বর্ণানুক্রমিক)
- বাংলা ভাষার লেখকদের তালিকা (কালানুক্রমিক)
- রাঢ়
- ডিহর
- চুনারু
- বাঁকুড়া
- বাঁকুড়া জেলার ইতিহাস
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ Kabiraj, Susanta। "Shodhganga" (Bengali ভাষায়)।
- ↑ ক খ গ ঘ Chakrabarty, Rakhi (২০ জুন ২০১৫)। "Relic Hunter"। The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-১৪।
- ↑ ক খ গ Singha, Maniklal (১৯৭৭)। Paschim rarh tatha Bankura sanskriti। Chittaranjan Dasgupta।
- ↑ ক খ Sinha, Maniklal (১৯৩৯)। Deep Shika (Bengali ভাষায়)। Sudhir Kumar Palit। পৃষ্ঠা 1–51।
- ↑ Sinha, Maniklal। "(PDF) শাল-ফুল | Shal-fhul | Maniklal Singha – মানিকলাল সিংহ"। KiTabpdf (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০৮-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-২০।
- ↑ "Chairman – Bishnupur Municipality" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-২০।
- ↑ সিনহা, প্রদীপ (১৯৯৯)। যা দেখেছি যা শুনেছি। একবিংশতি ম্যাগাজিন: অচিন্ত বিশ্বাস। পৃষ্ঠা ৮২।
- ↑ সংবাদদাতা, নিজস্ব। "মানিকলাল জন্ম শতবর্ষ"। anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-২৪।
- ↑ "File:রাঢ়ের পদাবলী – প্রদীপকুমার সিংহ.pdf – Wikimedia Commons" (পিডিএফ)। commons.wikimedia.org।
- ↑ Sinha, Pranab (১৯৯৯)। Prachin o Madhyayayuger Sahitye Bangali Samaj O Sanskriti (Bengali ভাষায়)। Banngiya Sahitya Parishad।
- ↑ ক খ গ Sinha, Maniklal (১৯৮২)। Rarher Jati O Kristi (Bengali ভাষায়) (3rd সংস্করণ)। Sukanta Sinha; Bangiya Sahitya Parisad। পৃষ্ঠা 1–154।
- ↑ "ORCID"। orcid.org।
- ↑ "ORCID"। orcid.org।
- ↑ Mondal, Bijan; Chattopadhyay, Rupendra Kumar; Biswas, Pampa; Acharya, Dipsikha। "Excavation at Dihar 2012-2013 : An Interim Report"।
- ↑ Chakrabarti, Dilip K.; Sengupta, Gautam; Chattopadhyay, R. K.; Lahiri, Nayanjot (১ জানুয়ারি ১৯৯৩)। "Black-and-Red Ware Settlements in West Bengal"। South Asian Studies (ইংরেজি ভাষায়)। 9 (1): 123–135। আইএসএসএন 0266-6030। ডিওআই:10.1080/02666030.1993.9628469।
- ↑ Sinha, Maniklal (১৯৫৪)। Kansai Sabhyata (Bengali ভাষায়)। Bangiya Sahitya Parisad। পৃষ্ঠা 1–102।
- ↑ Sinha, Maniklal (১৯৮৮)। Subrnarekha Hoite Mayurakshi (Bengali ভাষায়)। Published by Radhamohan Sinha (3rd সংস্করণ)। Bishnupur: Bangiya Sahitya Parisad। পৃষ্ঠা 1–175।
- ↑ Singha, Maniklal (১৯৭৯)। Rardher Mantrajan। Bishnupur: Sri Chittaranjan Dasgupta।
- ↑ "A Medley of Faiths: Towards a Composite Religious Culture in Early Medieval Rāḍh"। Sahapedia (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২৬।
- ↑ Sinha, Manik Lal (১৯৭৪)। "Jhumar of the West Bengal highlands"। Sangeet Natak Akademi, New Delhi।
