দমনগঙ্গা নদী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দমনগঙ্গা নদী
ভারতের গুজরাতের লাভাছার রামেশ্বর মহাদেব মন্দিরের পাশে দমনগঙ্গা নদী
অবস্থান
দেশভারত
রাজ্যমহারাষ্ট্র, গুজরাত
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য
উৎসনাসিক জেলার দিনদোরি মহকুমার আম্বেগাঁও
 • অবস্থানমহারাষ্ট্র, ভারত
 • স্থানাঙ্ক২০°১৯′ উত্তর ৭২°৫০′ পূর্ব / ২০.৩১৭° উত্তর ৭২.৮৩৩° পূর্ব / 20.317; 72.833
 • উচ্চতা৯৫০ মি (৩,১২০ ফু)
মোহনাদমন মোহনা
 • অবস্থান
আরব সাগর, ভারত
 • উচ্চতা
০ মি (০ ফু)
দৈর্ঘ্য১৩১.৩০ কিমি (৮১.৫৯ মা)

দমনগঙ্গা নদী, যেটিকে দাওয়ান নদীও বলা হয়, সেটি হল পশ্চিম ভারতের একটি নদী। এই নদীর শাখা নদীর জলরাশি পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পশ্চিম ঢালে রয়েছে, এবং এটি পশ্চিম দিকে আরব সাগরে প্রবাহিত হয়েছে। নদীটি মহারাষ্ট্র এবং গুজরাত রাজ্যের পাশাপাশি, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দমন ও দিউ এবং দাদরা ও নগর হাভেলির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।[১][২] ভাপি, দাদরা এবং সিলবাস্সার শিল্প শহরগুলি নদীর উত্তর তীরে অবস্থিত,[২] এবং দমন শহরটি নদীর মোহনা এবং তীর স্থানই দখল করেছে।[৩]

নদীর তীরে বড় উন্নয়ন প্রকল্পটি হল দমন গঙ্গা বহুমুখী প্রকল্প, যা গুজরাত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমনের উন্নয়ন সাধন করে।[১][৪] ২০১৫ সালে, দমন গঙ্গার উদ্বৃত্ত জলের আন্ত-অববাহিকা স্থানান্তরের সাথে জড়িত একটি বড় নদী আন্তঃসংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত হয়েছে।[৫][৬] দমন শহরের নদীর দুপাশে দুটি ঐতিহাসিক দুর্গ হল দক্ষিণ পাড়ে মতি দমন ('মতি' অর্থ "বড়") এবং উত্তর তীরে নানি দমন ('নানি' অর্থ "ছোট")।[৭]

ভূগোল[সম্পাদনা]

দমনে দমন গঙ্গার পাশে নানি দমন দুর্গ

দাওয়ান নদী নামেও পরিচিত দমন গঙ্গা নদীটি মহারাষ্ট্র রাজ্যের নাসিক জেলার দিনদোরি মহকুমার আম্বেগাঁও গ্রামের নিকটবর্তী সহ্যাদ্রী পাহাড়ে উৎপন্ন হয়েছে। উৎসমুখে এটি সমুদ্রতল থেকে ৯৫০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত।[১] মাতুনজিতে দমন গঙ্গা নদীতে এসে পড়ার আগে দমন এবং ওয়াগের প্রধান উপনদীগুলি যথাক্রমে ৭৯ কিলোমিটার (৪৯ মা) এবং ৬১ কিলোমিটার (৩৮ মা) পথ অতিক্রম করেছে। নদীর প্রধান অংশ মহারাষ্ট্রে অবস্থিত।[৮] উৎস থেকে আরব সাগর পর্যন্ত এর মোট দৈর্ঘ্য ১৩১.৩০ কিলোমিটার (৮১.৫৯ মা)। মহারাষ্ট্র, গুজরাত এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমনের পার্বত্য অঞ্চলের মধ্য দিয়ে উৎপন্ন ও প্রবাহিত কিছু প্রধান উপনদী হল দাওয়ান, শ্রীমন্ত, ভাল, রায়াতে, লেন্দি, ওয়াঘ, সাকারতোন্দ, রোশনি, দুধনি এবং পিপেরিয়া।[২] নদীটি দমনে এসে সমুদ্রে মেলার কারণে এর নামকরণ করা হয়েছে দমন গঙ্গা। মোহনায় ভারী পলি পড়ার কারণে এখানে জল খুব অগভীর।[৯] দমন শহরটি দমন নদীর তীরে অবস্থিত (পর্তুগিজ নাম: Rio Damanganga (রিও স্যান্ডালকালো))।[৩] নদীর মুখে বার হল শক্ত বালি দিয়ে তৈরি নদীতট, উত্তরের উত্তর পয়েন্ট ছাড়া, যেখানে নদীটি সমুদ্রে প্রবেশ করেছে।[১০]

