ফ্রাঙ্ক লেভার
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
জন্ম | [১] ক্যাসেলমেইন, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া[১] | ৭ ডিসেম্বর ১৮৬৯|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২৪ সেপ্টেম্বর ১৯১৯[১] পূর্ব মেলবোর্ন, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া[১] | (বয়স ৪৯)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি[১] | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি মিডিয়াম[১] | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ক্রিকইনফো.কম, ১৬ জানুয়ারি ২০১৯ |
ফ্রাঙ্ক জোনাস লেভার (ইংরেজি: Frank Laver; জন্ম: ৭ ডিসেম্বর, ১৮৬৯ - মৃত্যু: ২৪ সেপ্টেম্বর, ১৯১৯) ভিক্টোরিয়ার ক্যাসেলমেইন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৮৯৯ থেকে ১৯০৯ সময়কালে অস্ট্রেলিয়া দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়া দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি মিডিয়াম বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিং করতেন ফ্রাঙ্ক লেভার।
ঘরোয়া ক্রিকেট
[সম্পাদনা]গো-ব্যবসায়ী ও কাঠ ব্যবসায়ী জোনাস লেভার ও কাঠ ব্যবসায়ী মেরি অ্যান (বিবাহ-পূর্ব ফ্রাই) দম্পতির সন্তান ছিলেন তিনি। ১৮৯১ থেকে ১৯১৪ সময়কালে পূর্ণাঙ্গ খেলোয়াড়ী জীবনে ১৬৩টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন ফ্রাঙ্ক লেভার।
ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও ডানহাতি মিডিয়াম পেস বোলার ছিলেন তিনি। লিকলিকে গড়নের ছয় ফুট উচ্চতার অধিকারী ফ্রাঙ্ক লেভার ইস্ট মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে প্রথম মৌসুম অতিবাহিত করেন। ঐ মৌসুমে ৯৪ উইকেট লাভসহ তিনটি সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। এরপর থেকে পরবর্তী ২৫ বছর ক্লাবে স্বীয় স্থান দখলে রেখেছিলেন। ১৮৯২-৯৩ মৌসুমে ক্লাবের পক্ষে সহস্রাধিক রান তুলেন। তন্মধ্যে রেকর্ডসংখ্যক অপরাজিত ৩৫২ রানের ইনিংস ছিল তার। স্বীয় বন্ধু ও অস্ট্রেলিয়ার দলীয় সঙ্গী পিটার ম্যাকঅ্যালিস্টারকে সাথে নিয়ে এক বিকেলের ব্যাটিংয়ে দলকে ৭৪৪/২ দাঁড় করান ও ক্লাব রেকর্ড গড়েন। লেভার ৩৪১ রান তুলেছিলেন। তবে, কর্তৃপক্ষের অবহেলার শিকারে পরিণত হওয়ায় উভয়েই বিদেশ গমন করা থেকে বঞ্চিত হন।
টেস্ট ক্রিকেট
[সম্পাদনা]সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ১৫ টেস্টে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন ফ্রাঙ্ক লেভার। অস্ট্রেলিয়ার ৭৮তম টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন ফ্রাঙ্ক লেভার। খেলোয়াড় হিসেবে দুইবার ও দলীয় ব্যবস্থাপক হিসেবে চারবার ইংল্যান্ড গমন করেছেন তিনি।
পোলার্ড লেভারকে অপরিপক্ব ও আনঅর্থোডক্স বোলার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। উৎকৃষ্টতম বোলিং আক্রমণ পরিচালনা করা সত্ত্বেও বেশ নাকানি-চোবানি খান তিনি। ইংল্যান্ডের উত্তপ্ত পরিবেশ ও পোতানো পিচে তার বোলিং বেশ মানিয়ে যেতো। তেজস্বী ফিল্ডার হিসেবে নিজস্ব পরিচিতি পান।
১ থেকে ৩ জুন, ১৮৯৯ তারিখে নটিংহামের ট্রেন্টব্রিজে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে অ্যাশেজ সিরিজে প্রথমবারের মতো টেস্ট ক্রিকেট খেলতে নামেন। এটিই ট্রেন্ট ব্রিজে প্রথম টেস্ট খেলা ছিল ও খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়। জয়ের জন্যে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ১৩৫ রান ও অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩ উইকেট। ফ্রাঙ্ক লেভার উভয় ইনিংসে মাত্র ৩ রান করে তুলেন ও একটি ক্যাচ হাতের মুঠোয় পুরেছিলেন। এছাড়াও ঐ খেলায় ডব্লিউ জি গ্রেস তার সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ করেন এবং ভিক্টর ট্রাম্পার ও উইলফ্রেড রোডসের টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়েছিল। লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত পরের টেস্টেই ফ্রাঙ্ক লেভারের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়। দ্বিতীয় ইনিংসে তিন উইকেট লাভ করেন। ফলশ্রুতিতে অস্ট্রেলিয়া দল ১০ উইকেটের সহজ জয় তুলে নেয়।
প্রশাসনে সম্পৃক্ততা
