মহম্মদ হান্‌নান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মহম্মদ হান্‌নান
জন্ম(১৯৪৯-১২-১৪)১৪ ডিসেম্বর ১৯৪৯
মৃত্যু২১ জানুয়ারি ২০১৪(2014-01-21) (বয়স ৬৪)
ঢাকা, বাংলাদেশ
মৃত্যুর কারণহৃদরোগ
জাতীয়তাবাংলাদেশী
পেশাচলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক
পুরস্কারবাচসাস পুরস্কার (২০০০)
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার (২০১৪)

মহম্মদ হান্‌নান (১৪ ডিসেম্বর ১৯৪৯ - ২১ জানুয়ারি ২০১৪) ছিলেন একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক। তিনি বেবী ইসলামের সহকারী হিসেবে চলচ্চিত্রে আগমন করেন। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র রাই বিনোদিনী (১৯৮৫)। তার পরিচালিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল বিক্ষোভ (১৯৯৪), প্রাণের চেয়ে প্রিয় (১৯৯৭), বিদ্রোহ চারিদিকে (২০০০), সাহসী মানুষ চাই (২০০৩)। বিদ্রোহ চারিদিকে চলচ্চিত্রের সংলাপ রচনার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা বিভাগে বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন। তার পরিচালিত সর্বশেষ চলচ্চিত্র শিখন্ডী কথা (২০১৩), যার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অর্জন করেন।[১] তার প্রযোজনা সংস্থার নাম মাস মিডিয়া লিমিটেড।

জীবনী[সম্পাদনা]

মহম্মদ হান্‌নান ১৯৪৯ সালের ১৪ই ডিসেম্বর তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।[২]

তিনি চিত্রগ্রাহক ও পরিচালক বেবী ইসলামের সহকারী হিসেবে চলচ্চিত্রে আগমন করেন। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র রাই বিনোদিনী ১৯৮৫ সালে মুক্তি পায়। পরবর্তী কালে তিনি মালা বদল, মাইয়ার নাম ময়না, অবরোধ, বিচ্ছেদ চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন। ১৯৯৪ সালে তিনি সালমান শাহশাবনূরকে নিয়ে নির্মাণ করে শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস বিষয়ক বিক্ষোভ। তিনি পুনরায় এই জুটিকে নিয়ে প্রাণের চেয়ে প্রিয় (১৯৯৭) চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সালমান শাহের অকাল মৃত্যুতে রিয়াজ তার স্থলাভিষিক্ত হন। পরের বছর তিনি নির্মাণ করেন ভালবাসি তোমাকে (১৯৯৮)।

তিনি বিদ্রোহ চারিদিকে (২০০০) চলচ্চিত্রের সংলাপ রচনার জন্য শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা বিভাগে বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন।[৩] ২০০০-এর দশকের শুরুতে তিনি সাবধান, খবরদার, দলপতি, পড়ে না চোখের পলক চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন। তার পরিচালিত সাহসী মানুষ চাই (২০০৩) চলচ্চিত্রটি ২৮তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তিনটি পুরস্কার লাভ করে। এছাড়া এই দশকে তিনি নয়ন ভরা জল, জীবন এক সংঘর্ষ, ভালবাসা ভালবাসা, টিপটিপ বৃষ্টি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।[৪] তার পরিচালিত সর্বশেষ চলচ্চিত্র শিখণ্ডী কথা (২০১৩)। এই চলচ্চিত্র পরিচালনার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো সমালোচক পুরস্কার অর্জন করেন।

হান্‌নান ২০১০ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন।[৫] ২০১৪ সালের ২১শে জানুয়ারি লঞ্চযোগে ঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়ার পথে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। বিএফডিসিতে জানাজা শেষে তাকে বরিশালের কড়াপুরে সমাহিত করা হয়।[৬]

চলচ্চিত্রের তালিকা[সম্পাদনা]

বছর চলচ্চিত্রের শিরোনাম ভূমিকা টীকা
পরিচালক লেখক প্রযোজক
১৯৮৫ রাই বিনোদিনী হ্যাঁ
মালাবদল হ্যাঁ
মাইয়ার নাম ময়না হ্যাঁ
অবরোধ হ্যাঁ
বিচ্ছেদ হ্যাঁ
১৯৯৪ বিক্ষোভ হ্যাঁ
১৯৯৭ প্রাণের চেয়ে প্রিয় হ্যাঁ
১৯৯৮ ভালবাসি তোমাকে হ্যাঁ
২০০০ বিদ্রোহ চারিদিকে হ্যাঁ বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা বিভাগে বাচসাস পুরস্কার
সাবধান হ্যাঁ
২০০৩ সাহসী মানুষ চাই হ্যাঁ তিনটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে
দলপতি হ্যাঁ
২০০৮ টিপ টিপ বৃষ্টি হ্যাঁ
২০১৩ শিখন্ডী কথা হ্যাঁ বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Meril-Prothom Alo Award conferred"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ এপ্রিল ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১২ অক্টোবর ২০১৯ 
  2. জোয়াদ ২০১০, পৃ. ৮১০।
  3. জোয়াদ ২০১০, পৃ. ৪৮১।
  4. "চলে গেলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা মহম্মদ হান্নান"দৈনিক প্রথম আলো। ২২ জানুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১২ অক্টোবর ২০১৯ 
  5. "সভাপতি মহম্মদ হান্নান, মহাসচিব এফ আই মানিক"বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ইংরেজি ভাষায়)। ২৫ ডিসেম্বর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ১২ অক্টোবর ২০১৯ 
  6. "চিত্রপরিচালক মহম্মদ হান্নান আর নেই"দৈনিক প্রথম আলো। ২৩ জানুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১২ অক্টোবর ২০১৯ 

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

  • জোয়াদ, আবদুল্লাহ (২০১০)। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র: পাঁচ দশকের ইতিহাস। ঢাকা: জ্যোতিপ্রকাশ। আইএসবিএন 984-70194-0045-9 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]