নদীর অববাহিকার (পশ্চিম থেকে প্রবাহিত নদীগুলি তাপি থেকে তদ্রী অববাহিকার অংশ), যা পুরোপুরি পশ্চিম ঘাটেই আছে, মোট অংশ আছে২,৩১৮ বর্গকিলোমিটার (৮৯৫ মা)। অববাহিকা অঞ্চলের বিভাগ হল: মহারাষ্ট্রের নাসিক জেলায় ১,৪০৮ বর্গকিলোমিটার (৫৪৪ মা) (৬০.৭৪%); গুজরাতের ভালসাদ জেলায় ৪৯৫ বর্গকিলোমিটার (১৯১ মা) (২১.৩৬%); এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমনে এটি ৪১৫ কিলোমিটার (২৫৮ মা) (১৭.৯০%)।[২] অববাহিকা থেকে গড় বার্ষিক জলের পরিমান ৩,৭৭১ এমসিএম (মিলিয়ন ঘনমিটার)।[১১] নদীর উজানের অঞ্চলটি পাহাড়ী এবং বনভূমিতে আবৃত ৯৬,২২২ হেক্টর (২,৩৭,৭৭০ একর)। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষার মাসগুলিতে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমান প্রায় ২,২০০ মিলিমিটার (৮৭ ইঞ্চি) (নথি অনুযায়ী সর্বাধিক ৩,৭৮০ মিলিমিটার (১৪৯ ইঞ্চি))।[৮]} অববাহিকার মাটিকে "লাল বাদামী মাটি, মোটা অগভীর মাটি, গভীর কালো মাটি এবং উপকূলীয় পলল মাটি হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়"। নদীর তীরে প্রধান শহরগুলি হল সিলভাসসা, ভাপি এবং দমন।[২]

দাদরা ও নগর হাভালির দমন গঙ্গা নদীর উপর পর্যটকদের আগ্রহের স্থানগুলি হল বন গঙ্গা এবং ভান্ডারা বাগান।[১২] দমন নদীর তীরে দুটি ঐতিহাসিক দুর্গ রয়েছে, যা একে অপরের মুখোমুখি, বড়টি মোতি দমন, সেটি দক্ষিণ তীরে অবস্থিত এবং ছোটটি নানি দামান, সেটি উত্তর তীরে অবস্থিত।[৭]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Interstate Aspects: Rivers Basin and Damanganga-Pinjal Link" (pdf)। Government of India। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  2. "Damanganga Basin"। Government of Gujarat। ৬ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  3. Singh 1994, পৃ. 1।
  4. "Damanganga JI01040"। National Water Development Agency (NWDA), Government of India। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ][স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. "Water supply boost: Maharashtra, Gujarat rivers to be linked"। Hindustan Times। ৮ জানুয়ারি ২০১৫। ১৯ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  6. "Damanganga-Pinjal Link"। Water Resources Information System of India। ২২ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  7. Hoiberg 2000, পৃ. 399।
  8. Agarwal ও Singh 2007, পৃ. 748।
  9. Indian Estuaries। Allied Publishers। ২০০৩। পৃষ্ঠা 378–। আইএসবিএন 978-81-7764-369-5 
  10. Prostar Sailing Directions 2005 India & Bay of Bengal Enroute। ProStar Publications। ১ জানুয়ারি ২০০৫। পৃষ্ঠা 33–। আইএসবিএন 978-1-57785-662-7 
  11. "Damanganga Water Resources Project"। Narmada, Water Resources, Water Supply and Kalpsar Department। ১১ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  12. Bansal 2005, পৃ. 84।

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:Hydrography of Maharashtra টেমপ্লেট:Hydrography of Gujarat