পাঠাও
স্থানীয় নাম | পাঠাও |
---|---|
ধরন | পরিবহন নেটওয়ার্ক কোম্পানি |
শিল্প | |
প্রতিষ্ঠাকাল | মার্চ ২০১৫[২] |
প্রতিষ্ঠাতাগণ | হুসাইন এম ইলিয়াস সিফাত আদনান ফাহিম সালেহ[৩] |
সদরদপ্তর | বনানী, , বাংলাদেশ |
বাণিজ্য অঞ্চল | বাংলাদেশ, নেপাল[৪] |
প্রধান ব্যক্তি | ফাহিম আহমেদ (সিইও)
|
পণ্যসমূহ | মোবাইল অ্যাপ, ওয়েবসাইট |
পরিষেবাসমূহ |
|
কর্মীসংখ্যা | ১২০০ (২০১৯)[৫] |
বিভাগসমূহ | পাঠাও ফুড পাঠাও পার্সেল পাঠাও কুরিয়ার (B2B) পাঠাও নেপাল প্রাইভেট লিমিটেড[৪] পাঠাও বাইক পাঠাও গাড়ি(পাঠাও কার) পাঠাও দোকান(পাঠাও শপ) পাঠাও টং পাঠাও স্বাস্থ্য(পাঠাও হেলথ) পাঠাও ফার্মা পাঠাও টপ আপ পাঠাও পরে পরিশোধ(পাঠাও পে লেটার) |
ওয়েবসাইট | pathao |
পাঠাও হলো বাংলাদেশি পরিবহন ও রাইডশেয়ারিং সেবাদানকারী একটি কোম্পানি। এটির সদরদপ্তর ঢাকার বনানীতে অবস্থিত। এটি মূলত বাংলাদেশের প্রধান ৩ শহর ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে তাদের রাইড শেয়ারিং সেবা দিয়ে থাকে। এছাড়াও এটি ঢাকা এবং চট্টগ্রামের কিছু উপশহরেও তাদের সেবা দিচ্ছে। পাঠাও রাইড শেয়ারিং সেবার পাশাপাশি ই-বাণিজ্য, কুরিয়ার ও খাদ্য সরবরাহ সেবাও দিয়ে যাচ্ছে।[৬][৭] পাঠাও বর্তমানে বাংলাদেশের বাইরে নেপালেও তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ফাহিম সালেহ, হুসেন ইলিয়াস এবং শিফাত আদনান কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা করেন।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]২০১৫ সালে ডেলিভারি সেবাদানকারী হিসেবে মোটর সাইকেল ও বাই সাইকেলের মাধ্যমে পাঠাও তাদের কার্যক্রম শুরু করে। তারা আলিবাবা গ্রুপের দারাজ ও রকেট ইন্টারনেটের অংশ হিসেবে তাদের ই-বাণিজ্য সেবা প্রদান শুরু করে।[৮]
২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে পাঠাও তাদের রাইড শেয়ারিং সেবা চালু করে। মার্চ ২০১৮ এর হিসাব মতে পাঠাওয়ের ব্যবহাকারী সংখ্যা ১ মিলিয়ন অতিক্রম করেছে।[৯]
টেকক্রাঞ্চের এক সাক্ষাতকারে পাঠাওয়ের সিইও হুসাইন এম ইলিয়াস বলেন, এপ্রিল ২০১৮ পর্যন্ত তাদের অধীনে ৫০,০০০ এর অধিক মোটরবাইক রয়েছে এবং কোম্পানির মূল্য ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে।
২০২৩ সালে কোম্পানিটি তাদের লোগো পরিবর্তন করে।[১০]
অর্থায়ন
[সম্পাদনা]পাঠাও ২০১৫ ও ২০১৬ সালে ব্যাটারি রোড ডিজিটাল হোল্ডিংস এলএলসির কাছ থেকে ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নিয়ে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ২০১৭ সালে, পাঠাও এ সিরিজ ফান্ডিংয়ের জন্য ইন্দোনেশিয়ার কোম্পানি জিও-জেক এর কাছ থেকে ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার গ্রহণ করে এবং ২০১৮ সালে পাঠাও বি সিরিজ ফান্ডিংয়ের অংশ হিসেবে একই কোম্পানি থেকে ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার গ্রহণ করে। পাঠাওয়ের বর্তমানে ৩টা মূল ইনভেস্টর ও মোট ৫ টি ইনভেস্টর রয়েছে।[১১]
পরিচালনা
[সম্পাদনা]পাঠাও তাদের সেবাসমূহ একটি মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে পরিচালনা করে থাকে। তারা তাদের অ্যাপসটি আরও উন্নত করার জন্য বিভিন্ন সময়ে হালনাগাদ করে থাকে।
সেবাসমূহ
[সম্পাদনা]পাঠাও বর্তমানে রাইড শেয়ারিং, পার্সেল, খাদ্য ডেলিভারি সেবা বাংলাদেশের প্রধান তিন শহর ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে দিয়ে থাকে। পাঠাও খাদ্য ডেলিভারি সেবাটি শুধুমাত্র ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে দিয়ে থাকে। পাঠাও তাদের ই-ওয়ালেট সেবাও চালু করে কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের রেগুলেটরি সমস্যার কারণে এটি স্থগিত হয়ে যায়।[১২]
