দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার
| দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার | |
|---|---|
| পয়ঃনিষ্কাশন শৃঙ্খলে অবস্থান | ঢাকা ওয়াসা |
| প্রয়োগ স্তর | ঢাকা মহানগর |
| ব্যবস্থাপনা স্তর | সরকারি |
| আগম | পয়ঃবর্জ্য |
| নির্গম | বালুখালী নদীতে |
| প্রকারভেদ | বর্জ্যপানি শোধন |
| নির্মাণ ব্যয় | ৩,৭১২ কোটি টাকা |
| পরিবেশগত উদ্বেগসমূহ | পানি দূষণ , পরিবেশগত স্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্য, পয়ঃকর্দম নিষ্পত্তি সমস্যা |
| ব্যবহারকারী সংখ্যা | ৫০ লাখ |
দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার হচ্ছে ২৪ হেক্টর জমির ওপর বাস্তবায়নাধীন একটি প্রকল্প যা দৈনিক ৫০ কোটি লিটার পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনের মাধ্যমে ৫০ লাখ ঢাকাবাসীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।[১][২] ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চীনা রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হাইড্রো চায়না কর্পোরেশন।[৩][৪] ২০১৫ সালের জুলাই মাসে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের কাজ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল।[৫] তবে দুই দফা সংশোধনীতে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।[৬] ১৩ ই জুলাই ২০২৩ এ পয়ঃশোধনাগারটি উদ্বোধন করা হয়েছিল।[৭] শুরুতে প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা।[৮][৯] নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ ও খরচ বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৭১২ কোটি টাকা।[১০][১১] যেটাতে চীন সরকার ঋণ সহায়তা দিচ্ছে।[১২][১৩]
প্রকল্প[সম্পাদনা]
বিশ্বের জনবহুল দেশগুলোর মধ্যে দুই কোটিরও বেশি মানুষের বসবাস ঢাকা একটি অন্যতম শহর। তবে শহরটিতে পয়ঃবর্জ্য শোধনের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় নগরের সব পয়ঃবর্জ্য ড্রেন, নালা, খাল, ঝিল গড়িয়ে চলে যেত ঢাকার চারপাশের নদীতে। ফলে ভয়াবহ আকারে পৌঁছায় নদীর পানিদূষণ।[১৪] এর সমাধান হিসেবে ঢাকা ওয়াসা দাশেরকান্দিতে পয়ঃশোধনাগার স্থাপন করে পরীক্ষামূলক পয়ঃশোধনের কাজ শুরু করেছে।[১৫][১৬] তবে নানা অভিযোগের মধ্যে রয়েছে বাসাবাড়ির পয়োবর্জ্য সংযোগ নির্মাণ করা হয়নি বলে বাড়ির মালিকরা শৌচাগারের বর্জ্য পাইপের সাহায্যে নিচ্ছেন সিটি করপোরেশনের নর্দমা, খাল বা লেকে।[১৭][১৮][১৯]
ঢাকা ওয়াসার আওতাধীন প্রণীত সুয়ারেজ মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী ঢাকা শহরের ভিতর পাগলা, দাশেরকান্দি, রায়েরবাজার, উত্তরা এবং মিরপুর এলাকায় মোট পাঁচটি পয়ঃশোধনাগার নির্মাণ করা হবে। যাতে আশপাশের এলাকার সৃষ্ট পয়ঃবর্জ্য পরিশোধন করে বালু নদীতে নিষ্কাশিত করার মাধ্যমে পানি ও পরিবেশ দূষণ রোধ করা সম্ভব হয়।[৩]
অবকাঠামো[সম্পাদনা]
দাশেরকান্দি শোধনাগারের মাধ্যমে হাতিরঝিলের দক্ষিণ দিকে নির্মিত ছয়টি এবং উত্তর দিকের পাঁচটি স্পেশাল স্যুয়ারেজ ডাইভারশন স্ট্রাকচার (এসএসডিএস) দিয়ে নির্গত বর্জ্য শোধন করা হবে। অতঃপর সেই পানি ফেলা হবে বালু নদীতে। এতে নদীদূষণ হ্রাস পাবার পাশাপাশি চাপ কমবে সায়েদাবাদ পানি শোধনাগারের ওপরও।[৬]
এই পয়ঃবর্জ্য শোধনাগার প্রকল্পে প্রতিদিন ৫০ কোটি লিটার পানি শোধন করে ৪৮ কোটি লিটার স্বচ্ছ পানি বালু নদীতে ফেলা হবে। যাতে বালু নদীর পাশাপাশি শীতলক্ষ্যা নদীর পানি দূষণের পরিমাণও কমবে। এছাড়া এই শোধনাগারের প্রাত্যহিক শুষ্ক বর্জ্য, সিমেন্ট কারখানায় ব্যবহার করা যাবে কাঁচামাল হিসেবে।[৬]
দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার এধরণের বর্জ্যপানি শোধনে পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় সর্ব বৃহৎ পয়ঃবর্জ্য শোধনাগার।[২০]
