ডিজিটাল মুদ্রা
ডিজিটাল মুদ্রা (ইলেক্ট্রনিক মুদ্রা বা ইলেক্ট্রনিক টাকা) একধরনের মুদ্রা, যা শুধু ডিজিটাল রূপে পাওয়া যায়, ভৌতভাবে নয় (যেমন ব্যাংক নোট বা পয়সা)। এটি ভৌত মুদ্রার অনুরূপ বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে, তবে এটি তাৎক্ষণিক লেনদেন এবং সীমান্তহীন মালিকানা হস্তান্তর এর সুযোগ করে দেয়। উদাহরণস্বরূপ ভার্চুয়াল মুদ্রা এবং ক্রিপ্টোকারেনসি।[১] এমনকি কেন্দ্রীয় ব্যাংকও "ডিজিটাল ভিত্তিক মুদ্রা" জারি করে থাকে। প্রথাগত মুদ্রার মত এই মুদ্রাগুলোও ভৌত পণ্য বা সেবা ক্রয় করতে ব্যবহার করা যায়। তবে কিছু সম্প্রদায়ের মধ্যে এর ব্যবহার সীমিত করা হয়, যেমন অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।[২] যেমন বাংলাদেশেও যেকোন ধরনের ডিজিটাল মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক স্বীকৃত নয়।[৩]
ডিজিটাল মুদ্রা বৈদ্যুতিকভাবে (ইলেক্ট্রনিক্যালি) একটি সঞ্চিত-ভ্যালু কার্ডে বা অন্য কোন যন্ত্রে সঞ্চিত থাকে। ইলেকট্রনিক অর্থের আরেকটি রূপ হল নেটওয়ার্ক অর্থ, যা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বিশেষ করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয়। ইলেক্ট্রনিক মুদ্রা অনেক বেসরকারি ব্যাংক বা অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানত হিসেবে রাখা যায়।[৪]
ডিজিটাল অর্থ কেন্দ্রীয়করণ হতে পারে, যেখানে অর্থ সরবরাহের উপর নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ থাকে, বা বিকেন্দ্রিত হয়, যার অর্থ সরবরাহের উপর নিয়ন্ত্রণ বিভিন্ন উৎস থেকে হতে পারে।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৯৮৩ সালে ডেভিড চৌম তার গবেষণা পত্রে ডিজিটাল মুদ্রার ধারণা দিয়েছিলেন।[৫] ১৯৯০ সালে তিনি ডিজিক্যাশ (DigiCash) একটি ইলেকট্রনিক নগদ সংস্থা (ক্যাশ কোম্পানি) প্রতিষ্ঠা করেন। আমস্টারডামে তার গবেষণার বাণিজ্যিক বিকাশ ঘটানোর জন্য তিনি এটি করেন।[৬]
১৯৯৭ সালে, কোকা-কোলা মোবাইল পেমেন্টের মাধ্যমে ভেন্ডিং মেশিন থেকে ক্রয়ের ব্যবস্থা করে।[৭] এরপরে ১৯৯৮ সালে পেপ্যাল এর উদ্ভব হয়।[৮] ২০০৮ সালে বিটকয়েন চালু হয়, যা ডিজিটাল মুদ্রার শুরু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।[৬]
ডিজিটাল মুদ্রার উৎপত্তি হয় ১৯৯০-এর দশকে ডট-কম বাবল-এ। ১৯৯৬ সালে প্রথম দিকের অন্যতম ই-গোল্ড প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা স্বর্ণ সমর্থিত ছিল। আরেকটি পরিচিত ডিজিটাল মুদ্রা পরিষেবা ছিল লিবার্টি রিজার্ভ, যা ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল; এটি ব্যবহারকারীদের ডলার বা ইউরো লিবার্টি রিজার্ভ বা ইউরো রূপান্তর করতে দিত। এই অবাধে বিনিময় এর জন্য সেখানে ১% ফি নির্ধারিত ছিল। উভয় সেবাই কেন্দ্রের হাতে ছিল, মানি লন্ডারিংয়ের জন্য নামকরা ছিল, এবং অবধারিতভাবে মার্কিন সরকার এটি বন্ধ করে দেয়।[৯] ২০০৫ সালের শুরুর দিকে কিউ (Q) কয়েন বা কিউকিউ কয়েন পণ্য ভিত্তিক ডিজিটাল মুদ্রা হিসেবে টেনসেন্ট কিউকিউ-এর বার্তা প্রেরণ প্ল্যাটফর্মে ব্যবহৃত হতো। কিউ কয়েন চীনে এতটাই কার্যকর হয়েছিল যে সেটি চীনা ইউয়ান মুদ্রা ব্যবস্থায় অস্থিতিশীতা এনেছিল।[১০] ২০০৮ সালে বিট কয়েন আসার পরে সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিপটোকারেন্সির প্রতি সবার আগ্রহ নতুন করে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এটি সবচেয়ে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত এবং গ্রহণযোগ্য ডিজিটাল মুদ্রা হয়ে উঠছে।
তুলনা
[সম্পাদনা]ডিজিটাল বনাম ভার্চুয়াল মুদ্রা
[সম্পাদনা]২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারির ইউরোপের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের "ভার্চুয়াল কারেন্সি স্কিম - এ ফার্দার এনালাইসি" রিপোর্ট অনুযায়ী, ভার্চুয়াল মুদ্রা অর্থের এক ধরনের ডিজিটাল প্রতিনিধি, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংক, আমানত প্রতিষ্ঠান বা ই-অর্থ প্রতিষ্ঠান থেকে জারি করা হয়ে না, কিছু ক্ষেত্রে যা অর্থের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।[১১] ২০১২ সালে অক্টোবরে আগের রিপোর্টে, ভার্চুয়াল মুদ্রাকে অনিয়মিত, ডিজিটাল অর্থের একটি ধরন হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল, এর ডেপেলপাররা যা জারি করতে পারে এবং সাধারণত নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে থাকে এবং একটি নির্দিষ্ট ভার্চুয়াল সম্প্রদায়ের সদস্যদের মধ্যে এতটি লেনদেন হয়ে থাকে।
