গ্যালাক্টিক কেন্দ্র
গ্যালাকটিক সেন্টার বা গাঙ্গেয় কেন্দ্র আকাশগঙ্গার ঘূর্ণায়মান কেন্দ্র। এর অনুমিত অবস্থানের পরিসর পৃথিবী থেকে ২৪-২৮.৪ সহস্র আলোকবর্ষ দূরে ধনু, সর্পধারী এবং বৃশ্চিক তারকামণ্ডলীর দিকে যেখানে আকাশগঙ্গাকে সবচেয়ে উজ্জ্বল দেখা যায়। ধনু এ* তারকামণ্ডলের বেতার তরঙ্গ নির্গত হওয়ার উৎসের দিকের সাথে এর অবস্থান মিলে যায়।
গ্যালাকটিক সেন্টারের এক পারসেক দূরত্বের মধ্যে রয়েছে ১০ মিলিয়ন নক্ষত্র যেখানে রাজত্ব লাল দানবদের। তবে পরিমিত সংখ্যায় ভারী অতিকায় দানব এবং উলফ-র্যায়েট তারাও রয়েছে যার প্রমাণ পাওয়া যায় এক মিলিয়ন বছর পূর্বে নক্ষত্র গঠনের ধরন থেকে। কেন্দ্রে একটি অতিকায় ভারী কৃষ্ণগহবর রয়েছে যা ধনু-এ* এর বেতার তরঙ্গের শক্তি যোগায়।
আবিষ্কার
[সম্পাদনা]আন্তঃনাক্ষত্রিক ধূলিকণার কারণে যে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধকতা তৈরি হয় তার ফলে ছায়াপথের কেন্দ্রকে দৃশ্যমান আলো, অতিবেগুনী রশ্মি, কম শক্তির এক্স রে এর সাহায্যে যথেষ্ট পর্যবেক্ষণ করা যায় না। তবে গামা রশ্মি, শক্তিশালী এক্স-রে(কম্পাঙ্ক বেশি যে এক্স রে এর), অবলোহিত রশ্মি, মিলিমিটারের কাছাকাছি বেতার তরঙ্গে ছায়াপথের কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ ভাল কাজ করে।
ইমানুয়েল কান্ট তার জেনারেল ন্যাচারাল হিস্টোরি এন্ড থিওরি অফ দ্যা হেভেনস (১৭৫৫) বইয়ে বলেন, আকাশগঙ্গার কেন্দ্রে বড় কোনো তারা আছে এবং হতে পারে সে নক্ষত্রটি সিরিয়াস।[১] ১৯১৮তে হারলো শেপলে বলেন, আকাশগঙ্গাকে ঘিরে যে গোলীয় ছায়াপথ স্তবকের বর্ণবলয় দেখা যায় মনে হয় যেন ধনু তারকারাজিকে কেন্দ্র করে নক্ষত্রের দল ঘুরছে, কিন্তু ঘন আণবিক মেঘ আলোকজ্যোতির্বিদ্যার জন্য প্রতিবন্ধক। ১৯৪০ এর দশকে ভাল্টার বাডে লস এঞ্জেলসের বৈদ্যুতিক বিপর্যয়ের ফলে অন্ধকার রাতের আকাশের যুদ্ধকালীন সুবিধা নিয়ে মাউন্ট উইলসন অবজারভেটরি থেকে ১০০ ইঞ্চি হুকার টেলিস্কোপ দিয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রে অনুসন্ধান করেন।[২] তিনি লক্ষ্য করেন, আলনাসল (গামা স্যাগিটারাই) নক্ষত্রের নিকটে আন্তঃনাক্ষত্রিক লেন্সে এক ডিগ্রি বিস্তার পরিমাণ ফাঁকা জায়গা, যে জায়গাটি মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির নক্ষত্রের ঝাঁকের স্পষ্ট ছবি হিসেবে প্রতীয়মান হয়।[৩] এই ফাঁকা স্থানকে বাডের জানালা হিসেবে নামকরণ করা হয়।[৪]
সিডনির ডোভার হাইটসে সিএসআইআরও এর রেডিওফিজিক্স বিভাগ থেকে আসা একদল রেডিও জ্যোতির্বিজ্ঞানী সমুদ্র ইন্টারফেরোমেট্রি পদ্ধতি ব্যবহার করে আন্তঃনাক্ষত্রিক ও আন্তঃগ্যালাক্টিক বেতার তরঙ্গ অনুসন্ধান করে। দলটির নেতৃত্বে ছিলেন জোসেফ লেড পাওসে। টারুস এ, ভার্গো এ এবং সেন্টাউরুস এ নক্ষত্রগুলোও তাদের অনুসন্ধানের তালিকায় ছিল। ১৯৫৪ সালের মধ্যে তারা প্রায় ৮০ ফুট (২৪.৪ মিটার) স্থায়ী ডিশ অ্যান্টেনা নির্মাণ করে এবং এর সাহায্যে ধনু নক্ষত্ররাজি থেকে আসা রেডিও তরঙ্গকে আরো বিবর্ধিত, শক্তিশালী ও বিস্তারিত গবেষণাযোগ্য সংকেত পেতে থাকেন। এই নক্ষত্র বেল্টের কেন্দ্রের নিকটে একটি ঘন সন্নিবিষ্ট বিন্দু উৎসের নামকরণ করেন ধনু-এ। অচিরেই তারা বুঝতে পারেন যে এটি ছায়াপথেরই কেন্দ্রে অবস্থিত, যদিও সেখান থেকে ৩২ ডিগ্রি দক্ষিণ-পশ্চিমে গ্যালাক্টিক সেন্টার অনুমান করা হয়েছিল।[৫]
