অনুরাধা থকছম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অনুরাধা থকছম
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম অনুরাধা দেবী থকছম
জন্ম (1989-02-02) ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৯ (বয়স ৩৫)
মণিপুর, ভারত
মাঠে অবস্থান আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড়
জাতীয় দল
ভারত
পদক রেকর্ড
মহিলাদের ফিল্ড হকি
 ভারত-এর প্রতিনিধিত্বকারী
এশিয়া কাপ
ব্রোঞ্জ পদক - তৃতীয় স্থান ২০১৩ কুয়ালালামপুর
এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি
স্বর্ণ পদক - প্রথম স্থান ২০১৬ সিঙ্গাপুর
তথ্যছক সর্বশেষ আপডেট: ৭ই ডিসেম্বর ২০১৫

অনুরাধা দেবী থকছম (জন্ম ২রা ফেব্রুয়ারী ১৯৮৯ তুবুল, মনিপুর, ভারত) হলেন ভারতীয় মহিলা জাতীয় ফিল্ড হকি দলের একজন সদস্য। মণিপুরের তুবুলে জন্মগ্রহণ করে ও বড় হয়ে উঠে, তিনি অল্প বয়সে হকি খেলা শুরু করেন। ২০০৬ মহিলা হকি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তাঁর আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়। থকছম ভারতীয় দলের একজন ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলেন এবং তিনি ৮০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলেছেন।

থকছম ২০১৬ রিও অলিম্পিকেও অংশগ্রহণ করেছিলেন, ভারতীয় মহিলা দল সেই প্রতিযোগিতায় ৩৬ বছর পরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল। ২০১৪-১৫ মহিলা এফআইএইচ হকি ওয়ার্ল্ড লিগে, ভারতীয় দলের জয়ে তাঁর ভূমিকার জন্য তিনি ভাষ্যকারদের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছিলেন। ভারতীয় দল এখানে পঞ্চম স্থান পেয়ে অলিম্পিকের জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছিল।

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

১৯৮৮ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি থকছম মণিপুরের বিষ্ণুপুর জেলার তুবুল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তাঁর বাবা ও মায়ের নাম যথাক্রমে থকছম চুরামণি এবং থকছম ওংবি কমলিনী। অনুরাধার বাবা একজন রিকশাচালক ছিলেন। তাঁর তিন ভাইবোন আছে; তাঁর বড় ভাই একজন ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন।[১] [২] তাঁর পরিবার চাষাবাদমৎস্য চাষে নিয়োজিত ছিল। যদিও তিনি নিজে ফুটবল খেলতে আগ্রহী ছিলেন, কিন্তু তিনি তাঁর বড় ভাইবোনদের নির্দেশনায় হকিতে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন। তিনি উত্তরণ সম্পর্কে বলেছিলেন: "আমার গ্রামে ফুটবলারদের অভাবের কারণে হকি হঠাৎ করে এসেছিল।" থকছম তুবুল ইয়ুথ ক্লাবে হকি খেলা শুরু করেন এবং পরে ইম্ফল-ভিত্তিক পোস্টেরিয়র হকার একাডেমি মণিপুরে ভর্তি হন। তিনি বর্তমানে ভারতীয় রেলওয়ের কেরানি বিভাগে কর্মরত।[১] [৩]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

থকছম কিছুদিনের জন্য গুজরাটের স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (সাই) ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন, কিন্তু পোস্টেরিয়র হকি একাডেমিতে যোগ দেবার জন্য সাই ছেড়ে দেন। এরপর তিনি জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে মণিপুরের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং জাতীয় নির্বাচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ২০০৬ মহিলা হকি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তিনি ভারতীয় মহিলা জাতীয় ফিল্ড হকি দলের হয়ে আত্মপ্রকাশ করেন।[৪] ২৬ বছর বয়সে, থকছম জাতীয় দলের হয়ে আটটি আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলেছিলেন।[৫] এরপর তাঁকে জাতীয় দলে নিয়মিত স্থানের জন্য সম্ভাব্য প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। থকছম নতুন কোচ ম্যাথিয়াস আহরেন্সের অধীনে খেলোয়াড়দের মানসিক অবস্থা সম্পর্কে বলেছেন যে দলটি এখন ২০১৪-১৫ মহিলা এফআইএইচ হকি ওয়ার্ল্ড লিগের ঠিক সামনে আরও আত্মবিশ্বাসী। তিনি বলেছিলেন, "নতুন কোচের অধীনে এটি শেখার সময় ছিল। আমরা আরও আত্মবিশ্বাসী বোধ করছি কারণ আমরা বুঝতে পারি যে আমরা প্রতিপক্ষের প্রতিরক্ষা শৃঙ্খল ভেঙে ফেলছি।[৬]

