ইন্দুবালা দেবী
ইন্দুবালা দেবী | |
---|---|
জন্ম | নভেম্বর, ১৮৯৮ |
মৃত্যু | ৩০ নভেম্বর ১৯৮৪ | (বয়স ৮৬)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
নাগরিকত্ব | ভারতীয় |
পেশা | গায়িকা-অভিনেত্রী |
পিতা-মাতা | মতিলাল বসু (পিতা) রাজাবালা বসু |
পুরস্কার | সংগীত নাটক অকাদেমি পুরস্কার (১৯৭৫) গোল্ডেন ডিস্ক এইচএমভি (১৯৭৬) |
ইন্দুবালা দেবী (ইংরেজি: Indubala Devi) ( নভেম্বর , ১৮৯৮ – ৩০ নভেম্বর , ১৯৮৪) বাংলার খ্যাতনামা গায়িকা-অভিনেত্রী এবং নজরুলগীতির প্রবাদপ্রতিম শিল্পী ।[১][২]
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]ইন্দুবালার জন্ম ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বরে বৃটিশ ভারতের অমৃতসরে। পিতা মতিলাল ছিলেন কবি মনমোহন বসুর দ্বিতীয় পুত্র। ইন্দুবালার মা রাজাবালা ট্রাপেজি হিসাবে কাজ করতেন পিতার 'গ্রেট বেঙ্গল সার্কাসে'। তবে ইন্দুবালার জন্মের পর তার মা সার্কাসের কাজ ছেড়ে চলে আসেন কলকাতায় এবং আশ্রয় পান জীবনকৃষ্ণ ঘোষের কাছে এবং সঙ্গীতচর্চা শুরু করেন। মায়ের কাছে ইন্দুবালা গান শেখার পর প্রথমে সঙ্গীত চর্চা শুরু করেন গৌরীশঙ্কর মিশ্রের কাছে। এ ছাড়াও তালিম নেন কালীপ্রসাদ মিশ্র, ইলাহি বক্স এবং কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী গওহর জানের কাছে। পরবর্তীকালে তিনি যাঁদের সান্নিধ্য পান তারা হলেন গিরীন চক্রবর্তী, কমল দাশগুপ্ত, সুবল দাশগুপ্ত, জামিরুদ্দিন খান এবং কাজী নজরুল ইসলাম। পরবর্তীকালে ইন্দুবালা হয়ে ওঠেন নজরুলগীতির প্রবাদপ্রতিম শিল্পী।
সঙ্গীত ও অভিনয় জীবন
[সম্পাদনা]আঠারো বছর বয়সে তার প্রথম গানের রেকর্ড - 'ওরে মাঝি তরী হেথায়' এবং 'তুমি এস হে, এস হে'। শোভাবাজার রাজবাড়ি, কালীকৃষ্ণ ঠাকুরের বাড়ি, হরেন শীল ও খেলাত ঘোষের বাড়ির তিনি নিয়মিত গায়িকা ছিলেন। ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে যখন ইন্ডিয়ান ব্রডকাস্টিং সার্ভিস (পরবর্তীতে অল ইন্ডিয়া রেডিও বা আকাশবাণী) যখন সম্প্রচার শুরু করে, দ্বিতীয় দিনের শিল্পী ছিলেন ইন্দুবালা। পরবর্তী পঞ্চাশ বৎসর ধরে তিনি ছিলেন বেতারের নিয়মিত শিল্পী। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে মহীশূর রাজদরবারে র সভা-গায়িকা হিসাবেও কাজ করেছেন। প্রায় পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে বাংলার ঘরে ঘরে বাজত ইন্দুবালার গান-
- 'অঞ্জলি লহ মোর সঙ্গীতে'
- 'আজ বাদল ঝরে'
- 'বউ কথা কও'
- 'মোর ঘুম ঘোরে এলে মনোহর'
- 'মোহে পনঘট পর নন্দলাল'
সঙ্গীতের পাশাপাশি নাটক ও সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছিলেন। অভিনয় শুরু করেন ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে সার্কাসের মেয়েদের নিয়ে তৈরি তার মায়ের 'রামবাগান ফিমেল কালী থিয়েটার' এ। পরে বাংলা মঞ্চের বহু নাটকে তিনি অংশ নিয়েছিলেন। শিশিরকুমার ভাদুড়ীর সঙ্গে প্রথম অভিনয় করেন 'প্রফুল্ল' নাটকে। স্টার থিয়েটারে ' নসীরাম' নাটকে প্রথম দানীবাবুর সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ পান। চলচ্চিত্রে তার প্রথম অভিনয় ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে 'যমুনা পুলিন' ছায়াছবিতে। এরপর একে একে তিনি ৪৮ টি ছবিতে অভিনয় করেন। উল্লেখযোগ্য ছবিগুলি ছিল -
- 'নলদয়মন্তী'
- 'মীরাবাঈ'
- 'চাঁদসদাগর'
- 'বিল্বমঙ্গল'
বাংলা ও হিন্দি ছাড়াও তিনি তামিল, তেলুগু, উর্দু ওড়িয়া পাঞ্জাবি ছবিতেও অভিনয় করেছেন। ভালো নাচতে পারতেন। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে বারবণিতাদের নিয়ে তিনি যে সম্মেলনের প্রয়াস করেছিলেন তার নাম দিয়েছিলেন 'সমাজ উপেক্ষিতা পতিতা নারীদের সম্মেলন'।
সম্মাননা
[সম্পাদনা]১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকারের সংগীত নাটক অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে এইচএমভি গোল্ডেন ডিস্ক এবং আকাশবাণী থেকে পুরস্কার লাভ করেন।
মৃত্যু
[সম্পাদনা]ইন্দুবালা দেবী ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে ৩০ শে নভেম্বর কলকাতায় প্রয়াত হন।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬, পৃষ্ঠা ৮৬ আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬
- ↑ "'মাই নেম ইজ ইন্দুবালা'"। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-৩০।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]