১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন (IAU) ধনু-এ এর অবস্থানকে ছায়াপথের অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশ স্থানাঙ্ক ব্যবস্থার মূলবিন্দু ধরার সিদ্ধান্ত নেয়।[৬] বিষুবীয় স্থানাঙ্ক ব্যবস্থায় এর অবস্থান: বিষুবাংশ ১৭ঘ ৪৫মি ৪০.০৪সে, বিষুবলম্ব −২৯° ০০′ ২৮.১ ″ (জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের কাল অনুযায়ী)।
গ্যালাকটিক সেন্টারের দূরত্ব
[সম্পাদনা]সৌরজগৎ থেকে গ্যালক্সির কেন্দ্রের দূরত্ব পই পই অঙ্কে মেলানো দুরূহ,[৭] তবে ২০০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ধরা হয় এর দূরত্বের পরিসর[৭][৮] ২৪–২৮.৪ kilolight-year (৭,৪০০–৮,৭০০ parsec). জ্যামিতিভিত্তিক পদ্ধতি এবং আদর্শ মহাজাগতিক দূরত্ব থেকে প্রাপ্ত অনুমানও এই হিসেবের সমর্থন করে।
- ৭.৪±০.২(stat) ± ০.২(syst) or ৭.৪±০.৩ সহস্র কিলোপারসেক (≈২৪±১ সহস্র আলোকবর্ষ)
- ৭.৬২±০.৩২ সহস্র কিলোপারসেক (≈২৪.৮±১ সহস্র আলোকবর্ষ)
- ৭.৭±০.৭ সহস্র কিলোপারসেক (≈২৫.১±২.৩ সহস্র আলোকবর্ষ)
- ৭.৯৪ or ৮.০±০.৫ সহস্র কিলোপারসেক (≈২৬±১.৬ সহস্র আলোকবর্ষ)
- ৭.৯৮±০.১৫(stat) ± ০.২০(syst) or ৮.০±০.২৫ সহস্র কিলোপারসেক (≈২৬±০.৮ সহস্র আলোকবর্ষ)
- ৮.৩৩±০.৩৫ সহস্র কিলোপারসেক (≈২৭±১.১ সহস্র আলোকবর্ষ)
- ৮.৭±০.৫ সহস্র কিলোপারসেক (≈২৮.৪±১.৬ সহস্র আলোকবর্ষ)
গ্যালাকটিক সেন্টারের দূরত্ব পুঙ্খানুপুঙ্খ নির্ণয় করা হয়েছিল বিষমতারাদের (যেমন- আরআর লাইরা বিষমতারা) অথবা আদর্শ ক্যান্ডেলসের (যেমন- লাল-দল তারা) মাধ্যমে। কিন্তু এটি ব্যাহত হয়েছিল বেশ কিছু কারণে যার মধ্যে আছে দুর্বোধ্য লাল হওয়ার নীতি, গ্যালাক্সির স্ফীত অংশের কাছাকাছি কিছু তারার কারণে গ্যালাকটিক সেন্টারের দূরত্বের ক্ষুদ্রতর মান এবং বিষমতারাদের দল যেগুলো গ্যালাক্সির স্ফীত অংশের সাথে গ্যালাকটিক সেন্টারের সম্পর্ক নিরূপণের অনিশ্চয়তা। বিষমতারাদের গড় দূরত্ব নিরূপণে্র সমস্যার সাথে রয়েছে গ্যালাক্সির স্ফীত অংশের আন্তঃনাক্ষত্রিক বিলুপ্তি।
মিল্কিওয়ের যে যে অংশ বাধা দিয়ে থাকে পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে, যেটা গ্যালাকটিক সেন্টার বরাবর অবস্থান করে তার অর্ধেক দৈর্ঘ্যকে ধরা হয় ১–৫ কিলোপারসেক আর ঝুঁকে থাকার পরিমাণ ১০–৫০°।[৯][১০][১১][১২] কোনো কোনো লেখক বলে থাকেন মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির দুটো অংশ রয়েছে যার একটি আরেকটির সাথে পেঁচিয়ে আছে। সে অংশ নির্দেশিত করা যায় লাল দানব তারাদের দল দিয়ে (পড়ুন লোহিত দানব)। তবে আরআর লাইরা বিষমতারা কোনো বিশেষ গ্যালাকটিক অংশকে নির্দেশ করে না।[১০][১৩][১৪] বাধাদানকারী অংশটি ৫ কিলোপারসেক আংটির আকারের অংশ দিয়ে ঘিরে থাকতে পারে যার অধিকাংশ মিল্কিওয়ের আণবিক হাইড্রোজেন বহন করে। সে অনুযায়ী এ অংশটি মিল্কিওয়ের নক্ষত্র গঠনের কার্যক্রমের সাথে জড়িত। অ্যানড্রোমিডা ছায়াপথ থেকে দেখলে এই বাধাদানকারী অংশটি হত মিল্কিওয়ে ছায়াপথের সবচেয়ে উজ্জ্বলতম অংশ।[১৫]