আন্তর্জাতিক সেটেলমেন্ট ব্যাংকের ২০১৫ সালের নভেম্বরের "ডিজিটাল কারেন্সিস" রিপোর্ট অনুযায়ী, ডিজিটাল মুদ্রা ডিজিটাল ফর্মের প্রতিনিধিত্বকারী একটি সম্পদ এবং কিছু আর্থিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে।.[১১] ডিজিটাল মুদ্রাকে একটি কার্যকর মুদ্রায় সংজ্ঞায়িত করা যায় এবং ইস্যুয়ার কর্তৃক জারি করা হয় এবং তিনি ডিজিটাল অর্থ নগদ অর্থে খালাস করা করার জন্য দায়ী থাকেন। এই ক্ষেত্রে, ডিজিটাল মুদ্রা ইলেকট্রনিক অর্থের (ই-অর্থ) প্রতিনিধিত্ব করে। ডিজিটাল মুদ্রার যখন তার নিজস্ব একক মূল্য বা বিকেন্দ্রিত বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইস্যু করার ক্ষমতা থাকলে তাকে ভার্চুয়াল মুদ্রা হিসাবে বিবেচনা করা হবে।
যেমনঃ বিটকয়েন একটি ডিজিটাল মুদ্রা, যা ভার্চুয়াল মুদ্রার অন্য একটি রূপ। বিটকয়েন এবং এর বিকল্পগুলি ক্রিপ্টোগ্রাফিক অ্যালগরিদম ভিত্তি করে উদিত, তাই এই ধরনের ভার্চুয়াল মুদ্রাসমূহকে ক্রিপ্টোকারেন্সিসও বলা হয়।
ডিজিটাল বনাম প্রথাগত মুদ্রা
[সম্পাদনা]ব্যাংকে অধিকাংশ অর্থ লেনদেন কম্পিউটারে মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এটাকেও এক ধরনের ডিজিটাল মুদ্রা হিসেবে গণ্য করা হয়। এখন কেউ বলতে পারেন যে আমাদের ক্রমবর্ধমান নগদ টাকাহীন সমাজ মানে সব মুদ্রাই ডিজিটাল হয়ে যাচ্ছে (কখনও কখনও "ইলেকট্রনিক অর্থ" হিসাবে উল্লেখ করা), কিন্তু বিষয়টি আসলে এইরকম না।[১২]
ডিজিটাল মুদ্রা বনাম এনএফটি
[সম্পাদনা]এনএফটি এবং ডিজিটাল মুদ্রার মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল তাদের ফান্জিবিলিটি । এনএফটি গুলি ফান্জিবল নয়, যার অর্থ হল সেগুলি অনন্য এবং প্রতিস্থাপন বা প্রতিলিপি করা যায় না। অন্যদিকে, ডিজিটাল মুদ্রা বা ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলি ফান্জিবল, যার অর্থ তাদের প্রতিস্থাপন বা প্রতিলিপি করা যেতে পারে।[১৩][১৪]
পদ্ধতির প্রকারভেদ
[সম্পাদনা]কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা
[সম্পাদনা]অনেক পদ্ধতি যেমন পেপ্যাল, ইক্যাশ, ওয়েবমানি, পেওনার, ক্যাশইউ এবং হাব কালচারের ভেন সরাসরি ভোক্তাদের কাছে তাদের ইলেকট্রনিক মুদ্রা বিক্রি করবে। অন্য পদ্ধতিগুলো শুধু তৃতীয় পক্ষের ডিজিটাল মুদ্রা এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বিক্রি করে। এম-পেসা সিস্টেমটি দিয়ে আফ্রিকা, ভারত, আফগানিস্তান এবং পূর্ব ইউরোপে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর করা যায়। কিছু কমিউনিটি কারেনসিস, যেমন কিছু স্থানীয় এক্সচেঞ্জ ট্রেডিং সিস্টেম (LETS) এবং কমিউনিটি এক্সচেঞ্জ সিস্টেম, ইলেকট্রনিক লেনদেনের জন্য কাজ করে।
মোবাইল ডিজিটাল ওয়ালেট
[সম্পাদনা]কিছু সংখ্যক ইলেক্ট্রনিক মানি সিস্টেম সহজে লেনদেন এবং অর্থদাতার কাছে লেনদেন আরও সহজ ও নির্ভরযোগ্য করার জন্য যোগাযোগহীন পেমেন্ট স্থানান্তর ব্যবস্থা চালু করে।
- ১৯৯৪ সালে মন্ডেক্স এবং ন্যাশনাল ওয়েস্টমিনিস্টার ব্যাংক সুইংডনের এর বাসিন্দাদের জন্য একটি 'ইলেকট্রনিক কোষাগার' চালু করে।
- ২০০৫ সালের দিকে টেলিফোনিকা ও বিবিভিএ ব্যাংক স্পেনে মোবিপে নামে একটি পেমেন্ট সিস্টেম চালু করে,[১৫] এতে ফিচার্ড ফোনে শর্ট মেসেজ সার্ভিস সুবিধা ব্যবহার করা হয়েছিল।
- ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ভেনমো এসএমএস এর মাধ্যমে মোবাইল পেমেন্ট সিস্টেম চালু করেছিল, পরবর্তিতে যা একটি সামাজিক অ্যাপে রূপান্তরিত হয় যেখানে বন্ধুরা একে অপরকে ছোটখাট খরচ যেমন কফির বিল দিতে পারে, কেউ টাকার ব্যাগ নিতে ভুলে গেলে এর মাধ্যমে রেঁস্তোরার বিলের ভাগ দেয়া যায়,[১৬] এটি কলেজ শিক্ষার্থীদের মাঝে জনপ্রিয়, যদিও এর কিছু নিরাপত্তা বিষয়ক কিছু সমস্যা আছে।[১৭] এটি ব্যাংক একাউন্ট, ক্রেডিট/ডেবিট কার্ডের সাথে যুক্ত করা যায় অথবা নিরাপত্তাজনিত কারণে জমাকৃত অর্থের একটা সীমা নির্ধারণ করা যায়। ক্রেডিট কার্ড এবং অ-প্রধান ডেবিট কার্ডে ৩% প্রক্রিয়াকরণ ফি দিতে হয়।[১৮]
- ২০১১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বরে গুগল ওয়ালেট কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চালু হয়, যা ফোনের মাধ্যমে আপনার সকল ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড বহন করা সহজ করে তোলে।[১৯]