- ↑ Basu, Arun Kumar (১ ডিসেম্বর ১৯৮৬)। "Folksongs of Bengal"। Journal of the Indian Musicological Society। 17 (2): 93।
- ↑ Sinha, Maliklal (১৯৪৭)। Anabasayaka Kabayagrantha (Bengali ভাষায়) (1st সংস্করণ)। Bishnupur: Apratul। পৃষ্ঠা 1–47।
- ↑ Sinha, Maniklal (১৯৮২)। Anabasayaka Kabayagrantha (Bengali ভাষায়) (2nd সংস্করণ)। Bishnupur: Chattaranjan Dasgupta, Bangiya Sahitya Parisad।
- ↑ Sinha, Maniklal (১৯৪৮)। Hammer (Bengali and Hindi ভাষায়)। Howrah: Bhim Chandra Mahindra। পৃষ্ঠা 1–52।
- ↑ Sinha, Maniklal (১৯৫০–১৯৫২)। Shilpi (Bengali ভাষায়)। Bishnupur: Bangiya Sahitya Parisad।
- ↑ Sinha, Maniklal (১৯৩৯)। Deep Shika (Bengali ভাষায়)। Bankura: Sudhir Kumar Palit। পৃষ্ঠা 1–51।
- ↑ Sinha, Maniklal (১৯৫৪)। Kansai Sabhyata (Bengali ভাষায়)। Bangiya Sahitya Parisad। পৃষ্ঠা 1–102।
গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]
- আধুনিক বাংলায় জীবিত বৌদ্ধধর্ম পুনঃআবিষ্কার: মানিকলাল সিংহের রাঢ়ের মন্ত্র (1979) : বৌদ্ধধর্ম ও চিকিৎসা গ্রন্থ থেকে: মুখার্জি বিহারী প্রোজিত, https://doi.org/10.7312/salg18936-028
- মল্লভূম বিষ্ণুপুর - চন্দ্র মনোরঞ্জন; মিত্র অ্যান্ড ঘোষ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, 10 শ্যামাচরণ দে সুব্রীত, কলকাতা 700 073, https://archive.org/stream/in.ernet.dli.2015.265671/2015.265671.Mallabhum-Bishnupur_djvu.tx
- বেঙ্গলের মধ্যযুগীয় মন্দির (অরিজিনস অ্যান্ড ক্লাসিফিকেশন কলকাতা: দ্য এশিয়াটিক সোসাইটি, 1972) ম্যাককাচিয়ান ডেভিড।
- ব্রিক টেম্পলস অফ বেঙ্গল: ম্যাককাচিয়ন, ডেভিডের আর্কাইভস থেকে। (প্রিন্সটন, এন.জে.: প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস, 1983), তার গবেষণা জর্জ মিশেল দ্বারা সংগৃহীত, ব্যাখ্যা এবং প্রকাশিত।
- স্মৃতির নদীতে মানিকরতন (ডিসেম্বর 1999); রায়, মোহিত। একবিংশতি: সম্পাদক- অচিন্ত্য বিশ্বাস।
- পুরাতত্তিক মানিকলাল সিংহ (ডিসেম্বর 1999); দাস, মন্টু, একবিংশতি: সম্পাদক- অচিন্ত্য বিশ্বাস।
- মানববিদ্যার একজন পথিক মানিকলাল সিংহ (ডিসেম্বর 1999); করণ, সুধীর। একবিংশতি: সম্পাদক- অচিন্ত্য বিশ্বাস।
- কেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর মিউজিয়ামটি অবশ্যই দেখতে হবে https://www.getbengal.com/details/why-the-bishnupur-museum-in-bankura-is-a-must-visit
- ১৯১৬-এ জন্ম
- ১৯৯৪-এ মৃত্যু
- ২০শ শতাব্দীর প্রত্নতাত্ত্বিক
- ভারতীয় ঐতিহাসিক ঔপন্যাসিক
- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- বাঁকুড়া জেলার মানুষ
- পশ্চিমবঙ্গের ঔপন্যাসিক
- পশ্চিমবঙ্গের লেখক
- পশ্চিমবঙ্গের কবি
- ২০শ শতাব্দীর ভারতীয় ইতিহাসবিদ
- ২০শ শতাব্দীর ভারতীয় ঔপন্যাসিক
- ২০শ শতাব্দীর ভারতীয় কবি
- বাংলা ভাষার লেখক
- ভারতীয় ঔপন্যাসিক
- বাঁকুড়া জেলার ব্যক্তি
- ভারতীয় কবি
- ভারতীয় পুরুষ ঔপন্যাসিক