সমুদ্রের পানি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
Photo of surf
মালাক্কা প্রণালীর সমুদ্রের পানি
তাপমাত্রা -লবণাক্ততার ডায়াগ্রাম

সমুদ্রের পানি হল লবণাক্ত পানি। বৈশ্বিক সমুদ্রের জলের গড় লবণাক্ততা প্রায় ৩.৫% (৩৫ গ্রাম/লিটার), এর অর্থ ১ কিলোগ্রামে ৩৫ গ্রাম দ্রবীভূত লবণ রয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় ঘনত্ব ১.০২৫ গ্রাম/লিটার (৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়)। সমুদ্রের জল স্বাদু পানি ও বিশুদ্ধ জলের চেয়ে ঘন, কারণ সমুদ্রের পানিতে নানান পদার্থ দ্রবীভূত থাকে। সমুদ্রের জলের যত লবণাক্ততা বাড়ে, এর হিমাঙ্ক তত কমে যায়। সমুদ্রের পানির হিমাঙ্ক প্রায় -২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সমুদ্রের পানি খানিকটা ক্ষারীয় (পিএইচ ৭.৫ থেকে ৮.৫৪)।[১]

ভূ-রসায়ন[সম্পাদনা]

২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ও৩৫গ্রাম/কিলোগ্রামে সমুদ্রের জলের তাপীয় পরিবাহিতা ০.৬W/mKসমুদ্রের পানির তাপ পরিবাহিতা লবণাক্ততা বাড়ার সাথে কমে আর তাপমাত্রা বাড়ার সাথে  বাড়ে। [২]

লবণাক্ততা[সম্পাদনা]

বার্ষিক সমুদ্রে পৃষ্ঠের লবণাক্ততা(পিএস এস). Data from the World Ocean Atlas[৩]
জলের লবণাক্ততার উদাহরণ(পিপিটি)

সমুদ্রের পানির সাথে স্বাদুপানির তুলনা[সম্পাদনা]

সমুদ্রের জলের উপাদান(লবণাক্তা ৩.৫%)
উপাদান শতকরা উপাদান শতকরা 
অক্সিজেন ৮৫.৮৪ সালফার ০.০৯১
হাইড্রোজেন ১০.৮২ ক্যালসিয়াম ০.০৪
ক্লোরিন ১.৯৪ পটাশিয়াম ০.০৪
সোডিয়াম ১.০৪ ব্রোমাইড ০.০০৬৭
ম্যাগনেশিয়াম ০.১২৯২ কার্বন ০.০০২৮
ভ্যানাডিয়াম ১.৫ × ১০−১১- ৩.৩ × ১০−১১

লবণাক্ততার উদ্ভব[সম্পাদনা]

Diagram showing concentrations of various salt ions in seawater. The composition of the total salt component is: Cl
55%, Na+
30.6%, SO2−
4
7.7%, Mg2+
3.7%, Ca2+
1.2%, K+
1.1%, Other 0.7%. Note that the diagram is only correct when in units of wt/wt, not wt/vol or vol/vol.

লবণাক্ততা নিয়ে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার শুরু হয় স্যার এডমন্ড হ্যালির ১৭১৫ সালের তত্ত্ব থেকে। সেখানে তিনি বলেছিলেন সমুদ্রের জলের লবণ ও অন্যান্য উপাদান মাটি থেকে বৃষ্টির সাথে নদীর জলে মিশে সাগরে এসেছে। সময়ের সাথে সাথে এভাবে নদী হয়ে সাগরে মিশতে মিশতে লবণগুলো জমতে থাকে (দেখুন পানি চক্র)। হ্যালি আরও যুক্ত করেন যে যেসব সাগরের সাথে মহাসাগরের কোন সংযোগ নেই সেগুলোতে লবণাক্ততা বেশি (যেমন মৃত সাগর এবং কাসপিয়ান সাগর, দেখুন endorheic basin)। হ্যালি এই প্রক্রিয়াকে "কন্টিনেন্টাল ওয়েদারিং" হিসেবে অভিহিত করেন।

হ্যালির প্রদত্ত এই তত্ত্ব আংশিক সঠিক। আসলে যখন সমুদ্র গঠন হয় তখন সমুদ্র তল থেকে সোডিয়াম নিঃসৃত হয়। লবণের অন্য আরেকটি আয়ন, ক্লোরাইড, এসেছে সমুদ্র তলের অাগ্নেয়গিরির উদগিরণ ও হাইড্রোথার্মাল ছিদ্র থেকে যাতে অন্যান্য গ্যাসের সাথে হাইড্রোক্লোরিক এসিড ছিল। সমুদ্রের এভাবে আয়ন সোডিয়াম ও ক্লোরাইড মিশে ধীরে ধীরে সমুদ্র লবণ গঠন করে।

