প্রতিরক্ষা দিবস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
প্রতিরক্ষা দিবস
یومِ دفاع
অন্য নামইউম-ই-দিফা
পালনকারীপাকিস্তান
ধরনজাতীয়
উদযাপনপতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ, সামরিক প্রদর্শনী, পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, দেশাত্মবোধক গান গাওয়া, বিনোদন এবং সামরিক অনুষ্ঠান, বক্তৃতা, আতশবাজি ইত্যাদি।
তারিখ৬ সেপ্টেম্বর
সংঘটনবার্ষিক

প্রতিরক্ষা দিবসটি(উর্দু: یومِ دفاع‎‎ এএলএ-এলসি : ইউম-ই দিফাʿ) পাকিস্তানের সীমান্ত রক্ষায় পাকিস্তানি সৈন্যদের আত্মত্যাগের স্মরণে জাতীয় দিবস হিসেবে পালিত হয়।[১][২] ১৯৬৫ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর তারিখটি সেই দিনটিকে চিহ্নিত করে যেদিন ভারতীয় সৈন্যরা পাকিস্তানি পাঞ্জাব আক্রমণ করতে আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করেছিল, তাদের উদ্দেশ্য ছিল জম্মুকে লক্ষ্য করে পাকিস্তানের অপারেশন গ্র্যাণ্ড স্লামের প্রতিশোধ নেওয়া।[৩] যদিও এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের বিনা প্ররোচনায় আকস্মিক আক্রমণ হিসাবে স্মরণ করা হয়, কিন্তু ছোট আকারের বাহিনী নিয়ে কম অস্ত্রশস্ত্র থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তান সেনাবাহিনী এই আক্রমণ প্রতিহত করে।[২][৪] এই বর্ণনাকে ভারতীয় ব্যাখ্যাকারেরা মিথ্যা ইতিহাস বলে সমালোচনা করেছেন।[২]

১৯৬৫ সালের যুদ্ধের প্রেক্ষাপট[সম্পাদনা]

১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হয়েছিল পাকিস্তানের সাথে। ভারত কাশ্মীরে আগ্রাসন বাড়ানোর পরে, পাকিস্তান মুজাহিদদের কাশ্মীর উপত্যকায় প্রেরণ করে এবং জনগণকে বিদ্রোহে উস্কে দেয়। তারা স্থানীয় স্থাপনাগুলি ভাঙচুর করে।[৫][ক] দ্বিতীয় পর্যায়ে, ১লা সেপ্টেম্বর, তারা জম্মু বিভাগের আখনুর সেতুর দিকে, অপারেশন গ্র্যান্ড স্লাম নামে অভিহিত একটি ট্যাঙ্ক আক্রমণ শুরু করে। এটির উদ্দেশ্যে ছিল একটি "সংক্ষিপ্ত এবং দ্রুত, মোটামুটি সম্পন্ন সক্রিয়তা"।[৫] পণ্ডিত সুজা নওয়াজের মতে, পাকিস্তানি জেনারেল কাশ্মীর উপত্যকার সাথে ভারতের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য আখনুর ব্রিজ দখল করে জম্মুর দিকে ঝুঁকতে চেয়েছিলেন।[৭] ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী (তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ) হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে কাশ্মীরে হামলা হলে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবে। পাকিস্তানিরা এই হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেছিল[৫]

৬ই সেপ্টেম্বর, "প্রাক-ঘোষিত কৌশল"[৫] এর প্রতিক্রিয়া অনুসারে,[৭][খ] ভারতীয় সেনাবাহিনী লাহোরের কাছে গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোডটি বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে পাঞ্জাবের আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে। ভারতীয়দের আরেকটি উদ্দেশ্য ছিল লাহোর সেনানিবাস দখল করা। পাকিস্তানি কমাণ্ডারদের কাছে এই হামলাটি ছিল আকস্মিক।[৫][৯] এয়ার মার্শাল নুর খানের মতে, সেনাপ্রধান জেনারেল মুসা খান যুদ্ধের দ্বিতীয় দিনে রাষ্ট্রপতি মুহম্মদ আইয়ুব খানকে বলেছিলেন যে সেনাবাহিনীর গোলাবারুদ ফুরিয়ে গেছে। যাইহোক, এয়ার মার্শাল নুর খানের দেওয়া বিবৃতির প্রতি ভারতীয় কমাণ্ডারেরা আপত্তি জানিয়েছিলেন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরবন্ত সিং নিজেই বলেছিলেন যে যুদ্ধবিরতির পরেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী সবচেয়ে বেশি গুলি চালানো শুরু করেছিল।[১০] তিনি বলেছিলেন যে যুদ্ধে সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।[৯] ২৩শে সেপ্টেম্বর, পাকিস্তান জাতিসংঘের বাধ্যতামূলক যুদ্ধবিরতি মেনে নেয়।[গ]

