কুশল কোনোয়ার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কুশল কোনোয়ার (কুশল কোঁৱৰ)
কুশল কোনোয়ার
জন্ম২১ মার্চ
মৃত্যু১৫ জুন, ১৯৪৩, জোরহাট [১]
জাতীয়তাভারতীয়
কর্মজীবন১৯২০-১৯৪২
পরিচিতির কারণব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন, গান্ধীবাদী আন্দোলন
রাজনৈতিক দলভারতের জাতীয় কংগ্রেস

কুশল কোনোয়ার একজন অসমীয়া, ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন কর্মী। তিনি ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগদান করেছিলেন। আসাম রাজ্যের জোরহাট জেলে তার ফাঁসি হয়।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

কুশল কোনোয়ার আসামের বালিজান গ্রামে (অধুনা গোলাঘাট জেলা) জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি বেজবড়ুয়া বিদ্যালয়ে শিক্ষালাভ করেন। ১৯২১ সালে ছাত্রাবস্থাতে মহাত্মা গান্ধী পরিচালিত অসহযোগ আন্দোলনে যোগদান করেছিলেন। স্বরাজ, সত্য ও অহিংসা এই তিন মন্ত্রে অনুপ্রাণিত হন কুশল। তিনি বেঙ্গামি'তে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন। সেখানে শিক্ষকতা করার পর বালিজানে চা বাগানে কেরানী চাকরিতে প্রবেশ করেন।

আন্দোলন[সম্পাদনা]

সরুপাথার অঞ্চলে সত্যাগ্রহ আন্দোলনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দলকে নেতৃত্ব দেন তিনি। সরুপাথার কংগ্রেস কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৪২ সালের ভারত ছাড়ো আন্দোলনের উত্তাল ঢেউ আসামে এসে পড়লে কুশল তাতে সর্বতভাবে যোগ দেন। আসাম প্রদেশ কংগ্রেসের দুই নেতা গোপীনাথ বরদলৈ এবং সিদ্ধান্ত শর্মা গ্রেপ্তার হন ধুবরিতে। অন্যান্য নেতৃবৃন্দ গ্রেপ্তার বরন করেন, অহিংস আন্দোলন বিভিন্ন জায়গায় হিংসাত্বক রূপ পরিগ্রহণ করে। সরকারী অফিস, থানাতে অগ্নিসংযোগ, রেল, বাস অবরোধ হয়। ১৯৪২ সালের ১০ অক্টোবর ভোরবেলা কয়েকজন রেললাইনের স্লিপার অপসারন করায় একটি সেনাবাহিনী ভর্তি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। বহু ব্রিটিশ সেপাই মারা গেলে সরকার পুরো জায়গা ঘিরে অপারেশন চালাতে থাকে। অপ্রাধীদের গ্রেপ্তার করার মানুষের ওপর ভয়াবহ অত্যাচার শুরু হয়। পুলিশ কুশল কোনোয়ারকে এই অপরাধের প্রধান ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে অভিযুক্ত করে। যদিও অহিংস পন্থার পথিক, কোনোয়ার এই ঘটনায় জড়িত ছিলেননা। ৫ নভেম্বর ১৯৪২ তাকে গোলাঘাট থেকে জোরহাট জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। তার ববিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ৬ মার্চ, ১৯৪৩ সালে তার বিচার শুরু হয়। অনেক আইনজীবী কুশলের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু শান্তি বাহিনীর স্বেচ্ছাসেবক পুলিন বড়ুয়া রাজসাক্ষী হন।[২] বিচারক সি এম হামফ্রে'র আদালতে তাকে দোষী সাব্যাস্ত করে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হলে তিনি অবিচল থাকেন। নিজের স্ত্রী প্রভাবতীকে জানান দেশের জন্যে হাজার হাজার প্রান উৎসর্গকারীদের মধ্যে একজন হতে পেরে তিনি গর্বিত। মৃত্যুর আগের দিনগুলি জেলে তিনি গীতা পাঠ করে কাটান।[৩]

ফাঁসি[সম্পাদনা]

১৫ জুন ১৯৪৩ ভোর সাড়ে চারটের সময় জোরহাট জেলে তার ফাঁসি হয়। তার মৃত্যুতে মহাত্মা গান্ধী জানান কুশল কোনোয়ারের জীবন ও মৃত্যু দুইই ছিল একজন আদর্শ সত্যাগ্রহীর মত। একই সাথে আরো তিন সত্যাগ্রহী ঘনশ্যাম শইকিয়া, কনকেশ্বর কোনোয়ার ও ধর্মকান্ত ডেকা'র ফাঁসি হয়েছিল।[২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Assam General Knowledge। Bright Publications। আইএসবিএন 978-81-7199-451-9। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০১২ 
  2. "Kushal Konwar"। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০১৭ 
  3. Assam General Knowledge। Bright Publications। আইএসবিএন 978-81-7199-451-9