অনিল কুমার মণ্ডল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(অনিল কুমার মন্ডল থেকে পুনর্নির্দেশিত)
অনিল কুমার মণ্ডল
জন্ম(১৯৫৮-০১-০২)২ জানুয়ারি ১৯৫৮
জাতীয়তাভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তন
পরিচিতির কারণগ্লুকোমা অধ্যয়ন
দাম্পত্য সঙ্গীড.বিজয়াকুমারী গোথোয়াল
সন্তান২ (পুত্র ও কন্যা)
পুরস্কার
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্র
প্রতিষ্ঠানসমূহ

অনিল কুমার মণ্ডল একজন ভারতীয় চক্ষু বিশেষজ্ঞ এবং হায়দরাবাদের এল. ভি. প্রসাদ আই ইনস্টিটিউটএ কর্মরত। তিনি গ্লুকোমা সম্পর্কিত তার গবেষণার জন্য পরিচিত। তিনি ন্যাশনাল একাডেমি অব মেডিক্যাল সায়েন্সের একজন নির্বাচিত সহযোগী। বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য ভারত সরকারের শীর্ষস্থানীয় সংস্থা কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ তাঁকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জন্য শান্তি স্বরূপ ভাটনগর পুরস্কারে ভূষিত করেছেন। মেডিকেল সায়েন্সে তার অবদানের জন্য ২০০৩ সালে এই সর্বোচ্চ ভারতীয় বিজ্ঞান পুরস্কারটি তাঁকে দেওয়া হয়।[১][টীকা ১]

জীবনী[সম্পাদনা]

অ্যাকিউট অ্যাঙ্গেল ক্লোজার গ্লুকোমা

অনিল কুমার মণ্ডল, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার ঘনশ্যামবাটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দের ২রা জানুয়ারি । তার মাতা ও পিতার নাম যথাক্রমে জয়লক্ষ্মী এবং মানিক চন্দ্র মণ্ডল। স্কুলের পড়াশোনা শুরু গ্রামের 'পার্বতী অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে', - বিদ্যালয়েরই প্রধান শিক্ষক পিতার তত্ত্বাবধানে । উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন স্থানীয় 'বাওয়ালি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়' থেকে । [২] এরপর তিনি ১৯৮১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে মেডিসিনে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং দিল্লির অল ইন্ডিয়া মেডিকেল সায়েন্সেস ইনস্টিটিউটর অধীনস্থ ডাঃ আর. পি. সেন্টার ফর অপথ্যালমিক সায়েন্সেসে চলে আসেন। সেখান থেকে ১৯৮৬ সালে তিনি এমডি ডিগ্রী অর্জন করেছিলেন।[৩] পরবর্তীকালে, তিনি ডাঃ আর. পি. সেন্টারেই তার সিনিয়র আবাসিক সম্পূর্ণ করেছিলেন এবং ১৯৮৭ সালে ন্যাশনাল এক্সামিনেশন বোর্ড থেকে ডিপ্লোমা অব ন্যাশনাল বোর্ড অর্জন করেন। পরে তিনি হায়দ্রাবাদের এল. ভি. প্রসাদ আই ইনস্টিটিউটএ যোগ দেন। সেখানে তিনি ছানি, গ্লুকোমা এবং শিশু চক্ষুর বিশেষজ্ঞ রূপে কাজ করেন।[৪] এর মধ্যে, তিনি পরিদর্শন গবেষণা সহযোগী হিসাবে দুটি সাবাটিক্যালে (বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা অন্যান্য কর্মীকে পড়াশোনা বা ভ্রমণের জন্য প্রদত্ত ছুটির মেয়াদ) কেলগ আই সেন্টার, মিশিগান এবং দোহেনি আই ইনস্টিটিউটে গিয়ে গবেষণা করেন।[৫] তিনি ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব কমিউনিটি অপথ্যালমোলজি (আইএনএএসিও) র অনুষদ হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন[৬]