- ২০১২ সালে O2 (আয়ারল্যান্ড) (টেলিফোনিকা মালিকানাধীন) ইজিট্রিপ[২০] চালু করে, যা দিয়ে মোবাইল একাউন্ট দিয়ে বা প্রিপে ক্রেডিট ব্যবহার করে রাস্তার শুল্ক পরিশোধ করা সম্ভব ছিল।
- প্রায় একই সময়ে O2 (যুক্তরাজ্য) O2 ওয়ালেট উদ্ভাবন করে। ওয়ালেটটিতে নিয়মিত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা কার্ডের মাধ্যমে টাকা ভর্তি করা যেত এবং খুচরা খরচের মাধ্যমে খরচ করা যেত, যা 'মোবাইল মানি" নামে পরিচিত ছিল। সেবাটি ২০১৪ সালে বন্ধ হয়ে যায়।
- ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে অ্যাপল আইফোন ৬ এর ইভেন্টের ঘোষণা দেয়। ২০১৪ সালের অক্টোবরে আইফোন ৬ এবং অ্যাপল ঘড়ির জন্য একটি নতুন ঘোষণা দেয়। যা গুগল ওয়ালেটের অনুরূপ, যদিও এটি শুধু অ্যাপল ডিভাইসের জন্য।[২১]
বিকেন্দ্রীভূত সিস্টেম
[সম্পাদনা]ক্রিপ্টোকারেনসি হল এক ধরনের ডিজিটাল সম্পদ, যা সম্পদ লেনদেনের জন্য ক্রিপ্টোকারেনসির উপর নির্ভর করে এবং পরস্পরের সাথে এই লেনদেনে ডিজিটাল স্বাক্ষর, পিয়ার টু পিয়ার নেটওয়ার্কিং এবং বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মুদ্রা তৈরি এবং পরিচালনা করার জন্য প্রুফ-অব-ওয়ার্ক অথবা প্রুফ-অফ-স্টেক স্কিম ব্যবহার করা হয়।[২২][২৩][২৪][২৫] ক্রিপ্টোকারেনসি ইলেকট্রনিক অর্থব্যবস্থাকে বিকেন্দ্রিত করার অনুমতি দেয়। প্রথম এবং সর্বাধিক জনপ্রিয় ব্যবস্থা বিটকয়েন, ক্রিপ্টোগ্রাফি ভিত্তিক একটি পিয়ার-টু-পিয়ার ইলেক্ট্রনিক আর্থিক ব্যবস্থা।
ভার্চুয়াল মুদ্রা
[সম্পাদনা]২০১২ সালে ভার্চুয়াল মুদ্রাকে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংজ্ঞায়িত করে এভাবে, "এটি এক প্রকার অনিয়মিত, ডিজিটাল মুদ্রা, যা জারি করে এবং নিয়ন্ত্রণ করে এর ডেভেলপাররা এবং একটি নির্দিষ্ট ভার্চুয়াল সম্প্রদায়ের সদস্যদের মধ্যে ব্যবহৃত এবং গৃহীত হয়"।[২৬] ২০১৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট এটিকে আরও সংক্ষিপ্তভাবে সংজ্ঞায়িত করে এভাবে, "একটি বিনিময় মাধ্যম যা কিছু ক্ষেত্রে একটি মুদ্রার মত কাজ করে, কিন্তু প্রকৃত মুদ্রার সব বৈশিষ্ট্য নেই"।[২৭] ভার্চুয়াল মুদ্রার আসল বৈশিস্ট্য এই সংজ্ঞাগুলো দিয়ে প্রকাশ পায় না, এগুলো আইনি মূল্যবেদনের মত।
আইন
[সম্পাদনা]২০০১ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ই-অর্থ নির্দেশিকা "ইলেকট্রনিক অর্থ প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার গ্রহণ, নিরীক্ষণ এবং বিশুদ্ধ তত্ত্বাবধান" বাস্তবায়ন করেছে।[২৮] ২০০৭ সালে ইইউ পেমেন্ট সার্ভিসেস নির্দেশিকার আহ্বানগুলো একত্রিকরণ অর্থপ্রদান প্রতিষ্ঠান এবং ইলেক্ট্রনিক অর্থ সংস্থানগুলির পক্ষে যাওয়ায়, ইইউ ইলেক্ট্রনিক মুদ্রার বাস্তব প্রকৃতি নিয়ে সংশয় দেখা যায়। এই একত্রিত করার অর্থ দাঁড়ায় যে, ইলেক্ট্রনিক মুদ্রার প্রকৃতি ব্যাংক অর্থ বা শাস্ত্রীয় অর্থের মতই হবে।
বাংলাদেশে ইলেক্ট্রনিক মুদ্রা বৈধ হলেও বিট কয়েন বা ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলো আইন দ্বারা সমর্থিত নয়। ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেনে বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমানে সতর্কতা জারি করেছেন। 'ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৭’ সম্মেলনের এক সেমিনারে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী জানিয়েছিলেন, ২০১৮ সালের জুন নাগাদ, কীভাবে দ্রুত ডিজিটাল মুদ্রার প্রচলন করা যায় তা খতিয়ে দেখার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বয়ে কমিটি পরিষদ করা হবে।[২৯]
নিয়ন্ত্রণ
[সম্পাদনা]ভার্চুয়াল মুদ্রার আচরণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক, আর্থিক নিয়ন্ত্রক, বিভাগ বা অর্থ মন্ত্রণালয়, সেইসাথে আর্থিক কর্তৃপক্ষ এবং পরিসংখ্যান কর্তৃপক্ষগুলোর জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মার্কিন ট্রেজারি নির্দেশিকা
[সম্পাদনা]২০১৩ সালের মার্চে, দ্যা ফিনানসিয়াল ক্রাইমস এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্ক ইউএস ব্যাংক সিক্রেসি অ্যাক্ট ভার্চুয়াল মুদ্রা তৈরি, বিনিময়, এবং প্রেরণের কাজের যুক্তদের উপরে কীভাবে কাজ করবে সেটি স্পট করার জন্য একটি নির্দেশিকা জারি করে।[৩০]
সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন নির্দেশিকা
[সম্পাদনা]২০১৪ সালের মে মাসে ইউ এস সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এস ই সি) "বিটকয়েন এবং অন্যান্য ভার্চুয়াল মুদ্রার ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করেছিল"।[৩১]
