ভাৎস্লাভ স্মিল
ভাৎস্লাভ স্মিল Vaclav Smil | |
---|---|
জন্ম | ১৯৪৩ (বয়স ৮০–৮১) |
জাতীয়তা | কানাডা |
মাতৃশিক্ষায়তন | প্রাগ কারোলিনুম বিশ্ববিদ্যালয় |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | পরিবেশ বিজ্ঞান, জননীতি শাস্ত্র |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | ম্যানিটোবা বিশ্ববিদ্যালয় |
অভিসন্দর্ভের শিরোনাম | Světová a československá energetika (১৯৬৯) |
ওয়েবসাইট | VaclavSmil.com |
ভাৎস্লাভ স্মিল একজন কানাডীয় বিজ্ঞানী ও নীতি বিশ্লেষক। তিনি কানাডার ম্যানিটোবা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও ভূগোল বিষয়ক সম্মানিত সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক (এমেরিটাস) এবং কানাডীয় রাজকীয় সমিতির (বিজ্ঞান অ্যাকাডেমি) সদস্য।[১] [২]
স্মিল ১৯৪৩ সালে তৎকালীন চেকোস্লোভাকিয়ার পিলজেন শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রাগ শহরের কারোলিনুম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান অনুষদে পড়াশোনা করেন এবং সেখান থেকে ১৯৬৫ সালে পিএইচডি-র সমতুল্য আরএনডিআর সনদ লাভ করেন। ১৯৬৯ সালে সোভিয়েতরা চেকোস্লোভাকিয়া দখল করে নিলে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং সেখানে পেনসিলভেনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭২ সালে ডক্টরেট সনদ লাভ করেন। তখন থেকে তিনি কানাডার ম্যানিটোবা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন।[১][২]
স্মিল শক্তি, পরিবেশ, খাদ্য, অর্থনীতি, জনসংখ্যা ও প্রযুক্তির উন্নতির মধ্যকার আন্তঃক্রিয়া নিয়ে আন্তঃক্ষেত্রীয় গবেষণা পরিচালনা করেন। তিনি এইসব বিষয়ের উপরে প্রায় ৪০টি গ্রন্থের রচয়িতা। ২০১০ সালে মার্কিন সাময়িকী ফরেন পলিসি তাকে বিশ্বের সেরা ১০০ চিন্তাবিদের একজন হিসেবে নির্বাচন করে। ২০১৩ সালে মাইক্রোসফট কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস লেখেন যে "ভাৎস্লাভ স্মিলের চেয়ে অন্য কোনও লেখকের বইয়ের জন্য আমি এত বেশি আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করি না।" (“There is no author whose books I look forward to more than Vaclav Smil.")[১][২][৩] একই বছরে (২০১৩) তিনি কানাডার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জাতীয় সম্মাননা "অর্ডার অফ কানাডা" অর্জন করেন।[৪]
শক্তির ব্যবহার সম্পর্কে স্মিলের মত
[সম্পাদনা]স্মিলের মতে মানবজাতি শক্তির ব্যবহারের তিনটি প্রধান পর্ব অতিবাহিত করেছে এবং বর্তমানে চতুর্থটি শুরু করতে হিমশিম খাচ্ছে। শক্তির ব্যবহারের প্রথম পর্বটি ছিল আগুনের ব্যবহার আবিষ্কার; আগুনের সুবাদে আমরা গাছপালার ভেতরে নিহিত সৌরশক্তি বের করে আনতে সক্ষম হই। এর পরবর্তী শক্তি ব্যবহারের পর্বটি ছিল কৃষিকাজের উদ্ভব। কৃষি সৌরশক্তিকে খাদ্যে রূপান্তরিত ও কেন্দ্রীভূত করে, ফলে মানুষ খাদ্য অন্বেষণ ছাড়াও অন্যান্য কর্মকাণ্ডে মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ পায়। এই দ্বিতীয় পর্বটি মাত্র কয়েক শতাব্দী আগে সমাপ্ত হয়েছে। এই দ্বিতীয় পর্বে গবাদি পশু এবং বহুসংখ্যক মানুষ পেশীশক্তির মাধ্যমে শক্তি সরবরাহ করে। এর পরে শুরু হয় শক্তির ব্যবহারের তৃতীয় পর্ব, যা হল শিল্পায়নের যুগ। এই পর্বে কয়লা, খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের মত জীবাশ্ম জ্বালানিগুলির ব্যবহার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায় এবং যন্ত্রের মাধ্যমে শক্তির উৎপাদন শুরু হয়, যেমন কয়লা শক্তিকেন্দ্র। এক্ষেত্রে বহু লক্ষ লক্ষ বছর আগে প্রকৃতিতে সঞ্চিত জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারই মুখ্য।[৫]