অতিকায় ভারী কৃষ্ণগহবর
[সম্পাদনা]ধনু তারারাজির এ এর বেতার তরঙ্গউৎস গ্যালাক্সির কেন্দ্র থেকে নিঃসৃত হচ্ছে বলে মনে হয় (আসন্ন অবস্থান- ১৮ ঘণ্টা, −২৯ ডিগ্রি)। এটি বেশ ঘন বেতার তরঙ্গ উৎস হিসেবে ধরা দেয়, যা আবার অতিকায় কৃষ্ণগহ্বরের সাথে সহাবস্থান করে। কৃষ্ণগহ্বরের দিকে চাকতির আদলে গ্যাসের অধিগমন বেতার তরঙ্গের শক্তি সঞ্চারণের উৎস হতে পারে। এর চেয়ে গভীরে পর্যবেক্ষণের প্রযুক্তি এখনো আমাদের আবিষ্কার হয় নি।
আরিজোনা এবং ক্যালিফোর্নিয়াতে ২০০৮ সালে রেডিও টেলিস্ককোপের মাধ্যমে একটি গবেষণা সম্পন্ন করা হয় যেখানে ধনু এ* নক্ষত্রের ব্যাস নির্ণয় করা হয় ৪৪ মিলিয়ন কিলোমিটার (প্রায় ০.৩ জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক একক)।[১৬][১৭] পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব ১৫০ মিলিয়ন কিলোমিটারকে যেখানে ১ জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক একক ধরা হয়, সূর্য থেকে বুধের নিকটতম বিন্দুর দূরত্বও প্রায় ০.৩ জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক একক (৪৬ মিলিয়ন কিলোমিটার)। এভাবেও বলা যায় তাই— এই মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রে বেতার তরঙ্গের উৎসস্থলের আকার সূর্য থেকে বুধের দূরত্বেরও কম।
জার্মানিতে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইন্সটিটিউট ফর এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল ফিজিক্সের বিজ্ঞানীরা চিলির টেলিস্কোপ ব্যবহার করে নিশ্চিত হয়েছেন যে ছায়াপথের কেন্দ্রে অতিকায় ভারী কৃষ্ণগহবরের অস্তিত্ব রয়েছে যা ৪.৩ মিলিয়ন সৌর ভরের সমান।
৫ জানুয়ারি ২০১৫ তে, নাসা ধনু-এ* থেকে রেকর্ড সৃষ্টিকারী ৪০০ গুণ বেশি উজ্জ্বল এক্স-রে পর্যবেক্ষণ করে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে এই অস্বাভাবিক ঘটনার কারণ হতে পারে কোনো গ্রহাণুর কৃষ্ণগহবরে পতন অথবা ধনু-এ এর দিকে গ্যাসীয় প্রবাহে চৌম্বকক্ষেত্রের এন্টেঙ্গেলমেন্টের কারণে।[১৮]
নক্ষত্রের পরিসংখ্যান
[সম্পাদনা]ধনু এ* নক্ষত্রের চারপাশের এক ঘন পারসেক অঞ্চলে রয়েছে ১০ মিলিয়ন নক্ষত্র।[১৯][২০] যদিও তাদের অশিকাংশই পুরনো লাল দানব তারা, তবুও গ্যালক্টিক সেন্টার অতিকায় তারায়ও সমৃদ্ধ। ১০০টিরও বেশি ওবি দল এবং উলফ-র্যায়েট তারা চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের দেখে মনে করা হয় তারাগুলো কয়েক মিলিয়ন বছর আগে কোনো একটি একক তারা গঠনের মুহূর্তে সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের কাছে এই তুলনামূলক নবীন তারাদের অস্তিত্ব চমকের বিষয় ছিল। তারা মনে করেছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষ্ণগহ্বরের জোয়ারের প্রভাবে এই নবীন তারাদের জন্ম হওয়া সম্ভব হবে না। এই তারুণ্য বিভ্রম (Paradox of Youth) আরো প্রকট হয়ে ওঠে যেগুলো ধনু এ* নক্ষত্রের কাছাকাছি কক্ষপথে রয়েছে। যেমন- এস২ এবং এস০-১০২। হয় এ পরিস্থিতি ব্যাখ্যায় দুটো সম্ভাবনা সামনে চলে আসে। গ্যালাকটিক সেন্টার থেকে বিরাটকায় তারার দল এই অবস্থানে সরে এসেছে এবং নবীন তারাদের জন্ম দিয়েছে অথবা কেন্দ্রীয় কৃষ্ণগহ্বরের কাছাকাছি ঘন সন্নিবিষ্ট গ্যাসীয় চাকতি থেকে নক্ষত্রের জন্ম হয়েছে। এদের ১০০ নবীন, অতিকায় তারাদের মনে করা হয় এক বা একাধিক চাকতি থেকে ঘনীভূত। বিক্ষিপ্তভাবে কেন্দ্রীয় ঘন পারসেকের তারাদের অপেক্ষা চাকতির ধারণা অধিক সংগত বলে মনে করা হয়।[২১][২২] এই পর্যবেক্ষণ এখনো নির্দিষ্ট কোনো উপসংহারে এনে দেয় না।
গ্যালাকটিক সেন্টারে নক্ষত্রের গঠন বর্তমানে সম্পন্ন হয় বলে মনে হয় না, যদিও আণবিক গ্যাসের নিউক্লিয়পরিধির চাকতি যা গ্যালাকটিক সেন্টারের চারপাশে ২ পারসেক দূরত্বে কক্ষপথে পরিক্রমণ করে সে অঞ্চল দেখে মনে হয় নক্ষত্র গঠনের জন্য উপযুক্ত স্থান। ২০০২ এ অ্যান্টনি স্টার্ক এবং ক্রিস মার্টিনের গ্যালাকটিক সেন্টার থেকে ৪০০ আলোকবর্ষের মধ্যকার গ্যাসের ঘনত্বের মানচিত্রায়ন উপস্থাপন করেন। এ থেকে গ্যালাকটিক সেন্টারের চারপাশে একটি আঙটি বা চক্রের আভাস পাওয়া যায় যার ভর সূর্যের চেয়ে কয়েক মিলিয়নগুণ বেশি এবং নক্ষত্র গঠনের জন্য সংকট ঘনত্বের কাছাকাছি। তারা ভবিষ্যদ্বাণী করেন ২০০ মিলিয়ন বছরের মধ্যে গ্যালাকটিক সেন্টারে নক্ষত্রের বিস্ফোরণের ঘটনাপর্ব আসবে। প্রচুর নক্ষত্র জন্ম নিবে এবং সুপারনোভায় পরিণত হবে বর্তমানের চেয়ে ১০০গুণ হারে। এই নক্ষত্র বিস্ফোরণ পর্ব সহায়তা পেতে পারে ছায়াপথের কেন্দ্রের দিকে পদার্থের অধিগমনেরও। কেন্দ্রীয় কৃষ্ণগহ্বরের দিকে পদার্থসমূহ পতনশীল হবে। এটা ধরে নেয়া হয় যে, মিল্কিওয়ে ছায়াপথে প্রতি ৫০০ মিলিয়ন বছরে এরকম নক্ষত্র বিস্ফোরণের পর্ব সংঘটিত হয়ে থাকে।
তারুণ্যের বিভ্রমের সাথে আরো একটি বিভ্রম রয়ে গেছে— "বুড়ো বয়সের প্রহেলিকা"। এটি গ্যালাকটিক সেন্টারে প্রাপ্ত পুরনো নক্ষত্র সংবলিত। তাত্ত্বিক মডেল ভবিষ্যদ্বাণী করে, পুরনো নক্ষত্র যেগুলো নবীন নক্ষত্রদের চেয়েও সংখ্যায় বেশি— তাদের কৃষ্ণগহবরের কাছাকাছি মানের ঘনত্ব থাকবে। এ ঘনত্বের পর্যায়ের নাম বাহকল-ওলফ চূড়া।I কিন্তু এর বদলে, ২০০৯ এ আবিষ্কৃত হয় যে ধনু এ* নক্ষত্রের প্রায় ০.৫ পারসেক পর্যন্ত পুরনো নক্ষত্রদের ঘনত্ব সর্বোচ্চ হয়ে এরপর কমতে থাকে। ঘন সন্নিবিষ্ট দলের পরিবর্তে সেখানে কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশে পাওয়া যায় ফাঁকা অঞ্চল।[২৩] এই ধাঁধাময় পর্যবেক্ষণ ব্যাখ্যায় বেশ কিছু প্রস্তাবনা রয়েছে, যদিও এর কোনোটাই সম্পূর্ণ সন্তোষজনক নয়।[২৪][২৫] উদাহরণস্বরূপ, যদিও কৃষ্ণগহবর এর নিকটতর নক্ষত্রদের গ্রাস করবে, ফলে স্বল্প ঘনত্বের অঞ্চল তৈরি হবে তবুও এই অঞ্চল এক পারসেকের চেয়ে ক্ষুদ্রতর হবে। যেহেতু পর্যবেক্ষণকৃত নক্ষত্ররা মোট নক্ষত্রদের একটি ভগ্নাংশ মাত্র, তাত্ত্বিকভাবে এটা সম্ভব যে, সার্বিক নাক্ষত্রিক বণ্টন পর্যবেক্ষণকৃত অংশের সাথে ভিন্ন। তবে এখনও এমন কোনো মডেলের প্রস্তাবনা হয় নি যা এ ঘটনাকে ব্যাখ্যা করতে পারে।
সংগ্রহশালা
[সম্পাদনা]-
লাল দানব নক্ষত্র এবং সাদা, সূর্যের অনুরপ নক্ষত্রদের সাথে সহাবস্থান। [২৬]
