পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা সরকারি এবং বেসরকারি উভয় তরফেই হয়ে থাকে। ব্রিটিশ যাজক এবং ভারতীয় সমাজ সংস্কারকদের হাত ধরে এতদঞ্চলে আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতির উন্নতি ঘটেছিল। পশ্চিমবঙ্গে অনেক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে, যেমন: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট ক্যালকাটা, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, খড়গপুর, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ভারতীয় প্রকৌশল বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান, শিবপুর, ভারতীয় বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থান, কলকাতা, রাষ্ট্রীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, দুর্গাপুর, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি, কল্যাণী, ভারতীয় রাশিবিজ্ঞান সংস্থা, পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

লন্ডন মিশন গার্লস স্কুল, কলকাতা (LMS, ১৮৬৯, পৃ ১২)[১]

ভারতে আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতির উন্নয়নে কলকাতার একটা অগ্রণী ভূমিকা আছে। ভারতে পাশ্চাত্য ধাঁচের শিক্ষা এসেছিল কলকাতার মাধ্যমে। যাজক ও সমাজ সংস্কারকদের দ্বারা অনেক স্কুল এবং কলেজের প্রথম প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। উইলিয়াম জোন্স (ভাষাতাত্ত্বিক) ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে প্রাচ্যবিদ্যা প্রচারের জন্যে এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। রাজা রামমোহন রায়, ডেভিড হেয়ার, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, শশিভূষণ চ্যাটার্জি এবং উইলিয়াম কেরি প্রমুখ কলকাতা শহরে আধুনিক স্কুল এবং কলেজ তৈরিতে নেতৃভূমিকা নিয়েছিলেন। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ। হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে। ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে হিন্দু কলেজ-এর নাম পরিবর্তন করে প্রেসিডেন্সি কলেজ নামকরণ করা হয়।

উইলিয়াম কেরি ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে শ্রীরামপুর শহরে শ্রীরামপুর কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভারতের প্রথম আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ১৮২৭ খ্রিস্টাব্দে চালু হয়েছিল, যখন এটা ডেনিশ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রাজকীয় সনদের দ্বারা সমিতিবদ্ধ হয়। যদিও এই প্রতিষ্ঠানের সনদ ছিল, তবুও এটা বাস্তবিকভাবে এটা আধুনিক অর্থে বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দে সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। স্কটল্যান্ড চার্চের রেভারেন্ড আলেকজান্ডার ডাফ ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশন এবং ১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দে ফ্রি চার্চ ইনস্টিটিউশন। এই দুই প্রতিষ্ঠান পরবর্তীতে একীকরণ হয়ে যে নতুন সংস্থান গঠিত হয় তার নাম হল স্কটিশ চার্চ কলেজ, কলকাতা। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি ইয়ং বেঙ্গল এবং বাংলার নবজাগরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। লা মার্টিনিয়ার কলকাতা ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। জন বেথুন ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় বালিকাদের জন্যে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন এমন একটা সময়ে যখন কিনা সমাজে নারী শিক্ষার নামে ভ্রূকুঞ্চিত হোত। ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে বেথুন কলেজ তাঁর দ্বারা তৈরি হয়েছিল।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. London Missionary Society, সম্পাদক (১৮৬৯)। Fruits of Toil in the London Missionary Society। London: John Snow & Co.। পৃষ্ঠা 12। সংগ্রহের তারিখ ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