ব্যাবিলনীয় বন্দিদশা
বাবিলীয় নির্বাসন বা বাবিলীয় বন্দিদশা (হিব্রু ভাষায়: גלות בבל; আরবি: الأسر البابلي) হল ইহুদি ইতিহাসের সেই সময়কাল যখন যিহূদী–বাবিলীয় যুদ্ধে তাদের পরাজয় ও যিরূশালেমস্থ শলোমনের মন্দির ধ্বংসের পর প্রাচীন যিহূদা রাজ্যের বিপুল সংখ্যক যিহূদীয়দের নব্য-বাবিলীয় সাম্রাজ্যের রাজধানী শহর বাবিলে বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাটি তানাখ তথা হিব্রু বাইবেলে বর্ণিত হয়েছে এবং এর ঐতিহাসিকতা প্রত্নতাত্ত্বিক ও অ-বাইবেলীয় প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত।
৬০৫ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে কর্কমীশের যুদ্ধের পর বাবিল-রাজ দ্বিতীয় নেবুচাদনেজার যিরূশালেম অবরোধ করেন, যার ফলে যিহূদীয় রাজা যিহোয়াকিম শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছিলেন।[১] দ্বিতীয় নবূখদ্নিৎসরের রাজত্বের চতুর্থ বছরে যিহোয়াকীম অধিকতর শ্রদ্ধা জানাতে অস্বীকৃতি জানান, যার ফলে দ্বিতীয় নবূখদ্নিৎসরের সপ্তম বছরে নগরটি আরেকটি অবরোধের শিকার হয় যা যিহোয়াকিমের মৃত্যু ও তার উত্তরাধিকারী যিহোয়াখিন, তার দরবার ও অনেকের বাবিলে নির্বাসনে পর্যবসিত হয়; যিহোয়াখিনের উত্তরসূরি সিদিকিয় ও অন্যরা দ্বিতীয় নেবুচাদনেজারের ১৮শ বছরে নির্বাসিত হয়েছিল; পরবর্তীকালে দ্বিতীয় নবূখদ্নিৎসরের শাসনকালের ২৩শ বছরে নির্বাসন ঘটে। বাইবেলের বিবরণে প্রদত্ত তারিখ, নির্বাসন সংখ্যা ও নির্বাসিতের সংখ্যার মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে।[২] এই নির্বাসনের তারিখগুলো প্রথমত খ্রিস্টপূর্ব ৫৯৭ অব্দ, অন্যগুলো যথাক্রমে ৫৮৭/৫৮৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দ ও ৫৮২/৫৮১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ।[৩]
৫৩৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ওপিসের যুদ্ধে হাখমানেশি পারসিক সাম্রাজ্য ও এর প্রতিষ্ঠাতা রাজা মহান কুরুশের কাছে নব্য-বাবিলীয় সাম্রাজ্যের পতনের পর পারসিকরা নির্বাসিত যিহূদীয়দের যিহূদায় প্রত্যাবর্তনের অনুমতি দেয়।[৪][৫] বাইবেলের ইষ্রার পুস্তক অনুসারে, যিরূশালেমে দ্বিতীয় মন্দির পুনর্নির্মাণ শুরু হয় আনু. ৫৩৭ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে নতুন পারসিক প্রদেশ যিহূদ মদিনাতায়। এই সমস্ত ঘটনা ইহুদি জনগণের বিকশিত ইতিহাস ও সংস্কৃতির জন্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত ইহুদিধর্মের বিকাশে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছিল।
প্রত্নতাত্ত্বিক অধ্যয়ন প্রকাশ করেছে যে, যদিও যিরূশালেম শহরটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, নির্বাসনের সময়কালেও যিহূদা রাজ্যের অন্যান্য অংশে বসবাস অব্যাহত ছিল। নির্বাসিতদের বেশিরভাগই তাদের স্বদেশে ফিরে আসেনি, পরিবর্তে পশ্চিম ও উত্তর দিকে ভ্রমণ করেছিল। অনেকেই অধুনা উত্তর ইসরায়েল, লেবানন ও সিরিয়াতে বসতি স্থাপন করেছিল। ইরাকি ইহুদি, পারসিক ইহুদি, জর্জীয় ইহুদি ও বুখারি ইহুদি সম্প্রদায়গুলির পূর্বপুরুষদের বৃহত্তর অংশ এই নির্বাসিতদের থেকে উদ্ভূত বলে মনে করা হয়। এই সম্প্রদায়গুলি এখন মূলত ইস্রায়েলে কেন্দ্রীভূত।[৬][৭]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Coogan, Michael (২০০৯)। A Brief Introduction to the Old Testament। Oxford: Oxford University Press।
- ↑ Moore, Megan Bishop; Kelle, Brad E. (২০১১)। Biblical History and Israel S Past: The Changing Study of the Bible and History। Wm. B. Eerdmans Publishing। পৃষ্ঠা 357–58। আইএসবিএন 978-0802862600। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০১৫।
Overall, the difficulty in calculation arises because the biblical texts provide varying numbers for the different deportations. The HB/OT’s conflicting figures for the dates, number and victims of the Babylonian deportations become even more of a problem for historical reconstruction because, other than the brief reference to the first capture of Jerusalem (597) in the Babylonian Chronicle, historians have only the biblical sources with which to work.
- ↑ Dunn, James G.; Rogerston, John William (২০০৩)। Eerdmans Commentary on the Bible। Wm. B. Eerdmans Publishing। পৃষ্ঠা 545। আইএসবিএন 978-0-8028-3711-0।
- ↑ Jonathan Stökl, Caroline Waerzegger (২০১৫)। Exile and Return: The Babylonian Context। Walter de Gruyter GmbH & Co। পৃষ্ঠা 7–11, 30, 226।
- ↑ Encyclopaedia Judaica। 3 (2nd সংস্করণ)। পৃষ্ঠা 27।
- ↑ The Wellspring of Georgian Historiography: The Early Medieval Historical Chronicle The Conversion of Katli and The Life of St. Nino, Constantine B. Lerner, England: Bennett and Bloom, London, 2004, p. 60
- ↑ "When Iran Welcomed Jewish Refugees"।