বিভিন্ন সরকার কর্তৃক গ্রহণ
[সম্পাদনা]২০১৬ সালের তথ্য মতে, ২৪ টিরও বেশি দেশ খতিয়ান বিতরণ প্রযুক্তিতে (ডিএলটি) ১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। উপরন্তু, ৯০ টিরও বেশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডিএলটি আলোচনায় যুক্ত হয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারিকৃত ডিজিটাল মুদ্রার প্রভাব এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।[৩২]
- হংকং এর অক্টোপাস কার্ড পদ্ধতিঃ গণপরিবহনের জন্য একটি ইলেকট্রনিক তহবিল হিসাবে ১৯৯৭ সালে চালু করে, যা বড় পরিসরে পরিবহন ভাড়া পরিশোধে কন্ট্যাক্টলেস স্মার্ট কার্ডের সবচেয়ে সফল এবং পরিপক্ষ রুপায়ণ। মাত্র ৫ বছর পরে, ২৫ ভাগ অক্টোপাস কার্ডের লেনদেন শুধু পরিবহনের যাথে সম্পর্কযুক্ত ছিল না এবং ১৫০ টিরও বেশি আড়তদার এটি গ্রহণ করে।[৩৩]
- লন্ডন ট্রান্সপোর্ট ওইস্টার কার্ড পদ্ধতিঃ ওইস্টার একটি প্লাস্টিক স্মার্টকার্ড যাতে চলমান ক্রেডিট, ট্র্যাভেল কার্ড এবং বাস ও ট্রাম সিজনের টিকেট হিসেবে ভাড়া জমা রাখা যায়। লন্ডনে বাস, টিউব, ট্রাম, ডিলার, লন্ডন ওভারগ্রাউন্ড এবং অধিকাংশ জাতীয় রেল সার্ভিসে ভ্রমণ করার জন্য আপনি একটি ওইস্টার কার্ড ব্যবহার করতে পারেন।[৩৪]
- জাপানের ফেলিকাঃ একটি যোগাযোগহীন আরএফআইডি স্মার্টকার্ড, বিভিন্নভাবে যেমন পাবলিক পরিবহনের টিকেটিং, ই-টাকা, এবং বাসার দরজার চাবিগুলোর জন্য ব্যবহৃত হয়।[৩৫]
- নেদারল্যান্ডের চিপ্কনিপঃ নেদারল্যান্ডে ব্যবহৃত এক ধরনের ক্যাশ পদ্ধতি, ডাচ ব্যাংক কর্তৃক ইস্যু করা সমস্ত এটিএম কার্ড চিপ্কনিপ লোডিং স্টেশনগুলির মাধ্যমে লোড করা যেত। মানুষ ব্যাংক ছাড়াই, নেদারল্যান্ডের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রি-পেইড চিপনিপ কার্ড কিনতে পারতো। ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই সেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।[৩৬]
- বেলজিয়ামের প্রোটনঃ ডেবিট কার্ডের জন্য বেলজিয়ামের ইলেক্ট্রনিক কোষাগার অ্যাপ্লিকেশন। ছোট লেনদেনের নগদ প্রতিস্থাপন করার একটি উপায় হিসেবে, ১৯৯৫ সালে এটি জনসম্মুখে আসে। এই পদ্ধতি ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর বন্ধ হয়ে যায়।[৩৭]
- কানাডা
ব্লকচেইনের মুদ্রাগুলো একটি ভার্সন সৃস্টির সম্ভাবনা অন্বেষণ করে দ্যা বাংক অব কানাডা।[৩৮] দ্য বাংক অব কানাডা দেশটির পাঁচটি বৃহত্তম ব্যাংক এবং ব্লকচেইন পরামর্শক ফার্ম আর-থ্রির সাথে সম্মিলিতভাবে কাজ শুরু করে, যা প্রজেক্ট জাস্পার নামে পরিচিত। ২০১৬ সালে একটি সিমুলেশন চলাকালে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি ব্লকচেইনের অনুরূপ ইথেরিয়াম ক্যাড-কয়েন চালু করেছিল।[৩৯] ব্যাংকগুলো তাদের মাস্টার একাউন্টে যেভাবে প্রতিদিন অর্থ লেনদেন করে, সেভাবেই ক্যাড-কয়েন লেনদেন করতো।[৩৯]
- চীন
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন সহকারী গভর্নর ফ্যান ওয়াইফেই লিখেছিলেন, "যে ডিজিটাল মুদ্রাগুলো পরিচালনা খরচ কমিয়ে আনতে পারে, কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং নতুন উপযোগের একটি ব্যাপক ক্ষেত্র সৃষ্টি করতে পারে তখন সেই ডিজিটাল মুদ্রাগুলো পরিপক্ব হয়"।[৩৯] তার মতে এই অবস্থার সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেসরকারী ডিজিটাল মুদ্রায় নজরদারি ও নিজস্ব ডিজিটাল আইনি টেন্ডার বিকশিত করার মাধ্যমে এই খাতে নেতৃত্ব দিতে পারে।[৪০]
- ডেনমার্ক
দেশটিকে "নগদহীন" অর্থনীতির কাছাকাছি নিয়ে যেতে, ডেনমার্ক সরকার খুচরো বিক্রেতাদের নগদ অর্থ গ্রহণ গ্রহণের বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্তির প্রস্তাব দিয়েছিল।[৪১] ডেনিস চেম্বার অব কমার্স এই পদক্ষেপটি সমর্থন করছে।[৪২] টাকা লেনদেনের জন্য ডেনিস জনগণের প্রায় এক তৃতিয়াংশ মোবাইলপে নামক একটি স্মার্টফোন এপ্লিকেশন ব্যবহার করে।[৪১]
- ইকুয়েডর
ইকুয়েডরের জাতীয় পরিষদ কর্তৃক একটি আইন গৃহীত হয়েছে, যা সরকারকে ইলেকট্রনিক মুদ্রায় অর্থ প্রদানের জন্য অনুমতি দিয়েছে এবং একটি জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রা তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে। একটি বিবৃতিতে জাতীয় পরিষদ জানিয়েছে, "ইলেক্ট্রনিক মুদ্রা ইকুয়েডরের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদ হিসেবে সমর্থিত হবে।[৪৩] ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ইকুয়েডর তাদের প্রথম ইলেক্ট্রনিক অর্থ লেনদেন পদ্ধতি চালু করে।[৪৪]
