পশ্চিমী ক্যাথলিক গির্জার বিভেদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মানচিত্রে পশ্চিমের বিভেদে এভিগোঁ এর সমর্থকদেরকে লাল এবং রোম এর সমর্থকদেরকে নীল রং এ চিহ্নিত করা হয়েছে। পিসা এর পরিষদ (১৪০৯) এর আগ পর্যন্ত পশ্চিম ইউরোপে এরকম ভাঙ্গন ছিল। হলুদ রং দ্বারা চিহ্নিত অঞ্চলে সমর্থনের পরিবর্তনশীল ছিল। ধূসর বর্ণের অঞ্চলগুলো ক্রিসচেনডম বা খ্রিষ্টীয় শাসনাধীনে ছিল না, এই অঞ্চলগুলো ছিল মুসলিম শাসনের অধীনে, যেমন কিংডম অফ গ্রেনাডা।

পশ্চিমী ক্যাথলিক গির্জার বিভেদ (ইংরেজি: Western Schism) হচ্ছে পশ্চিম ইউরোপে ক্যাথলিক গির্জার মধ্যকার একটি বিভেদ যা ১৩৭৮ থেকে ১৪১৭ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল।[১] এই সময়ে একই সাথে তিনজন ব্যক্তি নিজেকে পোপ বলে দাবী করেন। এই বিভেদটির সূত্রপাত কোন ধর্মতাত্ত্বিক অনৈক্যের দ্বারা চালিত হয় নি, বরং চালিত হয়েছিল রাজনীতির কারণে। আর এই বিভেদের পরিসমাপ্তি ঘটেছিল কনস্ট্যান্সের পরিষদের মধ্য দিয়ে। পোপের আসন অর্জন লাভের প্রতিযোগিতার কারণে চার্চের মর্যাদা সেইসময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কখনও কখনও এই ঘটনাকে বিরাট বিভেদ বলা হয়ে থাকে, কিন্তু "বিরাট বিভেদ" শব্দটির দ্বারা সাধারণত ১০৫৪ সালের পূর্ব-পশ্চিম বিভেদকেই বোঝানো হয়ে থাকে, যার ফলে খ্রিষ্টধর্ম পশ্চিমের রোমান ক্যাথলিক চার্চ আর পূর্বের অর্থোডক্স চার্চে ভাগ হয়ে যায়।

বিভেদের উৎস[সম্পাদনা]

পোপের ক্ষমতাকে বলা হয় পাপাসি। পশ্চিমের রোমান চার্চে বিভেদের সূচনা হয় ১৩৭৭ সালের ১৭ জানুয়ারিতে একাদশ গ্রেগরির তত্ত্বাবধানে রোমে পাপাসি ফেরার পরে,[২] যিনি এভিগোঁ পাপাসির (Avignon Papacy) সমাপ্তির পর আসেন। এই এভিগোঁ পাপাসি (ফ্রান্সের এভিগোঁ ভিত্তিক বলে এই নামকরণ) ছিল দুর্নীতির জন্য বিখ্যাত, আর খ্রিষ্টীয় শাসনাধীন অঞ্চলের একটি বড় অংশকে এটি বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিল। এর কারণ ছিল চার্চে ফরাসী প্রভাব এবং চার্চের দায়িত্বপ্রাপ্ত কিউরিয়ার ক্ষমতা ও সম্পদ বৃদ্ধির আকাঙ্ক্ষা।

১৩৭৮ সালে পোপ একাদশ গ্রেগরির মৃত্যুর পর পোপ হিসেবে একজন রোমানকে (হলি রোমান এম্পায়ার বা পবিত্র রোমান সাম্রাজ্য থেকে) নির্বাচনের জন্য রোমানরা দাঙ্গা শুরু করে। একই সময়ে ইতালিয়দের একটি বড় দল ইতালিয় পোপ (ইতালির স্বাধীন অঞ্চলগুলো থেকে) নির্বাচনের জন্য দাবী করেন। ১৩৭৮ সালের ৮ এপ্রিলে কার্ডিনালগণ ইতালিয় জনগণের বল প্রয়োগে একজন নেপলিতানকে (ইতালির নেপলস এর অধিবাসী) নির্বাচিত করেন।[৩] ব্যারি অঞ্চলের আর্চবিশপ ষষ্ঠ আরবানকে (আসল নাম বারটোলোমিও প্রিগনানো) পোপ হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। আরবান ছিলেন এভিগোঁ এর পাপাল চ্যান্সারির একজন সম্মানিত পরিচালক, কিন্তু তার পোপ হিসেবে তিনি সন্দেহজনক ও সংস্কারপন্থী বলে প্রমাণিত হন, আর সেই সাথে রাগলে তিনি সহিংস হয়ে উঠতেন। যেসব কার্ডিনালগণ তাকে নির্বাচিত করেছিলেন তারা খুব শীঘ্রই তাদের সিদ্ধান্তের জন্য অনুতাপ করা শুরু করেন। এদের অনেকেই রোম থেকে এনাগণিতে চলে যান। তারা এরপর একই বছরের ২০ সেপ্টেম্বরে জেনেভার রবার্টকে প্রতিদ্বন্দ্বী পোপ হিসেবে নির্বাচিত করেন। রবার্ট নিজে সপ্তম ক্লিমেন্ট নামে আত্মপ্রকাশ করেন এবং এভিগোঁ এর পাপাল কোর্টে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। এই দ্বিতীয় নির্বাচনের ফলে চার্চে হুলস্থুল কাণ্ড লেগে যায়। এর আগেও পাপাসি পদের দাবীতে প্রতিদ্বন্দ্বীদেরকে দেখা গিয়েছিল যাদেরকে এন্টিপোপক্লেইমেন্টস বলা হত। কিন্তু সেসব ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের দ্বারা পোপ আর এন্টিপোপকে নিযুক্ত করা হত। কিন্তু এই প্রথমবারের মত এক্ষেত্রে চার্চের একটা নির্দিষ্ট গ্রুপই একজন পোপ আর একজন এন্টিপোপ এর সৃষ্টি করল। এটা ইউরোপীয়দেরকে ভীষণ বিভ্রান্ত করে দেয়, যারা পোপকে সবসময়ই পবিত্র এবং অনেক সম্মানিত হিসেবে ভেবে এসেছে। এখন দুইজন একসাথে পোপ হবার ফলে তাদের পক্ষে এদের মধ্যে যেকোন একজনকে বিশ্বাস করাটা কঠিন হয়ে গিয়েছিল।[৪]

এই দ্বন্দ্বের ফলে খুব দ্রুতই চার্চের সমস্যাটি ইউরোপের কুটনৈতিক সমস্যায় পরিণত হয়, আর এর ফলে সমগ্র ইউরোপই (পশ্চিমের ক্যাথলিক চার্চ শাষিত ইউরোপ) দুইভাগে ভাগ হয়ে যায়। প্রত্যেক অঞ্চলের রাজাদেরকেই এই দুইজনের মধ্যে একজনকে স্বীকৃতি দেবার জন্য বেছে নিতে হয়েছিল।

  • এভিগোঁ: ফ্রান্স, এরাগন, ক্যাস্টাইল ও লিও, সাইপ্রাস, বারগন্ডি, স্যাভয়, নেপলস, স্কটল্যান্ড ও ওয়েলসের ওয়েইন গ্লেন্ডরের বিদ্রোহী দল এভিগোঁ এর পোপকে স্বীকৃতি দিয়েছিল।
  • রোম: ডেনমার্ক, ইংল্যান্ড, ফ্ল্যান্ডার্স, হলি রোমান এম্পায়ার, হাংগেরি, আয়ারল্যান্ড (বৃটিশদের অধীনে), নরওয়ে, পর্তুগাল, পোল্যান্ড (পরবর্তীতে পোল্যান্ড-লিথুনিয়া), সুইডেন, রিপাবলিক অফ ভেনিস এবং উত্তর ইতালির অন্যান্য শহর রোমের পোপকে স্বীকৃতি দেয়।

আইবেরিয়ান পেনিনসুলায় তখন ফারনানদিন যুদ্ধ চলছিল, আর পর্তুগালে তখন ১৩৮৩-১৩৮৫ সংকট চলছিল, যার ফলে সেইসময়ের রাজ্যের বিরোধীরা পাপাল অফিসের প্রতিদ্বন্দ্বী দাবীকর্তাকে সমর্থন করেন।

ফলাফল[সম্পাদনা]