মণ্ডল গ্লকোমা নিয়ে বিস্তৃত গবেষণা করেছেন[৭] এবং শিশু গ্লুকোমা চিকিৎসার জন্য একটি বিকল্প অস্ত্রোপচারের উপায় বিকাশের কৃতিত্ব তাঁকে দেওয়া হয়।[৮] তিনি গ্লকোমা চিকিৎসার জন্য একটি সমন্বিত পদ্ধতির বিকাশ করেছিলেন যার মধ্যে ছিল সঠিক অস্ত্রোপচার পদ্ধতি বেছে নেওয়া, অবশিষ্ট দৃষ্টি সংরক্ষণ করা, জিনগত দিকটির অধ্যয়ন এবং জিনগত পরামর্শ দেওয়া। তার অধ্যয়নগুলি গ্লুকোমা, বিশেষত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত গ্লকোমা এবং শিশু গ্লুকোমাকে বোঝা আরও প্রশস্ত করতে সহায়তা করে। তার অধ্যয়ন ৭৫টিরও বেশি নিবন্ধের মাধ্যমে নথিভুক্ত করা হয়েছে[৯][টীকা ২] এবং তিনি ইন্ডিয়ান জার্নাল অব অপথ্যালমোলজির জন্য পর্যালোচক হিসাবেও কাজ করেন।[৩]

অভাবনীয় মানবিক মন[সম্পাদনা]

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও স্বামী বিবেকানন্দর আদর্শে অনুপ্রাণিত ডঃ অনিল কুমার মণ্ডল নিজেকে গড়েছেন অনুভব করার হৃদয় নিয়ে, বাস্তব পরিস্থিতি বিচার করে আর কঠোর পরিশ্রমে। কবিগুরু সম্পর্কে তার বক্তব্য -

"In my deeds, prayer and worship, you're always in view"

অর্থাৎ আমার সকল কর্মে, প্রার্থনায় আর আরাধনায় তুমি নিরন্তর । ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে অতি ব্যস্ততার মাঝেও ডঃ মণ্ডল কিন্তু নিজের গ্রাম - ঘনশ্যামবাটি'কে ভোলেন নি । পিতার ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে তার পরামর্শে পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় মাতাপিতার নামে গড়েছেন 'জয়লক্ষ্মী-মানিক ফাউন্ডেশন' । উদ্দেশ্য গ্রামের উন্নয়নে উন্নত ও প্রকৃত শিক্ষা প্রদানে গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে স্থাপন করেন "গীতাঞ্জলি" ইংরাজী তে "GITANJALI" র পুরো নাম Ghanashyambati Institute of Technology And Justified Application of Learning in India. চক্ষু চিকিৎসা ডঃ মণ্ডলের পেশা, কিন্তু সঙ্গীত বিশেষ করে রবীন্দ্র সংগীত ওঁনার নেশা। সময় পেলেই কাজের মাঝে গুনগুনিয়ে গেয়ে ওঠেন আর নিজেও রচনা করেন গান। ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে কবিগুরুর নোবেল পুরস্কার বিজয়ের শতবর্ষে কবিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রকাশ করেন তার রচিত গানের সংকলন- "সঙ্গীতাঞ্জলি" ।[২] নিজে প্রচুর অর্থও ব্যয় করেন সামগ্রিক উন্নয়নে।

টীকা[সম্পাদনা]

  1. Long link - please select award year to see details
  2. Please see Selected bibliography section

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "View Bhatnagar Awardees"। Shanti Swarup Bhatnagar Prize। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৬ 
  2. 'সঙ্গীতাঞ্জলি' রচনা ডঃ অনিল কুমার মণ্ডল 'গীতাঞ্জলি' কলকাতা-১৩৭ প্রকাশিত ২০১৩ আইএসবিএন ৯৭৮-৯৩-৫১৫৬-১৯০-৩
  3. "Shanti Swarup Bhatnagar Prize‑winner Dr Anil Kumar Mandal's Work"। National Institute of Science Communication and Information Resources। ২০১৭। ২৭ মার্চ ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ অক্টোবর ২০১৯ 
  4. "Our Team - Anil K Mandal"। L. V. Prasad Eye Institute। ২০১৭। ২৮ মার্চ ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০১৭ 
  5. "Dr. Anil K Mandal"। Sehat। ২০১৭। 
  6. "Indian Faculties" (পিডিএফ)। Indian Association of Community Ophthalmology। ২০১৭। ৭ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ অক্টোবর ২০১৯ 
  7. "Handbook of Shanti Swarup Bhatnagar Prize Winners" (পিডিএফ)। Council of Scientific and Industrial Research। ১৯৯৯। পৃষ্ঠা 71। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০১৭ 
  8. "Brief Profile of the Awardee"। Shanti Swarup Bhatnagar Prize। ২০১৭। 
  9. "[Author]-Anil K Mandal"। Indian Journal of Ophthalmology। ২০১৭। 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]