ভাঙ্গন বাটা

অন্য ব্যবহারের জন্য ভাঙন বাটা দেখুন।

ভাঙ্গন বাটা Labeo boga
ভাঙ্গন মাছ Labeo boga
সংরক্ষণ অবস্থা
ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত  (আইইউসিএন ৩.১)
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ:	Animalia
পর্ব:	Chordata
উপপর্ব:	Vertebrata
মহাশ্রেণী:	Osteichthyes
শ্রেণী:	Actinopterygii
বর্গ:	Cypriniformes
পরিবার:	Cyprinidae
গণ:	Labeo
প্রজাতি:	Labeo boga
দ্বিপদী নাম
Labeo boga (Hamilton, 1822)
প্রতিশব্দ
Cirrhina boga (Hamilton, 1822) Gobio boga (Hamilton, 1822) Cyprinus boga Hamilton, 1822 Cyprinus falcatus Bloch, 1795

ভাঙ্গন বাটা বা ভাঙ্গন (বৈজ্ঞানিক নাম: Labeo boga) যা ভারতের ব্রহ্মপুত্র ও অন্যান্য প্রধান প্রধান নদী, পাকিস্তান, নেপাল, বাংলাদেশ ও মায়ানমারে পাওয়া যায়। ল্যাটিন শব্দ Labeo অর্থ বড় ঠোঁটধারী অর্থাৎ এদের মাংসল পুরু ঠোট উপস্থিত অন্যদিকে boga শব্দটি এসেছে এর স্থানীয় বাংলা নাম থেকে। এই মাছ স্থানীয়ভাবে ভাঙ্গন, ভাঙ্গন বাটা এবং বাণিজ্যিক ভাবে বাহারি মাছ বা Violet Shark হিসেবে পরিচিত। এরা জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণী খেয়ে খাদ্যচক্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এরা উদ্ভিদের পঁচা অংশ খেয়ে জলাশয়কে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে ভূমিকা পালন করে থাকে।

বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের রক্ষিত বন্যপ্রাণীর তালিকার তফসিল ২ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

দৈহিক গঠন

এদের দেহ লম্বা। পৃষ্ঠীয়প্রান্ত অঙ্কীয় প্রান্তের চেয়ে সামান্য উত্তল। মুখের তুণ্ড চোয়ালের উপর মধ্যমভাবে অভিক্ষিপ্ত এবং অল্প সংখ্যক ছিদ্রবিশিষ্ট তবে এতে কোন পার্শ্বীয় লোব থাকে না। চোখ তুলনামূলক বড় এবং তুলনামূলকভাবে মাথার উপরের দিকে অবস্থিত যা অঙ্কীয় তল থেকে দেখা যায় না। মুখ সংকীর্ণ, ঠোঁট বেশ পুরু। অধর তথা নিচের ঠোঁট যোজকের মাধ্যমে ইসমাসের সাথে সংযুক্ত। উপরের চোয়ালে ক্ষুদ্রাকার স্পর্শী উপস্থিত। পৃষ্ঠ পাখনা তুলনামূলকভাবে পুচ্ছ পাখনার গোঁড়ার চেয়ে তুণ্ডের নিকট থেকে শুরু হয়েছে যা শ্রোণী পাখনার সামান্য সম্মুখে পৃষ্ঠীয় দিকে অবস্থিত।

পৃষ্ঠদেশ ধূসর কিন্তু উদর ও পার্শ্বদেশ রূপালি বর্ণের। মাথার শেষ প্রান্তে পৃষ্ঠদেশ বরাবর কালো দাগ উপস্থিত। কানকো তামাটে বর্ণের। পাখনাসমূহ কাল দাগ যুক্ত এবং বক্ষপাখনা ছাড়া অন্যান্য পাখনাসমূহে কিঞ্চিৎ লালচে ভাব দেখা যায়। পার্শ্বরেখা বরাবর ৩৭-৩৯ টি মতান্তরে ৩৯টি আঁইশ উপস্থিত।

বিস্তৃতি

বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও মায়ানমার অঞ্চলে এ প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। এরা প্রধানত নদী, খাল, বিল, হাওর-বাওরে বসবাস করে । এরা তলদেশ অধিবাসী। উষ্ণজলের এই মাছ জলাশয়ের তলদেশ ও উপরিতলে বাস করে এবং স্বাদুপানির জলাশয়ের অভ্যন্তরেই অভিপ্রয়াণ করে।

খাদ্যাভ্যাস

প্রকৃতিতে এরা প্রধানত তলাবাসী প্রাণী খেয়ে থাকে। সাধারণত প্ল্যাঙ্কটন, শৈবাল, ছোট ছোট জলজ উদ্ভিদ, ক্রাশটেশিয়ানস ইত্যাদি খাবার হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। এরা তলদেশের অধিবাসী এবং পচা উদ্ভিদ, শ্যাওলা এবং প্ল্যাঙ্কটন ইত্যাদি খাবার হিসেবে খেয়ে থাকে।

প্রজনন

এদের প্রজনন কাল এপ্রিল-জুন, গ্রীষ্মের শুরুতে যখন খুব বেশি বৃষ্টি তখন এরা প্রজনন করে থাকে। এরা ভরা বর্ষায় প্রজনন করে থাকে।

বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থা এবং সংরক্ষণ

আইইউসিএন বাংলাদেশ (২০০০) এর লাল তালিকা অনুযায়ী এই প্রজাতিটি বাংলাদেশে মহাবিপন্ন হিসেবে বিবেচিত।

আরও দেখুন

• বাংলাদেশের মাছের তালিকা
• বাংলাদেশের স্বাদুপানির মাছের তালিকা
• বাংলাদেশের সংরক্ষিত মাছের তালিকা
• মৎস্যবিদ্যা