স্মিলের মতে মানবজাতি তার শক্তি ব্যবহারের চতুর্থ পর্বটির সম্মুখীন হয়েছে। এই পর্বে এমন কিছু শক্তির উৎসের ব্যবহার হবে যেগুলি কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস নিঃসরণ করে না। কিন্তু এই চতুর্থ পর্বটি অন্য পর্বগুলি অপেক্ষাকৃত ভিন্ন। স্মিলের মতে ঐতিহাসিকভাবে মানবজাতি প্রতিটি পর্বান্তরে অপেক্ষাকৃত দুর্বল শক্তির উৎসের বদলে অপেক্ষাকৃত বেশি ঘনীভূত শক্তির উৎসে উত্তরণ ঘটিয়েছে। যেমন কাঠ ও অন্যান্য বায়োম্যাস বা জৈবভর জ্বালানিগুলির “শক্তির ঘনত্ব” অপেক্ষাকৃত কম। এর বিপরীতে কয়লা ও তেল প্রতি গ্রামে অনেক বেশি তাপশক্তি উৎপাদন করে এবং এগুলি আহরণ করার সময় শক্তিঘন অবস্থায় পাওয়া যায় অর্থাৎ এগুলি আহরণ করতে অপেক্ষাকৃত কম আয়তনের ভূখণ্ড লাগে। কিন্তু চতুর্থ পর্বে এসে মানবজাতি আবার শক্তির বিবেচনায় হালকা উৎসে ফেরত যাওয়ার চেষ্টা করছে, কেন না সৌর ও বায়ুপ্রবাহ শক্তির মত পুনর্নবায়নযোগ্য শক্তিগুলি জীবাশ্ম জ্বালানির মত এত ঘনীভূত রূপে বিরাজ করে না। একমাত্র নিউক্লীয় শক্তিই অপেক্ষাকৃত বেশি শক্তিঘন, কিন্তু এটি খরচসাপেক্ষ ও ঝুঁকিপূর্ণ। সুতরাং মানবজাতি যদি পুনর্নবায়নযোগ্য শক্তিতে উত্তরণ ঘটায়, তাহলে সেই শক্তি আহরণের জন্য বর্তমানের চেয়ে ১০০ এমনকি ১০০০ গুণ বেশি ভূমির প্রয়োজন, যা ভবিষ্যতে কৃষি, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের মানের উপর বিশাল নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বর্তমানে সৌর ও বায়ুপ্রবাহশক্তি বিশ্বের শক্তির উৎসের মাত্র ১%-এর প্রতিনিধিত্ব করছে। অধিকতর দক্ষ সৌরকোষ এবং উচ্চ-ধারণক্ষমতার তড়িৎকোষ বা ব্যাটারি উদ্ভাবন না হলে আরও বহু দশক ধরে বিশ্ব জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করেই চলবে। বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশগুলির অর্থনৈতিক উত্থানের কারণে বিশ্বের ৯০% শক্তির উৎসই হল জীবাশ্ম জ্বালানি, যে অনুপাতটি বিংশ শতাব্দীর চেয়েও বেশি। শক্তির ব্যবহারের চতুর্থ পর্বে পূর্ণ ও সফল উত্তরণ ঘটাতে মানবজাতিকে তাই সুদীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হতে পারে।[৫]
স্মিলের রচিত গ্রন্থ ও নিবন্ধের তালিকা
[সম্পাদনা]গ্রন্থ
[সম্পাদনা]- 2017 : Energy and Civilization: A History The MIT Press আইএসবিএন ৯৭৮০২৬২০৩৫৭৭৪
- 2015 : Natural Gas: Fuel for the 21st Century. Wiley আইএসবিএন ৯৭৮১১১৯০১২৮৬৩
- 2015 : Power Density: A Key to Understanding Energy Sources and Uses The MIT Press আইএসবিএন ৯৭৮০২৬২০২৯১৪৮
- 2013 : Making the Modern World: Materials and Dematerialization Wiley আইএসবিএন ৯৭৮-১১১৯৯৪২৫৩৫
- 2013 : Made in the USA: The Rise and Retreat of American Manufacturing The MIT Press আইএসবিএন ৯৭৮-০২৬২০১৯৩৮৫
- 2013 : Should We Eat Meat? Evolution and Consequences of Modern Carnivory Wiley আইএসবিএন ৯৭৮-১১১৮২৭৮৭২৭
