বিমলা বুটি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিমলা বুটি
জন্ম১৯৩৩
জাতীয়তাভারত ভারতীয়
নাগরিকত্বভারত
মাতৃশিক্ষায়তনদিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়
পরিচিতির কারণপদার্থ বিজ্ঞান
পুরস্কারবিক্রম সারাভাই পুরস্কার,
আমেরিকান পদক,
ইনসা-ভাইনু বাপ্পু (INSA-Vainu Bappu) পুরস্কার
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রপদার্থ বিজ্ঞান; প্লাজমা পদার্থ বিজ্ঞান
প্রতিষ্ঠানসমূহভৌতিক গবেষণা প্রয়োগশালা,
ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান,
গোদার্ড মহাকাশ উরণ কেন্দ্র,নাসা
অভিসন্দর্ভের শিরোনাম'Relativistic Effects on Plasma Oscillations and Two-Stream Instability' (১৯৬২)
ডক্টরাল উপদেষ্টাসুব্রহ্মণ্যন চন্দ্রশেখর

বিমলা বুটি (জন্ম ১৯৩৩) হচ্ছে একজন ভারতীয় পদার্থ বিজ্ঞানী। তাঁর গবেষণাক্ষেত্র হচ্ছে প্লাজমা পদার্থ বিজ্ঞান। ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমীর সভ্য হওয়া তিনি হলেন প্রথম ভারতীয় মহিলা পদার্থ বিজ্ঞানী। বিমলা বুটি নোবেল বিজয়ী ভারতীয় পদার্থ বিজ্ঞানী সুব্রহ্মণ্যন চন্দ্রশেখর-এর অধীনে গবেষণা করেছিলেন। তিনি বিক্রম সারাভাই পুরস্কার, আমেরিকান পদক, এবং ইনসা-ভাইনু বাপ্পু (INSA-Vainu Bappu) পুরস্কারকে ধরে একাধিক পুরস্কার এবং সম্মান লাভ করেছিলেন। বিক্রম সারাভাই প্রতিষ্ঠা করা ভারতের গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা প্রতিষ্ঠান "ভৌতিক গবেষণা প্রয়োগশালা"য় বিমলা বুটি তেইশটি বছর কর্মনির্বাহ করেছিলেন। [১]

শিক্ষা[সম্পাদনা]

বিমলা বুটি দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেছিলেন। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই তিনি পরে পদার্থ বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রীও অর্জন করেন। ডক্টরেট ডিগ্রীর পড়া-শুনার জন্য তিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে নামভর্তি করেন। বিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী সুব্রহ্মণ্যন চন্দ্রশেখরের অধীনে তিনি নিজের গবেষণা কার্য চালিয়ে যান। এবং ১৯৬২ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্লাজমা পদার্থ বিজ্ঞানে তিনি ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জন করেন। [২]

বিমলা বুটি আপেক্ষিকতাবাদী প্লাজমার ক্ষেত্রেে কাজ করেছিলেন। তাঁর গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল- প্রথমে একটি সাধারণ আর্হি প্রস্তুত করা এবং সেই আর্হির মাধ্যমে মহাকাশ, জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং প্রয়োগশালার প্লাজমার সমস্যার অন্বেষণ এবং প্রয়োগ করা। অরৈখিক বলবিজ্ঞানের পদ্ধতি ব্যবহার করে তিনি অরৈখিক, অশান্ত এবং বিশৃঙ্খল প্লাজমা প্রক্রিয়ার কতগুলি নিরীক্ষিত প্রপঞ্চ নিরূপণ করেছিলেন। [১]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জন করার পর, তিনি ভারতে চলে আসেন এবং দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা আরম্ভ করেন। [২] দুবছর পর তিনি আমেরিকালয় যান এবং "গোদার্ড মহাকাশ উরণ কেন্দ্র, নাসা"তে কর্মনির্বাহ করেন। সেই প্রতিষ্ঠানে তিনি জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমীর একজন আবাসিক গবেষণা সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। [১]

