ব্যবহারকারী:Izile/খেলাঘর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী

মেজর

চিত্র:মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী.jpg

টাইগার কমান্ড্যান্ট

অন্য নাম মেজর এ,ডব্লিউ,চৌধুরী
জন্ম ১ ফেব্রুয়ারি ১৯১৪

হবিগঞ্জ জেলা,পূর্ব বাংলা,ব্রিটিশ ভারত

মৃত্যু ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৫ (বয়স ৫০)

ঢাকা,পূর্ব পাকিস্তান

সমাধি ঢাকার বাবুপুরা ‘মরিয়ম ছালেহা মসজিদ’ প্রাঙ্গণ
আনুগত্য ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)

পাকিস্তান (১৯৪৭ সাল পরবর্তী)

সার্ভিস/শাখা পাকিস্তান সেনাবাহিনী
কার্যকাল ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী ১৯৪৭ ইং পূর্ববর্তী

পাকিস্তান সেনাবাহিনী ১৯৪৭ ইং পরবর্তী

পদমর্যাদা মেজর B.I.A.

মেজর P.A. সুপারেন্টেন্ডেন্ট অফ পুলিশ

সার্ভিস নম্বর আই,ই সি ৫৭২
নেতৃত্বসমূহ ১ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট

১ম পাঞ্জাব রেজিমেন্ট ৪থ্ মাদ্রাজ রেজিমেন্ট পূর্ব পাকিস্তান পুলিশ

যুদ্ধ/সংগ্রাম দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৪৭-১৯৪৮ ১ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট (প্রশিক্ষণ) প্রতিষ্ঠায় অবদান

পুরস্কার যুদ্ধ মেডেল ১৯৩৯-১৯৪৫

বার্মা স্টার

মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী[১] ছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আংশগ্রহণকারি যুদ্ধ ফেরত জ্যেষ্ঠ বাঙ্গালী সেনাকর্মকর্তা যিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রশিক্ষণ রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন। তিনি রেজিমেন্টের পিতৃতুল্য অধিনায়কদের অন্যতম।

জন্ম[সম্পাদনা]

আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী (১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ হতে ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দ) ১৯১৪ সলের ১লা ফেব্রুয়ারি প্রাক্তন ব্রিটিশ ভারতের হবিগঞ্জ জেলার দরিয়াপুর গ্রামের প্রখ্যাত মুসলীম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর পিতা ছিলেন খান সাহেব আবদুর রব চৌধুরী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ।

শিক্ষা[সম্পাদনা]

আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী সেন্ট গ্রেগরিজ উচ্চ বিদ্যালয় ঢাকা থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং ১৯৩৭ সালে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর করেন। তিনি খেলাধুলায় তুখোড় ছিলেন খেলাধুলায় বিশ্ববিদ্যালয় ব্লূ ছিলেন। তিনি ডক্টর মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর ছাত্র ছিলেন এবং তিনি জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক ছিলেন তার বন্ধু ও সহপাঠী।

সেনাবাহিনীর জীবন[সম্পাদনা]

মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধু্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধাায়ন শেষ করে ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর হলে তিনি ব্রিটিশ ভারতের দেরাদুন মিলিটারী একাডেমী থেকে অফিসার হিসেবে প্রশিক্ষন নেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুতে তিনি ১৫.৫.১৯৪১ সালে উপমাহাদেশের প্রবীণতম রেজিমেন্ট চতুর্থ মাদ্রাজ রেজিমেন্টে জরুরী যুদ্ধ কমিশনড অফিসার হিসাবে ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে সেকেন্ড লেফটেনেন্ট পদে কমিশন প্রাপ্ত হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জেনারেল স্যার এডওয়ার্ড কুইনিনের অধিনে ব্রিটিশ দশম আর্মি গঠিত হলে তিনি সহ তাঁর রেজিমেন্ট মধ্যপ্রচ্যে ইরাকের বসরায় অবস্থিত ব্রীটিশ দশম আর্মির সাব এরিয়া হেডকোয়াটারে নিযুক্ত হন । ব্রীটিশ দশম আর্মি অবলুপ্ত হলে তিনি যুদ্ধরত বার্মা কেম্পেইনের সেলোন (স্রীলংকা) সাব এরিয়া হেডকোয়াটারে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১ম পাঞ্জাব রেজিমেন্টের কর্মকর্তা হিসেবে উত্তর পশ্চীম সীমান্ত প্রদেশের মুলতান ঝোহাব ব্রিগেড হেডকোয়াটারে রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রবীণতম অধিনায়ক ব্রিগেডিয়র মোহাম্মদ কিয়ানার অধিনে ব্রিগড ক্যাপ্টেন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দেশবিভাগের পর মাদ্রাজ রেজিমেন্টকে ১ম পাঞ্জাব রেজিমেন্টে রূপান্তর করা হলে ১ম পাঞ্জাব রেজিমেন্টের কর্মকর্তা হিসেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর রূপান্তর ও সংহতকরণের কাজে সুপ্রিম আর্মি হেডকোয়াটার পাকিস্তান সেল দিল্লিতে জোগ দেন। পাকিস্তানের সৃষ্টির পর রাওালপিণ্ডীতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা ডকট্রেনে বদলি করা হয়। ১৯৪৭-১৯৪৮ সালের পাক-ভারত যুদ্ধ কালীন সময়ে মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী ১ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রশিক্ষণ রেজিমেন্টের অধিনায়েকত্ব ও গঠনের দায়িত্ব লাভ করেন। মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধু্রী ১ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রশিক্ষণ রেজিমেন্টের সর্ব প্রথম অধিনায়ক (অফিসার কম্যান্ডিং) হিসেবে কমান্ড লাভ করেন । প্রতিবন্ধকতা প্রতিকুতা সত্বেও সিনিয়র টাইগা/রসের ভিত্তি রচনা করেন। উল্লেখ্য ১৯৪৭ সালে দেশে যুদ্ধ অবস্থা থাকা সত্ত্বেও দেশের পূর্ব অংশ প্রতিরক্ষায় ৩/৮ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের একটি ও সদ্যজাত ১ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি সহ মোট দুটি ব্যাটালিয়ন নিয়ে একটি দুর্বল ব্রিগেড ছাড়া আর কিছু ছিল না পূর্ব বাংলাকে অরক্ষিত রাখে সরকার । এতে পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির শুরুতেই পূর্ব বাংলার প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের ঔপনিবেশিক মনোভাবের ও শোষনেরনীতি বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠা[সম্পাদনা]

