তাবাসসুম আদনান
তাবাসসুম আদনান | |
---|---|
জন্ম | ১৯৭৭ |
জাতীয়তা | পাকিস্তানি |
পেশা | নারী অধিকার কর্মী |
কর্মজীবন | ২০১৩ - বর্তমান |
পরিচিতির কারণ | দেশটিতে নারী পঞ্চায়েত প্রতিষ্ঠা |
তাবাসসুম আদনান (উর্দু: تبسم عدنان) (জন্ম ১৯৭৭) হলেন পাকিস্তানের সোয়াত জেলার একজন নারী অধিকার কর্মী। তিনি ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার লাভ করেছিলেন।[১][২]
জীবনী
[সম্পাদনা]তাবাসসুম আদনান জন্মেছেন ১৯৭৭ সালে। তিনি বেড়ে উঠেছেন দেশটিত সোয়াত জেলায়।[৩] ১৩ বছর বয়সে তার বিয়েছিল। তার চারটি সন্তান হয়েছিল। ২০ বছর বয়সে তার ও তার স্বামীর মাঝে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তিনি গৃহ নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তিনি তার এহেন পরিস্থিতিতে পড়ার পর একদিন একটি স্থানীয় সাহায্য সংস্থার নারী ক্ষমতায়ন বিষয়ক সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।[১] এটি তাকে অনুপ্রেরিত করেছিল। তিনি এর পূর্বে স্থানীয় পঞ্চায়েতে তার সমস্যা নিয়ে যেয়ে প্রতিকার পান নি, যেখানে সব সদস্য ছিলেন পুরুষ।[৩]
২০১৩ সালের মে মাসে তিনি নিজে নারী পঞ্চায়েত প্রতিষ্ঠা করেন, যা ছিল দেশটির প্রথম নারী পঞ্চায়েত।[৪] তার ২৫ সদস্যবিশিষ্ট নারী পঞ্চায়েত নির্যাতিত নারীদের আইনি সহায়তা প্রদান করে থাকে।[৫] তার নারী পঞ্চায়েত নারীশিক্ষা, নারীস্বাস্থ্য, কিশোরীস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা ছাড়াও নারীদের কারিগরি প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করত।[৬] নারী পঞ্চায়েত ঐ অঞ্চলে অনার কিলিং, যৌতুক সহিংসতা, এসিড নিক্ষেপ ও নারী নির্যাতন বন্ধে কাজ করে চলেছে।[২] তার নারী পঞ্চায়ের নারী অধিকার কর্মী ও পুরুষ পঞ্চায়েত সদস্যের নিকট থেকে বিরোধিতার সম্মুখীন হলেও থেমে থাকে নি।[৭]
২০১৪ সালে এক মেয়ে শিশু ধর্ষণের শিকার হলে স্থানীয় পঞ্চায়েত বিষয়টি সুরাহা না করতে পারলে বিষয়টি নিয়ে তাবাসসুম আদনানের নারী পঞ্চায়ের রাস্তায় নামে। ফলশ্রুতিতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয় এবং এরপর তাবাসসুম আদনানকে স্থানীয় পঞ্চায়েতে যোগ দিতে অনুরোধ করা হয়।[৮] এই ঘটনার পর নারী পঞ্চায়েত অনুপ্রেরণা লাভ করে এবং নারী বিরোধী সহিংসতায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অবদান রেখে চলেছে।[৯] ২০১৪ সালে তার নারী পঞ্চায়েত বাল্যবিবাহ প্রতিরোধী আইন প্রণয়নের দাবি জানায়।[১০] ধর্মীয় ব্যক্তিদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও সিন্ধু বিধানসভা সর্বসম্মতিক্রমে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধী আইন পাস করে।[১১][১২] ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে দেশটির পাঞ্জাব বিধানসভা সর্বসম্মতিক্রমে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধী রেজুলেশন পাস করে।[১৩] তিনি বাধা বিপত্তি সত্ত্বেও দেশটিতে নারী অধিকার, নারী ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করে চলেছেন।[৪][১৪][১৫]
পুরস্কার ও সম্মাননা
[সম্পাদনা]২০১৩ সালে তিনি হিউম্যান ডিফেন্ডারস অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।[১৬] ২০১৪ সালে তিনি এন-পিস এমপাওয়ারমেন্ট পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন।[৮] ২০১৫ সালে তাকে আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার প্রদান করে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর।[১][২][১৫] ২০১৬ সালে তিনি নেলসন ম্যান্ডেলা পুরস্কার লাভ করেন।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ she is the best human rights defender awardee in 2014 recently in 2015 she honoured with nelson mandela award for her great work in her area in swat "Biographies of 2015 Award Winners"। U.S. State Department। মার্চ ২০১৫। ২১ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৫।
- ↑ ক খ গ "పాక్ మహిళకు అమెరికా అవార్డు.. సాహస స్త్రీగా ఎంపిక..!"। తెలుగు వార్తలు। ৬ মার্চ ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫।
- ↑ ক খ Majeed, A (১১ জুলাই ২০১৩)। "Pakistan's Women-Only Jirga Fights for Equal Rights"। Newsweek Pakistan। ৮ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫।
- ↑ ক খ Siddiqui, Taha (মার্চ ৪, ২০১৪)। "World Asia: South & Central In former Taliban fiefdom, Pakistan's first female council tackles abuses"। The Christian Science Monitor। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫।
- ↑ Ali, Syed Mohammad (আগস্ট ৮, ২০১৩)। "Significance of the female jirga"। The Express Tribune। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫।
- ↑ Siraj, Haroon (জুলাই ২৪, ২০১৩)। "Female jirga head flays 'flawed' legal system"। Pakistan Gender News। ৩০ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫।
- ↑ Guerin, Orla (২৫ জুলাই ২০১৩)। "Pakistani women use jirga to fight for rights"। BBC News। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫।
- ↑ ক খ "Tabassum Adnan A monumental moment for Pashtun women"। N-Peace Network। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Ul Islam, Nazar (২৪ অক্টোবর ২০১৪)। "Nobody Cares"। Newsweek Pakistan। ৮ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫।
- ↑ Inayat, Naila (জুন ৭, ২০১৪)। "Cultures clash over forced child marriages in Pakistan"। USA Today। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫।
- ↑ Inayat, Naila (মে ১৬, ২০১৪)। "Muslim clerics resist Pakistan's efforts to end child marriage"। The Washington Post। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫।
- ↑ Asif, Sundas (জুন ৫, ২০১৪)। "Child Marriages Restraint Bill passed unanimously"। Taste Pakistan। ১৫ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫।
- ↑ Shaukat, Aroosa (ডিসেম্বর ২৪, ২০১৪)। "PA session: Lawmakers pass resolution against child marriages"। The Express Tribune। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫।
- ↑ بلوچ, سحر (ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৫)। "سوات کی خواتین کے لیے منفرد جرگہ"। Dawn News Urdu। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫।
- ↑ ক খ "Swat activist honored with International Women of Courage Award"। Pakistan Defence। ৬ মার্চ ২০১৫। ১৯ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫।
- ↑ "Tabassum Adnan Khwendo jirga"। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১৫।