উমাপতি কুমার
ব্যক্তিগত তথ্য | |||
---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | উমাপতি কুমার | ||
জন্ম | ৮ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৮ | ||
মৃত্যু | ২০ নভেম্বর ১৯৯২ | (বয়স ৯৪)||
মাঠে অবস্থান | ফরোয়ার্ড | ||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* | |||
বছর | দল | ম্যাচ | (গোল) |
১৯১৬–৩৬ | মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাব | ||
জাতীয় দল | |||
১৯২৩–৩৬ | ভারত | ||
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে |
উমাপতি কুমার ছিলেন একজন প্রখ্যাত ফুটবলার, যিনি সচরাচর ফরোয়ার্ডে খেলতেন। তিনি ভারতের জাতীয় ফুটবল দলে এবং কলকাতার মোহনবাগান দলের প্রতিনিধিত্ব করেন।
জন্ম ও ব্যক্তিগত জীবন
[সম্পাদনা]উমাপতি কুমার ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দের ৮ ফেব্রুয়ারি বৃটিশ ভারতের অধুনা পূর্ব বর্ধমান জেলার চাগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা রজনীকান্ত কুমার ছিলেন বিহার রাজ্যের তৎকালীন পূর্নিয়া জেলার কিষাণগঞ্জের ব্যারিস্টার। পিতার জমিদারি ছিল সেখানে। কিষানগঞ্জে উমাপতির শৈশব ও যৌবন কেটেছে। পড়াশোনার সঙ্গে খেলাধুলা করেছেন গভীরভাবে। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে বিহার থেকেই ম্যাট্রিক পাশ করে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে ভর্তি হন। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে শৈলবালা দেবীকে বিবাহ করেন। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে তিনি স্নাতক হন। [১]
ক্রীড়া জীবন
[সম্পাদনা]মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাবের সঙ্গে উমাপতি কুমারের দীর্ঘ ফুটবল জীবনের সম্পর্ক। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে কলেজে ভর্তির দিনই মোহনবাগান ক্লাবে যুবাদলে যোগ দেন এবং ফুটবল খেলার সুযোগ পান। দীর্ঘ দুই দশক দলের সবুজ-মেরুণ জার্সিতে খেলেছেন। উমাপতি কুমার ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের আইএফএ শিল্ড জয়ী দলের কিছু তারকা খেলোয়াড এবং সেই সঙ্গে পরবর্তীতে দলের আইকন খেলোয়াড গোষ্ঠ পাল, ড. সন্মথ দত্ত প্রমুখের সঙ্গে খেলেছেন। তিনি ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে মোহনবাগান ক্লাব থেকেই অবসর নেন।[২] ।
উমাপতি কুমার কলকাতায় অনুষ্ঠিত ভারতীয় বনাম ইউরোপিয়ান, বেসামরিক বনাম সামরিক প্রদর্শনী ম্যাচে নিয়মিত অংশ নিতেন। তিনি ভারতীয় দলের পরপর চারবার অধিনায়ক এবং পরপর দুই ১৯২৬ এবং ১৯২৭ মরশুমের খেলায় দলের জয় এনে দেন। তিনি ১৯৩০ দশকে আইএফএ একাদশ দলের একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান।
উমাপতি কুমার মোহনবাগানে হয়ে ছয়বার কোচবিহার ট্রফিসহ এক গুচ্ছ অন্যান্য ট্রফি লাভ করেন। ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের আইএফএ শিল্ডের চূড়ান্ত খেলায় দলের অধিনায়ক ছিলেন।[১]
খেলা থেকে অবসর নেওয়ার পর উমাপতি কুমার আজীবন মোহনবাগান দলের সঙ্গে সচিব, কোষাধক্ষ, সহ-সভাপতি, সভাপতির মতো বিভিন্ন পদে যুক্ত ছিলেন।
ক্রীড়া শৈলী
[সম্পাদনা]উমাপতি কুমার তার সময়কালের ফুটবলারদের মধ্যে এক অত্যন্ত ক্রীড়ানৈপুন্য ব্যক্তি ছিলেন। বিখ্যাত ছিল তার ‘থ্রুরু পাস’। সঠিক থ্রু পাসে তিনিই প্রথম ভারতীয় ফুটবলার যার নামডাক ছিল স্কিমার হিসাবে। [৩] তিনি ছিলেন একজন বুদ্ধিমান মার্জিত এবং শারীরিক দিক থেকে অত্যন্ত সক্ষম ফুটবলার। ফুটবল জীবনের বেশিরভাগ সময়ে বুট, হাঁটুর ক্যাপ বা অ্যাঙ্কলেট ইত্যাদি ছাড়া খেলেও উমাপতি কুমার দীর্ঘসময় আঘাতে ভোগেন নি কখনো। অমৃতবাজার পত্রিকা তার সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে একবার উল্লেখ করে যে, উমাপতি কুমারের ক্রীড়া শৈলী ও নৈপুণ্য ছিল- "As Smooth as Muslin" - " মসলিনের মতো মসৃণ" ।
সম্মাননা ও পুরস্কার
[সম্পাদনা]২০০৬ খ্রিস্টাব্দে উমাপতি কুমারকে মরণোত্তর “মোহনবাগান রত্ন” সম্মাননা প্রদান করা হয়। [৪]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]উমাপতি কুমার ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দের ২০ নভেম্বর কলকাতায় ৯৪ বৎসর বয়সে প্রয়াত হন। কলকাতা মহানগরীর বালিগঞ্জ অঞ্চলের ফার্ণ রোডটি তার নামে "উমাপতি কুমার সরণি"তে পরিবর্তিত হয়েছে।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ Some Alumni of Scottish Church College in 175th Year Commemoration Volume. Scottish Church College, April 2008. page 591
- ↑ McDaniel, Alonzo Simpson (১৯৯০)। "The Absorption of Hydrocarbon Gases by Non-aqueous Liquids - Alonzo Simpson McDaniel"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৯-২০।
- ↑ History of Indian Football - Nirmal Nath, Page 115
- ↑ "Mohun Bagan Ratna - The Jewels of Mohun Bagan"। Mohunbaganac.com। ২০১৫-০৯-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৯-২০।