অজয় বিশ্বাস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

অজয় বিশ্বাস ত্রিপুরার একজন ভারতীয় রাজনীতিবিদ, এবং ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) (সিপিআই(এম)) এর প্রাক্তন সদস্য।

রাজনৈতিক পেশা[সম্পাদনা]

বিশ্বাস ১৯৭২ সালে স্বতন্ত্র বিধায়ক হয়ে রাজনীতিতে শুরু করেন।[১] তিনি ১৯৭৭ সালের নির্বাচনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের বিধায়ককে পরাজিত করে ত্রিপুরার বিধানসভার সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।[২] বিশ্বাস ধীরে ধীরে জাতীয় রাজনীতিতে চলে আসেন এবং ১৯৮০ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ভারতীয় সংসদের ৭ম৮ম লোকসভার সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।[৩][৪] বিশ্বাস ত্রিপুরার একজন ট্রেড ইউনিয়ন কর্মী ছিলেন এবং সেখানে ত্রিপুরা কর্মচারী সমন্বয় কমিটি এবং এআইটিইউসি এর ত্রিপুরা শাখা এবং ডিওয়াইএফআই সহ বেশ কয়েকটি ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। রাজ্যের বেশ কয়েকটি শ্রমিক সংগঠনেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।[৫]

১৯৬৪ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই) বিভক্ত হওয়ার পর, সিপিআইএম ত্রিপুরা রাজ্যে আদিবাসীদের দল হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ১৯৭০ এর দশকের গোড়ার দিকে সিপিআই(এম) রাজ্যের বাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যে জনপ্রিয় ছিল না। ত্রিপুরার বাঙালিদের মধ্যে দলীয় সংগঠন গড়ে তোলায় বিশ্বাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।[৬] এই গণআন্দোলনের মাধ্যমে তিনি ১৯৭৭ সালের নির্বাচনে স্থানীয়ভাবে শক্তিশালী ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসকে পরাজিত করতে সাহায্য করতে সক্ষম হন।[৭] এটি ১৯৭৮ সালে সিপিআইন্তননএমকে ক্ষমতায় আনতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।[৮][৯][১০]

অষ্টম লোকসভা চলাকালীন, তিনি ৩১ আগস্ট ১৯৮৭-এ তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী কেসি পান্তের সাথে একটি বিতর্কে অংশ নিয়েছিলেন, যা জাতীয় সংবাদমাধ্যমে "বোফর্স বিতর্ক" নামে পরিচিত হয়েছিল।[১১][১২][১৩][১৪][১৫][১৬][১৭]

বিশ্বাস একজন ট্রেড ইউনিয়ন নেতা এবং সমাজসেবক ছিলেন এবং তার নেতৃত্বে রাজ্যে বেশ কয়েকটি ট্রেড ও শ্রমিক ইউনিয়ন গঠিত হয়েছিল।[১৮] ১৯৬৬, ১৯৬৯, ১৯৭১ সালে তাকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়।[১৮]

মতাদর্শগত পার্থক্য এবং পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট গঠন[সম্পাদনা]

১৯৮০ এর দশকের শেষের দিকে বিশ্বাস তৎকালীন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী এবং সিপিআইএম সভাপতি নৃপেন চক্রবর্তীর নেতৃত্বের শৈলীর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠেন।[১৯][২০] মতাদর্শগত আপত্তি ছিল চক্রবর্তীর শাসনের পদ্ধতি এবং সিপিআই(এম) এর কার্য নীতির ধারা ১১২-এর সাথে অ-সম্মতি, [২১] যা সরকারের চেয়ে "জনগণের কাছে আরও ক্ষমতা" জোর দেয়।[২২]

এই মতাদর্শগত পার্থক্য বিস্তৃত হয় এবং সিপিআইএম জাতীয় এবং পলিটব্যুরোর বৈঠকের একটি কেন্দ্রীয় মঞ্চকে আকৃষ্ট করে,[২৩] অবশেষে বিশ্বাসকে দল ত্যাগ করতে এবং জনগণতান্ত্রিক মোর্চা গঠনে নেতৃত্ব দেয়।[২৪][২৫][২৬]

ত্রিপুরা এমপ্লয়িজ কোঅর্ডিনেশন কমিটি (টিইসিসি) সহ বিশ্বাসের মতাদর্শের বেশ কিছু সমর্থকও তাকে অনুসরণ করেছিল, যা মূলত ১৯৬৮ সালে বিশ্বাস দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। টিইসিসি ১৩ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত, যার মধ্যে টিজিটিএ এবং টিটিএ বৃহত্তম। এই বিভক্তির ফলে বিশ্বাস টিইসিসি ইউনিয়নগুলো ধরে রেখেছেন।[২৭] এটি শেষ পর্যন্ত ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে সিপিআই(এম) এর পরাজয়ের দিকে পরিচালিত করে।[২০][২৮][২৯]