-
মিল্কিওয়ের চক্রের কেন্দ্রে সাদা বামনদের উপস্থিতি।[২৭]
-
আকাশগঙ্গার (মিল্কিওয়ে) কেন্দ্র - ছবিটি নিয়েছে ISAAC, ভিএলটি এর নিকট ও মধ্য অবলাল স্পেক্ট্রোমিটার ক্যামেরার সাহায্যে।
-
স্পিৎজার টেলিস্কোপে তোলা ছবি
-
ধনু তারকামন্ডলের কাছের রাতের আকাশচিত্র। ভালোমত বোঝার জন্য এবং ধুলির অংশের বিস্তারিত দেখাতে সম্পাদনা করা হয়েছে। ধনু তারকারাজির প্রধান নক্ষত্রগুলো লাল দাগে চিহ্নিত করা হয়েছে।
-
মিল্কিওয়ের কেন্দ্রীয় অংশ, যা ইউরোপিয় স্পেস এজেন্সির এনএসিও অবলালের নিকটবর্তী দৃশ্যে অতিকায় টেলিস্কোপের মাধ্যমে দেখা হয়েছে।
-
মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রের অবলাল চিত্র যা প্রকাশ করছে নতুন তারাদের জন্ম হওয়ার ইঙ্গিত।
-
ধনু এ* নক্ষত্র থেকে অস্বাভাবিকভাবে নির্গত এক্স-রশ্মি। মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রে অতিকায় কৃষ্ণগহ্বরের উপস্থিতি।[১৮]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]নোটসমূহ
[সম্পাদনা]"Hubble captures glittering crowded hub of our Milky Way" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৮ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে। www.spacetelescope.org। সংগৃহীত ১৫ জানুয়ারি ২০১৮।"Hubble captures glittering crowded hub of our Milky Way"। www.spacetelescope.org। ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৮।
"Hubble Spots White Dwarfs in Milky Way's Central Hub"। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৫।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
"Hubble Spots White Dwarfs in Milky Way's Central Hub"। ৯ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৫।
"Hubble Spots White Dwarfs in Milky Way's Central Hub"। ৯ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৫।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;ley196508
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Shapley, H (১৯১৮)। "Studies based on the colors and magnitudes in stellar clusters. VII. The distances, distribution in space, and dimensions of 69 globular clusters"। Astrophysical Journal। 48: 154। ডিওআই:10.1086/142423। বিবকোড:1918ApJ....48..154S।
- ↑ Baade, W (১৯৪৬)। "A Search for the Nucleus of Our Galaxy"। Publications of the Astronomical Society of the Pacific। 58: 249। ডিওআই:10.1086/125835। বিবকোড:1946PASP...58..249B।
- ↑ Ng, Y. K; Bertelli, G; Chiosi, C; Bressan, A (১৯৯৬)। "The galactic structure towards the Galactic Center. III. A study of Baade's Window: Discovery of the bar population?"। Astronomy and Astrophysics। 310: 771। বিবকোড:1996A&A...310..771N।
- ↑ Pawsey, J. L (১৯৫৫)। "A Catalogue of Reliably Known Discrete Sources of Cosmic Radio Waves"। Astrophysical Journal। 121: 1। ডিওআই:10.1086/145957। বিবকোড:1955ApJ...121....1P।