কনস্ট্যান্সের পরিষদে কার্ডিনালের ঘোষণাপত্র প্রদান

পোপ ষষ্ঠ আরবান এবং এন্টিপোপ সপ্তম ক্লিমেন্টের মৃত্যুর পরও এই বিভেদের অবসান ঘটেনি। ১৩৮৯ সালে রোমে নবম বনিফেস পোপ হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন, এদিকে ১৩৯৪ সালে এভিগোঁতে এন্টিপোপ হিসেবে ত্রয়োদশ বেনেডিক্ট দায়িত্ব গ্রহণ করে তাদের স্বীকৃতিদানকারী অঞ্চলসমূহে দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। রোমের পোপ বনিফেসের ১৪০৪ সালে মৃত্যুর পর, রোমান মন্ত্রণাসভার আটজন কার্ডিনাল প্রস্তাব করেন যাতে এন্টিপোপ বেনেডিক্ট পদত্যাগ করলে যাতে তারা নতুন কোন পোপকে নির্বাচিত না করেন। কিন্তু বেনেডিক্টের দূতগণ বেনেডিক্টের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাবকে অস্বীকার করেন। এর ফলে রোমান কার্ডিনালগণ পোপ সপ্তম ইনোসেন্টকে পোপ হিসেবে নির্বাচিত করেন।

ডাচ ঐতিহাসিক জোহান হুইজিংগা বলেন, পশ্চিমের বিভেদ নিয়ে ভীষণ দলাদলির কারণে একরকম ধর্মান্ধ ঘৃণাও তৈরি হয়।[৫] তিনি তার গ্রন্থ দ্য ওয়েনিং অফ দ্য মিডল এজেস - এরকম কিছু ঘটনা তুলে ধরেন যা থেকে বিষয়টা স্পষ্ট হতে পারে। তৎকালীন ফ্ল্যান্ডার্সের ব্রুজ শহর (বর্তমান বেলজিয়ামের অন্তর্গত) এভিনোঁ এর এন্টিপোপের আনুগত্যে চলে গেলে, সেখানকার প্রচুর লোক শহর ত্যাগ করে রোমের পোপ আরবান এর সমর্থনকারী অঞ্চলে চলে যায়। ১৩৮২ সালের রুজবেকের যুদ্ধে ফ্রান্স ফ্লেমিংদের বিরুদ্ধে ওরিফ্লেম ব্যানার ব্যবহার করে। ওরিফ্লেম ব্যানার কেবল মাত্র ধর্মযুদ্ধের মত পবিত্র কারণেই ব্যবহার করা হত। ফ্লেমিংরা আরবান এর সমর্থক বা আরবানিস্ট ছিল বলে ফ্রেঞ্চরা তাদেরকে বিভেদকারী ও ভিন্ন সম্প্রদায়ের হিসেবে দেখত।

বলপূর্বক বা কূটনীতিকভাবে এই বিভেদের পরিসমাপ্তির জন্য চেষ্টা করা হয়। ফরাসী রাজশক্তি নামে এন্টিপোপ ত্রয়োদশ বেনেডিক্ট এর সমর্থনকারী ছিল, কিন্তু তারাও তার উপর পদত্যাগের জন্য জোড় দেয়া শুরু করে। কিন্তু এসবের কিছুই কাজ করেনি। চার্চ এর পরিষদ থেকে বিভেদ মেটানোর প্রথম চেষ্টা করা হয় ১৩৭৮ সালে। কিন্তু সেটা সম্ভব হয় নি, কেননা চার্চের ক্যানন আইন অনিসারে একমাত্র পোপই পরিষদের ডাক দিতে পারেন। এরপর পিয়েরে ডি'এইলি এবং জ্যাঁ গারসনের মত ধর্মতাত্ত্বিকগণ এবং ফ্রান্সিসকো জাবারেলা এর মত ক্যানন আইনজীবী মিলে সিদ্ধান্ত নেন যে অধিকতর মঙ্গলের জন্য ক্যানন আইনের বিরুদ্ধে যাবার সিদ্ধান্ত নেন।