সমুদ্রের লবণাক্ততা বিলিয়ন বছরের জন্য একই ছিল, একটি কেমিক্যাল/টেকটনিক ব্যবস্থাই এর জন্য দায়ী। এই কেমিক্যাল/টেকটনিক ব্যবস্থার ফলে যেসব লবণ মিশেছিল তা কমতে শুরু করে। উদাহরণ সরূপ, সোডিয়াম এবং ক্লোরাইড sinks include evaporite deposits, pore-water burial, and reactions with seafloor basalts.[৪]:১৩৩

সমুদ্রের জলে যেসব আয়ন থাকে।
[৫]
Component Concentration (mol/kg)
H
2
O
53.6
Cl
0.546
Na+
0.469
Mg2+
0.0528
SO2−
4
0.0282
Ca2+
0.0103
K+
0.0102
CT 0.00206
Br
0.000844
BT 0.000416
Sr2+
0.000091
F
0.000068

মনুষ্য প্রভাব[সম্পাদনা]

আবহাওয়ার পরিবর্তন, পরিবেশে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের বৃদ্ধি, অত্যধিক পুষ্টিকর পদার্থ, এবং অনেক ধরনের দূষণ সার্বিকভাবে বৈশ্বিক সমুদ্রের পরিবর্তন আনছে। কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তনগুলো খুব দ্রুত হচ্ছে যা ইতিহাস ও সাম্প্রতিক ভূতাত্ত্বিক রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এই পরিবর্তনগুলোর মধ্যে প্রধান হচ্ছে অম্লতার বৃদ্ধি, তীরবর্তী অঞ্চল ও খোলা সাগরের উপরস্থ পানিতে অক্সিজেনের কম উপস্থিতি, উপকূলবর্তী অঞ্চলের নাইট্রোজেন স্তর বৃদ্ধি, এবং পারদজাতীয় বস্তুর বৃদ্ধি ও বারবার সামুদ্রিক প্রাণের দূষণ। এইসব সমস্যার উদ্ভবের সাথে মানুষ সরাসরি বা পরোক্ষভাবে জড়িত যেমন ফসিল ফুয়েল আহরণ, সার ব্যবহার এবং শিল্প কারখানা সম্পর্কিত কাজ। সামুদ্রিক সম্পদ ও জীববৈচিত্রের উপর খারাপ প্রভাব আগামী দশকগুলোতেও অব্যাহত থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।[৬]

সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে সাগরের অম্লতা বিষয়টি, এর ফলে coral reefs and crustaceans (see coral bleaching) মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফলে সমুদ্রসহ সামগ্রিক জলবায়ুতে কার্বনডাইঅক্সাইড বৃদ্ধি পাচ্ছে[৭] যাতে দিন দিন উষ্ণতা বাড়ছে।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Stumm, W, Morgan, J. J. (1981) Aquatic Chemistry, An Introduction Emphasizing Chemical Equilibria in Natural Waters.
  2. "Thermal conductivity of seawater and its concentrates"। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০১০ 
  3. "World Ocean Atlas 2009"NOAA। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১২ 
  4. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Pinet নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  5. DOE (১৯৯৪)। "5"। A.G. Dickson & C. Goyet। Handbook of methods for the analysis of the various parameters of the carbon dioxide system in sea water (পিডিএফ)। 2। ORNL/CDIAC-74। ২৫ মে ২০১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  6. Doney, Scott C. (১৮ জুন ২০১০)। "The Growing Human Footprint on Coastal and Open-Ocean Biogeochemistry"Science328 (5985): 1512–1516। ডিওআই:10.1126/science.1185198পিএমআইডি 20558706। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১১ 
  7. "Ocean Acidification: The Other CO2 Problem"Annual Review of Marine Science1 (1): 169–192। ২০০৯-০১-০১। ডিওআই:10.1146/annurev.marine.010908.163834পিএমআইডি 21141034 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

ছক

Composition

  • Vanadium concentration in seawater and estuary environments is around 1.5–3.3 ug/kg [১].
  • Vanadium speciation and cycling in coastal waters [২]
  • Ocean anoxia and the concentrations of Molybdenum and Vanadium in seawater [৩]

টেমপ্লেট:Physical oceanography