ভারতীয় দল লীগ সেমিফাইনালে পঞ্চম স্থান লাভ করে এবং ৩৬ বছর পর অলিম্পিকে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।[৭] থকছম লিগের একটি নির্ধারক ম্যাচে জাপানি দলের বিপক্ষে দলের ড্রতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি জাপানি রক্ষণের পাশ দিয়ে বল নিয়ে যান এবং ম্যাচের প্রথম পেনাল্টি কর্নার অর্জন করেন (যা রূপান্তরের পরে ভারতকে এগিয়ে দেয়)।[৮] ২০১৬ আলের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের জন্য যোগ্যতা অর্জনের পর, তিনি রিও অলিম্পিকে জাতির প্রতিনিধিত্ব করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। ২০১৬ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে যোগ্যতা অর্জনের বিষয়ে অনুরাধা বলেছেন:

থকছম, সুশীলা চানু, এবং লিলি চানু মায়েংবামকে বিশ্ব লীগ সেমির পরে ভারতীয় মহিলা হকি দলে অবদানের জন্য প্রশংসিত করা হয়েছিল।[১০] ইম্ফলে ফিরে আসার পরও এই তিন মহিলাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়।[১১]

দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত ২০১৬-১৭ মহিলা এফআইএইচ হকি ওয়ার্ল্ড লিগ সেমিফাইনালে থকছম অংশগ্রহণ করেননি। স্ক্রল.ইন- এর জসপ্রীত সাহনির মতো ধারাভাষ্যকারদের মতে তাঁর অনুপস্থিতি দলের দুর্বল প্রদর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল। সাহনি উল্লেখ করেছেন যে থকছমকে ছাড়াই খেলতে নেমে, ভারতীয় আক্রমণে দলটির "শুধু দাঁতের অভাব ছিল তাই নয়, ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সুবিধাজনক অবস্থানের দখলও তারা হারাতে থাকে"।[১২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "India cheers for Anuradha Thokchom"Femina। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০১৭ 
  2. "Anuradha Thokchom"The North East Today (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০১৭ 
  3. Samom, Sobhapati (১৩ জুলাই ২০১৬)। "'Scoring the first goal in Rio is my dream'"The Assam Tribune। ৭ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৮ 
  4. Chabungbam, Daniel। "Thokchom Anuradha, Manipur Olympics Dreams 2016 Rio Profile"। Manipur - E-Pao!। ৬ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৮ 
  5. "Anuradha Devi Thokchom"Hockey India। ২১ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৮ 
  6. "We are more confident now: Indian women's hockey team forward Anuradha Devi Thokchom" 
  7. "India women's hockey team defeats Canada 3-1, continue great form on USA tour"Firstpost (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৭-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৫-১৩ 
  8. "Indian women's hockey team play out 1-1 draw against Japan"NDTV। ১ জুন ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৮ 
  9. Sharma, Aasheesh (৫ ডিসেম্বর ২০১৫)। "Meet the first Indian women's hockey Olympic qualifiers ever"Hindustan Times। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  10. "Manipur MP conveys best wishes to Indian delegates"Nelive (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৮-০৩। ২০১৬-০৮-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৫-১৩ 
  11. "3 key Indian women hockey team members from Manipur felicitated : 01st aug15 ~ E-Pao! Headlines" 
  12. Sahni, Jaspreet (২১ জুলাই ২০১৭)। "India can still qualify for the Women's Hockey World Cup but there's a lot that needs to be fixed"Scroll.in। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৮ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:ভারত এফএইচডব্লিউ স্কোয়াড ২০১৩ এশিয়া কাপটেমপ্লেট:ভারত এফএইচডব্লিউ স্কোয়াড ২০১৬ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক