ভূমিবল অতুল্যতেজ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ভূমিবল অতুল্যতেজ
থাইল্যান্ডের রাজা
রাজত্ব৯ জুন, ১৯৪৬ - ১৩ অক্টোবর, ২০১৬
(৭৭ বছর, ২৭৬ দিন)
রাজ্যাভিষেক৫ মে, ১৯৫০
পূর্বসূরিআনন্দ মহিদল
উত্তরাধিকারসূত্রেমহা ভজিরালঙ্কম
প্রধানমন্ত্রী
জন্ম(১৯২৭-১২-০৫)৫ ডিসেম্বর ১৯২৭
কেমব্রিজ, ম্যাসাচুসেটস,
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মৃত্যু১৩ অক্টোবর ২০১৬(2016-10-13) (বয়স ৮৮)
সিরিরাজ হাসপাতাল, ব্যাংকক, থাইল্যান্ড
দাম্পত্য সঙ্গীসিরিকিত কিতিয়াকারা
(২৮ এপ্রিল, ১৯৫০ থেকে)
বংশধরপ্রিন্সেস যুবলরত্না রাজকন্যা
ক্রাউন প্রিন্স বজ্রলঙ্কম
প্রিন্সেস সিরিন্ধম
প্রিন্সেস চুলাভোম ওয়ালাইলাক
রাজবংশমহীদল গৃহ
চক্রী রাজবংশ
পিতামহীদল অতুল্যতেজ, প্রিন্স অব সঙ্কলা
মাতাশ্রীনাগারিন্দ্র, দ্য প্রিন্সেস মাদার
ধর্মবৌদ্ধ
স্বাক্ষরভূমিবল অতুল্যতেজ স্বাক্ষর
থাই নাম
থাইภูมิพลอดุลยเดช
RTGSPhumiphon Adunyadet

রাজা ভূমিবল অতুল্যতেজ (থাই: พระบาทสมเด็จพระปรมินทรมหาภูมิพลอดุลยเดช; উচ্চারিত [pʰuːmípʰōn ʔàdūnjādèːt] (শুনুন); জন্ম: ৫ ডিসেম্বর, ১৯২৭ - ১৩ অক্টোবর, ২০১৬) থাইল্যান্ডের রাজা ছিলেন। ১৭৮২ সাল থেকে ক্ষমতাসীন ও থাইল্যান্ডের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী চক্রী রাজবংশের তিনি নবম রাজা। থাইল্যান্ডের অধিকাংশ নাগরিকই তাকে মহারাজা হিসেবে সম্বোধন করে থাকে। এছাড়াও তিনি নবম রাম হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ৯ জুন, ১৯৪৬ তারিখে তার রাজ্যাভিষেক ঘটে। এর ফলে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধানসহ থাইল্যান্ডের ইতিহাসে দীর্ঘস্থায়ী রাজা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন।[১] তিনি ১৩ অক্টোবর ২০১৬ মৃত্যুবরণ করেন।

চক্রী রাজবংশএর রাজারা
ফ্রা ফুটথায়তফা চুলালক
(প্রথম রামা)
ফ্রা ফুটথালেটলা নাফালাই
(দ্বিতীয় রামা)
নাংকলাও
(তৃতীয় রামা)
মংকুট
(চতুর্থ রামা)
চুলালংকরন
(পঞ্চম রামা)
ভজিরাভুধ
(ষষ্ঠ রামা)
প্রজাধীপক
(সপ্তম রামা)
আনন্দ মহিদল
(অষ্টম রামা)
ভূমিবল অতুল্যতেজ
(নবম রামা)
মহা ভজিরালঙ্কম
(দশম রামা)

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

রাজা ভূমিবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করলেও শিক্ষালাভ করেন সুইজারল্যান্ডে। ভূমিবল একজন বিলিওনিয়ার ছিলেন। নিজ অর্থের কিছু অংশ তিন সহস্রাধিক প্রকল্পে ব্যয় করেছেন, যার অধিকাংশই গ্রাম্য এলাকায় অবস্থিত। কৃষি, পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য, পানিসম্পদ, যোগাযোগ এবং জনকল্যাণে এ অর্থ ব্যয় করা হয়।[২] থাইল্যান্ডে তার জনকল্যাণমূখী অংশগ্রহণের কথা থাই গণমাধ্যমে শ্রদ্ধার সাথে তুলে ধরা হয়।[৩]

তিনি কখনও কখনও রাজনৈতিক সঙ্কট মীমাংসায় এগিয়ে এসেছেন। অনেক থাই জনগোষ্ঠীর ন্যায় তিনিও অর্ধ-ধর্মপ্রাণব্যক্তি।[৪][৫][৬] ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ভূমিবল একজন চমৎকার সঙ্গীতজ্ঞ, চিত্রকর এবং নাবিক। দূরসম্পর্কীয় আত্মীয়া সিরিকিত কিতিয়াকারাকে ১৯৫০ সালে বিয়ে করেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে রাজমুকুট পড়ানো হয় ৫ মে, ১৯৫০ তারিখে।

রাজ্যাভিষেক[সম্পাদনা]