রাইড শেয়ারিং
[সম্পাদনা]পাঠাও মোটরসাইকেল ও কার গাড়ীর মাধ্যমে তাদের রাইড শেয়ারিং সেবা দিয়ে থাকে। এই সেবাটি গ্রহণের জন্য পাঠাও অ্যাপসের পাশাপাশি অ্যান্ড্রয়েড অথবা অ্যাপল ফোনে চালক ও যাত্রী উভয়ের কাছে ইন্টারনেট এবং জিপিএস ব্যবস্থা চালু থাকতে হবে। এটির সারাদেশে ৫০,০০০ এরও বেশি সংখ্যক নিবন্ধিত গাড়ী রয়েছে। বর্তমানে প্রধান তিন শহরের পাশাপাশি নিচের উপশহর গুলোতেও পাঠাও রাইড শেয়ারিং সেবা পাওয়া যাচ্ছে :
- গাজীপুর
- হাটহাজারী, চট্টগ্রাম
- টঙ্গী, গাজীপুর
- সাভার, ঢাকা
- আশুলিয়া
- নারায়ণগঞ্জ
- কাঠমান্ডু, নেপাল[১৩]
খাদ্য ডেলিভারি
[সম্পাদনা]পাঠাও ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের যেকোনো জায়গায় ট্রাফিক জ্যাম ছাড়া অর্ডারের ৪৫ মিনিটের মধ্যে তাদের ফুড ডেলিভারি সেবা দিয়ে থাকে।
পাঠাও নেপাল
[সম্পাদনা]১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ পাঠাও ঘোষণা করে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তারা নেপালের কাঠমান্ডুতে তাদের রাইড শেয়ারিং সেবা চালু করতে যাচ্ছে।[১৪] মে ২০১৮ এ পাঠাও, আশীম ম্যান সিং বসনিয়াতকে পাঠাও নেপালের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়।
সমালোচনা
[সম্পাদনা]পাঠাও পে
[সম্পাদনা]২৪ মে ২০১৮ সালে, পাঠাও পাঠাও পে নামে মোবাইল ওয়ালেট পরিষেবা চালু করে, যার মাধ্যমে গ্রাহকরা নগদ টাকা ব্যবহার না করে অ্যাপের মাধ্যমে চালকদের অর্থ প্রদান করতে পারেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া ‘পাঠাও পে নামক ওয়ালেট সেবা চালু করায়, এটি চালুর কিছু মাস পর বাংলাদেশ ব্যাংক পাঠাওর এই সেবা বন্ধ করে দেয়।[১৫] এক বিবৃতিতে পাঠাওর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হুসেন এম এলিয়াস জানান যে "আমরা যখন ওয়ালেট হিসাবে পরিষেবাটি শুরু করেছিলাম তখন আমরা একটি সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলাম। ভবিষ্যতে সমস্ত [বিধি] ও শর্ত পূরণ করে আমরা পরিষেবাটিকে উন্মুক্ত ওয়ালেটে পরিণত করব।"
উপাত্ত পরিচালনা
[সম্পাদনা]৫ নভেম্বর ২০১৮ সালে, ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখানো হয় যে পাঠাওর অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনটি ইচ্ছাকৃতভাবে এসএমএস এবং যোগাযোগের তালিকাসহ সংবেদনশীল তথ্যগুলি অনুলিপি করছে।[১৬][১৭] পরে পাঠাও একটি বিবৃতি প্রকাশ করে দাবি করে যে ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে সংগৃহীত তথ্যগুলি সুরক্ষিত এবং গোপন রাখা হয় এবং তারা সমস্ত শর্ত ও শর্তাবলী অনুসারে অন্যান্য সংস্থার মতোই সেরা রীতি ব্যবহার করে। ৮ নভেম্বর ২০১৮ সালে সংবেদনশীল বৈশিষ্ট্যগুলি ছাড়াই পাঠাও একটি নতুন হালনাগাদ প্রকাশ করে প্রকাশ করেছিল।[১৮]
পুনর্গঠন
[সম্পাদনা]২৬ জুন ২০১৯ সালের প্রায় ৩০০ জন কর্মী ছাটাই নিয়ে পাঠাও সমালোচনার মুখোমুখি হয়।[১৯] পাঠাও জানায় যে ব্যয় সংকোচন করতে তারা এটি করেছে।
আইন
[সম্পাদনা]২২ নভেম্বর ২০১৬ সালে ঢাকায় উবার চালু হবার পরে, বাংলাদেশ মোটরযান আইনে দ্বন্দ্ব হবার কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশ সড়ক ও পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং পরিষেবাকে অবৈধ ঘোষণা করে। পাঠাওসহ আমার রাইড, উবার এবং বাহন এই বিধিটির বিরুদ্ধে আবেদন করে এবং পরে রাইড শেয়ারিং সেবা পরিচালনা করতে অনুমতি দিতে একটি খসড়া বিল প্রণয়নের জন্য সরকারের কাছে তদবির করে। পরে বিআরটিএ রাইড শেয়ারিং সেবা চালানোর জন্য একটি নির্দেশিকা প্রণয়ন করে। পাঠাওসহ অন্য রাইড শেয়ারিং পরিষেবাকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে অপারেশন লাইসেন্স প্রদান করা হয়। ৩ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে পাঠাও বিআরটিএ-র কাছ থেকে তালিকাভুক্তির সার্টিফিকেট লাভ করে।[২০]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "'Pathao', not just a ride service, it's a courier service as well"। dailyasianage.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-০৭।
