গোলপাতার গুড়: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
অ বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশের ঐতিহ্য সরিয়ে মূল বিষয়শ্রেণী বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী ঐতিহ্য স্থাপন |
|||
১৮ নং লাইন: | ১৮ নং লাইন: | ||
[[বিষয়শ্রেণী:গুড়]] |
[[বিষয়শ্রেণী:গুড়]] |
||
[[বিষয়শ্রেণী: |
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী ঐতিহ্য]] |
০৯:৫৬, ৩ মার্চ ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
'গোলপাতার গুড় গোল গাছের রস থেকে তৈরি করা হয়। গোলপাতার গুড় বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার চারটি ইউনিয়নে তৈরি করা হয়। গোল গাছের রস খেঁজুর রসের মতো সকাল এবং সন্ধ্যায় আহরণ করে আগুনের উত্তাপে শুকিয়ে ঝোলা গুড় তৈরী করা হয়[১]। বরিশাল অঞ্চলে গুড়কে মিঠা বলা হয়। স্বাদের গুণগত ভিন্নতার কারণে গোলপাতার গুড়কে খেঁজুরের গুড় এবং তালের গুড় থেকে সহজে আলাদা করা যায়৷[২]
বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইন্সটিটিউটের তত্ত্বাবধানে বাগেরহাটের মংলা উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের খোনকারবেড় গ্রামে গোলপাতার রস থেকে গুড় তৈরীর প্রকল্প চালু আছে।[৩] স্বাদের পাশাপাশি গোলের গুড়ের ঔষধিগুণ আছে।[৪]
গোলপাতা
গোলপাতা ভারত মহাসাগর এবং প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের উপকূলীয় এবং মোহনা এলাকার এক প্রকার পাম জাতীয় উদ্ভিদ, যাদেরকে নিপা পাম নামে ডাকা হয়। এটি পামের একমাত্র প্রজাতি যা ম্যানগ্রোভ অঞ্চলে পাওয়া যায়। এটা মূল গণ নিপা হতে উদ্ভত একমাত্র প্রজাতি যার উপ প্রজাতি নিপোডিয়া।[৫]
গোলগাছের চাষ অত্যন্ত লাভজনক এবং সহজসাধ্য । গোল চাষে খরচ কম এবং ব্যয়ের অনুপাতে আয় হয় অনেকগুণ বেশি কারণ চাষে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক বিশেষ প্রয়োজন হয় না। গাছের বিশেষ কোন পরিচর্যা করতে হয়না। গাবনা বা গোলগাছের বীজ সংরক্ষণ করে তা নোনা জমিতে পুঁতে দিলেই চারা গজায়। একটি গোল-ছড়ায় একশ থেকে দেড়শটি বীজ থাকে ফলে একটা ছড়া থেকে দেড়শো গোল গাছ পাওয়া যায়।[৬]
গুড় তৈরী
ম্যানগ্রোভ বা উপকূলীয় বনাঞ্চলে গোল গাছ প্রাকৃতিক ভাবে জন্মে। কলাপাতা উপজেলায় গোলগাছ চাষ করা হয় নিচূজলাভূমি, খালের পাড় ইত্যাদি জায়গায় যেখানে নোনাপানি সহজলভ্য। গোল গাছের বেড়ে ওঠার জন্যে লবনাক্ত পানি অপরিহার্য। গোলগাছের বাগানকে বলা হয় গোলবহর। আষাঢ় মাসে গোল গাছের ডাণ্ডিতে গাবনা ফল আসে। পৌষ মাসে ফলসহ মাটিচাপা দিয়ে ডাণ্ডিকে নুয়ে দেওয়া হয়। অগ্রহায়ণ মাসে ডাণ্ডিটি মানুষের পায়ের আলতো চাপে দক্ষতার সঙ্গে রসে ভার করার জন্য দোয়ানো হয়। ১৫ দিন দোয়ানোয় পর গাবনা ছড়ার আগাছা পরিষ্কার করে ডগার মাথা থেকে গাবনা ফলের থোকা ধারালো দা দিয়ে এক কোপে কেটে ফেলা হয়। ডাণ্ডির কাটা অংশ দিন তিনেক শুকিয়ে নেওয়ার পর সকাল-বিকেল দুইবেলা পাতলা করে চেঁছে ফেলা হয়। দুই সপ্তাহ এভাবে চাঁচ দেয়া হয়। দুই সপ্তাহ পরে প্রতিদিন বিকেলে উক্ত ডাণ্ডার মাথা থেকে কিঞ্চিত অংশ কেটে একটি ছোট্ট হাঁড়ি কিংবা ভাঁড় ঝুলিয়ে দেয়া হয়। পরদিন খুব ভোরে রস সংগ্রহ করা হয় এবং ভাঁড়টিকে ধুয়ে শুকোতে দেয়া হয়।
পৌষ থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত রস সংগ্রহ করা হয়। একটি ডাণ্ডি থেকে ২৫০-৫০০ গ্রাম পর্যন্ত রস পাওয়া যায়। এই রসকে আগুনে জ্বাল দিয়ে ঘন করে গুড় প্রস্তুত করা হয়। রস জ্বাল দেওয়ার জন্যে গোলপাতা গাছের শুকনো মুথা (ডাটা) ব্যবহার করা হয়। ঘণ গুড়কে বিশেষ প্রক্রিয়ায় ছেঁকে নেয়া হয়। ২৫-৩০ লিটার রস ধরে এমন এক কলসি গোলপাতার গুড় থেকে তিন থেকে চার কেজি গুড় পাওয়া যায়৷[৭]
তথ্যসূত্র
- ↑ "গোলপাতারগুড়"। দৈনিক কালের কন্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৯।
- ↑ "উপকূলের ব্যতিক্রমী ফসল গোলপাতার রস আর গুড়"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৯।
- ↑ "গোলপাতার রস থেকে গুড় তৈরীর প্রকল্প"। দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৯।
- ↑ "পটুয়াখালীর হাটবারে বিশেষ আকর্ষণ গোলপাতার গুড়"। চ্যানেল আই। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৯।
- ↑ John Leslie Dowe। Australian Palms: Biogeography, Ecology and Systematics। পৃষ্ঠা 83। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ২০, ২০১২।
- ↑ "খেজুর বা আখের নয়, এই শীতে বিকল্প গুড়ের সন্ধান দিল বাংলাদেশ"। ডেইলিহান্ট, ভারত। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৯।
- ↑ "গোলপাতার মধুর রস"। দেশ রূপান্তর। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৯।