- ↑ Blaauw, A.; Gum, C.S.; Pawsey, J.L.; Westerhout, G. (১৯৬০)। "The new IAU system of galactic coordinates (1958 revision)"। Monthly Notices of the Royal Astronomical Society। 121 (2): 123–131। ডিওআই:10.1093/mnras/121.2.123। বিবকোড:1960MNRAS.121..123B।
- ↑ ক খ Malkin, Zinovy M. (ফেব্রুয়ারি ২০১৩)। "Analysis of Determinations of the Distance between the Sun and the Galactic Center"। Astronomy Reports। 57 (2): 128–133। arXiv:1301.7011 । ডিওআই:10.1134/S1063772913020078। বিবকোড:2013ARep...57..128M। Russian original Малкин, З. М. (২০১৩)। "Об определении расстояния от Солнца до центра Галактики"। Astronomicheskii Zhurnal (রুশ ভাষায়)। 90 (2): 152–157। ডিওআই:10.7868/S0004629913020072।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;francis14
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;vanhollebeke09
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ ক খ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;majaess10
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Cabrera-Lavers, A.; González-Fernández, C.; Garzón, F.; Hammersley, P. L.; López-Corredoira, M. (ডিসেম্বর ২০০৮)। "The long Galactic bar as seen by UKIDSS Galactic plane survey"। Astronomy and Astrophysics। 491 (3): 781–787। arXiv:0809.3174 । ডিওআই:10.1051/0004-6361:200810720। বিবকোড:2008A&A...491..781C।
- ↑ Nishiyama, Shogo; Nagata, Tetsuya; Baba, Daisuke; Haba, Yasuaki; Kadowaki, Ryota; Kato, Daisuke; Kurita, Mikio; Nagashima, Chie; Nagayama, Takahiro; Murai, Yuka; Nakajima, Yasushi; Tamura, Motohide; Nakaya, Hidehiko; Sugitani, Koji; Naoi, Takahiro; Matsunaga, Noriyuki; Tanabé, Toshihiko; Kusakabe, Nobuhiko; Sato, Shuji (মার্চ ২০০৫)। "A Distinct Structure inside the Galactic Bar"। Astrophysical Journal। 621 (2): L105–L108। arXiv:astro-ph/0502058 । ডিওআই:10.1086/429291। বিবকোড:2005ApJ...621L.105N।
- ↑ Alcock, C.; Allsman, R. A.; Alves, D. R.; Axelrod, T. S.; Becker, A. C.; Basu, A.; Baskett, L.; Bennett, D. P.; Cook, K. H.; Freeman, K. C.; Griest, K.; Guern, J. A.; Lehner, M. J.; Marshall, S. L.; Minniti, D.; Peterson, B. A.; Pratt, M. R.; Quinn, P. J.; Rodgers, A. W.; Stubbs, C. W.; Sutherland, W.; Vandehei, T.; Welch, D. L. (জানুয়ারি ১৯৯৮)। "The RR Lyrae Population of the Galactic Bulge from the MACHO Database: Mean Colors and Magnitudes"। Astrophysical Journal। 492 (1): 190–199। ডিওআই:10.1086/305017। বিবকোড:1998ApJ...492..190A।
- ↑ Kunder, Andrea; Chaboyer, Brian (ডিসেম্বর ২০০৮)। "Metallicity Analysis of MACHO Galactic Bulge RR0 Lyrae Stars from their Light Curves"। The Astronomical Journal। 136 (6): 2441–2452। arXiv:0809.1645 । ডিওআই:10.1088/0004-6256/136/6/2441। বিবকোড:2008AJ....136.2441K।
