পাকিস্তান, ভারত
পাকিস্তান | |
---|---|
গ্রাম | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | বিহার |
জেলা | পূর্ণিয়া |
সরকার | |
• ধরন | পঞ্চায়েত রাজ |
• শাসক | গ্রাম পঞ্চায়েত |
ভাষা | |
• সরকারি | মৈথিলি, হিন্দি |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+৫:৩০) |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | আইএন-বিআর |
পাকিস্তান হল ভারতের বিহার রাজ্যের অন্তর্গত পূর্ণিয়া জেলার একটি গ্রাম। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের সময় গ্রামটির যেসব মুসলিম অধিবাসী গ্রাম ছেড়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (অর্থাৎ, বর্তমান বাংলাদেশে) চলে গিয়েছিল তাদের স্মরণে গ্রামটির নামকরণ করা হয়েছে "পাকিস্তান"।[১] সেসময় পূর্ণিয়া ছিল পূর্ব পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী একটি জেলা।[২]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৯৪৭ সালের আগে পূর্ণিয়া জেলা ব্রিটিশ ভারতের নেপাল প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৪৭ এর আগস্টে ঔপনিবেশিক ভারত দুটি অংশে বিভক্ত হয়ে যায়: পাকিস্তান অধিরাজ্য আর ভারত অধিরাজ্য।
সে সময় পূর্ণিয়া ছিল পূর্ব পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী একটি জেলা। তাই সেখান থেকে অনেক মুসলমানই পূর্ব পাকিস্তানে পাড়ি জমান। উক্ত গ্রামের সব মুসলমানই গ্রাম ছেড়ে চলে যান। যাওয়ার আগে তারা তাদের সম্পদ প্রতিবেশী হিন্দুদের হস্তান্তর করে যান।[৩] এই মুসলমানদের স্মৃতি রক্ষায় পরবর্তীতে গ্রামটির নাম "পাকিস্তান" রাখা হয়।
এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, রাজ্য পুনর্গঠন আইন, ১৯৫৬ অনুসারে পূর্ণিয়া জেলা পূর্ব পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে জেলাটির পূর্ব পাকিস্তান সংলগ্ন ইসলামপুর মহকুমা পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[১] ফলে বর্তমানে পূর্ণিয়া জেলার সাথে বাংলাদেশের সীমান্ত নেই।
পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবেই বেশ বৈরী সম্পর্ক বিরাজমান। এর সূত্রপাত মূলত ১৯৪৭ সালেই; কেননা, তখন বিভাজনকে কেন্দ্র করে যে দাঙ্গা ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল তা থেকে বাঁচার জন্য লক্ষ লক্ষ শরণার্থীকে উভয় দিকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। এছাড়া ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীন হওয়ার পর থেকে দুটি দেশ বেশ কয়েক বার যুদ্ধ করেছে। তবে উক্ত গ্রামের বাসিন্দাদের মতে তারা দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ চায় না বরং "শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা" ছড়িয়ে দিতে চায়।[৪]
ভারতের সরকারি নথিপত্রেও গ্রামটির নাম "পাকিস্তান" হিসেবে নথিভুক্ত করা আছে। গ্রামটির নাম পরিবর্তনের জন্য এখন পর্যন্ত কেউ কোনো প্রচেষ্টা চালায়নি।[৩]
ভূগোল
[সম্পাদনা]পাকিস্তান হল শ্রীনগর সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অন্তর্গত একটি ছোট গ্রাম যা জেলা সদর পূর্ণিয়া থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।[৩]
জনসংখ্যা
[সম্পাদনা]১৯৪৭ সালের ভারত বিভাজনের পর থেকে গ্রামটিতে কোনো মুসলমান নেই। গ্রামের সবা বাসিন্দাই হিন্দু ধর্মের অনুসারী। তারা ভারতের বৃহত্তম উপজাতি- সাঁওতাল জাতির অন্তর্ভুক্ত।[৩] গ্রামের লোকসংখ্যা প্রায় আড়াইশো যার মধ্যে শতাধিক ভোটার।[৫] এ গ্রামটির অধিবাসীরা বেশ দরিদ্র। গ্রামটিতে রাস্তা, স্কুল,[৪] হাসপাতাল প্রভৃতি মৌলিক সুযোগ-সুবিধাও নেই। জেলার মোট সাক্ষরতার হার ৩৫.৫১।[৬][৩]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ "Pakistan without Muslims, a village in India's Bihar state"। www.bihartimes.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-২৮।
- ↑ "The Pakistan that exists in Purnea district of Bihar"। Thaindian News। ২০১২-১০-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-২৮।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ This 'Pakistan' has no Muslims[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ "Daily Times"। Daily Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১২-১২-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-২৮।
- ↑ "इस 'पाकिस्तान' में ज्यादातर लोग हैं मोदी समर्थक..."। aajtak.intoday.in (হিন্দি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-২৮।
- ↑ "Census Statistics for Bihar"। gov.bih.nic.in। ২০০৮-০৫-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-২৮।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- যে 'পাকিস্তানে' কোনো মুসলমান নেই; ইন্ডিয়া টুডে