পাবনা সদর পৌরসভা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পাবনা সদর পৌরসভা
পৌরসভা
দেশবাংলাদেশ
বিভাগরাজশাহী বিভাগ
জেলাপাবনা জেলা
উপজেলাপাবনা সদর উপজেলা
প্রতিষ্ঠা০১-০৭-১৮৭৬
সরকার
 • মেয়রশরীফ উদ্দিন প্রধান
আয়তন
 • মোট২৭.২০ বর্গকিমি (১০.৫০ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১৯)
 • মোট২,২০,০৮৮
 • জনঘনত্ব৮,১০০/বর্গকিমি (২১,০০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

পাবনা পৌরসভা বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের পাবনা জেলার পাবনা সদর উপজেলার অন্তর্গত 'ক' শ্রেণির একটি পৌরসভা।পাবনা শহর রাজশাহী বিভাগের চতুর্থ এবং উত্তরবঙ্গের পঞ্চম বৃহত্তম শহর।[১][২][৩]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

পদ্মা যমুনার মিলন মোহনায় গড়ে ওঠা বাংলাদেশের প্রাচীন সমৃদ্ধ জনপদ পাবনা। কীভাবে গড়ে উঠেছিল পাবনা নামের এই সুপ্রাচীন শহরটি এবং কোন সময় থেকে এই ভূ-খন্ডটির নাম পাবনা হয়েছিলো তার সঠিক তথ্য আজও অজানা। একটি স্বতন্ত্র জেলা হিসেবে পাবনা জেলার গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয় ১৮২৮ খ্রীস্টাব্দের ১৬ অক্টোবর। রাজশাহী বিভাগের পাঁচটি থানা (পাবনা, শাহজাদপুর, রায়গঞ্জ, মথুরা, ক্ষেতুপাড়া) ও যশোহরের তিনটি থানা (ধরমপুর (পাংসা), কুষ্টিয়া ও মধুপুর) নিয়ে সর্বপ্রথম এই জেলা গঠিত হয়। উপমহাদেশে পৌরসভা আধুনিক কালের একটি শহুরে প্রতিষ্ঠান। মুঘল রাজত্বের পতনোন্মুখকালে ১৭২৭ খ্রিষ্টাব্দে রাজকীয় চার্টারের বলে যখন প্রেসিডেন্সি শহরে মেয়র নিযুক্ত করা হয় তখন এর প্রথম প্রকাশ ঘটে। শহরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, রাস্তা-ঘাট মেরামত,রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্ব এদের উপর অর্পিত হয়। ব্যয় নির্বাহের জন্য জমি ও গৃহবাসীদের উপর কর আরোপিত হয়েছিল। ১৮১০ খ্রিস্টাব্দে আইন দ্বারা শহর সমূহে চৌকিদার নিযুক্তির ব্যবস্থা হলে প্রেসিডেন্সি শহর ব্যতীত অন্যান্য শহরে পৌরসভা স্থাপনের সূচনা হয়। ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দের জেলা শহর আইন অনুসারে শহর কমিটি গঠনের ব্যবস্থা হয়। এর পরে ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দের আইন জেলা ও মহকুমার শহর কমিটিগুলোকে পৌর কমিটিতে রূপান্তরিত করে (এই আইনের বলেই ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দের ১ জুলাই পাবনা পৌরসভার আত্মপ্রকাশ ঘটে)। বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক পরিষদে প্রনীত ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দের ৭ নং আইনের বিধান বলে, ইছামতির দু’পার ঘিরে গড়ে ওঠা জনবসতিটিকে আবর্তন করে পাবনা টাউন কমিটি গঠন করা হয়। ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দের ১ এপ্রিল পাবনা শহর কমিটি গঠন করা হয়। স্রোতসিনী ইছামতি নদীর দু’পার ঘিরে আবর্তিত জনপদের মানুষের শ্রমে বিনির্মিত পাবনাকে পৌরসভার (মিউনিসিপ্যালিটি) মর্যাদায় অভিসিক্ত করা হয় ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দের ১ জুলাই। এর আগেই ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে পাবনাকে টাউন কমিটির আওতায় আনা হয়। ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দের ৩১আগস্ট পাবনা মিউনিসিপ্যালিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম অধিবেশনে কোলকাতা থেকে সীলমোহর বানিয়ে আনা, ৫ টাকা ব্যয়ে রাস্তা ও নর্দমার জঙ্গল পরিষ্কার করার জন্য ৪ জন মজুর নিয়োগ ও ২ জন পিয়ন সহ ৮ টাকা বেতনে টিকাদার নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। শুরু হয় মিউনিসিপ্যালিটির যাত্রা। পাবনা মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত করবার সুযোগ আসে ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠার পর তিন দশকের বেশীকাল ধরে সরকারী পছন্দানুসারে মিউনিসিপ্যালিটি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়ে এসেছে। ১৯০৮ সালে প্রথম সরাসরি ভোটের মাধ্যমে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। ১৯০৮ সাল থেকে স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে যারা চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তারা হলেন পাবনা উকিল বারের সদস্য মৌলভী ওয়াছিম উদ্দিন আহমেদ বি.এল., ডাঃ হেমচন্দ্র ভৌমিক (দীর্ঘ ১৬ বছর অর্থ্যাৎ চার মেয়াদে পাবনা মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন), অধ্যাপক রায় রাধিকানাথ বোস বাহাদুর, উকিল বাবু আশুতোষ রায়, এ.এম.আব্দুল হামিদ, উকিল এম.রজব আলী, উকিল খান সাহেব আব্দুল আজিজ খান, তিনিই ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের (স্বাধীনতার পূর্বকালের) সর্বশেষ নির্বাচিত চেয়ারম্যান। এর পরবর্তীতে ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দের ১ জুন থেকে ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত জেলা প্রশাসক বা মনোনীত কোন কর্মকর্তা পদাধিকারবলে চেয়রম্যানের দায়িত্ব পালন করে এসেছেন। সর্বমোট ২২ জন এভাবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে পাবনা পৌরসভার প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭৪ সালে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে চেয়ারম্যানগণ হলেন অধ্যক্ষ আব্দুল গণি, শ্রী বীরেশ চন্দ্র মৈত্র, এম,এ মুহিত, মোঃ জহুরুল ইসলাম বিশু (তার আমলেই পাবনা পৌরসভা ১ম শ্রেণীতে উন্নীত হয়), এ্যাডভোকেট শেখ শহীদুল্লাহ বাচ্চু, মোঃ মোশারফ হোসেন। তারা তাদের দায়িত্বকালীন সময়ে পাবনা পৌরসভায় বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সম্পাদন করেছেন। এদেরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তী মেয়াদে ২০০৪ সালে চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত হন কামরুল হাসান মিন্টু। টানা তিনএয়াদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর ৩০ জানুয়ারি ২০২১ এ মেয়র নির্বাচিত হন জনাব শরীফ উদ্দিন প্রধান। [৩]

