ইসরায়েল–বেলজিয়াম সম্পর্ক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইসরায়েল–বেলজিয়াম সম্পর্ক
মানচিত্র Belgium এবং Israel অবস্থান নির্দেশ করছে

বেলজিয়াম

ইসরায়েল

ইসরায়েল–বেলজিয়াম সম্পর্ক, ইসরায়েল এবং বেলজিয়াম এর মাঝে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে। ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে জাতিসংঘের ফিলিস্তিন বিভাগ পরিকল্পনা, প্রস্তাব হিসেবে উত্থাপন করা হয়। মোট ৩৩ টি দেশ এই প্রস্তাবকে সমর্থন করে। সমর্থন করা দেশগুলোর মাঝে বেলজিয়াম ছিল অন্যতম। এরপরে ১৯৫০ সালের ১৫ জানুয়ারি বেলজিয়াম, ইসরায়েলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দান করে।

বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস-এ ইসরায়েল এর একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে।[১] অপরদিকে, ইসরায়েল এর রাজধানী তেল আবিব-এ বেলজিয়াম এর একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে।[২] ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, এলিজাবেথ অব বাভারিয়ার স্বামী রাজা প্রথম আলবার্ট, এর সম্মানে তেল আবিব শহরে একটি চত্বরের নামকরণ করা হয় আলবার্ট চত্বর এবং সেখানে একটি ফলক উন্মোচন করা হয়। সেই সময় তেল আবিব শহরের মেয়র রন হুলদাই এবং ইসরায়েলে নিযুক্ত বেলজিয়ামের রাষ্ট্রদূত বেনেডিক্ট ফ্রাঙ্কিনেট উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রীয় সফর[সম্পাদনা]

১৯৩৩ সালে, বেলজিয়ামের রাজা, প্রথম জর্জ প্রথমবারের মত রাষ্ট্রীয় সফরে ইসরায়েল যান। বেলজিয়ামের কোন শীর্ষ ব্যক্তির সেটিই ছিল প্রথম ইসরায়েল সফর।

রাজা বাউদুইন এবং রাণী ফ্যাবিওলা, ১৯৬৪ সালে রাষ্ট্রীয় সফরে ইসরায়েলে গিয়েছিলেন।[৩]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৯৭৫ সালে, বেলজিয়াম, জায়নবাদ এবং বর্ণবাদকে সমতুল্য হিসেবে গ্রহণ করা বিষয়ক এক প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। এর ফলে ইসরায়েল তিউনিসিয়ার সাথে অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ পায় এবং একইসাথে দেশটি জাতিসংঘে পশ্চিম ইউরোপীয় এবং অন্যান্য গ্রুপ (ডব্লিউইওজি) তে যোগ দেয়ার সুযোগ পায়।

এই দুই দেশের মাঝে সাংস্কৃতিক, বৈজ্ঞানিক এবং অর্থনৈতিক বেশ কিছু দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে এবং এর পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বেলজিয়াম-ইসরায়েল ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশন গড়ে উঠেছে। হিব্রু ইউনিভার্সিটি অব বেলজিয়াম এর ফ্যাকাল্টি ক্লাব এবং অতিথিশালা তৈরি হয়েছিল বেলজিয়ান ফ্রেন্ডস অব হিব্রু ইউনিভার্সিটি নামক সংগঠন এর আর্থিক সহায়তায়। এই বিশ্ববিদ্যালয় বেইট বেলজিয়া নামেও পরিচিত।[৩]

২০০৯ সালে এই দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৪.৯৩ বিলিয়ন (৪৯৩ কোটি) মার্কিন ডলার। এর মধ্যে, বেলজিয়ামে, ইসরায়েলের রপ্তানি আয় ছিল ২.৩৭ বিলিয়ন (২৩৭ কোটি) মার্কিন ডলার। অপরদিকে, ইসরায়েলে বেলজিয়ামের রপ্তানি আয় ছিল ২.৫৬ বিলিয়ন (২৫৬ কোটি) মার্কিন ডলার। ২০১০ সালের দিকে এই দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।[৪]

২০১০ সালের মার্চ মাসে, ইসরায়েল এবং বেলজিয়াম কর ব্যবস্থার উপর একটি চুক্তি সাক্ষর করে। এই চুক্তির ফলে, বেলজিয়ামে ইসরায়েলের মালিকানাধীন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে সুবিধা বৃদ্ধি পায় এবং অপরদিকে, ইসরায়েলে, বেলজিয়ামের বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করা হয়।।[৫]

2023 সালের অক্টোবরে, ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের সময়। আলেকজান্ডার ডি ক্রো গাজার ধ্বংসকে "অগ্রহণযোগ্য" বলে মনে করেন এবং ইসরায়েলকে তার সামরিক অভিযানের সময় আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে সম্মান করার আহ্বান জানান। আলেকজান্ডার ডি ক্রু প্রথমে হামাসের দ্বারা সংঘটিত নৃশংসতার তীব্র নিন্দা করেছিলেন এবং ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করেছিলেন। তিনি গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে শেষ করেন। এর পরে, ইসরাইল বেলজিয়ামের রাষ্ট্রদূতদের কঠোর তিরস্কারের জন্য তলব করে।[৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Israeli embassy in Brussels"। Brussels.mfa.gov.il। ২০১২-০৩-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-১৭ 
  2. Belgian embassy in Tel Aviv
  3. A short history of the relations between Belgium and Israel
  4. Belgium-Israel trade
  5. "Israel signed a new tax agreement with Belgium" (পিডিএফ)। ২০১৪-১১-০৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-১৭ 
  6. "Moyen-Orient Guerre Israël-Hamas: Israël convoque les ambassadeurs de Belgique et de l'Espagne"। Archived from the original on ২০২৩-১১-২৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-২৫  line feed character in |শিরোনাম= at position 13 (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]