গৌণ গ্রহরাশি
গৌণ গ্রহরাশি (ইংরেজি:Minor Planets) হল সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘূর্নায়মান আকৃতিতে ক্ষুদ্র সৌরজগতের সাধারণ কিছু জ্যোতির্বস্তু।, এরা বিশাল গ্রহ কিংবা ধূমকেতু কিছুই নয়।
গৌণ গ্রহরাশির তালিকায় যে জ্যোতির্বস্তু গুলো আসতে পারে তা হলো বামন গ্রহ, গ্রহাণু, ট্রজানস, সেন্টর, কুইপার বেল্টের বস্তু সমূহ এবং ট্রান্স নেপচুনিয়ান বস্তু [১] সমূহ। প্রথম ক্ষুদ্র গ্রহ সেরেস আবিষ্কৃত হয় ১৮০১ সালের ১লা জানুয়ারি।আবিষ্কারের পর প্রায় পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত একে গ্রহ ভাবা হতো।
২০০৬ সালের পূর্বে আন্তর্জাতিক এস্ট্রোনোমিকাল ইউনিয়ন ক্ষুদ্র গ্রহ শব্দটি ব্যবহার করতো, কিন্তু ২০০৬ সালে এক আলোচনার মাধ্যমে ক্ষুদ্র গ্রহ এবং ধূমকেতুকে যথাক্রমে বামন গ্রহ এবং সৌর ক্ষুদ্রাংশ নামে অভিহিত করা হয়[২]। কোনো ক্ষুদ্র গ্রহ কে বামন গ্রহ বলা হবে যদি কিনা এর নিজস্ব মাধ্যাকার্ষন শক্তি hydrostatic equilibrium অর্জনে যথেষ্ট হয়।এর আকৃতি উপবৃত্তাকার। এটি ছাড়া অন্য সকল ক্ষুদ্র গ্রহ কিংবা ধূমকেতু সৌর ক্ষুদ্রাংশ হিসেবে অভিহিত হয়।
গৌণ গ্রহরাশির শ্রেণিবিন্যাস
[সম্পাদনা]আমাদের এই সৌর জগতে লক্ষাধিক ক্ষুদ্র গ্রহ এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়েছে, আরো অনেক ক্ষুদ্র গ্রহ আবিষ্কার হচ্ছে প্রতি মুহূর্তে। ক্ষুদ্র গ্রহ কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করে ১০২ মিলিয়নের বেশি ক্ষুদ্র গ্রহের সন্ধান পাওয়া গেছে যার ভিতর ৬১৯,০০০ ইতোমধ্যে তালিকাভুক্ত। বিভিন্ন ধরনের ক্ষুদ্র গ্রহের বর্ণনা নিচে দেওয়া হলো,
- গ্রহাণু
- মূল-বন্ধনী অন্তর্ভুক্ত গ্রহাণু: মঙ্গল গ্রহ এবং বৃহস্পতি গ্রহের মধ্যে অবস্থান করা গ্রহাণুগুলো এর মধ্যে পড়ে। এরাই মূলতঃ প্রধান এবং সুপরিচিত ক্ষুদ্র গ্রহ।
- পৃথিবির নিকটবর্তী গ্রহাণু: এরা পৃথিবী এবং মঙ্গলের ভিতরে অবস্থান করে। এদের মধ্যে আবার অনেকগুলো ভাগ আছে।যেমনঃঅটেন গ্রহাণু, অ্যামোর গ্রহাণু, অ্যাপোলো গ্রহাণু এবং অ্যাপিহেলা গ্রহাণু।
- ট্রোজান:বিভিন্ন ধরনের ট্রোজান রয়েছে। প্রধানত বৃহস্পতির ট্রোজানসমূহ। এরা এর কক্ষপথে বিচরণ করে। ধারণা করা হয় এদের সংখ্যা মূল-বন্ধনী অন্তর্ভুক্ত গ্রহাণুদের কাছাকাছি। আর সবথেকে বেশি ট্রোজান আছে নেপচুনের কক্ষপথে যা বৃহস্পতি গ্রহের ট্রোজানদের কিংবা গ্রহাণু বেল্টএর গ্রহাণুদের থেকেও বেশি।
এছাড়া সেন্টর, কুইপার বেল্ট বস্তুসমূহ এবং ট্রান্স নেপচুনিয়ান বস্তু সমূহ এই ক্ষুদ্র গ্রহের অংশ।
নামকরণ
[সম্পাদনা]প্রথম দিকে এগুলোর নামকরণ করা হতো গ্রীক কিংবা রোমান পুরান থেকে। ১লা জানুয়ারী ১৮০১ তারিখে ইতালীয় জ্যোতির্বিদ গুইসেপ্পি পিয়াজ্জি কর্তৃক আবিষ্কৃত চেরেস ফেরদিনানদিয়া নামীয় গৌণ জ্যোতিষ্কের নাম রাখা হয়েছিল রোমান দেবী চেরেস-এর নামানুসারে। ইনি অঙ্কুরোদ্গম, ফসল ফলানো এবং মাতৃস্নেহের দেবী। "ফেরদিনানদিয়া" এসেছে নেপলস ও সিসিলি'র রাজা ৪র্থ ফার্দিনান্দ-এর নামানুকরণে।[৩]। তিনি এর নাম রাখেন চেরেস ফেরদিনানদিয়া যদিও তা সচরাচর সংক্ষেপে "চেরেস" নামে আখ্যায়িত। চেরেস নামের উৎস হচ্ছেন রোমান দেবী চেরেস
পরবর্তী কালে বিখ্যাত ব্যক্তি, সাহিত্যিক ব্যক্তিবর্গ, আবিষ্কারকদের স্ত্রী/সন্তান এমনকি টিভি চরিত্র থেকেও নাম নেওয়া হতো। পৌরাণিক নামের বাইরে সর্ব প্রথম যে নাম দেওয়া হয় তা হলো ২০ মাসালিয়া।, এটা গ্রীক শহর মার্সেইলস এর নামানুসারে দেওয়া হয়।মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম দেওয়া হয় তৃতীয় নেপলিয়ন এর স্ত্রী ইউজেনিয়ার নামানুসারে ৪৫ ইউজেনিয়া।, কিন্তু অনেক দিন ধরে শুধু মেয়েদের নামই ব্যবহার করা হতো নামকরণের ক্ষেত্রে ।পুরুষের মধ্যে সর্বপ্রথম আলেক্সান্ডার ভন হামবল্ট এর নামানুসারে ৫৪ আলেক্সান্দ্রা রাখা হয়। ক্ষুদ্র গ্রহদের নামকরণ নিয়ে অনেক অনেক কাহিনি এবং বিস্ময়কর গল্প প্রচলিত আছে।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Unusual Minor Planets"। Minor Planet Center। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ Press release, IAU 2006 General Assembly: Result of the IAU Resolution votes, International Astronomical Union, August 24, 2006. Accessed May 5, 2008.
- ↑ Piazzi, Giuseppe (১৮০১)। Risultati delle osservazioni della nuova Stella scoperta il dì 1 gennajo all'Osservatorio Reale di Palermo (Italian ভাষায়)। Palermo।