দীর্ঘস্থায়ী অবরোধক ফুসফুসীয় ব্যাধি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দীর্ঘস্থায়ী অবরোধক ফুসফুসীয় ব্যাধি
প্রতিশব্দক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ লাং ডিজিজ (COLD), ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ এয়ারওয়ে ডিজিজ (COAD), ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস, এমফাইসিমা, পালমোনারি এমফাইসিমা ইত্যাদি
সামগ্রিক রোগবিজ্ঞান এখানে সেন্ট্রিলোবিওলার এমফাইসিমা দেখা যাছে যা ধূমপান এর ফলে সাধারণত হয়। এখানে ফুসফুসের সমান্তরাল ব্যবছেদ চিত্রে অনেকগুলি গহ্বর যা কালো কার্বন কণায় ভর্তি।
বিশেষত্বফুসফুসবিজ্ঞান
লক্ষণশ্বাসকষ্ট, দীর্ঘস্থায়ী কাশি[১]
জটিলতাদুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা, পালমোনারি হৃদরোগ, নিউমোথোরাক্স[২][১]
রোগের সূত্রপাত৩৫ বছরের বেশি বয়সী[১]
স্থিতিকালদীর্ঘ মেয়াদী[১]
কারণতামাক ধূমপান, বায়ু দূষণ, বংশগত[৩]
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতিস্পাইরোমেট্রি[৪]
পার্থক্যমূলক রোগনির্ণয়হাঁপানি, হৃৎপিণ্ডের অকৃতকার্যতা, ব্রঙ্কাইক্টেসিস, যক্ষ্মা, অবলিটারেটিভ ব্রঙ্কিওলাইটিস, প্যানব্রঙ্কিওলাইটিস ছড়িয়ে পড়া[৫]
প্রতিরোধধূমপান বন্ধ করা, ভিতর এবং বাহিরের বিশুদ্ধ বায়ু গ্রহণ, তামাক নিয়ন্ত্রণ[৩][৬]
চিকিৎসাপালমোনারি পুনর্বাসন, দীর্ঘমেয়াদী অক্সিজেন থেরাপি, ফুসফুসের ভলিউম হ্রাস[৬]
ঔষধইনহেলার ব্রঙ্কোডাইলেটরস্টেরয়েড[৬]
সংঘটনের হার১৭৪.৫ মিলিয়ন (২০১৫)[৭]
মৃতের সংখ্যা৩.২ মিলিয়ন (২০১৯)[৩]

দীর্ঘস্থায়ী অবরোধক ফুসফুসীয় ব্যাধি বা সিওপিডি বলতে ফুসফুসের কিছু রোগকে বোঝায় যার কারণে ফুসফুসে বায়ু চলাচল বাধাগ্রস্ত হয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যার সৃষ্টি হয়। একে ইংরেজি পরিভাষায় ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (Chronic obstructive pulmonary disease, সংক্ষেপে COPD) বলে। এর প্রাথমিক লক্ষণগুলি হল শ্বাসকষ্ট এবং কাশির সাথে কফ বের হওয়া। লক্ষণগুলি সময়ের সাথে সাথে আরও ক্ষতিকর হয়ে উঠে। হাঁটাচলা করা বা সিঁড়ি বেয়ে ওঠা কষ্টকর হয়ে উঠে। সর্বাধিক পরিচিত দীর্ঘস্থায়ী অবরোধক ফুসফুসীয় ব্যাধি হল ক্লোমস্ফীতি বা কলাবায়ুস্ফীতি (এমফাইসিমা, Emphysema) এবং দীর্ঘস্থায়ী ক্লোমনালীপ্রদাহ (ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস, chronic bronchitis), তবে এদেরকে বর্তমানে আর আলাদা করে দেখা হয় না। হোমিওপ্যাথিতে এই রোগ নিরাময়ের স্থায়ী চিকিৎসা রয়েছে।

রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ[সম্পাদনা]

  • কাশি
  • শ্বাসকষ্ট
  • শ্বাসপ্রশ্বাসের সময় শব্দ হওয়া
  • কাশির সাথে শ্লেষ্মা নির্গত হওয়া
  • হাঁটাচলা করলে হয়রান হয়ে যাওয়া

ধূমপানও এই অসুখের জন্য দ্বায়ী। এ ছাড়া বায়ুদূষণ, ধুলা, ধোঁয়া ইত্যাদি ফুসফুসে প্রদাহের সৃষ্টি করে, যা সিওপিডির কারণ। এ রোগের কারণে ফুসফুসের স্থায়ী ক্ষতি হয়।[৮]

কাশি[সম্পাদনা]

গলা বা শ্বাসনালিতে ক্ষতিকর/উত্তেজক কোনো পদার্থের উপস্থিতির কারণে কাশি হয়ে থাকে। এই ক্ষতিকর/উত্তেজক পদার্থের উপস্থিতির কারণে মস্তিষ্ক থেকে তলপেট ও বুকের পেশীতে সংকেত পৌঁছায় যাতে ফুসফুস থেকে প্রবল বাতাস বা নিঃশ্বাসের সাহায্যে উত্তেজক পদার্থটি বের হয়ে আসে।

কাশি হলো এমন একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যা আকস্মিকভাবে হয়ে থাকে ও যে প্রক্রিয়ার সাহায্যে শ্বাসনালি থেকে যে কোনো দূষিত পদার্থ ও জীবাণু বাইরে বেরিয়ে আসে। কাশির এই প্রক্রিয়াটি সাধারণত তিনটি পর্যায়ে হয়ে থাকে। প্রথম পর্যায়ে আমরা শ্বাস গ্রহণ করি, দ্বিতীয় পর্যায়ে বাতাস আবদ্ধ শ্বাসরন্ধ্রে চাপ সৃষ্টি করে এবং তৃতীয় ও শেষ পর্যায়ে ফুসফুস থেকে আবদ্ধ শ্বাসরন্ধ্রের ভেতর দিয়ে জোরপূর্বক সশব্দে বাতাস বেরিয়ে আসে, যাকে আমরা কাশি বলে থাকি। কাশি ইচ্ছাকৃত বা স্বতঃস্ফূর্ত হতে পারে। কাশি বা কফ স্বল্পদিনের জন্য হলে তা দেহের তেমন কোনো ক্ষতি করে না। তবে এটি কয়েক সপ্তাহ বা এর বেশিদিন স্থায়ী হলে ও কফের সাথে রক্ত গেলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কাশি দীর্ঘদিন স্থায়ী হলে তা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে, যেমন- নিদ্রাহীনতা, মাথাব্যথা, মূত্র নিয়ন্ত্রণে রাখতে অসামর্থ্য হওয়া ও পাঁজরের ক্ষতি।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Chronic obstructive pulmonary disease"NICE। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২১ 
  2. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; BMJbp নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  3. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; WHO2021 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  4. Gold Report 2021, পৃ. 20-27, Chapter 2: Diagnosis and initial assessment।
  5. Gold Report 2021, পৃ. 33–35, Chapter 2: Diagnosis and initial assessment।
  6. Gold Report 2021, পৃ. 40–46, Chapter 3: Evidence supporting prevention and maintenance therapy।
  7. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; GBD2015Pre নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  8. "ফুসফুসের রোগ সিওপিডি, প্রথম আলো, ২৬ নভেম্বর ২০১৯"। ৯ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০২১