নাজিউর রহমান মঞ্জুর
এই নিবন্ধটিতে অ-উইকিপিডিয়াসুলভ শব্দ রয়েছে: এবং রয়েছে অস্পষ্ট বাক্যাংশ যা প্রায়শই পক্ষপাতমূলক বা যাচাই করা যায় না এমন তথ্যের সাথে থাকে। (জুলাই ২০২৩) |
নাজিউর রহমান মঞ্জুর | |
---|---|
মেয়র ঢাকা সিটি কর্পোরেশন | |
কাজের মেয়াদ ৯ অক্টোবর ১৯৮৯ – ২ ডিসেম্বর ১৯৯০[১] | |
পূর্বসূরী | আব্দুল মালেক |
উত্তরসূরী | আবুল হাসানত |
সংসদ সদস্য, ভোলা-১[২] | |
কাজের মেয়াদ ১০ জুলাই ১৯৮৬ – ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ | |
পূর্বসূরী | প্রতিষ্ঠিত |
উত্তরসূরী | তোফায়েল আহমেদ |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৯ মার্চ ১৯৪৯ ভোলা জেলা, পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে- বাংলাদেশ) |
মৃত্যু | ৬ এপ্রিল ২০০৮ ঢাকা |
রাজনৈতিক দল | জাতীয় পার্টি |
দাম্পত্য সঙ্গী | শেখ রেবা রহমান |
সন্তান | আন্দালিব রহমান পার্থ ,আশিকুর রহমান শান্ত |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
জীবিকা | রাজনীতিবিদ |
নাজিউর রহমান মঞ্জুর (১৯ মার্চ ১৯৪৯ - ৬ এপ্রিল ২০০৮) বাংলাদেশের ভোলা জেলার একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের ভোলা-১ আসন থেকে একজন নির্বাচিত সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন সাবেক স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র।[৩] নাজিউর রহমান মঞ্জুরের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় দলটি বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) নামেও পরিচিত।
জন্ম ও বংশ
[সম্পাদনা]নাজিউর রহমান মঞ্জুর ১৯ মার্চ ১৯৪৯ খ্রীষ্টাব্দের তৎকালীন পাকিস্তান অধিরাজ্যের পূর্ব বাংলার বাকেরগঞ্জ জেলার ভোলা মহকুমার একটি সম্ভ্রান্ত বাঙ্গালী মোসলমান খান্দানে জন্মগ্রহণ করেন, যারা বালিয়ার তালুকদার বংশ হিসাবে পরিচিত। তাঁর পূর্বপুরুষ মুঙ্গা খাঁ আঠারো শতাব্দীতে আফগানিস্তানের গরমশির হতে বৃহত্তর বরিশালের সালুকা গাঁওয়ে বসবাস শুরু করেন। মুঙ্গা খাঁর ছেলে শেখ মহম্মদ সম্ভবত মোগলদের রাজস্ব কর্মকর্তা ছিলেন তাই শিকদার খেতাব লাভ করেছিলেন। ভোলার বালিয়া ও গজারিয়া এলাকায় খারিজা তালুক পেয়ে খান্দানটি সালুকা হতে বালিয়ায় আসে। মঞ্জুরের নসবনামা হচ্ছেঃ নাজিউর রহমান মঞ্জুর ইবনে বজলুর রহমান তালুকদার ইবনে আব্দুর রহমান তালুকদার ইবনে আরব আলী শিকদার ইবনে শেখ বাখর শিকদার ইবনে শেখ দুবিল খাঁ ইবনে শুকুর মহম্মদ শিকদার ইবনে শেখ মহম্মদ শিকদার ইবনে মুঙ্গা খাঁ। মঞ্জুরের ভাই ড. আজিজুর রহমান ছিলেন একজন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী।[৪]
শিক্ষা
[সম্পাদনা]মঞ্জুর গ্রামের স্কুলেই প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। এরপর তিনি বরিশালের এ. কে স্কুল থেকে ১৯৬৩ সালে কৃতিত্বের সাথে এস.এস.সি পাশ করেন। এ সময় তিনি ইউটিসি’র ক্যাডেট ছিলেন এবং ১৯৬৩ সালে জিওসি’র স্বর্ণপদক লাভ করেন। তিনি একনাগাড়ে সাত বছর ইউটিসির সামরিক প্রশিক্ষণ লাভ করেন এবং ক্যাডেটের সর্বোচ্চ পদ ক্যাডেট আন্ডার অফিসার হিসাবে নিযুক্তি লাভ করেন। নাজিউর রহমান ঢাকার কায়েদে আজম কলেজে (বর্তমান সোহরাওয়াদী কলেজ) ভর্তি হয়ে সক্রিয় রাজনীতি শুরু করেন। উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীতে পাঠরত অবস্থায় তিনি ছাত্রলীগ কলেজ শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক এবং কলেজ ছাত্র সংসদের মিলনায়তন সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৬ সালে তিনি আই.এস.সি পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বি.কম সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৬৯ সালে বি.কম সম্মান ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৯ সালেই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কমার্স সংসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৭০ সালে সহ-সভাপতি নির্বচিত হন। ওই বছরই তিনি এম. কম ডিগ্রী লাভ করেন।
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]মঞ্জুর বাংলাদেশ বাণিজ্য সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ছিলেন এবং তার নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কমার্স ফ্যাক্যাল্টি প্রতিষ্ঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় ৯নং সেক্টরে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং ভোলাতে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। নাজিউর রহমান ১৯৬৯ সালের গণ-আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। জনাব নাজির রহমান মঞ্জুর ব্যক্তিগত জীবনে একজন বিশিষ্ট শিল্পপতি। তিনি ব্যবসায়ী কাজে ২৬টিরও অধিক দেশ ভ্রমণ করেছেন। তিনি রাষ্ট্রপতি এরশাদের ১৮ দফা বাস্তবায়ন পরিষদের ৫ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় পরিষদের একজন অন্যতম সদস্য ছিলেন এবং খুলনা বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ১৮ দফা বাস্তবায়ন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক নিযুক্ত হন, যে কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। অসীম সাংগঠনিক ক্ষমতার অধিকারী নাজিউর রহমান বিভিন্ন সময়ে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি জনদলেরও সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি এরশাদ সরকারের স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্বরত ছিলেন।
মঞ্জুর ১৯৮৬ সালে ভোলা-১ আসন থেকে জাতয়ি পার্টির মনোনয়নে বিপুল ভোটাধিক্যে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর তিনি সদস্য সমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবী নাজিউর রহমান নিজের উদ্যোগে ভোলাতে ১টি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ৪টি হাই স্কুল, ৮টি মাদ্রাসা এবং ১টি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন।
মৃত্যু
[সম্পাদনা]মঞ্জুর ৬ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।[৩]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "ঢাকা জেলা"। dhaka.gov.bd। ২০২০-০৬-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-৩০।
- ↑ "পঞ্চম জাতীয় সংসদ ১৯৯১-১৯৯৬" (পিডিএফ)। parliament.gov.bd। বাংলাদেশ সংসদ। ২০১৮-০৯-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৮।
- ↑ ক খ চৌধুরী, আমীরুল হক (৬ এপ্রিল ২০১৪)। "নাজিউর রহমান মঞ্জু স্মরণে"। দৈনিক ইত্তেফাক। ১৯ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ সিরাজ উদদীন আহমেদ (২০১০)। "বালিয়ার তালুকদার পরিবার"। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস। ১। ঢাকা: ভাস্কর প্রকাশনী।