ভি. শান্তা
ভি. শান্তা | |
---|---|
জন্ম | মাইলাপুর,চেন্নাই, তামিলনাড়ু | ১১ মার্চ ১৯২৭
জাতীয়তা | ভারতীয় |
মাতৃশিক্ষায়তন | মাদ্রাজ চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় |
পেশা | কর্কট রোগ বিশেষজ্ঞ |
আত্মীয় | চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরমণ (আজু খুড়া) সুব্রহ্মণ্যন চন্দ্রশেখর (খুড়া) |
পুরস্কার | পদ্মশ্রী, ১৯৮৬ রমন ম্যাগসেসে পুরস্কার, ২০০৫ পদ্মভূষণ, ২০০৬ পদ্মবিভূষণ, ২০১৬ |
ভি. শান্তা (জন্ম: ১১ মার্চ ১৯২৭) একজন ভারতীয় কর্কট রোগ বিশেষজ্ঞ এবং চেন্নাইতে অবস্থিত অদ্যার কর্কট রোগ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ। তিনি বিশেষত ভারতের কর্কট রোগীগণের সহজলভ্য এবং কম খরচী চিকিৎসা প্রদান করতে অগ্রণী অবদানের জন্য পরিচিত।[১][২] তিনি সমগ্র জীবন কর্কট রোগীগণের সহায়তার জন্য বিভিন্ন কার্যপন্থা হাতে নিয়েছিলেন।[৩] তিনি কর্কট রোগের অধ্যয়ন, এ থেকে সুরক্ষা এবং চিকিৎসার উপর গবেষণা এবং এর সজাগতা বৃদ্ধির জন্য অহোপুরুষার্থ করেছিলেন।[৪][৫] এর সঙ্গে তিনি কর্কট রোগের বিশেষজ্ঞ এবং কর্কট রোগের উপশাখাসমূহের বিজ্ঞানীসমূহকে উৎসাহিত করেছিলেন।[৬] ভারত সরকার তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৬৮ সালে পদ্মশ্রী, ২০০৬ সালে পদ্মভূষণ এবং ২০১৬ সালে পদ্মবিভূষণ প্রদান করেন। ২০০৫ সালে তিনি এশিয়ার নোবেল পুরস্কার হিসেবে খ্যাত রমন ম্যাগসেসে পুরস্কার লাভ করেছিলেন।
তিনি ১৯৫৫ সাল থেকে অদ্যার কর্কট রোগ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত হয়ে আছেন। এর সঙ্গে তিনি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য হিসেবে কার্যনির্বাহ করেছেন। তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসা উপদেষ্টা কমিটিরও সদস্য ছিলেন।
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]১৯২৭ সালের ১১ মার্চ তারিখে ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্গত মাদ্রাজ স্টেটের মাইলাপুরের (বর্তমান তামিলনাড়ুর চেন্নাই) সম্রান্ত পরিবারে ভি. শান্তার জন্ম হয়েছিল। তাঁর আজু কাকা চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরমণ এবং কাকা সুব্রহ্মণ্যন চন্দ্রশেখর দুজন পদার্থ বিজ্ঞান-এর নোবেল পুরস্কার বিজয়ী।[১][৭] তিনি রাষ্ট্রীয় বালিকা হাইস্কুলে (এখনকার পি.এস. শিবস্বামী উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়) প্রারম্ভিক শিক্ষা গ্ৰহণ করেছিলেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই একজন চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি ১৯৪৯ সালে মাদ্রাজ চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় থেকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্ৰী লাভ করেন। তার তিনবছর পর ১৯৫২ সালে তিনি ডি.জি.অ. এবং ১৯৫৫ সালে প্রসূতি স্ত্ৰীরোগ এবং প্ৰসূতি বিভাগে এম.ডি. ডিগ্রি লাভ করে বিশেষজ্ঞ হিসাবে পরিগণিত হন।
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]১৯৫৪ সালে ডাঃ মুথুলক্ষ্মী রেড্ডী চেন্নাইতে কর্কট রোগ প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছিলেন। সেই সময়ে ডাঃ ভি. শান্তা এম.ডি. অধ্যয়ন করেছিলেন। তিনি ভারত সরকার-এর লোকসেবা পরিষদের পরীক্ষা উত্তীর্ণ হন এবং মাদ্রাজ চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের মহিলা এবং শিশু চিকিৎসালয়ে নিযুক্তি লাভ করেন। ১৯৪০ এবং ১৯৫০র দশকে চিকিৎসা পেশায় অন্তর্ভুক্ত মহিলা ডাক্তাররা সাধারণত স্ত্রীরোগ এবং প্রসূতি বিভাগ নিতেন কিন্তু ভি. শান্তা কিছু অন্য করতে চেয়েছিলেন।তিনি কর্কট প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। এর জন্য তাঁর পরিবারের কিছু সদস্য হতাশও হয়েছিলেন।[৮].