- 2013 : Harvesting the Biosphere; What We Have Taken from Nature The MIT Press আইএসবিএন ৯৭৮-০২৬২০১৮৫৬২
- 2012 : Japan’s Dietary Transition and Its Impacts The MIT Press আইএসবিএন ৯৭৮-০৩১৩৩৮১৭৭৫
- 2010 : Prime Movers of Globalization: The History and Impact of Diesel Engines and Gas Turbines The MIT Press Cambridge, 261 p. আইএসবিএন ৯৭৮-০-২৬২-০১৪৪৩-৪
- 2010 : Energy Myths and Realities: Bringing Science to the Energy Policy Debate The AEI Press, Washington, D.C., 212p. আইএসবিএন ৯৭৮-০-৮৪৪৭-৪৩২৮-৮
- 2010 : Energy Transitions: History, Requirements, Prospects. Praeger Santa Barabara, CA, 178 p. আইএসবিএন ৯৭৮-০-৩১৩-৩৮১৭৭-৫
- 2010 : Why America is Not a New Rome MIT Press Cambridge, 322 p. আইএসবিএন ৯৭৮-০-২৬২-১৯৫৯৩-৫[৬]
- 2008 : Global Catastrophes and Trends: The Next Fifty Years, The MIT Press, Cambridge, xi + 307 p. আইএসবিএন ৯৭৮-০-২৬২-১৯৫৮৬-৭
- 2008 : Oil: A Beginner's Guide Oneworld Publications আইএসবিএন ৯৭৮১৮৫১৬৮৫৭১৪
- 2008 : Energy in Nature and Society: General Energetics of Complex Systems, The MIT Press, Cambridge, xi + 480 p.
- 2006 : Energy: A Beginner's Guide Oneworld Publications আইএসবিএন ৯৭৮১৮৫১৬৮৪৫২৬
- 2006 : Transforming the Twentieth Century: Technical Innovations and Their Consequences, Oxford University Press, New York, x + 358 p.
- 2005 : Creating the Twentieth Century: Technical Innovations of 1867-1914 and Their Lasting Impact, Oxford University Press, New York, xv + 350 p.
- 2004 : China’s Past, China’s Future, RoutledgeCurzon, New York et Londres, xvi + 232 p.
- 2003 : Energy at the Crossroads Global Perspectives and Uncertainties, The MIT Press, Cambridge, xiv + 427 p.
- 2002 : The Earth's Biosphere: Evolution, Dynamics and Change, The MIT Press, Cambridge, xxviii + 360 p.
- 2001 : Enriching the Earth: Fritz Haber, Carl Bosch and the Transformation of World Food Production, The MIT Press, Cambridge, xvii + 411 p.
- 2000 : Feeding the World: A Challenge for the 21st Century, The MIT Press, Cambridge, xxviii + 360 p.
- 2000 : Cycles of Life: Civilization and the Biosphere, Scientific American Library, New York, x + 221 p.
- 1998 : Energies: An Illustrated Guide to the Biosphere and Civilization, The MIT Press, Cambridge, xi + 217 p.
- 1994 : Energy in World History, Westview Press, Boulder, xviii + 300 p.
- 1993 : China's Environment: An Inquiry into the Limits of National Development, M. E. Sharpe, Armonk, xix + 257 p. Winner of the 1995 Joseph Levenson Book Prize.
- 1993 : Global Ecology: Environmental Change and Social Flexibility, Routledge, London, xiii + 240 p.
- 1991 : General Energetics: Energy in the Biosphere and Civilization, John Wiley, New York, xiii + 369 p.
- 1988 : Energy in China's Modernization, M.E. Sharpe, Armonk, xiv + 250 p.
- 1987 : Energy Food Environment: Realities Myths Options, Oxford University Press, Oxford, ix + 361 p.