এরপর উভয় অংশের কার্ডিনালগণই একটি চুক্তিতে সম্মত হন যেখানে বলা হয় এন্টিপোপ বেনেডিক্ট এবং পোপ দ্বাদশ গ্রেগরি স্যাভোনায় সাক্ষাত করবেন (১৪০৪ সালে পোপ বনিফেসের মৃত্যুর পর সপ্তম ইনোসেন্ট পোপ হয়ে আসেন, তিনি ১৪০৬ সালে মৃত্যুবরণ করলে কার্ডিনালগণ দ্বাদশ গ্রেগরিকে পোপ হিসেবে নির্বাচিত করেন।)।পোপ ও এন্টিপোপের সাক্ষাতের চুক্তি হলেও শেষ মুহূর্তে তারা তাদের মত পরিবর্তন করেন। এরফলে উভয়পক্ষের কার্ডিনালগণই তাদের পোপকে পরিত্যাগ করেন। এরপর ১৪০৯ সালে পিসায় (বর্তমান ইতালিতে) একটি চার্চ পরিষদ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে এই বিভেদের সমাধানের চেষ্টা করা হয়। এর পঞ্চদশ অধিবেশনে, ১৪০৯ সালের ৫ জুনে, পিসার পরিষদে পোপ এবং এন্টিপোপ উভয়কেই বিভেদকারী, সাম্প্রদায়িক, ধর্মবিরোধী, কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং কলঙ্কপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে তাদেরকে পদচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।[৬] কিন্তু এক্ষেত্রে তারা দ্বিতীয় আরেকজনকে এন্টিপোপ হিসেবে নির্বাচিত করেন, যা আবার নতুন সমস্যা তৈরি করে দেয়। এই এন্টিপোপ হচ্ছেন পঞ্চম আলেকজান্ডার। তিনি তার মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত খুব কম সময়ের জন্য এন্টিপোপ এর মর্যাদায় ছিলেন (১৪০৯ সালের ২৬ জুন থেকে ১৪১০ সালে তার মৃত্যু পর্যন্ত)। তার মৃত্যুর পর ত্রাবিংশ জন এন্টিপোপ হন। তিনি কয়েকজনের সমর্থন পেলেও সকলের সমর্থন লাভ করতে পারেন নি।

সমাধান[সম্পাদনা]

শেষ পর্যন্ত পিসার এন্টিপোপ ত্রাবিংশ জন ১৪১৪ সালে কনস্ট্যান্সে (বর্তমান জার্মানির দক্ষিণে কনস্টানজ নামে পরিচিত, তদকালিন পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যে অবস্থিত ছিল) বিষয়টির সমাধানের জন্য আরেকটি পরিষদ ডাকেন। পোপ দ্বাদশ গ্রেগরি পরিষদের অনুমোদন দান করেন, আর এর মাধ্যমে পরিষদের বৈধতাকে নিশ্চিত করা হয়। ধর্মতাত্ত্বিক জ্যাঁ গারসন এর উপদেশে সভা পোপ দ্বাদশ গ্রেগরি এবং এন্টিপোপ ত্রাবিংশ জনের পদত্যাগ নিশ্চিত করে। তারা ১৪১৫ সালে পদত্যাগ করেন।

তবে আরেকজন এন্টিপোপ ত্রয়োদশ বেনেডিক্টকে পদত্যাগ করতে বলা হলে তিনি পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানান। তার জেদের কারণে কনস্ট্যান্সের পরিষদ তাকে বিভেদকারী ও সাম্প্রদায়িক বলে ঘোষণা করে, এবং তাকে ১৪১৭ সালের ২৭ জুলাই চার্চ থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাকে কেবল মাত্র কিংডম অফ এরাগন (বর্তমান স্পেইনে) সমর্থন করত বলে তিনি এরাগনে পলায়ন করেন এরাগনরাজ পঞ্চম আলফনসো এর সুরক্ষায় ১৪২৩ সালে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাকি জীবন কাটান।[৭]

