ঘণ্ট

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ঘন্ট
মুগ ডাল ও কচুর ফুল ঘণ্ট
ধরনতরকারি
প্রকারসহযোগী - পরিবেশন পদ
উৎপত্তিস্থলবাংলাদেশ, ভারত
অঞ্চল বা রাজ্যদক্ষিণ এশিয়া
পরিবেশনগরম
প্রধান উপকরণআলু, পটল, কপি ও বিভিন্ন শাক
ভিন্নতাআমিষ ও নিরামিষ

বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের খাবারগুলির মধ্যে ঘণ্ট বিশেষভাবে প্রসিদ্ধ। সাধারণত চচ্চড়ির পরে ঘণ্ট দিয়ে ভাত খাওয়ার প্রচলন আছে।[১] ঘণ্ট রান্নাটা থকথকে রকমের হয়ে থাকে। রান্নার মূল উপকরণ হিসাবে কাঁচা সবজি যেমন আলু, পটল, কপি ও বিভিন্ন শাক ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সাধারণতঃ ঘণ্ট ঘি দিয়ে রান্না করা হয়ে থাকে।

আমিষ ও নিরামিষ ঘন্টের পার্থক্য আনুষঙ্গিক উপকরনের ব্যবহারের ভিত্তিতে হয়ে থাকে। নিরামিষ ঘণ্টে মুলতঃ নারকেল কোঁড়া, মটরের বড়ী, ফুল-বড়ী, খেসারী বা মটর ডালের চাপড়া ভাজি, মটর ডালের বড়া ভাজি ও বালিতে ভাজা মুগ ও মুসুর ডাল, মাষকলাইয়ের কুমড়ো-বড়ী এবং ছোলা প্রভৃতি আনুষঙ্গিক উপকরন হিসাবে ব্যবহৃত হয়। আমিষ ঘণ্টে আবার রুই বা শোল মাছের মাথা-কাঁটা-গাদ, ইলিশ মাছ, চিংড়ি মাছ প্রভৃতি আনুষঙ্গিক উপকরন হিসাবে ব্যবহার করা হয়। [২]

ভোজনবিধি[সম্পাদনা]

ডাল মাখা ভাত বা ঘি মাখা ভাতে ঘণ্ট খাওয়ার রেওয়াজ আছে। ঘণ্টের সঙ্গে ভাত মেখে লেবুর রস সহযোগে খাওয়ার রীতি বঙ্গদেশে প্রচলিত।

সবজি[সম্পাদনা]

ঘণ্টের উপকরণের সমস্ত সবজি কুচো কুচো করে কেটে নিতে হয়। কিছু কিছু ঘণ্ট যেমন ঘণ্ট ভোগ, বাঁধাকপির ঘণ্ট, শাকের ঘণ্ট বা কচি মুলোর ঘণ্টে সবজিগুলি ডুমো ডুমো করে কেটে রান্না করা হয়ে থাকে।

মশলা[সম্পাদনা]

প্রায় সব ধরনের ঘণ্টের জন্যে ধনে, জিরে ও মরিচ বাটার প্রয়োজন। কোন কোন ঘণ্টে আবার শুকনো লঙ্কা বাটা, হলুদ বাটা ও তিল বাটা আবার কোথাও গরম মশলা বাটা ব্যবহার হয়। বাদাম, কিসমিস, গরম মশলা, দুধ বা চিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঘণ্টের উপকরণ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

ফোড়ন[সম্পাদনা]

ঘণ্টের ফোড়নের জন্যও সাধারণত জিরা, হিং, তেজপাতা, কাঁচালঙ্কা ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। কখন কখন রাঁধুনি ফোড়নও ঘণ্ট রান্নায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

রন্ধনবিধি[সম্পাদনা]

ঘণ্ট রান্নার সময় প্রথমে সবজিগুলো সেদ্ধ করে জল ফেলে দেওয়া হয়। তারপর, সিদ্ধ তরকারিতে বাটা মশলা, দুধ, চিনি এবং নুন, সব একত্রে মেখে নেওয়া হয়। এরপর ঘিয়ে ফোড়ন দিয়ে এই তরকারি সাঁতলান হয়। কোন কোন ঘণ্টে আগে ফোড়ন দিয়ে পরে ছাঁচনা অর্থাৎ দু তিন বার হাঁড়ি বা কড়াই থেকে ঢালাঢালি করে একেবারে সমগ্র রান্না প্রস্তুত করা হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. DEVI, PRAGYASUNDARI। Amish O Niramish Ahaar। Ananda Publishers। 
  2. রায়, কিরণলেখা। বরেন্দ্র রন্ধন। কলকাতা: ভারতমিহির প্রেস। পৃষ্ঠা ১৪০।