আরো দেখুন[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ "দাশেরকান্দি ট্রিটমেন্ট প্লান্ট হচ্ছে বসুন্ধরা সিমেন্টে"। www.banglanews24.com/। নভেম্বর ২৭, ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "দৈনিক ৫০ কোটি লিটার পয়ঃবর্জ্য পরিশোধন হবে ওয়াসার দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগারে"। দৈনিক ইত্তেফাক। ২ সেপ্টেম্বর ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ ক খ "আগামী বছর চালু হচ্ছে দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার"। জাগো নিউজ। ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "Construction of China-funded sewage treatment plant starts in Bangladeshi capital"। Xinhua। ১৯ আগস্ট ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "রাজধানীর পয়ঃব্যবস্থা উন্নয়নে দাশেরকান্দিতে শোধনাগার নির্মাণ শুরু"। দৈনিক জনকণ্ঠ। ৩১ আগস্ট ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ ক খ গ "দাশেরকান্দিতে পরীক্ষামূলক বর্জ্য শোধন শুরু, প্রাণ ফিরবে দুই নদীতে"। jagonews24। ৩ জানুয়ারি ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ Team, S. W. M. (২০২৩-০৭-১৭)। "Completion of South Asia's largest individual wastewater treatment plant in Bangladesh"। Smart Water Magazine (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-০৭।
- ↑ "আগামী বছর চালু হচ্ছে রাজধানীর দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনার"। যায়যায়দিন। ২১ ডিসেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "Dasherkandi Sewerage Treatment Plant gets go-ahead signal Ecnec approves total 5 projects involving Tk 6,553.01cr" (ইংরেজি ভাষায়)। the daily new nation। ২৬ আগস্ট ২০১৫। ৪ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "উদ্বোধনের অপেক্ষায় ৩৭১২ কোটি টাকার পয়ঃশোধনাগার, পাইপলাইনের খবর নেই"। দৈনিক দিনকাল। ২১ আগস্ট ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "উদ্বোধনের অপেক্ষায় ৩৭১২ কোটি টাকার পয়ঃশোধনাগার, পাইপলাইনের খবর নেই"। cdnews24.com। আগস্ট ২১, ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "Dasherkandi Sewage Treatment Plant starts trial operation" (ইংরেজি ভাষায়)। ডেইলি সান (ঢাকা)। ৩০ ডিসেম্বর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "Bangladeshi Dasherkandi Sewage Treatment Plant Starts Trial Operation" (ইংরেজি ভাষায়)। Embassy of China in Bangladesh। ২০ ডিসে ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "নদী দূষণমুক্ত রাখতে ঢাকায় চারটি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট হবে"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ১৫ জানু ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "দেশে পরীক্ষামূলক বর্জ্য শোধন শুরু"। ভোরের কাগজ। জানুয়ারি ৩, ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "নদীর পানি দূষণমুক্ত রাখতে সুয়ারেজ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন"। jagonews24। ১৫ জানুয়ারি ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "Lack of drainage network hampers Dasherkandi sewage treatment plant" (ইংরেজি ভাষায়)। ঢাকা ট্রিবিউন। অক্টোবর ৮, ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "দাশেরকান্দি পয়োশোধনাগার হলেও বর্জ্য যাচ্ছে নর্দমা-খালে"। বাংলা ট্রিবিউন। ২৮ আগস্ট ২০২২। ৩ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "উদ্বোধনের অপেক্ষায় ৩৭১২ কোটি টাকার পয়ঃশোধনাগার, পাইপলাইনের খবর নেই"। justnewsbd.com। ২১ আগস্ট ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "South Asia's Largest Sewage Treatment Plant Put into Operation" (ইংরেজি ভাষায়)। State-owned Assets Supervision and Administration Commission of the State Council। ২১ এপ্রিল ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০২৩।