- ↑ Staff (সেপ্টেম্বর ১২, ২০০৫)। "Introduction: Galactic Ring Survey"। Boston University। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৫-১০।
- ↑ Doeleman, Sheperd S.; ও অন্যান্য (২০০৮)। "Event-horizon-scale structure in the supermassive black hole candidate at that Galactic Centre"। Nature। 455 (7209): 78–80। arXiv:0809.2442 । ডিওআই:10.1038/nature07245। পিএমআইডি 18769434। বিবকোড:2008Natur.455...78D।
- ↑ Reynolds, Christopher S. (২০০৮)। "Bringing black holes into focus"। Nature। 455 (7209): 39–40। ডিওআই:10.1038/455039a। পিএমআইডি 18769426। বিবকোড:2008Natur.455...39R।
- ↑ ক খ Chou, Felicia; Anderson, Janet; Watzke, Megan (৫ জানুয়ারি ২০১৫)। "RELEASE 15-001 - NASA's Chandra Detects Record-Breaking Outburst from Milky Way's Black Hole"। NASA। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ http://www.astronomy.ohio-state.edu/~ryden/ast162_7/notes31.html
- ↑ Mauerhan, J. C.; Cotera, A.; Dong, H. (২০১০)। "Isolated Wolf-Rayet Stars and O Supergiants in the Galactic Center Region Identified Via Paschen-α Excess"। The Astrophysical Journal। 725: 188–199। arXiv:1009.2769 । ডিওআই:10.1088/0004-637X/725/1/188। বিবকোড:2010ApJ...725..188M। ১৪ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মার্চ ২০১৮।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৪ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মার্চ ২০১৮।
- ↑ http://www.mpe.mpg.de/ir/GC/
- ↑ Buchholz, R. M.; Schödel, R.; Eckart, A. (মে ২০০৯)। "Composition of the galactic center star cluster: Population analysis from adaptive optics narrow band spectral energy distributions"। Astronomy and Astrophysics। 499 (2): 483–501। arXiv:0903.2135 । ডিওআই:10.1051/0004-6361/200811497। বিবকোড:2009A&A...499..483B।
- ↑ Merritt, David (মে ২০১১)। "Dynamical Models of the Galactic Center"। Morris, Mark; Wang, Daniel Q.; Yuan, Feng। Dynamical Models of the Galactic Center। The Galactic Center: A Window on the Nuclear Environment of Disk Galaxies। San Francisco: Astronomical Society of the Pacific.
- ↑ Chown, Marcus (সেপ্টে ২০১০)। "Something's been eating the stars"। New Scientist। 207 (2778): 30–33। ডিওআই:10.1016/S0262-4079(10)62278-6। বিবকোড:2010NewSc.207...30M। ৯ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মার্চ ২০১৮.
- ↑ "Hubble captures glittering crowded hub of our Milky Way"। www.spacetelescope.org। ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৮।
- ↑ "Hubble Spots White Dwarfs in Milky Way's Central Hub"। ৯ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৫।