চাংচিয়াচিয়ে জাতীয় অরণ্য উদ্যান

স্থানাঙ্ক: ২৯°৯′৩৯″ উত্তর ১১০°২৪′৫৮″ পূর্ব / ২৯.১৬০৮৩° উত্তর ১১০.৪১৬১১° পূর্ব / 29.16083; 110.41611
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(চাংচিয়াচিয়ে জাতীয় বন উদ্যান থেকে পুনর্নির্দেশিত)
চাংচিয়াচিয়ে জাতীয় অরণ্য উদ্যান
অবস্থানচাংচিয়াচিয়ে, হুনান, চীন
স্থানাঙ্ক২৯°৯′৩৯″ উত্তর ১১০°২৪′৫৮″ পূর্ব / ২৯.১৬০৮৩° উত্তর ১১০.৪১৬১১° পূর্ব / 29.16083; 110.41611
আয়তন৪,৮১০ হেক্টর (১৮.৬ বর্গমাইল)
স্থাপিত১৯৮২

চাংচিয়াচিয়ে জাতীয় অরণ্য উদ্যান (চীনা: 湖南张家界国家森林公园; ফিনিন: Húnán Zhāngjiājiè Guójiā Sēnlín Gōngyuán; আক্ষরিক: "হুনান চাংচিয়াচিয়ে জাতীয় অরণ্য উদ্যান") হচ্ছে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের হুনান প্রদেশের চাংচিয়াচিয় শহরে অবস্থিত একটি অনন্য জাতীয় অরণ্য উদ্যান। এটি উলিংয়ুয়ান পর্যটন এলাকার বেশ কয়েকটি জাতীয় উদ্যানের মধ্যে একটি।[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৯৮২ সালে ৪,৮১০ হেক্টর (১১,৯০০ একর) আয়তনের এই জাতীয় উদ্যানটি চীনের প্রথম জাতীয় অরণ্য উদ্যান হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে।[২] চাংচিয়াচিয়ে জাতীয় অরণ্য উদ্যান ৩৯৭.৫ কিমি (১৫৩.৫ মা) অধিকতর বড় উলিংয়ুয়ান প্রাকৃতিক অঞ্চলের একটি অংশ। ১৯৯২ সালে, উলিংয়ুয়ান আনুষ্ঠানিকভাবে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে।[৩] এরপর ২০০১ সালে, এটিকে ভূমি ও সম্পদ মন্ত্রক দ্বারা চাংচিয়াচিয়ে বেলেপাথর শৃঙ্গ অরণ্য জাতীয় ভূ-উদ্যান (৩,৬০০ কিমি (১,৪০০ মা)) হিসাবে অনুমোদন দেয়া হয়। ২০০৪ সালে, চাংচিয়াচিয়ে ভূউদ্যানকে ইউনেস্কোর বৈশ্বিক ভূ-উদ্যান ব্যবস্থার অংশ হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়।

পার্কের সর্বাধিক নজরকারা ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর খাম্বার মতো বিন্যাসপ্রণালী যা পার্ক জুড়ে সর্বত্র দেখা যায়। যদিও জায়গাটি কার্স্ট ভূখণ্ডের অনুরূপ, তবে এই অঞ্চলটি চুনাপাথর দ্বারা গঠিতও না এবং রাসায়নিকভাবে দ্রবীভূতকরণের ফলেও উদ্ভূত নয় যা চুনাপাথর-কার্স্টের বৈশিষ্ট্য। বরং অঞ্চলটি রাসায়নিকের চেয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভূমিক্ষয়ের ফলে ভৌত পরিবেশে সৃষ্টি হয়েছে। শীতকালে যে বরফ জমতে থাকে এবং এর উপর যে উদ্ভিদকূল জন্মে, তার থেকেই মূলত এই স্তম্ভগুলি তৈরি হয়। এখানকার আবহাওয়া সারা বছর আর্দ্র থাকে যার ফলে পাতা খুব ঘন হয়। পরিবেষ্টিত উপাদান মূলত প্রবাহ দ্বারা বাহিত হয়। এই গঠনগুলি চীনা ল্যান্ডস্কেপের একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য, এবং বহু প্রাচীন চীনা চিত্রে দেখতে পাওয়া যায়।