- জার্মানি
জার্মান কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিকিউরিটিজ ব্লকচেইনের প্রযুক্তি-ভিত্তিক বন্দোবস্তের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে জারি করা ডিজিটাল কয়েনের একটি কার্যকরী প্রোটোটাইপ পরীক্ষা করছে।[৪৫][৪৬]
- নেদারল্যান্ড
ডেনিস কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিটকয়েন কেন্দ্রিক ভার্চুয়াল মুদ্রা "ডিএনবিকয়েন" নিয়ে গবেষণা করছে।[৩৯][৪৭]
- রাশিয়া
সরকার নিয়ন্ত্রিত সিবার ব্যাংক মালিকানাধীন ইয়ান্ডেকক্স ডট মানি এর ম্যাধমে একই নামে ইলেট্রনিক লেনদেন এবং ডিজিটাল মুদ্রা সেবা দিয়ে থাকে।[৪৮] রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন ২০১৮ জুলাইয়ের মধ্যে আইসিওএস এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং এর প্রবিধানের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন.[৪৯]
- দক্ষিণ কোরিয়া
দক্ষিণ কোরিয়া ব্লকচেইন ব্যবহার করে জাতীয় মুদ্রার পরিকল্পনা করছে।[৫০] দক্ষিণ কোরিয়ার আর্থিক সেবা কমিশনের প্রধান ঘোষণা দিয়েছেন যে তার বিভাগ ডিজিটাল মুদ্রার বিস্তারের জন্য পদ্ধতিগত ভিত্তি স্থাপন করবে।[৫০] দক্ষিণ কোরিয়া ২০২০ সালের মধ্যে মুদ্রা বন্ধ করার ঘোষণা ইতিমধ্যে দিয়ে দিয়েছে।[৫১]
- সুইডেন
সুইডেন ভৌত ব্যাংক নোট প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়ার মাঝে আছে এবং ২০১৭ এর মাঝামাঝি অধিকাংশ মুদ্রা প্রতিস্থাপিত হবে। রিস্কব্যাংক, (সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক) কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে জারিকৃত ইলেক্ট্রনিক মুদ্রা নগদ অর্থকে প্রতিস্থাপিত না করে পূরক হিসেবে কীভাবে কাজ করবে, সে বিষয়ে আলোচনা শুরু করার পরিকল্পনা করছে।[৫২]
- সুইজারল্যান্ড
২০১৬ সালে এক স্থানীয় সরকার প্রথম নগরের শুল্ক আদায়ের জন্য ডিজিটাল মুদ্রা গ্রহণ করে। ভবিষ্যৎ প্রযুক্তিতে উন্নত এক অঞ্চলে ছোট লেনদেনের জন্য সুইজারল্যান্ডের জাগ নামক পৌরসভা বিটকয়েন যুক্ত করে। ঝুঁকি এড়াতে জাগ সরাসরি বিটকয়েনকে সুইস মুদ্রায় রুপান্তর করে গ্রহণ করে ফেলে।[৫৩]
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সুইস ফেডারেল রেলওয়ে এর টিকেট যন্ত্রে বিটকয়েন বিক্রি করে।[৫৪][৫৪]
- যুক্তরাজ্যে
যুক্তরাজ্যের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা একটি ব্লকচেইন ভিত্তিক ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহার করার জন্য তার প্রধানমন্ত্রী ও সংসদকে বিবেচনা করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।[৫৫]
ব্যাংক অব ইংল্যান্ড (যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংক) এর প্রধান অর্থনীতিবিদ, কাগজ মুদ্রা বিলোপের প্রস্তাব দিয়েছেন। ব্যাংকটি বিটকয়েনেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে।[৩৯][৫৬] ২০১৬ সালে এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারিকৃত ডিজিটাল মুদ্রার প্রভাব অন্বেষণ একটি দীর্ঘ গবেষণা কার্যক্রম চালু করেছে।[৩২] ব্যাংক অব ইংল্যান্ড এর উপরে বিভিন্ন গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছে। একটি প্রস্তাব এইরকম যে, ডিজিটাল মুদ্রা একটি বিতরণ খাতে জারির ফলে যে অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়া যাবে তা একটি দেশের অর্থনৈতিক উৎপাদন ৩ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।[৩৯] ব্যাংক জানিয়েছে যে তারা বিতরণ খতিয়ানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে ব্যাংকের মূল সফটওয়্যার অবকাঠামোটির পরবর্তী সংস্করণ চায়।[৩৯]
- ইউক্রেন
ইউক্রেনের ন্যাশনাল ব্যাংক একটি ব্লকচেইন ভিত্তিক জাতীয় ক্রিপ্টোকারেন্সির জন্য তার নিজস্ব ইস্যু/টার্নওভার/সার্ভিসিং পদ্ধতি তৈরির ব্যাপারটি বিবেচনা করছে।[৫৭] দেশটির নিয়ন্ত্রক আরও ঘোষণা করেছে যে ব্লকচেইন "ক্যাশলেস ইকোনমি" নামক একটি জাতীয় প্রকল্পের অংশ হতে পারে।[৫৭]
- বাংলাদেশ
বাংলাদেশে ইলেক্ট্রনিক মুদ্রা বৈধ হলেও বিট কয়েন বা ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলো আইন দ্বারা সমর্থিত নয়। অনলাইন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে লেনদেনকারীরা ভার্চুয়াল মুদ্রার সম্ভাব্য আর্থিক ও আইনগত ঝুঁকিসহ বিভিন্ন ঝুঁকির মুখে পড়তে হতে পারে বলে সতর্ক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।[৫৮]