ত্রয়োদশ বেনেডিক্টকে চার্চচ্যুত করার পর ১৪১৭ সালে পোপ পঞ্চম মার্টিনকে পোপ হিসেবে নির্বাচিত করা হয়, আর এর মধ্য দিয়ে পশ্চিমের বিভেদের অবসান হয়। একমাত্র এরাগন রাজ্য ছাড়া সকলেই পোপ পঞ্চম মার্টিনকে স্বীকৃতি দান করে। ত্রয়োদশ বেনেটিক্টের অনুগত সকল আর্চবিশপ এন্টিপোপ হিসেবে চতুর্দশ বেনেডিক্টকে (বারনার্ড গারনিয়ের) নির্বাচিত করেন, আর তারপর এন্টিপোপ হিসেবে অষ্টম ক্লিমেন্টকে নির্বাচিত করা হয়। কিন্তু কার্যকরভাবে পশ্চিমের বিভেদের অবসান হয়ে গিয়েছিল। ১৪২৯ সালে অষ্টম ক্লিমেন্ট পদত্যাগ করেন এবং পঞ্চম মার্টিনকে পোপ হিসেবে স্বীকার করে নেন।

এরপর থেকে রোমান পোপদের ধারাই বৈধ ধারা হিসেবে স্বীকৃত হয়, কিন্তু উনিশ শতকের আগ পর্যন্ত এটা নিয়ে বিভ্রান্তি ছিলই। পোপ দ্বিতীয় পায়াস (মৃত্যু ১৪৬৪ সাল) আদেশ জাড়ি করেন যে, পোপ কখনও পরিষদের (কাউন্সিলে) আবেদন করতে পারবেন না যাতে ভবিষ্যতে নির্বাচিত পোপ ছাড়া আর অন্য কেউ কোন পোপ নির্বাচনকে বাতিল না করতে পারেন। পঞ্চদশ শতকে এরকম কোন সমস্যা আর দেখা যায় নি, আর তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আর কোন পুনরালোচনা করতে হয়নি। ইতিহাসে পোপ পদের বিকল্প দাবীকর্তাদেরকে এন্টিপোপ বলা হয়। এভিগোঁ এর এন্টিপোপদেরকে রোম কর্তৃক বাতিল করে দেয়া হয়, কিন্তু পিসার পোপদেরকে বাতিল করা হয়নি। আর তাই পিসার পোপ পঞ্চম আলেকজান্ডার এর নামের কারণে ১৪৯২ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করা রদ্রিগো বর্জা রেগনাল নাম গ্রহণ করেন ষষ্ঠ আলেকজান্ডার।

শেষবারের মত মৃত্যুর পূর্বেই পদত্যাগ গ্রহণ করা পোপ হচ্ছেন পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট, যিনি ২০১৩ সালে পদত্যাগ করেন। কিন্তু তার পূর্বে পোপ দ্বাদশ গ্রেগরিই ১৪১৫ সালে মৃত্যুর পূর্বে পদত্যাগ গ্রহণ করা শেষ পোপ ছিলেন। দ্বাদ্বস গ্রেগরি ১৪১৫ সালে পদত্যাগ গ্রহণ করেন, কিন্তু ১৪১৭ সালে তার মৃত্যুর পূর্বের ২ বছর পোপের পদ শূন্য রাখা হয়েছিল। তার মৃত্যুর পরেই পঞ্চম মার্টিন পোপ হিসেবে অধিষ্ঠিত হন।

টীকা[সম্পাদনা]

  1. "Western Schism"। britannica.com। ডিসেম্বর ২০১৪। 
  2. J.N.D. Kelly, Oxford Dictionary of the Popes, p. 227
  3. Babylonian
  4. Babylonia
  5. Huizinga, The Waning of the Middle Ages, 1924:14
  6. J. P. Adams, Council of Pisa: Deposition of Benedict XIII and Gregory XII, with additional references. Retrieved 02/26/2106.
  7. Brusher, Rev. Joseph Stanislaus (১৯৮০) [1959 Van Nostrand]। "The Great Schism"। Popes through the Ages (3rd সংস্করণ)। Neff-Kane। আইএসবিএন 978-0-89141-110-9 

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  • The Three Popes: An Account of the Great Schism, by Marzieh Gail (New York, 1969).
  • The Great Schism: 1378, by John Holland Smith (New York 1970).
  • The Origins of the Great Schism: A study in fourteenth century ecclesiastical history, by Walter Ullmann (Hamden, Conn: Archon Books, 1967 (rev. of 1948 original publication)) [strongly partisan for Urban VI].
  • A Companion to the Great Western Schism (1378-1417), ed. Joëlle Rollo-Koster and Thomas M Izbicki (Leiden: Brill, 2009).
  • McGill, Sara Ann. (2009). Babylonian Captivity & the Great Western Schism.

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]