প্রতিষ্ঠানটি ১২টি বিছানাযুক্ত একটি ছোট ঘরে আরম্ভ হয়েছিল।[৭] সামান্য সাজসরঞ্জামে এবং মাত্র দুজন চিকিৎসক যথা তিনি নিজে ও কৃষ্ণমূর্তির সহায়তায় অতি কষ্টে তাঁরা প্রতিষ্ঠানটি চালিয়েছিলেন। তিনবছর কাল সম্মানীয় সদস্য হিসেবে পরিষেবা দেওয়ার পরে প্রতিষ্ঠানটি তাঁকে মাসিক ২০০ টাকা বেতন এবং প্রতিষ্ঠানের পরিসরে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। ১৯৫৫ সালের ১৩ এপ্রিল তারিখ থেকে তিনি প্রতিষ্ঠানের পরিসরে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন।
তিনি তামিলনাড়ু সরকারের স্বাস্থ্যের জন্য গঠন করা রাজ্যিক পরিকল্পনা আয়োগের সদস্য ছিলেন। তিনি কর্কট রোগের প্রারম্ভিক পর্যায়ে ধরা ফেলার পোষকতা করেছিলেন এবং তিনি কর্কট রোগের প্রতি থাকা সাধারণ মানুষের ধারণা পরিবর্তন করতে চেষ্টা করেছিলেন। কর্কট রোগে ভয় এবং নিরাশাজনক দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তন করতে তিনি কার্যপন্থা হাতে নিয়েছিলেন।[৯][১০]
পুরস্কার এবং সম্মান
[সম্পাদনা]তিনি অগ্রণী অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অনেক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পুরস্কার এবং সম্মান লাভ করেছেন। তিনি ভারতীয় চিকিৎসা বিজ্ঞান একাডেমীর ফেলো নির্বাচিত হয়েছিলেন।[১১] ভারত সরকার তাঁকে ১৯৮৬ সালে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ সম্মান পদ্মশ্রী প্রদান করেন।[১২] ২০০৬ সালে ভারত সরকার তাঁকে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ সম্মান পদ্মভূষণ[১৩] এবং ২০১৬ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মান পদ্মবিভূষণ প্রদান করেন।[১][১৪][১৫][১৬]
২০০৫ সালে তিনি এশিয়ার নোবেল পুরস্কার বলে খ্যাত রমন ম্যাগসেসে পুরস্কার লাভ করেন।[১৭] তিনি এই পুরস্কার নিজের প্রতিষ্ঠানে উৎসর্গ করেছিলেন।[১৮]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ "Dr. V. Shanta From Chennai Honoured With Padma Vibhushan For Her Service In The Field Of Cancer"। Logical Indian। ১৩ এপ্রিল ২০১৬। ২৮ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০১৬।
- ↑ Padmanabhan, Geeta (২০১৭-০৯-২৪)। "Express yourself without fear: Dr. V. Shanta"। The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-০২।
- ↑ "Focus should be on early detection of cancer: Dr. V. Shanta"। The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৯-২০। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৫-০৩।
- ↑ "'Early detection of cancer is key'"। The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৫-০২। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৫-০৩।
- ↑ "Dr V Shanta (Columnist profile)"। The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৫-০৩।
- ↑ "Dr. V. Shanta - Chairman"। www.cancerinstitutewia.in (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৮-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-০২।
- ↑ ক খ Umashanker, Sudha (২০১১-০৩-০৫)। "She redefined the C word"। The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৮-০৮।
- ↑ "`An uphill task all along'"। www.frontline.in। ২০১৪-০৬-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৮-১১।
- ↑ "On cancer & terror"। The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১০-০৫-১৪। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৫-০৩।
- ↑ "No parallel"। The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০২-২৮। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৫-০৩।
- ↑ "List of Fellows — NAMS" (পিডিএফ)। National Academy of Medical Sciences। ২০১৬। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মার্চ ২০১৬।
- ↑ "Padma Awards for 1986 in the field of Medicine | Interactive Dashboard"। www.dashboard-padmaawards.gov.in (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৮-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৮-১১।
- ↑ "Padma Awards" (পিডিএফ)। Ministry of Home Affairs, Government of India। ২০১৫। ১৫ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৫।
- ↑ "Padma Vibhushan for Rajinikanth, Dhirubhai Ambani, Jagmohan"। The Hindu। ২৫ জানুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৬।
- ↑ "Padma Awards for the year 2016 | Interactive Dashboard"। www.dashboard-padmaawards.gov.in (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৮-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৮-১১।
- ↑ "Padma Awards list - 2016" (পিডিএফ)। Ministry of Home Affairs, Government of India। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০১৬।
- ↑ "Awardees from 2005 • The Ramon Magsaysay Award Foundation • Honoring greatness of spirit and transformative leadership in Asia"। rmaward.asia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৮-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৮-১১।
- ↑ "Shanta, V."। Ramon Magsaysay Award Foundation। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯।