কেদারনাথ দাস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কেদারনাথ দাস
জন্ম(১৮৬৭-০২-২৪)২৪ ফেব্রুয়ারি ১৮৬৭
মৃত্যু১৩ মার্চ ১৯৩৬(1936-03-13) (বয়স ৬৯)
জাতীয়তাব্রিটিশ ভারতীয়
পেশাচিকিৎসক

স্যার কেদারনাথ দাস ব্রিটিশ ভারতের একজন প্রসিদ্ধ ধাত্রীবিশারদ ছিলেন।

শিক্ষা[সম্পাদনা]

কেদারনাথ হিন্দু স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করে স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে এফ.এ পাশ করেন। তিনি ১৮৯২ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এম.বি পাশ করার পরে ১৮৯৫ খ্রিষ্টাব্দে মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্ত্রীরোগবিদ্যা ও ধাত্রীবিদ্যায় এম.ডি. ডিগ্রী পান। [১][২]

কর্ম[সম্পাদনা]

কেদারনাথ প্রথমে কিছুদিন প্রেসিডেন্সী কলেজে স্বাস্থ্যবিধান সংক্রান্ত বিজ্ঞান নিয়ে অধ্যাপনা করার পর ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দে ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল স্কুলে ধাত্রীবিদ্যায় অধ্যাপক নিযুক্ত হন। ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে সেখান থেকে অবসর গ্রহণের পর কারমাইকেল মেডিক্যাল কলেজে স্ত্রীরোগবিদ্যা ও ধাত্রীবিদ্যার অধ্যাপক পদে যোগ দেন এবং ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে সেখানকার অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন এবং আমৃত্যু ঐ পদ অলংকৃত করেন।[৩] তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিত্সাবিদ্যা বিভাগের ডীন ছিলেন। [১][২]

শিক্ষামূলক সংগঠন[সম্পাদনা]

কেদারনাথ আমেরিকান গাইনিকোলজিক্যাল সোসাইটি এবং আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব অব্সটেট্রিসিয়ান্স, গাইনিকোলজিস্টস অ্যান্ড অ্যাবডোমিনাল সার্জেন্স এর সাম্মানিক ফেলো ছিলেন। তিনি ব্রিটিশ কলেজ অব অব্সটেট্রিসিয়ান্স অ্যান্ড গাইনিকোলজিস্টস শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যপদ গ্রহণ করেন। [১][২]

গবেষণা মূলক প্রবন্ধ[সম্পাদনা]

কেদারনাথ দাসের কর্ম জীবনের প্রথম দিকে বহু ভারতীয় ও বিদেশী গবেষণা মূলক পত্রিকায় মধুমেহ, মস্তিষ্কের টিউমার, ধনুষ্টঙ্কার প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ে তার প্রবন্ধ ছাপা হয়। ধাত্রীবিদ্যায় তার প্রথম গবেষণা মূলক পুস্তক এ হ্যান্ডবুক অব অব্সটেট্রিক্স ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দে ছাপা হয়। ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে তার দ্বিতীয় পুস্তক এ টেক্সটবুক অব মিডওয়াইফারী প্রকাশ হয়। ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রসবকালীন ফরসেপ্সের ওপর তার বিখ্যাত পুস্তক অব্সটেট্রিক ফরসেপ্স প্রকাশ হয়। [২]

দাসের ফরসেপ্স[সম্পাদনা]

দাসের ফরসেপ্স

ভারতীয় মহিলাদের গঠনপ্রকৃতি ও অপেক্ষাকৃত ছোট আকারের ভারতীয় শিশুদের কথা মাথায় রেখে কেদারনাথ এক বিশেষ ধরনের লম্বা ও বক্র প্রসবকালীন ফরসেপ্সের নির্মাণ করেন যা দাসের ফরসেপ্স নামে বিশ্বে প্রচলিত এবং এখনো ভারতে প্রসবকালে বহু ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই ফরসেপ্স অনুরূপ পশ্চিমী যন্ত্রগুলি অপেক্ষা ওজনে হাল্কা ও দৈর্ঘ্যে হ্রস্ব। [৪]

পুরস্কার ও সম্মানলাভ[সম্পাদনা]

চিকিৎসাবিদ্যায় তার কর্মকাণ্ডের জন্য ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে তাকে কম্প্যানিয়ন অব দ্য অর্ডার অব দ্য ইন্ডিয়ান এম্পায়ার করা হয় এবং ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে ব্রিটিশ সরকার তাকে নাইটহুড খেতাব প্রদান করেন। [২] ভারত ধর্মমহামণ্ডল তাঁকে 'ধাত্রীবিদ্যার্ণব' উপাধি প্রদান করেন । কারমাইকেল মেডিক্যাল কলেজে 'সার কেদারনাথ দাস প্রসূতি হাসপাতাল' নামে পরিচিত বিভাগটি তারই প্রচেষ্টায় নির্মিত হয়। ভারতীয়দের মধ্যে তিনিই প্রথম এফ.সি.ও.জি.উপাধিধারী।[৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাস - উনিশ শতকে বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাব - বিনয় ভুষণ রায়, প্রথম সম্পাদনা, আইএসবিএন ৮১-৮৯৬৪৬-০০-৪ {{আইএসবিএন}} এ প্যারামিটার ত্রুটি: চেকসাম
  2. British Medical Journal 1936 March 28; 1(3925): 670–671., Obituary of Sir Kedarnath Das]
  3. আর. জি. কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ওয়েবসাইট ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে, আর. জি. কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষগণের তালিকা
  4. Text book of Obstetrics by Dr. D. C. Dutta, 6th Edition, আইএসবিএন ৮১-৭৩৮১-১৪২-৩
  5. সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত “সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান” সাহিত্য সংসদ কলকাতা প্রকাশিত