বিশ্বাস ত্রিপুরা কর্মচারীদের দাবি ও কল্যাণের জন্য প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।[৩০][৩১][৩২][৩৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Tripura Assembly Election Results in 1972"Elections.in। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০১৮ 
  2. "Tripura Assembly Election Results in 1977"www.elections.in। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৮ 
  3. Biswas, Ajoy। "LokSabha Biography" 
  4. "Members Of Lok Sabha Elected From Tripura Since 1952"tripuraassembly.nic.in 
  5. "About | ONGC Worker Union"ongcworker.com (ইংরেজি ভাষায়)। ১৮ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০১৮ 
  6. "Political History Tripura"। ১৬ এপ্রিল ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১৮ 
  7. Das Gupta, Malabika। "North East Regional Imbalance"Economic & Political Weekly। ২৭ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১৮ 
  8. "Development of the Communist Movement in Tripura" (পিডিএফ): 200 – Shodganga Infibeam-এর মাধ্যমে। 
  9. "Chapter of The Opposition" (পিডিএফ): 54 – Sodhganga Infibeam-এর মাধ্যমে। 
  10. "Tripura since 1948: Progress & Crisis" (পিডিএফ): 44 – Shodganga Infibeam-এর মাধ্যমে। 
  11. "Bofors debate in Parliament brings out star performers"India Today। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০১৮ 
  12. Biswas, Ajoy (৩১ আগস্ট ১৯৮৭)। "Bofors debate in Parliament brings out star performers"India Today। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০১৮ 
  13. "Eighth Lok Sabha marked by anarchy"India Today। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০১৮ 
  14. Farazmand, Ali (২৯ জুন ২০০১)। Handbook of Comparative and Development Public Administration (ইংরেজি ভাষায়)। CRC Press। আইএসবিএন 9780824742027 
  15. Manor, James (১৯৯৪)। Nehru to the Nineties: The Changing Office of Prime Minister in India (ইংরেজি ভাষায়)। Hurst। আইএসবিএন 9781850651802 
  16. Tummala, Krishna K. (১৯৯৪)। Public Administration in India (ইংরেজি ভাষায়)। Allied Publishers। আইএসবিএন 9788170235903 
  17. "Politics & Public Report" (পিডিএফ)। ২০১৩। 
  18. "Lok Sabha Biography"। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১৮ 
  19. "Hours before end, CPM got back Nripen in party fold – Times of India"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৮ 
  20. "Former Tripura CM Nripen Chakraborty faces criticism"India Today (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৮ 
  21. "Party Constitution"Communist Party of India (Marxist) (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৮ 
  22. "Indiana Gazette Newspaper Archives, Jul 31, 1980, p. 5"NewspaperArchive.com (ইংরেজি ভাষায়)। ৩১ জুলাই ১৯৮০। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৮ 
  23. "His left seems right, honestly | Ratnadip Choudhury | Tehelka – Investigations, Latest News, Politics, Analysis, Blogs, Culture, Photos, Videos, Podcasts"www.tehelka.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৮ 
  24. Buravalli, Pramod Kumar (২৯ এপ্রিল ২০১০)। "View: Communism is on the wane in India"Rediff। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  25. "त्रिपुरा में एक नई पार्टी का गठन – Navbharat Times"Navbharat Times। ১২ এপ্রিল ২০০১। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৮ 
  26. "Leftist Parties of India"www.broadleft.org। ১৪ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৮ 
  27. "Tripura Government Employees' ... vs State Of Tripura And Ors. on 8 August, 1996"indiankanoon.org। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৮ 
  28. Tripura Elections 1988 
  29. Bhaumik, Subir (১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮)। "A High-stakes Poll for 'Red Fort' Tripura"The Hindu Centre for Politics and Public Policy (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৮ 
  30. "Manik Sarkar-Bhanu joint effort to deprive Tripura Govt employees: Gov't to challenge HC's verdict in the Supreme Court about 31% pending DA; employees' fate in Manik's rule likely to be paralyzed"www.tripurainfoway.com। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৮ 
  31. "Fixed pay appointment strengthens foundation of Capitalists; Such appointment is against the policy of Communism, blames Ajay Biswas"www.tripurainfoway.com। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৮ 
  32. "Ajoy Biswas threatens sit-in-demo in front of CM's residence"agartalainfo.in। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৮ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  33. "Govt employees, workers stage demonstration seeking regularization of contract workers"tripura-infoway.com। ২৯ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৮