হার্ড বনাম সফট ডিজিটাল মুদ্রা
[সম্পাদনা]হার্ড ডিজিটাল কারেন্সি একবার ব্যবহার করা হলে বাতিল বা রহিত করা যায় না। ন্যায়সঙ্গত হোক না হোক, লেনদেন সম্পন্ন হয়ে গেলে সেটি ফিরিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব। এটি প্রায় অনেকটাই নগদ টাকার মত। এই পদ্ধতির উপকারিতাগুলোর মাঝে আছে স্বল্প পরিচালনা খরচ এবং তাৎক্ষণিক লেনদেন। ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, বিটকয়েন হচ্ছে এই ধরনের মুদ্রার কিছু উদাহরণ।[৫৯]
সফট ইলেক্ট্রনিক মুদ্রা, হার্ড ইলেট্রনিক মুদ্রার বিপরীত। প্রদত্ত অর্থ ফেরৎ আনা যায়। যখন প্রদত্ত অর্থ ফেরৎ আনা হয়, তখন নির্দিষ্ট একটি সময় অপেক্ষা করেতে হয়, যাকে "ক্লিয়ারিং টাইম" বলে। এটি ৭২ ঘণ্টা বা তার বেশি হতে পারে। পেপ্যাল এবং যেকোন ধরনের ক্রেডিট কার্ড হচ্ছে সফট কারেন্সির মধ্যে পরে। হার্ড মুদ্রা তৃতীয় পক্ষের কোন সেবার মাধ্যমে "সফট" হতে পারে।[৫৯]
সমালোচনা
[সম্পাদনা]বিদ্যমান ডিজিটাল মুদ্রায় অনেক এখনো ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়নি এবং সহজেই ব্যবহার বা বিনিময় করা যায় না।[৬০] সাধারণত ব্যাংকগুলি এসবের জন্য গ্রহণ বা প্রদান পরিসেবা দেয় না। অতি মাত্রায় অনিশ্চয়তা এবং জালিয়াতি চক্রের কারণে, এটি নিয়ে বেশ উদ্বেগ আছে।[৬১][৬২] বিভিন্ন দেশের নিয়ামক সংস্থা এটির ব্যবহার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে এবং কেউ কেউ ব্যবহারকারীদের নিরস্ত করার জন্য কঠিন নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।[৬৩] সকল অ-ক্রিপ্টোকারেন্সি কেন্দ্রীভূত। যেমন এগুলো সরকার কর্তৃক যেকোন সময় বন্ধ বা অভিগ্রস্ত হতে পারে।[৬৪] একটি মুদ্রা যতটা বেনামী, ততটাই অপরাধীদের কাছে আকর্ষণীয়। ফোর্বসের লেখক টিম ওয়ারস্টাল লিখেছেন যে, বিটকয়েনের মূল্য মূলত ফটকামূলক লেনদেন থেকে প্রাপ্ত।[৬৫] বিটকয়েন এর অনিপুণ শক্তির এসএইচএ-২৫৬-ভিত্তিক প্রোফ অফ ওয়ার্ক এর জন্যও সমালোচিত হয়েছে।[৬৬]
তালিকা
[সম্পাদনা]আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Digital vs. Virtual Currencies"। Andrew Wagner। ২৩ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ডিসেম্বর ২০১৪।
- ↑ "What is bitcoin?"। CoinDesk। ২৯ মার্চ ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৪।
- ↑ "বিটকয়েন লেনদেনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা"। ডিসেম্বর ২৭, ২০১৭। ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮।
- ↑ Al-Laham, Al-Tarawneh, Abdallat (২০০৯)। "Development of Electronic Money and Its Impact on the Central Bank Role and Monetary Policy" (পিডিএফ)।
- ↑ Chaum, David (১৯৮২)। "Blind signatures for untraceable payments" (পিডিএফ)। Department of Computer Science, University of California, Santa Barbara, CA। ৩ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮।
- ↑ ক খ Griffith, Ken (এপ্রিল ১৬, ২০১৪)। "A Quick History of Cryptocurrencies BBTC — Before Bitcoin"। Bitcoin Magazine। ডিসেম্বর ২০, ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ "History of Mobile & Contactless Payment Systems"। ১৮ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "Digital vs Virtual currencies"। ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ Jack Cloherty (২৮ মে ২০১৩)। "'Black Market Bank' Accused of Laundering $6B in Criminal Proceeds"। ABC News। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০১৩।
- ↑ "'China's virtual currency threatens the Yuan'"। Asia Times Online। ৫ ডিসেম্বর ২০০৬। ২ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০১৬।
- ↑ ক খ "Digital Currencies" (পিডিএফ)। bis.org। নভেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮।
- ↑ "1"। Virtual Currency Schemes (পিডিএফ)। Frankfurt am Main: European Central Bank। অক্টোবর ২০১২। পৃষ্ঠা 5। আইএসবিএন 978-92-899-0862-7। ৬ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "Fungibility"। Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-১২-১৩।