প্রশাসনিক এলাকা[সম্পাদনা]

ওয়ার্ডঃ ১৫টি[১]

মৌজাঃ ২৪টি[১]

আয়তন ও জনসংখ্যা[সম্পাদনা]

মোট আয়তনঃ ২৭.২০ বর্গ কি.মি.[২]

মোট জনসংখ্যাঃ ২,২০,০৮৮ জন[২]

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান[সম্পাদনা]

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংখ্যাঃ[১]

  • কারিগরী ইনষ্টিটিউট - ১টি
  • বাণিজ্যিক ইনষ্টিটিউট - ১টি
  • পাবনা মেডিক্যাল কলেজ - ১টি
  • টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ - ১টি
  • আলিয়া মাদ্রাসা - ১টি
  • ইসলামিয়া কলেজ - ১টি
  • মাদ্রাসা - ৫ টি
  • হোমিও প্যাথিক কলেজ ১ টি
  • জিলা স্কুল - ১টি
  • সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় - ২টি
  • বে-সরকারী উচ্চ বালক বিদ্যালয় - ১১টি
  • বে-সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় - ৬টি
  • কিন্ডারগার্টেন - ৪০টি
  • পৌরসভা পরিচালিত হরিজন প্রাথমিক বিদ্যালয় - ১টি

উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ[২]

  • পাবনা টেক্সটাইল কলেজ
  • সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ
  • সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ
  • সরকারি মহিলা কলেজ
  • পাবনা কলেজ (ডে/নাইট)
  • পাবনা সরকারি কলেজ ও পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
  • পাবনা ক্যাডেট কলেজ
  • পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
  • পাবনা মেডিক্যাল কলেজ[১]
  • আমিনুদ্দিন ল'কলেজ (বে-সরকারী)
  • পাবনা জেলা স্কুল
  • পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
  • আর.এম.একাডেমী (স্কুল এন্ড কলেজ)
  • আদর্শ গালর্স হাইস্কুল
  • গোপালচন্দ্র ইন্সটিটিউশন
  • স্কয়ার স্কুল এন্ড কলেজ
  • পাবনা পুলিশ লাইনস স্কুল
  • কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল [১]
  • জাগির হোসেন একাডেমী, পাবনা
  • রেইনবো ইন্টারন্যাশনাল স্কুল

জনপ্রতিনিধি[সম্পাদনা]

বর্তমান মেয়রঃ শরীফ উদ্দিন প্রধান [২]

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "এক নজরে পাবনা পৌরসভা"pabna.gov.bd। ৩ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০২০ 
  2. "শরীফ উদ্দিন প্রধান ১২২ ভোটে নির্বাচিত"বাংলানিউজ.কম। জানুয়ারি ৩০, ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০২১ 
  3. "একনজরে পাবনা পৌরসভা"pabnasadar.pabna.gov.bd। ১৯ এপ্রিল ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০২০