- 1985 : Carbon Nitrogen Sulfur: Human Interference in Grand Biospheric Cycles, Plenum Press, New York, xv + 459 p.
- 1984 : The Bad Earth: Environmental Degradation in China, M.E. Sharpe, Armonk, xvi + 245 p.
- 1983 : Biomass Energies: Resources, Links, Constraints, Plenum Press, New York, xxi + 453 p.
- 1982 : (in collaboration with P. Nachman and T.V. Long, II) Energy Analysis in Agriculture: An Application to U.S. Corn Production, Westview Press, Boulder, xvi + 191 p.
- 1980 : (in collaboration with W. E. Knowland) Energy in the Developing World, Oxford University Press, Oxford, 386 p.
- 1976 : China's Energy: Achievements, Problems, Prospects, Praeger Publishers, New York, xxi + 246 p.
নিবন্ধ
[সম্পাদনা]- "Sputnik at 60," by Vaclav Smil, IEEE Spectrum, Posted 26 Sep 2017, 19:00 GMT
- "A Skeptic Looks at Alternative Energy," by Vaclav Smil, IEEE Spectrum, July 2012
- Energy innovation as a process: Lessons from LNG. Master Resource: A Free-Market Energy Blog. January 11, 2010.
- Two decades later: Nikkei and lessons from the fall. The American, December 29, 2009.
- The Iron Age & coal-based coke: A neglected case of fossil-fuel dependence. Master Resource: A Free-Market Energy Blog. September 17, 2009.
- U.S. energy policy: The need for radical departures. Issues in Science and Technology Summer 2009:47-50.
- Long-range energy forecasts are no more than fairy tales. Nature 453:154; 2008.
- Moore’s curse and the great energy delusion. The American 2(6): 34-41; 2008.
- Water news: bad, good and virtual. American Scientist 96:399-407; 2008.
- On meat, fish and statistics: The global food regime and animal consumption in the United States and Japan. Japan Focus, October 19, 2008. .
- James N. Galloway, Marshall Burke, G. Eric Bradford, Rosamond Naylor, Walter Falcon, Ashok K. Chapagain, Joanne C. Gaskell, Ellen McCullough, Harold A. Mooney, Kirsten L. L. Oleson, Henning Steinfeld, Tom Wassenaar and Vaclav Smil. 2007. International trade in meat: The tip of the pork chop. Ambio 36:622-629.
- The two prime movers of globalization: history and impact of diesel engines and gas turbines. Journal of Global History 3:373-394; 2007.
- Global material cycles. Encyclopedia of Earth, June 2, 2007.
- The unprecedented shift in Japan’s population: Numbers, age, and prospects. Japan Focus, May 1, 2007.
- Light behind the fall: Japan’s electricity consumption, the environment, and economic growth. Japan Focus, April 2, 2007.
- 21st century energy: Some sobering thoughts. OECD Observer; 2006.
- Peak oil: A catastrophist cult and complex realities. World Watch 19: 22-24; 2006.
- Naylor, R., Steinfeld, H., Falcon, W., Galloway, J., Smil, V., Bradford, E., Alder, J., Mooney, H. Losing the links between livestock and land. Science 310:1621-1622
- The next 50 years: Unfolding trends. Population and Development Review 31: 605-643; 2005.
- Feeding the world: How much more rice do we need? In: Toriyama K., Heong K.L., Hardy B., eds. Rice is life: scientific perspectives for the 21st century. Proceedings of the World Rice Research Conference held in Tokyo and Tsukuba, Japan, 4–7 November 2004. Los Baños (Philippines): International Rice Research Institute, pp. 21–23.
- The next 50 Years: Fatal discontinuities. Population and Development Review 31: 201-236; 2005.
- Improving efficiency and reducing waste in our food system. Environmental Sciences 1:17-26; 2004.
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ Vaclav Smil, MIT Press
- ↑ ক খ গ Vaclav Smil, Americal Scientist
- ↑ Vaclav Smil, The Breakthrough
- ↑ "Appointments to the Order of Canada"। Governor General of Canada। জুন ২৮, ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ২৪, ২০১৮।
- ↑ ক খ Paul Voosen (মে ২১, ২০১৮)। "Meet Vaclav Smil, the man who has quietly shaped how the world thinks about energy"। Science। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯।
- ↑ "Archived copy"। ২০১০-১১-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৩-১৭।