বাংলার সামরিক ইতিহাস অনেক পুরোনো ও সমৃদ্ধ বিভিন্ন সময়ে বাংলার স্বাধীন সালতানাত ও রাজ্য সমূহের সেনা ও নৌ বাহিনীসমূহ আলোচিত ও নিষ্পত্তিমূলক যুদ্ধ করে এরমধ্যে মারাঠা , মোঘল ও ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য । বাংলার পক্ষে লড়াই করেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা , মীরকাসেম ,শেরশাহ ও বাংলার স্বাধীন বার ভুঁইয়াদের নাম উল্লেখযোগ্য। তৎকালীন ভিনদ্দেশী হানাদার শক্তিগুল বাংলায় কখনো স্থায়ী আধিপত্য লাভ করতে পারে নাই ,বাংলা এক লড়াকু মানুষদের অজেয় দেশ। বাংলাদেশ সেনাসবাহিনিকে বাংলার মোঘল সেনাবাহিনীর উত্তরসূরী বলা হয়। মোঘল সেনাবাহিনী থেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর " বেঙ্গল আর্মি " গঠিত হলে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর দুঃশাসনের এর বিরুদ্ধে বেঙ্গল আর্মির মূলত মুসলমান সীপাহিদের দ্বারা সংগঠিত ১৮৫৭ সালের সীপাহি বিদ্রহের পর থেকে ব্রিটিশ সরকার দীর্ঘ কাল বাঙ্গালীদের আর্মড সার্ভিস থেকে বঞ্ছিত রাখে এই অজুহাতে যে বাঙ্গালী যোদ্ধা জাতী না। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে ব্রিটিশ বাংলা প্রদেশ থেকে ১৯১৬ সালে ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৪৯তম রেজিমেন্ট অফ বেঙ্গল নেটিভ ইনফ্যান্ট্রিতে সেনা নিয়োগ শুরু হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মেসপটেমীয়ায় তারা অসীম সাহসিকতা ও বীরত্ব প্রদর্শন। পরবর্তীতে ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে ব্রিটিশ সরকার পুনরায় বাংলা প্রদেশের দারস্থ হয় এবং ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে বাঙ্গালী সেনা নিয়োগ শুরু হয় বাঙ্গালী মুসলমান সেনারা উভয় বিশ্বযুদ্ধে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্ব প্রদর্শন করলে ব্রিটিশদের তথাকথিত "মার্শালরেস তত্ত্ব" ভুল প্রমাণিত হয়। পশ্চিম পাকিস্তানিরা "মার্শালরেস তত্ত্বের" দোহাই দিয়ে ফের বাঙ্গালীদের আর্মড সার্ভিস ও সেনাবাহিনী থেকে বঞ্ছিত রাখতে সচেষ্ট হয়। সেনাবাহিনী থেকে দীর্ঘ কাল বঞ্চিত বাঙ্গালীদের নিজেদের একটি বাহিনীর প্রয়োজন ও আকাঙ্ক্ষা দীর্ঘ দিনের পাকিস্তান সৃষ্টি হলে কিছুটা যেন আশার আলো দেখেন বাঙ্গালী সেনা ও কর্মকর্তাগণ ।দেশ বিভাগের সময় ১৫ই আগস্ট ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধান ছিলেন ফিল্ড মার্শাল ক্লাউদে অচিনলেক, মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর রূপান্তরকালীন সেনাসদর সুপ্রিম কমান্ডারস হেডকোয়ার্টার ইনফেেট্রী ডিরেকটরিয়েট পাকিস্তান সেল দিল্লীতে কর্মরত ছিলেন তখন। পাকিস্তান সৃষ্টি হলে পাকিস্তান সেনাসদর রাওালপিণ্ডীতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা ডকট্রেনে যোগ দেন.পূর্ব বাংলার যুদ্ধফেরত বাঙালি মুসলমান সেনাদের নিয়ে সামরিক গুরুত্ব বিবেচনায় পূর্ণাঙ্গ বাঙ্গালী প্রধান একটি রেজিমেন্ট গঠনের অনুমোদনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন । পরবর্তীতে বিষয়টি জোড়াল ভাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল ক্লাউদে অচিনলেকের মাধ্যমে পাকিস্তান ন্যাশনাল গার্ড গঠনের প্রস্তাবকে স্তগিত করে পূর্ব বাংলার বাঙ্গালীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ একটি রেজিমেন্ট গঠনের সামরিক গুরুত্ব মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ তথা পাকিস্তান সরকারের আমলে আনলে পাকিস্তান সরকারতা অনুমোদন করেন । পরবর্তীতে ১৫ আগস্ট ১৯৪৭ সালে জেনারাল ফ্রাংক ওয়াল্টার মেসারভী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রথম সেনাপ্রধান নিযুক্ত হন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত জ্যেষ্ঠ বাঙালি সেনাকর্মকর্তা মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী ২৮শে ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ সালে ১ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রশিক্ষণ রেজিমেন্ট গঠন ও প্রশিক্ষণের দায়ীত্ব নিয়ে প্রশিক্ষণ রেজিমেন্টের সর্ব প্রথম অধিনায়ক (অফিসার কমান্ডিং) হিসেবে রেজিমেন্টের কমান্ড লাভ করেন। পশ্চিম পাকিস্তানি উর্ধ্বতন সেনা অধিকারীদের অসহযোগিতা অপর্যাপ্ত সরঞ্জাম ও যুদ্ধাবস্তা থাকা সত্বেও ১ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সিনিয়র টাইগারর্স কে গঠন ও প্রশিক্ষন প্রদান করেন। অনুমান করা যায় যুদ্ধ অবস্থা র মাঝে খুব অল্প সময়ে রেজিমেন্ট গঠন ও যুদ্ধ সক্ষম করে তোলা কতটা দুরূহ ও কস্টসাধ্য ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখেনা ,১ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের গঠনে তিনি ও তার সহকর্মীগণের ত্যাগ ও অবদান অপরিসীম। জেনারেল এমএজি ওসমানি প্রলিপ্ত তাঁর সম্মন্ধে উল্লেখ করে বলেন ; "এটি অত্যন্ত সিনিয়র টাইগার অফিসার সম্পর্কে (যদিও রেজিমেন্টে তাঁর সার্ভিস কালীন সময় রেজিমেন্টের "নাম দি গেরে" বিকাশ করেনি) যার রেজিমেন্টটি সবেমাত্র জন্মগ্রহণের সময় রেজিমেন্টে অবদান ছিল খুব, দুর্দান্ত। মানে প্রয়াত মেজর এ ,ডব্লিউ, চৌধুরী, যিনি ট্রেনিং কোম্পানিকে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রথম ব্যাটালিয়নে উত্থাপন ও কমান্ড করেছিলেন যখন এটি উত্থাপিত হয়েছিল এবং তার রেফারেন্স রেজিমেন্টাল ইতিহাসে পাওয়া যাবে । "

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে ব্রিটিশ সেনাঅধিকারীগণ ভারতীয় সেনার্মকর্তাদের সাথে যেরূপ বর্ণবাদী আচরণ করত পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে পশ্চিম পাকিস্তানি সেনা অধিকারীগণ বাঙ্গালী সেনার্মকর্তাদের সাথে সেরূপ বর্ণবাদী আচরণ করে। বলা বাহুল্য পাঞ্জাবী ও পাঠান প্রধান সেনাবাহিনীতে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙ্গালী সেনারা অবিচার ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছিল যা মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী সহ বাঙ্গালী সেনা কর্মকর্তাগণকে ক্ষুব্ধ করে। মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অন্যান্য রেজিমেন্টের ন্যায় ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের উন্নয়ন ও সমতা রক্ষার লক্ষ্যে এবং রেজিমেন্ট পরিচালনায় অসংলগ্নতা দূরের জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সেনাসদর এবং জি,,ও,সি সাব এরিয়া পূর্ব পাকিস্তান মেজর জেনারেল আইয়ুব খানের নিকট প্রতিকার ও সংস্কারের প্রস্তাব করেন। জি,,ও,সি পূর্ব পাকিস্তান মেজর জেনারেল আইয়ুব খান কোন ব্যবস্থা না নিলে ১ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতি জি,,ও,সি পূর্ব পাকিস্তান মেজর জেনারেল আইয়ুব খান ও রেজিমেন্টের সি,ও, লেফটেন্যান্ট কর্নেল পেটারসন নির্লিপ্ততা ও অনাগ্রহ পরিলক্ষিত হয়। জি,,ও,সি পূর্ব পাকিস্তান মেজর জেনারেল আইয়ুব খান তার দায়ীত্বের অবহেলা করেন ও ক্ষমতার অপব্যাবহার করেন । উপ্রুন্ত ঢাকা কুরমিটোলা সেনানিবাসে সেনা অধিনায়কদের সম্মেলনে মেজর জেনারেল আইয়ুব খানের বাঙ্গালী বিদ্বেষী মন্তব্য করেন এবং পূর্ব বাংলার রাজনীতিবিদের নিয়ে কটাক্ষ করলে মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী তার অপেশাদার আচরণের প্রতিবাদ ও সমালোচনা করেন। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী রেজিমেন্টের বাঙ্গালী সেনা কর্মকর্তাগণের সমেত নিজেদের সম্মান ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হলে মেজর জেনারেল আইয়ুব খানের তথা পশ্চিম পাকিস্তানি উর্ধ্বতন সামরিক অধিকারীদের রোষে পড়েন এবং মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরীর সেনা জীবন অন্যায় ভাবে অবসান ঘটান হয়।

দৃশ্যত শুরু থেকেই পাকিস্তান রাষ্ট্রে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক শ্রেণী কর্তৃক বাঙ্গালী সেনা কর্মকর্তাদের বৈষম্যের ও অন্যায়ের স্বীকার হতে হয় । ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত বাঙ্গালী সেনা ও সেনা কর্মকর্তাগণ ১৯১৬ সাল থেকে সংগঠিত প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ সালে সংগঠিত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সাফল্য ১৯৪৮ সালে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠা ১৯৬৫ সালের পাক ভারত যুদ্ধে সফলতা অবশেষে ১৯৭১ সালে যুদ্ধক্ষেত্রে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে হানাদার পাকিস্তানিদের দাতভাঙ্গা জবাব দেয়া হয় এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়।

সেনা পরবর্তী জীবন[সম্পাদনা]

মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী পরবর্তীতে ১৯৫২ সালে পূর্ব পাকিস্তান পুলিশ সার্ভিসে যোগ দেন। তিনি ঢাকার তেজগা শিল্পাঞ্চল, কুমিল্লা, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালন করেন। পুলিশ সুপার থাকা কালে চুয়াডাঙ্গা কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। পুলিশে চাকুরী কালীন তিনি অনেক সুনাম কুড়ান।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডস্থ নিজ আবাসে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে ঢাকার নীলক্ষেত এলাকার বাবুপুরা শাহসাহেব বাড়িতে ‘মরিয়ম ছালেহা মসজিদ’

প্রাঙ্গণে সমাহিত করা হয়।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. দিগন্ত, Daily Nayadiganta-নয়া। "লড়াকু বাঙালি মেজর এ ডব্লিউ চৌধুরী"Daily Nayadiganta (নয়া দিগন্ত) : Most Popular Bangla Newspaper। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-৩১