রাজা চুলালংকরন নাতি এবং প্রিন্স অব সঙ্কলা মহীদল অতুল্যতেজের পুত্র রাজা ভূমিবলের বড় ভাই রাজা আনন্দ মহিদল ১৯৩৫ সালে রাজসিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন। কিন্তু ৯ জুন, ১৯৪৬ সালে রাজা আনন্দ মহিদলকে বিছানার পাশে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মৃতদেহ পাওয়া যায়। তার রহস্যজনক মৃত্যু যা পরবর্তীতে অজ্ঞাতই রয়ে গেছে এ প্রেক্ষিতে তড়িঘরি করে ভূমিবলকে রাজসিংহাসনে বসানো হয়।

থাইল্যান্ডে তিনি অসম্ভব জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন[৭][৮] এবং জনগণের উপর তার বিরাট প্রভাব ছিল।[৯]

থাইদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হলেও লিজ ম্যাজিস্টি আইনের আওতায় তার কর্মকাণ্ডের কোনরূপ সমালোচনা করা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তিন থেকে পনের বছর কারাভোগের বিধান রাখা হয়েছে।[১০] সামরিকজান্তা ও প্রধানমন্ত্রী তানিন ক্রেইভিজিয়েনর শাসনামলে এ আইনকে আরও কঠিনতর করা হয়। রাজপরিবার, রাজকীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, রাজকীয় প্রতিষ্ঠান, চক্রী রাজবংশ কিংবা অন্য কোন রাজার সমালোচনা করাও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

২০০৫ সালে রাজা ভূমিবলের জন্মদিনের উৎসবে রাজা ভূমিবল সমালোচনা স্বাগতঃ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।[১১] তিনি বলেন,

প্রকৃতপক্ষে আমিও সমালোচিত হতে পারি। সমালোচনার ভয়ে আমি ভীত নই। কেননা, এরফলে আমি কি ভুল করছি, তা জানতে পারবো। কারণ, আপনি যদি বলেন যে রাজাকে সমালোচনা করা যাবে না, তার মানে হলো - রাজা মানুষ নন। যদি রাজা কোন ভুল না করেন, তাহলে তা দেখতে একবংশীয় হবে এবং রাজা কোনরূপ মনুষ্যচিত কর্মকাণ্ড করতে পারবেন না। কিন্তু রাজা ভুল করতে পারেন।

এ প্রেক্ষিতে বাঁধনির্মাণে ব্যাপক সমালোচনার কথা জনগণের মাঝে প্রকাশিত হয়। লিজ ম্যাজিস্টি আইনের আওতা অনুসরণ করে তা বন্ধ রাখার চেষ্টা করা হয়। এ আইনের আওতায় ২০১০ সালে ৪৭৮ জনকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়, যা ২০০৫ সালের পূর্বে ছিল বছরপ্রতি পাঁচ থেকে ছয়জন।[১২]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

রাজা ভূমিবল ১৩ অক্টোবর ২০১৬ মৃত্যুবরণ করেন। তিনি সাধারণত থাইল্যান্ডবাসীদের কাছে অত্যন্ত সম্মান পাতেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "A Royal Occasion speeches"Journal। Worldhop। ১৯৯৬। ১২ মে ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০০৬ 
  2. Some information about HM King Bhumibol Adulyadej ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৬ অক্টোবর ২০১২ তারিখে ওয়েবসাইটে আর্কাইভকৃত ১০ আগস্ট ২০১১ তারিখে
  3. Channel News Asia, Thais celebrate Queen's birthday as govt investigates monarchy threat ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে, 12 August
  4. Montlake, Simon (2006-06-12)। "Backstory: The king and Thai"। The Christian Science Monitor। সংগ্রহের তারিখ 2008-03-04  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  5. "World in Brief"The Washington Post2007-03-30। সংগ্রহের তারিখ 2008-03-04  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  6. MacKinnon, Ian (2007-04-07)। "YouTube ban after videos mock Thai king"The Guardian। সংগ্রহের তারিখ 2008-03-04  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  7. Aphornsuvan, Thanet (২০০৪), "Bhumibol Adulyadej", Southeast Asia: A Historical Encyclopedia, From Angkor Wat to East Timor, ABC-CLIO, পৃষ্ঠা 232 
  8. Nimanandh, Kongphu; Andrews, Tim G. (২০০৯), "Socio-cultural context", The Changing Face of Management in Thailand, Taylor & Francis, পৃষ্ঠা 73 
  9. "News"। UK: BBC। ৫ ডিসেম্বর ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০  |অবদান= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  10. Champion, Paul (২৫ সেপ্টেম্বর ২০০৭)। "Professor in lese majeste row"। Reuters। ১৩ অক্টোবর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৭ 
  11. "Royal Birthday Address: 'King Can Do Wrong'"। National Media। ৫ ডিসেম্বর ২০০৫। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৭ 
  12. FT, High time to concede the Thai king can do wrong, 20 July 2011

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

সাহিত্যাঙ্গন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

ভূমিবল অতুল্যতেজ
জন্ম: ৫ ডিসেম্বর ১৯২৭ মৃত্যু: ১৩ অক্টোবর ২০১৬
রাজত্বকাল শিরোনাম
পূর্বসূরী
আনন্দ মহীদল
থাইল্যান্ডের রাজা
১৯৪৬ - ২০১৬
উত্তরসূরী
ভজীরলঙ্কম
মনোনীত