- ↑ "NFTs vs. Cryptocurrencies – What's the Difference?"। The Post W3B (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০১-২১। ২০২৩-০২-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-০৪।
- ↑ "Mobipay - Fujitsu Spain"। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮।
- ↑ "Origins of Venmo"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৪-২৩।
- ↑ "Venmo Money, Venmo Problems"।
- ↑ "Venmo pricing"।
- ↑ "This Day in Tech: Google Wallet launches"। সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১১।
- ↑ "Easytrip, O2 launch mobile toll payments service in the Republic of Ireland"।
- ↑ "Apple Watch works with Apple Pay to replace your credit cards"। সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৪।
- ↑ Wary of Bitcoin? A guide to some other cryptocurrencies, ars technica, 26-05-2013
- ↑ What does Cryptocurrency mean?, technopedia, 01-07-2013
- ↑ From your wallet to Google Wallet: your digital payment options, The Conversation, 26-05-2013
- ↑ Liu, Alec। "Beyond Bitcoin: A Guide to the Most Promising Cryptocurrencies"। Vice Motherboard। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০১৪।
- ↑ "Virtual Currency Schemes" (পিডিএফ)। ecb.europa.eu। অক্টোবর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮।
- ↑ "Audit Report" (পিডিএফ)। Treasury.gov। নভেম্বর ১০, ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮।
- ↑ "Directive 2009/110/EC of the European Parliament and of the Council of 16 September 2009 on the taking up, pursuit and prudential supervision of the business of electronic money institutions amending Directives 2005/60/EC and 2006/48/EC and repealing Directive 2000/46/EC, Official Journal L 267, 10/10/2009 P. 0007 - 0017"। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০১৩।
- ↑ "বিটকয়েন অবৈধ, লেনদেন না করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সতর্কতা জারি"। ডিসেম্বর ২৭, ২০১৭। ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮।
- ↑ "FIN-2013-G001: Application of FinCEN's Regulations to Persons Administering, Exchanging, or Using Virtual Currencies"। Financial Crimes Enforcement Network। ১৮ মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা 6। ২০১৩-০৩-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০২-০৭।
- ↑ Bobelian, Michael (৯ মে ২০১৪)। "SEC Warns Investors To Beware Of Bitcoin"। Forbes। সংগ্রহের তারিখ ২ অক্টোবর ২০১৪।
- ↑ ক খ "BoE explores implications of blockchain and central bank-issued digital currency"। EconoTimes.com। ২০১৬-০৯-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-০৫।
- ↑ "Hong Kong Octopus Card" (পিডিএফ)। ২০০৫। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "What is Oyster?"।
- ↑ ""Contactless" convenience with Sony's FeliCa"।
- ↑ "Home - Chipknip"। ২৯ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "Proton"।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "Celent calls on central banks to issue their own digital currencies /Euromoney magazine"। Euromoney.com। ২০১৬-১০-২০। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-০৫।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ "Central Banks Consider Bitcoin's Technology, if Not Bitcoin"। The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-০৫।
- ↑ "On Digital Currencies, Central Banks Should Lead - Bloomberg View"। Bloomberg। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-০৫।
- ↑ ক খ "Denmark proposes cash-free shops to cut retail costs"। Reuters। ২০১৫-০৫-০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-০৫।
- ↑ "Cashless society: Denmark to allow shops to ban paper money"। Fortune.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-০৫।
- ↑ "Ecuador to Create Government-Run Digital Currency as It Bans Bitcoin"। Ibtimes.co.uk। ২০১৪-০৭-২৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-০৫।
