মতীন্দ্র সরকার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মতীন্দ্র সরকার
অধ্যাপক মতীন্দ্র সরকার
জন্ম৪ এপ্রিল, ১৯৪০
উল্লেখযোগ্য কর্ম
কালান্তরে শিক্ষা
আন্দোলনশিশুদেরকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বই দেয়া ও পড়া হয়ে যাওয়ার পর ফেরত আনা

মতীন্দ্র সরকার (জন্ম: ৪ এপ্রিল, ১৯৪০) বাংলা সাহিত্যের একজন জনপ্রিয় অধ্যাপক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, চিন্তাশীল প্রাবন্ধিক,[১] অনুবাদক ও শিশু সাহিত্যিক।[২]এই গুণী মানুষ সম্পর্কে কবি এনামূল হক পলাশ লিখেছেন, শহরের রাস্তায় ঝুলা ব্যাগ কাঁধে নিয়ে সন্তের মতো করে হাঁটেন তিনি। তাঁর চেহারায় পদ্ম ফুলের স্নিগ্ধতা। ঝুলিতে থোকা থোকা শ্বেতদ্রুণের জ্ঞানমধু। জ্ঞানের শ্বেতদ্রুণ ফুল থেকে এই শহরের মানুষ চুমুক দিয়ে আহরণ করতে থাকেন মধু। এই জ্ঞানের শ্বেতদ্রুণ ফুলওয়ালা মানুষটি হচ্ছেন মতীন্দ্র সরকার। তিনি সাধারণ শিক্ষক নন। তিনি কালের শিক্ষক। তাঁর জীবনবোধ মঙ্গললোকে উত্তীর্ণ। এই মহান শিক্ষক প্রচার করেন, মানুষকে প্রতিনিয়ত মানুষ হতে হয়। তিনি ঘোষণা করেন, অন্যান্য জীব জন্মসূত্রে নিজ গোত্রগুণ লাভ করলেও ক্রমাগত চেষ্টার ভেতর দিয়ে মানবশিশুকে মানুষ হয়ে উঠতে হয়। এই ঘোষণার ভেতর দিয়েই মতীন্দ্র সরকার একটি দার্শনিক ভিত্তির বটছায়া হয়ে আমাদের মাথার ওপর স্থান করে নিয়েছেন।[৩]

জন্ম ও শৈশব[সম্পাদনা]

১৯৪০ সালের ০৪ এপ্রিল কেন্দুয়ার চন্দ্রপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

শিক্ষা জীবন[সম্পাদনা]

১৯৫১ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত তিনি রামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯৫৪ থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত বেখৈরহাটি হাইস্কুলে এবং ১৯৫৯ সালে বারহাট্টা সি. কে. পি. পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তিনি কৃতিত্বের সাথে মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬২ সালে নেত্রকোণা কলেজ থেকে দ্বিতীয় বিভাগে তিনি আইএ পাস করে ভর্তি হন আনন্দ মোহন কলেজ এ এবং তিনি ছিলেন আনন্দ মোহন কলেজের বাংলা বিভাগের প্রথম ব্যাচের প্রথম ছাত্র। পরবর্তীতে ১৯৬৪ সালে তিনি দ্বিতীয় বিভাগে স্নাতক পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে। ১৯৬৭ সালে তিনি সেখান থেকে দ্বিতীয় বিভাগে পাস করেন।[৪]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৭ সালে পাস করে ১৯৬৮ সালে কর্মজীবন শুরু করেন জামালপুরের মাদারগঞ্জে এইচ জেড কলেজে ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে। সেখানে তিনি ১৯৭২ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত টাঙ্গাইলের কাগমারীতে মওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজে প্রফেসর হিসেবে চাকরি করেন তিনি। ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত তিনি হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজে চাকরি করেন। নেত্রকোণা সরকারি কলেজ এ বাংলায় অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স প্রতিষ্ঠা করে ২০০০ সাল পর্যন্ত বিভাগীয় প্রধান হিসেবে অধ্যাপনার সাথে যুক্ত ছিলেন এবং এই বিভাগ থেকেই অবসরে যান। পরে বিশেষ অনুরোধে আরো দুই বছর সেখানে তিনি খণ্ডকালীন অধ্যাপক হিসেবে যুক্ত ছিলেন।[৫]

প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ[সম্পাদনা]

  • জীবনের তাৎপর্য এবং শিক্ষা (অনুবাদ গ্রন্থ),
  • কালান্তরে শিক্ষা,

সংক্রান্ত পুস্তকসমূহ[সম্পাদনা]

  • শিক্ষা ও সংস্কৃতির মহাজন অধ্যাপক মতীন্দ্র সরকার আশির ঔজ্জ্বল্য

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. মিত্র, বিধান (ফেব্রুয়ারি ২০২০)। প্রশাসন, জেলা, সম্পাদক। বাংলা প্রবন্ধ-সাহিত্যে নেত্রকোণার অবদান। পৃষ্ঠা ১১৫। আইএসবিএন 978-9849170068 
  2. ইসলাম, রবিউল (এপ্রিল ২০০৯)। আব্দুল বাকী, শাহ মো., সম্পাদক। আশির ঔজ্বল্য। পৃষ্ঠা ১০১। আইএসবিএন 978-9849400974 
  3. পলাশ, এনামূল হক (এপ্রিল ২০০৯)। আব্দুল বাকী, শাহ মো., সম্পাদক। একজন কালের শিক্ষক। পৃষ্ঠা ৮৩। আইএসবিএন 978-9849400974 
  4. করেসপন্ডেন্ট, স্টাফ (২০২০-১১-০৭)। "অবসরে গিয়ে ও বাতিঘর শিক্ষক অধ্যাপক মতীন্দ্র"বাংলাদেশ রয়টার্স। ঢাকা: বাংলাদেশ রয়টার্স। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-১২ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. রহমান, আফজাল (এপ্রিল ২০০৯)। আব্দুল বাকী, শাহ মো., সম্পাদক। আমার শিক্ষকতায় টিকে থাকা ও একটি সনাতনী-বুদ্ধ পরিবার। পৃষ্ঠা ২১। আইএসবিএন 978-9849400974