[সম্পাদনা]১৯০৫ সালে দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। এ পর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ান কন্ট্রোল বোর্ড থেকে খেলোয়াড়-ব্যবস্থাপক হিসেবে নিযুক্তি লাভ করেন তিনি। ১৮.১৯ গড়ে ১১৫ উইকেট তুলে নিয়ে সফরে দ্বিতীয় সেরা খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছিলেন ফ্রাঙ্ক লেভার। জ্যাক পোলার্ড তাকে খেলোয়াড়ীসুলভ ও উপলদ্ধিবোধসম্পন্নরূপে পরিচিতি ঘটিয়েছেন। তিনি খেলোয়াড়দেরকে সাহস ও উদ্দীপনা যুগিয়ে সেরা খেলা আদায় করে নিয়েছিলেন। ১৯০৯ সালেও ইংল্যান্ড সফরে একই ভূমিকা রেখেছিলেন ফ্রাঙ্ক লেভার। ঐ সফর শেষে লেভার খেলোয়াড়দের কল্যাণের কথা ভেবে তার ব্যক্তিগত সাফল্য সংরক্ষণে অস্বীকৃতিজ্ঞাপন করেছিলেন।
২৬ থেকে ২৮ জুলাই, ১৯০৯ তারিখে ম্যানচেস্টারের ওল্ডট্রাফোর্ডে অনুষ্ঠিত টেস্টে ফ্রাঙ্ক লেভার অবিস্মরণীয় ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শন করেছিলেন। উইজডেনের ভাষ্যমতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রতিপক্ষের সেরা দিন ছিল। প্রথম ইনিংসে তিনি ৮/৩১ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান। উইজডেনের মতে, ইংরেজ ব্যাটসম্যানদের কাছে তিনি অত্যন্ত ভালোমানের বোলার হিসেবে পরিচিত ছিলেন; তবে, ব্যতিক্রমধর্মী বোলার ছিলেন না। তাসত্ত্বেও তারা প্রায়শঃই বিস্ময়করভাবে তার বিপক্ষে ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় ব্যাটিং করছিল। তার এ বোলিং পরিসংখ্যানটি ওল্ড ট্রাফোর্ডের কোন টেস্ট খেলায় সেরা রেকর্ডরূপে পরিগণিত হয়। ১৯৫২ সালে ফ্রেড ট্রুম্যান তার এ রেকর্ডের সমকক্ষ হন। পরবর্তীকালে ১৯৫৬ সালে জিম লেকারের অতিমানবীয় ১০/৫৩ ও ৯/৩৭ বোলিংয়ে ভেঙ্গে যায়।
৯ থেকে ১১ আগস্ট, ১৯০৯ তারিখে কেনিংটনের ওভালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ড্র হওয়া ঐ টেস্টটিতে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ২০৮ রান ও হাতে ছিল ৭ উইকেট। ফ্রাঙ্ক লেভার তার একমাত্র ইনিংসটিতে ৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। বল হাতে ৮ ওভার বোলিং করলেও ১৩ রান দিয়ে কোন উইকেট পাননি।
১৯১২ সালে ইংল্যান্ড সফরে অস্ট্রেলিয়া দলকে পরিচালনার জন্যে নিয়োগ দেয়া হলে এর প্রতিবাদস্বরূপ ছয়জন তারকা খেলোয়াড় দল থেকে চলে আসেন। তবে বোর্ড কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্তে অটল ও অনমনীয় অবস্থানে থাকেন ও তাকে দলের বাইরে রাখা হয়। তবে, ১৯১৩-১৪ মৌসুমে টেস্ট বহির্ভূত নিউজিল্যান্ড সফরে ব্যবস্থাপকের ভূমিকায় পুনরায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন তিনি।
ব্যক্তিগত জীবন
[সম্পাদনা]মার্জিত ও রূচিসম্পন্ন স্থিরচিত্রকার ও লেখক ছিলেন তিনি। ১৮৯৯ ও ১৯০৫ সালে ইংল্যান্ড সফরকে ঘিরে ‘এন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার অন ট্যুর’ শীর্ষক গ্রন্থ রচনা করে গেছেন।[১][২]
১৯১৪ সালে নিউ সাউথ ওয়েলসের কিয়ামা এলাকায় কেটি মাইরটল অ্যাডেল মেজর নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। এ দম্পতির দুই সন্তান ছিল। মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণজনিত কারণে ফ্রাঙ্ক লেভারের দেহাবসান ঘটে। মৃত্যুকালীন ভিক্টোরিয়ার কিউ এলাকায় বসবাস করতেন ও কারখানার মালিক হিসেবে তাকে দেখানো হয়েছিল। তার ভাইপো জ্যাক লেভার ১৯৪৬ থেকে ১৯৫২ সময়কালে তাসমানিয়ার পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশগ্রহণ করেছিলেন।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ ইএসপিএনক্রিকইনফোতে ফ্রাঙ্ক লেভার (ইংরেজি)
- ↑ Laver, Frank (1905). An Australian Cricketer On Tour. Chapman & Hall.
গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]- Moyes, A. G., Australian Cricket: A History, Sydney, Angus & Robertson, 1959.
- Pollard, Jack, Australian Cricket: 1893–1917, The Turbulent Years. Sydney, The Book Company, 1995. (আইএসবিএন ০-২০৭-১৫৪৬৮-৬)
- Pollard, Jack, Australian Cricket: The game and the players. Sydney, Hodder & Stoughton, 1982. (আইএসবিএন ০-৩৪০-২৮৭৯৬-৯)
- Wisden Cricketers' Almanack, 1920 edition (obituary)
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে ফ্রাঙ্ক লেভার (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে ফ্রাঙ্ক লেভার (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- Frank Jonas Laver (1869–1919) Gravesite at Brighton General Cemetery (Vic)