ভারতীয় বাহিনী যেদিন পাকিস্তানে প্রবেশ করেছিল সেই দিনটিকে স্মরণ করে পাকিস্তানে পাকিস্তান প্রতিরক্ষা দিবসের শুরু হয়েছিল। পাকিস্তানের সরকারী বিবরণে বলা হয়েছে যে "ভারতীয় বাহিনী ওয়াঘা সীমান্তে ঢুকে পড়ে [এটি এইভাবেই লেখা ছিল, ইংরেজি: sic]। পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে অবহিত করা হলে তারা মাতৃভূমির রক্ষায় বীরত্বপূর্ণভাবে প্রতিরক্ষা স্থাপন করে এবং তাদের ফিরিয়ে দেয়, এইভাবে এটির নাম হয় পাকিস্তান প্রতিরক্ষা দিবস।"[১২] এয়ার মার্শাল নুর খান মন্তব্য করেন, "এটি একটি ভুল যুদ্ধ ছিল এবং তারা জাতিকে বিভ্রান্ত করেছিল একটি বড় মিথ্যা দিয়ে যে পাকিস্তানের পরিবর্তে ভারত যুদ্ধে উসকানি দিয়েছে এবং আমরা (পাকিস্তানিরা) ভারতীয় আগ্রাসনের শিকার হয়েছি।"[৯]

উদযাপন এবং কুচকাওয়াজ[সম্পাদনা]

এই উদযাপনে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের সর্বাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র, ট্যাংক, বন্দুক প্রদর্শন করে, পাকিস্তান বিমান বাহিনী হেলিকপ্টার প্রদর্শন করে, প্রকৌশলী, ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল কর্পস এবং আর্মি এয়ার ডিফেন্স তাদের দ্বারা ব্যবহৃত অস্ত্র প্রদর্শন করে এবং আর্মি সার্ভিস কর্পস ও আর্মি মেডিকেল সেনাবাহিনী সিগন্যাল প্রদর্শন করে।[১৩] প্রত্যেককে নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে এই ধরনের অনুষ্ঠান সরাসরি দেখার অনুমতি দেওয়া হয়। এই অনুষ্ঠানগুলি জাতীয় টিভি চ্যানেলেও প্রদর্শিত হয়। ১৯৬৫ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর সম্পর্কে বিশেষ তথ্যচিত্র, জাতীয় সঙ্গীত এবং সেদিন যুদ্ধে নিহত মানুষের কাহিনী টিভিতে প্রদর্শিত হয়।

এই দিনে, করাচির মাজার-ই-কায়েদ-এ গার্ড পরিবর্তনের অনুষ্ঠান হয়, যেখানে পাকিস্তান এয়ার ফোর্স একাডেমির তরুণ শিক্ষাণবিশরা গার্ড অফ অনার বা সালামি কুচকাওয়াজ উপস্থাপন করে এবং দায়িত্ব গ্রহণ করে।[১৪]

মন্তব্য[সম্পাদনা]

  1. The infiltration began on 5 August 1965, according to the UN military observers stationed on the Kashmir Line of Control since 1949.[৬]: Secretary-General U. Thant stated: "the series of violations that began on August 5 were to a considerable extent in subsequent days in the form of armed men not in uniform, crossing the CFL from the Pakistan side for the purpose of armed action on the Indian side."
  2. A riposte in military strategy involves striking a vulnerable point of the enemy in order to force him to abandon his own attack.[৮]
  3. India had already accepted various UN proposals for a ceasefire, starting around 14 September.[১১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "September 6: A day to remember the sacrifices of Pakistan's martyrs"Dawn। ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮। 
  2. Taha Siddiqui, Dear Pakistanis, this Defence Day, please stop celebrating hate, Al Jazeera, 6 September 2018.
  3. Nawaz, Crossed Swords 2008: "Opposing it was the Indian I Corps with its 1st Armoured Division and three infantry divisions, with orders to secure the Pathankot-Jammu road by launching a riposte to an anticipated move by Pakistan against Jammu, the private plan of General Akhtar Malik that his superiors had thwarted."
  4. Kumar, Prejudice and Pride 2001: "Young Nation, a youth supplement published by the liberal Friday Times of Lahore wrote: It tells an epic tale of our soldiers who being a very small number compared to the Indian and having very little ammunition, weapons and machinery, fought with such spirit, bravery and courage that it stunned the Indian forces, and of the unity of our people."
  5. Paul, Asymmetric Conflicts 1994
  6. Joshi, Kashmir, 1947–1965 2008, পৃ. 213।
  7. Nawaz, Crossed Swords 2008
  8. Beaufre, André (১৯৬৫), An Introduction to Strategy: With Particular Reference to Problems of Defense, Politics, Economics, and Diplomacy in the Nuclear Age, Faber & Faber, পৃষ্ঠা 39 
  9. Hiranandani, Transition to Guardianship 2013
  10. "1965 War: General Chaudhury did not order withdrawal behind River Beas"Indian Defence Review (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৯-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-০৫ 
  11. Joshi, Kashmir, 1947–1965 2008, পৃ. 215: "in his report of September 16, the Secretary-General chose to be even-handed and told the Council that India had accepted the suggestion, and Pakistan was yet to reply."
  12. Fair, C. Christine (২০১৪), Fighting to the End: The Pakistan Army's Way of War, Oxford University Press, পৃষ্ঠা 142–143, আইএসবিএন 978-0-19-989271-6 
  13. Defense Day Celebrations। Illustrated weekly of Pakistan। ১৯৬৮। পৃষ্ঠা 22। 
  14. "Defense Day: Soldiers honoured 46 years on"The Express Tribune। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০১২ 

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:Public holidays in Pakistan