আরবি চারুলিপি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
১০০০-১০০১ খ্রিস্টাব্দে ইবন আল-বাওয়াবের লেখা কুরআনের একটি অনুলিপি, এটিকে চারুলিপিতে লিখিত কুরআনের প্রাচীনতম বিদ্যমান উদাহরণ বলে মনে করা হয়।
অটোমান সাম্রাজ্যের সুলতান আব্দুল হামিদ প্রথমের শৈলীকৃত স্বাক্ষর একটি অভিব্যক্তিপূর্ণ চারুলিপিতে লেখা ছিল।

আরবি চারুলিপি হল আরবি বর্ণমালার উপর ভিত্তি করে হস্তলিপি ও চারুলিপির শৈল্পিক অনুশীলন। এটি আরবি ভাষায় খাত্ব নামে পরিচিত (আরবি: خط)। এটি 'লাইন', 'নকশা' বা 'নির্মাণ' শব্দ থেকে উদ্ভূত।[১][২] কুফী লিপি হলো আরবি লিপির প্রাচীনতম রূপ।

শৈল্পিক দৃষ্টিকোণ থেকে, আরবি চারুলিপি তার বৈচিত্র্য এবং বিকাশের বিশাল সম্ভাবনার জন্য পরিচিত এবং প্রশংসিত হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, এটি আরবি সংস্কৃতিতে ধর্ম, শিল্প, স্থাপত্য, শিক্ষা এবং কারুশিল্পের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুক্ত হয়েছে, যা এর অগ্রগতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।[৩]

বেশিরভাগ ইসলামি চারুলিপি আরবি ভাষায় এবং বেশিরভাগ আরবি চারুলিপি ইসলামি।তবে দুটি অভিন্ন নয়। কপ্টিক বা আরবিতে অন্যান্য খ্রিস্টান পাণ্ডুলিপিগুলো চারুলিপি ব্যবহার করে লেখা হয়েছে। একইভাবে, ফার্সি বা ঐতিহাসিক উসমানীয় তুর্কি ভাষায় ইসলামি চারুলিপি রয়েছে।

আরবি বর্ণমালা[সম্পাদনা]

আরবি বর্ণমালা বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবহৃত লিপিগুলির মধ্যে অন্যতম। অনেক পণ্ডিত বিশ্বাস করেন যে বর্ণমালাটি খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতাব্দীতে উৎপন্ন হয়েছিল।[৪] আরবি বর্ণ ডান থেকে বামে লেখা হয়। এটি ২৮টি অক্ষর নিয়ে গঠিত। একটি শব্দে অক্ষরের অবস্থানের উপর নির্ভর করে প্রতিটি অক্ষর চারভাবে লেখা যেতে পারে। এই চারটি অবস্থান প্রাথমিক, মধ্য, চূড়ান্ত ও বিচ্ছিন্ন হিসাবেও পরিচিত।

লিপি[সম্পাদনা]

জনপ্রিয় লিপি[সম্পাদনা]

আরবি ক্যালিগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত দুটি জনপ্রিয় লিপি হল কুফী লিপি এবং নাসখ লিপি। কুফী লিপি ইরাক থেকে উদ্ভূত হয়েছিল এবং এই লিপিটি প্রাথমিকভাবে পাথর এবং ধাতুর শিলালিপির জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল। নসখীর উৎপত্তি মক্কা ও মদিনা থেকে। লিপিটি বিশেষত প্যাপিরাস এবং কাগজে টানা লেখা হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

অন্যান্য লিপি[সম্পাদনা]

সুলুস, নাস্তালিক এবং দিওয়ানি লিপি হল আরবি চারুলিপির জন্য ব্যবহৃত অন্যতম লিপি।

মধ্যযুগীয় সময়ে ব্যবহৃত সুলুস লিপিটি বিদ্যমান প্রাচীনতম লিপিগুলির মধ্যে অন্যতম হিসাবে পরিচিত। লিপিটি মসজিদে এবং কুরআনের পাঠ্যের লিপি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

নাস্তালিক লিপি আরবি লিপির চেয়ে ফারসি ভাষার জন্য বেশি ব্যবহৃত হয়। বাম দিকে ঊর্ধ্বমুখী তির্যক থাকার কারণে,[৫] লিপিটিকে অন্যান্য লিপি থেকে আলাদা হিসাবে দেখা হয়।

দিওয়ানি লিপি উসমানীয় যুগে তৈরি হয়েছিল। এই লিপির আস্তরণ, লেখার সময় অক্ষরগুলোর মধ্যে কাছাকাছি অবস্থান তৈরি করে। অক্ষরগুলি পরস্পর সংযুক্ত হওয়ার কারণে এটি পড়া কঠিন হয়।[৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Julia Kaestle (১০ জুলাই ২০১০)। "Arabic calligraphy as a typographic exercise" 
  2. Stefan Widany (জুন ২০১১)। The History of Arabic Calligraphy: An Essay on Its Greatest Artists and Its Development। GRIN Verlag। আইএসবিএন 978-3-640-93875-9 
  3. Afā, ʻUmar.; افا، عمر. (২০০৭)। al-Khaṭṭ al-Maghribī : tārīkh wa-wāqiʻ wa-āfāq। Maghrāwī, Muḥammad., مغراوي، محمد. (al-Ṭabʻah 1 সংস্করণ)। Wizārat al-Awqāf wa-al-Shuʼūn al-Islāmīyah। আইএসবিএন 978-9981-59-129-5ওসিএলসি 191880956 
  4. "Arabic alphabet | Chart, Letters, & Calligraphy"। ২২ জুন ২০২৩। 
  5. "Arabic Writing and Scripts: A Brief Guide | Shutterstock"। ২৪ জুলাই ২০১৪।