- ↑ Everett Rosenfeld (২০১৫-০২-০৯)। "Ecuador becomes the first country to roll out its own digital durrency"। Cnbc.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-০৫।
- ↑ "German Central Bank testing blockchain technology"। Brave New Coin। ২০১৬-১২-০১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-০৫।
- ↑ "Deutsche Börse Group - Joint Deutsche Bundesbank and Deutsche Börse blockchain prototype"। Deutsche-boerse.com। ২০১৬-১১-২৮। ২০১৬-১২-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-০৫।
- ↑ Antony Peyton। "Blockchain goes Dutch » Banking Technology"। Bankingtech.com। ২০১৭-০৮-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-০৫।
- ↑ Andrii Degeler (২০১২-১২-১৯)। "Yandex Sells 75% Of Yandex.Money To Sberbank For $60M"। Thenextweb.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-০৫।
- ↑ "Putin Confirms Russia Will Regulate ICOs, Mining By July 2018"। Cointelegraph। ২৪ অক্টোবর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০১৭।
- ↑ ক খ "South Korea plans national digital currency using a Blockchain"। Brave New Coin। ২০১৬-১০-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-০৫।
- ↑ CNBC। "Currencies"। CNBC। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০১৭।
- ↑ Riksbanken। "Skingsley: Should the Riksbank issue e-krona?"। www.riksbank.se। ২১ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০১৭।
- ↑ Uhlig/jse, Christian (১ জুলাই ২০১৬)। "Alpine 'Crypto Valley' pays with Bitcoins"। DW Finance। ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
- ↑ ক খ "SBB: Make quick and easy purchases with Bitcoin"। Sbb.ch। ২০১৭-০১-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-০৫।
- ↑ "Government urged to use Bitcoin-style digital ledgers - BBC News"। Bbc.co.uk। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-০৫।
- ↑ Szu Ping Chan (২০১৬-০৯-১৩)। "Inside the Bank of England's vaults: can cash survive?"। Telegraph.co.uk। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-০৫।
- ↑ ক খ "Cashless Ukraine: The National Bank Considers Blockchain Technology"। ForkLog.net। ২০১৬-১০-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-০৫।
- ↑ "বিটকয়েন লেনদেন করবেন না: বাংলাদেশ ব্যাংক"। bdnews24। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ক খ Wikoff, Shawn (২০১৬-০৯-১৩)। "The expert Shawn Wikoff talks about Electronic money"। Medium। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৮।
- ↑ Sidel, Robin (২২ ডিসেম্বর ২০১৩)। "Banks Mostly Avoid Providing Bitcoin Services"। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০১৭ – www.wsj.com-এর মাধ্যমে।
- ↑ Tucker, Toph। "Bitcoin's Volatility Problem: Why Today's Selloff Won't Be the Last"। Bloomberg BusinessWeek। Bloomberg। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৪।
- ↑ O'Grady, Jason D.। "A crypto-currency primer: Bitcoin vs. Litecoin"। ZDNet। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৪।
- ↑ Frances Schwartzkopff; Peter Levring (১৮ ডিসেম্বর ২০১৩)। Bitcoins Spark Regulatory Crackdown as Denmark Drafts Rules। Bloomberg। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৪।
- ↑ Zetter, Kim (৯ জুন ২০০৯)। "Bullion and Bandits: The Improbable Rise and Fall of E-Gold"। Wired। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৪।
- ↑ Worstall, Tim। "Bitcoin Is More Like A Speculative Investment Than A Currency"। Forbes। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৪।
- ↑ Lee, David; Kuo Chuen (২০১৫)। Handbook of Digital Currency: Bitcoin, Innovation, Financial Instruments, and Big Data। Academic Press। পৃষ্ঠা 211। আইএসবিএন 9780128023518। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০১৭।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]