বিষয়বস্তুতে চলুন

দারুল উলুম বাঁশকান্দি

স্থানাঙ্ক: ২৪°২৯′০১″ উত্তর ৯২°৩২′৪৩″ পূর্ব / ২৪.৪৮৩৬° উত্তর ৯২.৫৪৫৪° পূর্ব / 24.4836; 92.5454
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দারুল উলুম বাশকান্দি
دارالعلوم بانسکنڈی
colour image
দারুল উলূম বাঁশকান্দির মসজিদ ২০১৩ সালে
অন্যান্য নাম
বাঁশকান্দি মাদ্রাসা
ধরনদারুল উলুম
স্থাপিত১৮৯৭; ১২৭ বছর আগে (1897)
প্রতিষ্ঠাতাহাফিজ আকবর আলী, ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কি এর শিষ্য
ধর্মীয় অধিভুক্তি
ইসলাম
অধ্যক্ষমহম্মদ ইয়াহিয়া
শিক্ষার্থীআনু. ১২০০
ঠিকানা
বাঁশকান্দি, কাছাড় জেলা, আসাম, ৭৮৮৮১০১[]

২৪°২৯′০১″ উত্তর ৯২°৩২′৪৩″ পূর্ব / ২৪.৪৮৩৬° উত্তর ৯২.৫৪৫৪° পূর্ব / 24.4836; 92.5454
মানচিত্র

দারুল উলুম বাঁশকান্দি (উর্দু: دار العلوم بانسکنڈی) ইসলামী শিক্ষানুষ্ঠানটি ভারতের অন্তর্গত আসাম রাজ্যের কাছাড় জেলায় অবস্থিত। এটি উত্তর-পূর্ব ভারতের সর্ব বৃহৎ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। মাদ্রাসাটি দারুল উলুম দেওবন্দের আদর্শ ও পদ্ধতিকে চূড়ান্ত ভাবে অনুসরণ করে। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান অধ্যক্ষের নাম মহম্মদ ইয়াহিয়া।[][]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

হাফিজ আকবর আলী নামের জনৈক মহাত্মায়ে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন মণিপুরী মুসলিম এবং ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কির শিষ্য।[] তাঁর পবিত্র হাতে আনুগত্যের শপথ গ্রহণের পর তিনি মক্কায় তাঁর সাথে তিন বছর অতিবাহিত করেন। একদিন মক্কী তাকে স্বদেশে ফিরে একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে ইসলামী শিক্ষায় নিজেকে সম্পৃক্ত করার নির্দেশ দেন। এরপর তিনি বাঁশকান্দিতে ফিরে আসেন এবং ১৮৯৭ সালে বাঁশকান্দি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। তার প্রধান সহযোগী ছিলেন নেনা মিয়া যিনি তার জমি প্রতিষ্ঠানটির প্রতি দান করে দিয়েছিলেন।[]

পরে হুসাইন আহমদ মদনি বাঁশকান্দি মাদ্রাসাকে ভারতের দ্বিতীয় দারুল উলূম এবং ইসলামী শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার ইচ্ছা পোষণ করেন। তাই তিনি আহমদ আলী বদরপুরীকে শায়খুল হাদীসের পদে নিযুক্ত করেন। তিনি তার জীবনের শেষ দুই রমজান সেখানে অতিবাহিত করেন এবং ১৯৫৭ সালে হাদীসের সর্বোচ্চ কিতাব বোখারী শরীফ উদ্বোধন করেন। সঙ্গে তিনি ভবিষ্যদ্বাণীও করেছিলেন যে অতি শীঘ্রই বাঁশকান্দি মাদ্রাসা থেকে শিক্ষার এক বিশাল জ্যোতির উদগিরণ হবে যাহা সারা বিশ্বে আলোকিত হবে। মাদ্রাসার মৌলিক অবস্থা তখন খুবই নাজুক ছিল। একটি মাত্র ছোট মসজিদ এবং তিনটি খেরের ঘর ছিল। কিন্তু আহমদ আলী বদরপুরীর পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিষ্ঠানটি খুব অল্প সময়ের মধ্যে একটি বিশাল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়।[] [] []

অবদানসমূহ

[সম্পাদনা]

স্বাধীনতা আন্দোলনে দেওবন্দী আলেমগণ এবং তাদের মাদ্রাসাগুলো একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলো। ব্রিটিশ বিতাড়ন ও অখণ্ড ভারতের হকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করাই ছিল তাদের একমাত্র লক্ষ্য। বাঁশকান্দি মাদ্রাসাও এর ব্যতিক্রম ছিলনা।[] দারুল উলূম বাঁশকান্দিয়ে অনেক মহান ইসলামী পন্ডিত, হাফেজ, লেখক, ইমাম, বুদ্ধিজীবী এবং সমাজ সংস্কারক তৈরি করেছে।[১০] দারুল উলূম বাঁশকান্দিকে উত্তর-পূর্ব ভারতের "শান্তিনিকেতন" (শান্তির আবাস) বলা হয়ে থাকে।[১১]