- ↑ "স্মার্ট পেশা হিসেবে 'পাঠাও' বেছে নিয়েছেন শতাধিক তরুণ"। দৈনিক যুগান্তর। ২০১৭-০৭-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-০৭।
- ↑ "Meet the minds behind the success of Pathao"। dhakatribune.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-০৭।
- ↑ ক খ https://www.dhakatribune.com/business/2018/09/12/pathao-launches-in-nepal
- ↑ Islam, Zyma (৫ জুলাই ২০১৯)। "Where is Pathao headed?"। The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২০।
- ↑ "বাড়তি ভাড়ায় শুরু হলো 'পাঠাও কারস্'"। banglanews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-০৭।
- ↑ "Uber and Pathao"। thedailystar.net (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-০৭।
- ↑ "Pathao will now also send cars"। prothom-alo.com। ২০১৭-১২-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-০৭।
- ↑ "Revolutionary rise of digital startups"। The Bangladesh Post। ২৯ জুলাই ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ ডেস্ক, বাণিজ্য (27 অক্টোবর, 2023)। "নতুন লোগোতে পাঠাওয়ের পথচলা শুরু"। Prothomalo। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ "Pathao - Crunchbase"। Crunchbase।
- ↑ "Pathao's Digital Payment Push Runs Into A Wall - Future Startup"। 12 সেপ্টেম্বর, 2018। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ "Bangladesh's Ride-hailing App, Pathao Starts Operations in Kathmandu"। TechLekh: Latest Tech News, Reviews, Startups and Apps in Nepal (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৯-২৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১১-০২।
- ↑ "Pathao To Launch In Nepal - Future Startup"। 10 সেপ্টেম্বর, 2018। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ "'পাঠাও পে' বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক"। দৈনিক ইনকিলাব। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০২০।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব (২০১৮-১১-১৪)। "তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর পুলিশ"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-২৬।
- ↑ "পাঠাও'র তথ্য চুরি! আইনের ধোপে টিকবে কি ব্যাখ্যা?"। Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-১১-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-২৬।
- ↑ "ব্যক্তিগত তথ্য গোপনে হাতিয়ে নিচ্ছে পাঠাও"। Barta24 (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-১১-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-২৬।
- ↑ "তহবিল সংকটে অর্ধেকের বেশি কর্মী ছাঁটাই করল পাঠাও"। যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-২৬।
- ↑ "বিআরটিএ'র সার্টিফিকেট পেল উবার-সহজ-পাঠাও"। কালের কণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০২০।
আরো দেখুন
[সম্পাদনা]বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- দাপ্তরিক ওয়েবসাইট
- গুগল প্লে স্টোরে পাঠাও