১৯৬৮ সালে বুটি ভারতে আসেন এবং দিল্লীস্থ ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠানের একটি কর্মে যোগদান করেন। তার কয়েকদিন পরে প্রধান মন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর উদ্যোগে আয়োজিত হওয়া "নেহরু স্মারক বক্তৃতা"র এক বিশেষ নৈশভোজের অনুষ্ঠানে বিমলা বুটি বিক্রম সারাভাইকে সাথে পান৷ সেই নৈশভোজটি আয়োজন করা হয়েছিল সুব্রহ্মণ্যন চন্দ্রশেখরের স্মৃতিতে। সেইসময় তাঁর ছাত্রী হিসেবে বিমলা বুটিকে সেই প্রতিষ্ঠানে নেওয়া হয়েছিল। "ভৌতিক গবেষণা প্রয়োগশালা"র (Physical Research Laboratory) সেইসময়ের অধ্যক্ষ বিক্রম সারাভাই বিমলাকে সেই প্রতিষ্ঠানে পি.আর.এল.-এ যোগদান করতে আমন্ত্রণ জানান। সেই অনুরোধ রক্ষা করে বুটি উক্ত প্রতিষ্ঠানে ১৯৭০ সালে যোগদান করেন। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত তিনি সেই প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত হয়ে নিজের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সহযোগী অধ্যাপক, অধ্যাপক, জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক, এবং "ডিন অব ফেকাল্টি" পদে কার্যনির্বাহ করেন।[২] পি.আর.এল.তে থাকার সময়ে বুটি "ভারতের প্লাজমা বিজ্ঞান সমাজ" স্থাপন করেন। বিমলা বুটি এই প্রতিষ্ঠানে ২৩ বছর কাজ করেন। [১]

১৯৮৫ সাল থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে বিমলা বুটি ইটালীর ত্রিষ্টিতে থাকা "তাত্ত্বিক পদার্থ বিজ্ঞানের আন্তর্জাতিক কেন্দ্র"র (International Centre for Theoretical Physics) অধ্যক্ষের পদ অলংকৃত করেছিলেন।[২]

নিজের কর্মজীবনে বুটি অনেক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন। এর সঙ্গে তিনি চারটি গ্রন্থও সম্পাদনা করেছিলেন। ১৯৭৭-৮৩র মধ্যে তিনি আমেরিকার "IEEE Transactions on Plasma Science"র সহযোগী সম্পাদক ছিলেন। তিনি সেখানে "প্লাজমা বিজ্ঞান সংঘ" স্থাপন করেছিলেন এবং ১৯৯২-৯৩ সালে একজন অধ্যক্ষ হিসেবে নিজ দায়িত্ব পালন করেছিলেন। [২]

পুরস্কার এবং সম্মান[সম্পাদনা]

নিজের কর্মজীবনে বুটি কয়েক পুরস্কার এবং সম্মান পেতে সক্ষম হয়েছিলেন-[২]

  • গ্রহ বিজ্ঞানের জন্য বিক্রম সারাভাই পুরস্কার(১৯৭৭)
  • জওহরলাল জন্ম শতবার্ষিকী বক্তৃতা পুরস্কার(১৯৯৩)
  • জ্যোতির্বিজ্ঞানে অগ্রণী অবদানের জন্য "INSA-Vainu Bappu" পুরস্কার , ১৯৯৪
  • শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রণী "Professional Achievement Citation" পুরস্কার(১৯৯৬)
  • অরৈখিক তরঙ্গ এবং অস্থায়ীত্বর পদার্থ বিজ্ঞানে অগ্রণী প্রাথমিক অবদানের জন্য আমেরিকান পদক (২০১০)
  • বিজ্ঞানের বিশ্ব একাডেমী (The World Academy of Sciences, TWAS)র সভ্য।
  • জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমীর সভ্য, ভারত।
  • আমেরিকান ভৌতিক সমাজের (American Physical Society) সভ্য।
  • ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমীর সভ্য। [৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Dr. Bimla Buti: A Woman Scientist In A Field Dominated By Men"। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ 
  2. Buti, Bimla (৩১ অক্টোবর ২০০৮)। "A woman scientist in a field dominated by men"। Godbole, Rohini; Ramaswamy, Ram। Lilavati's Daughters: The Women Scientists of India 
  3. "Indian Fellow"। Indian National Science Academy। ২০১৬। ১২ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

ভৌতিক গবেষণা প্রয়োগশালার মুখ্য পৃষ্ঠা