খ্যাতি ও পাঠ্যক্রম

[সম্পাদনা]

দারুল উলূম দেওবন্দের নকশায় প্রতিষ্ঠিত, এই প্রতিষ্ঠানটি, প্রত্যেক বৎসরে হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে গুনসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান করে এসেছে। আহমদ আলী বদরপুরীর মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে। এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উলামায়ে কেরাম উত্তর-পূর্ব অঞ্চল ছাড়াও দেওবন্দ সহ বিভিন্ন স্থানে সেবা প্রদান করিতেছেন।[১২]

প্রতিষ্ঠানটিতে নিম্নলিখিত পাঠ্যক্রম শেখানো হয়:[১৩]

প্রশাসন

[সম্পাদনা]

প্রতিষ্ঠানটির শুরু থেকে যেসকল উলামা প্রধান ও অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তাদের মধ্যে হাজী মিয়াধন, খলিলুর রহমান, তাইয়েব আহমদ কাসমি এবং আরও বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখযোগ্য। আহমদ আলী বদরপুরী প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালকের মতো দায়িত্ব পালন করেছিলেন, যদিও তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কখনও অধ্যক্ষের পদে অধিষ্ঠিত হননি। তিনি শাইখ আল-হাদীসের পদে থেকেই সমস্ত দিশকে নিয়ন্ত্রণ করতেন। তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির নির্মাতা এবং প্রধান পৃষ্ঠপোষক। দারুল উলুম দেওবন্দের প্রাক্তন ভাইস চ্যান্সেলর কারী মুহাম্মদ তৈয়ব তাঁকে দারুল উলূম বাঁশকান্দির দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাতা বলে অভিহিত করেছেন।[১৪][১৫] প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইয়াহিয়া।[][][১৬][১৭]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Karmakar, Rahul (৯ জুন ২০১৮)। "Assam Islamic seminary tightens admission rules"The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 
  2. "Darul Uloom and Dastarbandi function held at Banskandi" (ইংরেজি ভাষায়)। The Sentinel। ১১ মে ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 
  3. "Markazul Maarif Mumbai Holds its 18th Convocation"deoband.net (ইংরেজি ভাষায়)। ৭ এপ্রিল ২০১৩। ৭ জুলাই ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 
  4. Barbhuiya, Atiqur Rahman (২০২০)। "Indigenous People of Barak Valley" (ইংরেজি ভাষায়)। Notion Press। 
  5. Ahmad 2000, পৃ. 1–2।
  6. Badarpuri 1992, পৃ. 21–23।
  7. Qasmi 2010, পৃ. 20।
  8. Ahmad 2000, পৃ. 2।
  9. Ahmad 2000, পৃ. 10–11।
  10. Ahmad 2000, পৃ. 6।
  11. "Assam revives awards in the name of historic Muslim personalities" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 
  12. Ahmad 2000, পৃ. 5।
  13. Qasmi, Javed Ashraf (২০০০)। Faizan e Darul Uloom Deoband (উর্দু ভাষায়) (1st সংস্করণ)। Department of publication, Madrasah Ubay bin Ka'b Tahfeez al-Quran al-Kareem। পৃষ্ঠা 35। 
  14. Ahmad 2000, পৃ. 2, 6–8।
  15. Qasmi 2010, পৃ. 19–20।
  16. "Family legacy document must for admission; Assam madrassa" (ইংরেজি ভাষায়)। The Northeast Today। ৯ জুন ২০১৮। ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 
  17. Mitra, Naresh (৯ জুন ২০১৮)। "Assam madrassa makes legacy papers a must for admission"The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 

গ্রন্থপঞ্জি

[সম্পাদনা]
  • Ahmad, Tayyib (২০০০)। Darul Uloom BanskandiBanskandi, Cachar district, Assam: Darul Uloom Banskandi। 
  • Badarpuri, Ahmed Ali (১৯৯২)। Salasil-e-Tayyibah। Hojai, Assam: Mufassil Ali। 
  • Qasmi, Abdul Quadir (জানুয়ারি ২০১০)। Sheikh Moulana Ahmed Ali, Jeevan Aru Karma [The Life and Works of Shaikh Maulana Ahmed Ali] (অসমীয়া ভাষায়)। Hojai, Assam: Mufassil Ali।