১,০৮০-মিটার (৩,৫৪০ ফু) উচ্চতার দক্ষিণী আকাশ স্তম্ভ, যা পার্কের কোয়ার্টজ-বেলেপাথরের একটি স্তম্ভ, জানুয়ারী, ২০১০-এর চলচ্চিত্র অ্যাভাটারের[৪] সম্মানার্থে আনুষ্ঠানিকভাবে "অ্যাভাটার হাল্লেলুজা মাউন্টেন" (চীনা: 阿凡达-哈利路亚山; ফিনিন: Āfándá hālìlùyà shān) নামে নামকরণ করা হয়। পার্ক কর্মকর্তাদের মতে, চাংচিয়াচিয়ে থেকে প্রাপ্ত ছবিগুলো ছবিতে দেখা ভাসমান হাল্লেলুজা পর্বতমালাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে ছিল।[৫] চলচ্চিত্রটির পরিচালক ও প্রযোজনার ডিজাইনাররা বলেন যে তারা হুনান প্রদেশের এই ভাসমান শিলাসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের পর্বতমালা থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন।[৬][৭]

কাঠামো[সম্পাদনা]

বাইলং এলিভেটর

বাইলং এলিভেটর, আক্ষরিক অর্থে 'শতাধিক ড্রাগনের ঊর্ধ্বগমন লিফট', ২০০২ সালে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। ৩২৬ মি (১,০৭০ ফু) উচ্চতায় অবস্থিত, এটি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম বহিঃস্থ লিফট। এটি দুই মিনিটেরও কম সময়ে এর পাদদেশ থেকে একদম শীর্ষে দর্শনার্থীদের নিয়ে যেতে সক্ষম। কাঠামোটি তিনটি পৃথক কাচের লিফট দ্বারা গঠিত, যার প্রতিটিতে একসাথে ৫০জন লোক বহন করতে পারে।

চাংচিয়াচিয়ে মহাগিরিখাত ২০১৬ সালে চাংচিয়াচিয়ে কাচের সেতুটি চালু করে, যা বিশ্বের দীর্ঘতম (৪৩০ মি (১,৪১০ ফু)) এবং সর্বোচ্চ (৩০০ মি (৯৮০ ফু)) পদচারী কাচের সেতু।[৮] উদ্বোধনের তেরো দিনের মাথায়, অতিরিক্ত দর্শনার্থীর সংখ্যার কারণে সেতুটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।[৯] বিপুল সংখ্যক পর্যটকের ধারণ ক্ষমতা এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ সালে এটি পুনরায় খুলে দেয়া হয়।[১০]

তিয়ানজি মাউন্টেন কেবল কার

তিয়ানজি মাউন্টেন কেবল কার,[১১] ইয়াংজিয়াজিয়ে কেবল কার এবং হুয়াংশিচাই কেবল কার[১২] নামে পার্কের মধ্যে তিনটি গন্ডোলা লিফট সিস্টেম রয়েছে।

পাশাপাশি দর্শনার্থীদের টেন-মাইল গ্যালারিতে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি মনোরেলও রয়েছে।[১৩][১৪]

চিত্র প্রদর্শনী[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

থিয়েনমেন পর্বত

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Wulingyuan Scenic and Historic Interest Area"Unesco World Heritage Centre। United Nations Educational, Scientific, and Cultural Organization। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  2. "Zhangjiajie Scenic Spot"। www.travelchinaguide.com। ২০০৮-০৭-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-৩০ 
  3. "A Brief Account of Zhangjiajie"। www.zhangjiajie.com.cn। ২০০৮-১২-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-৩০ 
  4. ""Avatar" inspires China province to rename mountain"China Daily। জানুয়ারি ২৬, ২০১০। জুন ৬, ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  5. "Found! The stunning mountain that inspired Avatar's 'floating peaks'"Daily Mail। London। জানুয়ারি ২৭, ২০১০। 
  6. Anders, Charlie Jane (জানুয়ারি ১৪, ২০১০)। "Avatar's Designers Speak: Floating Mountains, AMP Suits And The Dragon" 
  7. Renjie, Mao (ডিসেম্বর ২৪, ২০০৯)। "Stunning Avatar"Global Times। ডিসেম্বর ২৮, ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ২৫, ২০১০ 
  8. Glass bridge: China opens world's highest and longest BBC News. 20 August 2016
  9. "World's longest glass bridge closes for maintenance two weeks after opening"The Guardian। ২ সেপ্টে ২০১৬। 
  10. "World's longest and highest glass bridge reopens"The Telegraph (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-০৮-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৮-১৬ 
  11. "Tianzi Mountain Cable Car"। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০২১ 
  12. "New cable car in Yangjiajie"। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০২১ 
  13. "Zhangjiajie National Park Monorail China 湖南张家界国家森林公园"। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২১ 
  14. "The monorail train running along ten-mile gallery in Wulingyuan."। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২১ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]