স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (সঙ্গীতশিল্পী)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়
জন্ম(১৯৫৬-০৬-০৬)৬ জুন ১৯৫৬
মৃত্যু২৬ অক্টোবর ২০২২(2022-10-26) (বয়স ৬৬)
কলকাতা পশ্চিমবঙ্গ
পেশাঅধ্যাপনা, সংগীতশিল্পী
কার্যকাল১৯৭৩ – ২০২০
লেবেলহিন্দুস্তান রেকর্ডস,এইচএমভি

স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (৫ জুন ১৯৫৭ – ২৬ অক্টোবর ২০২২)[১] বাংলার বিশ শতকের শুরুর বৈচিত্র্যময় সমৃদ্ধ সঙ্গীতধারার অন্যতম কণ্ঠসঙ্গীতশিল্পী ছিলেন। তার খ্যাতি রবীন্দ্র সংগীতে হলেও, দ্বিজেন্দ্রগীতি, অতুলপ্রসাদ ও রজনীকান্তের গানেও সমান স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন। বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবনের অধ্যক্ষপদেও ছিলেন তিনি। [২]


জন্ম ও শিক্ষা জীবন[সম্পাদনা]

স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের ৫ জুন। পিতা সংস্কৃত ভাষার অধ্যাপক মহামহোপাধ্যায় ড. গোবিন্দগোপাল মুখোপাধ্যায় ও মাতা মাধুরী মুখোপাধ্যায় দুজনেই ছিলেন সঙ্গীতশিল্পী। স্বস্তিকা সাঙ্গিতীক পরিবেশে বড় হয়েছেন। পিতামাতার কাছে তার প্রথম সঙ্গীতশিক্ষা। পিতামাতার কারণেই তিনি দ্বিজেন্দ্রপুত্র দিলীপকুমার রায়ের সংস্পর্শে আসেন। শান্তিনিকেতনে পাঠভবনে পড়াশোনা করেন। বিদ্যালয়ের পড়াশোনার মধ্যেই শান্তিনিকেতনের বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী সীতাংশু রায়, শান্তিদেব ঘোষ, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ নানা জনের কাছে গান শেখার সুযোগ পান। তবে তাকে পরে নিয়মিত সঙ্গীত শিক্ষা দেন নীলিমা সেন। সঙ্গীত চর্চার মধ্যেই তিনি বিশ্বভারতীতে ইংরাজী ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেন।

সঙ্গীতজীবন[সম্পাদনা]

রবীন্দ্র সঙ্গীতে খ্যাতি অর্জন করলেও তিনি দ্বিজেন্দ্রগীতি, অতুলপ্রসাদ ও রজনীকান্তের গানেও সাবলীল ছিলেন। [২] ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গানের রেকর্ড প্রকাশিত হয় হিন্দুস্তান রেকর্ডস্ হতে। এরপর ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে আন্তর্জাতিক শিশুবর্ষে সুচিত্রা মিত্রের পরিচালনায় এইচএমভি থেকে প্রকাশিত হয় ওরে মোর শিশু ভোলানাথ শীর্ষক লঙ প্লেয়িং রেকর্ড। এরপর একে একে রবীন্দ্র সংগীত সহ দ্বিজেন্দ্রগীতি, অতুলপ্রসাদ, রজনীকান্ত ও ভক্তি মূলক গানের ক্যাসেট ও কমপ্যাক্ট ডিস্ক বের হয় এইচএমভি ছাড়াও ভাবনা, শ্রুতি, গাথানী রেকর্ডস্ হতে। তিনি আকাশবাণী দূরদর্শনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নিয়মিত কাজ করতেন। গানের জন্য কর্মসূত্রে ২০০৩ খ্রিস্টাব্দে যুক্তরাজ্য, ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণ কোরিয়া সহ একাধিকবার বাংলাদেশ জাপানযুক্তরাষ্ট্র সফর করেন। ২০১২ খ্রিস্টাব্দে আমন্ত্রিত সঙ্গীত শিল্পী হিসাবে শ্রীলঙ্কায় যান। রবীন্দ্র সঙ্গীত ও বাংলা গানের উপর বাংলাদেশের ঢাকায় আয়োজিত ওয়ার্কশপে যোগ দিয়েছেন। [১]বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত ভবনে অধ্যাপক পদে যোগ দেন ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের ২২ মার্চ। অধ্যক্ষ পদে উন্নীত হয়ে ২০২১ খ্রিস্টাব্দে অবসর নেন। তবে অন্তরে "সেক্সপিয়ার" আর কণ্ঠে "রবীন্দ্রনাথ" নিয়ে আমৃত্যু শান্তিনিকেতনেই অতিবাহিত করেন। তার নিখাদ স্বর্ণকণ্ঠে গাওয়া গানে শ্রোতারা 'তাপসী মুগ্ধতা'য় আচ্ছন্ন হতেন। তার এরূপ কয়েকটি পরিবেশিত গান হল-

  • কাল রাতের বেলা গান এল মোর মনে
  • আজ যেমন করে গাইছে আকাশ
  • মোর সন্ধ্যায় তুমি সুন্দরবেশে এসেছ,- তোমায় করি গো নমস্কার
  • নীল আকাশের অসীম ছেয়ে
  • ওকে বাঁধবি কে রে, হবে যে ছেড়ে দিতে

জীবনাবসান[সম্পাদনা]

আমৃত্যু শান্তিনিকেতনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকলেও এবং সেখানেই বসবাস করলেও গত এক বছর অসুস্থতার জন্য তিনি প্রধানত কলকাতায় থাকছিলেন। তার চিকিৎসাও চলছিল দক্ষিন কলকাতার উপকণ্ঠে এক বেসরকারি হাসপাতালে। ২০২২ খ্রিস্টাব্দের ২৬ অক্টোবর বুধবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। [৩] [২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]