হাসান সালামা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
হাসান সালামা
حسن سلامة
হাসান সালামা, ১৯৩৯
জন্ম১৯১৩ (1913)
কুলা, উসমানীয় সাম্রাজ্য
মৃত্যু২ জুন ১৯৪৮ (1948-06-03)
রাস আল-আইন
আনুগত্য
সেবা/শাখাজাইশ আল-জিহাদ আল-মুকাদ্দাস
কার্যকাল১৯৩৬-১৯৪৮
যুদ্ধ/সংগ্রাম১৯৩৬-৩৯ ফিলিস্তিন আরব বিদ্রোহ
ইঙ্গ-ইরাকি যুদ্ধ
অপারেশন আটলাস
১৯৪৭-৪৮ মেন্ডেটরি প্যালেস্টাইন গৃহযুদ্ধ
সম্পর্কআলি হাসান সালামা (পুত্র)

হাসান সালামা (আরবি: حسن سلامة, Ḥasan Salāmah) (১৯১২–১৯৪৮) ছিলেন ফিলিস্তিনের জাইশ আল-জিহাদ আল-মুকাদ্দাসের কমান্ডার। আবদুল কাদির আল-হুসাইনিও এই দলের কমান্ডার ছিলেন।

জীবনী[সম্পাদনা]

ফিলিস্তিন[সম্পাদনা]

হাসান সালামা উসমানীয় শাসনামলে ফিলিস্তিনের কুলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ব্রিটিশ এবং ইহুদি অশুভ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই করা সশস্ত্র আরব নেতাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। ১৯৩৩ সালের ফিলিস্তিন দাঙ্গার সময় তিনি জাফা বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৩৬-৩৯ সালে সংঘটিত আরব বিদ্রোহে তিনি অন্যতম নেতা ছিলেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

১৯৩৬ সালে বিদ্রোহের সূচনার সময় তাকে লুদ-রামলা-জাফা অঞ্চলের দায়িত্ব দেয়া হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তিনি ব্রিটিশ ও ইশুভের বিরুদ্ধে কয়েকটি সফল সামরিক অপারেশনের পরিকল্পনা ও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এসকল অপারেশনের মধ্যে ছিল রেলপথ উড়িয়ে দেয়া, বৈদ্যুতিক খুটি তুলে ফেলা, যোগাযোগ ব্যবস্থার ধ্বংসসাধন এবং ইশুভের বাগানগুলো আগুনে পুড়িয়ে দেয়া। ১৯৩৮ সালে লুদ-হাইফা রেল উড়িয়ে দেয়ার সময় তিনি আহত হন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

ইরাক[সম্পাদনা]

ফিলিস্তিনে আরব বিদ্রোহের পর হাসান লেবাননসিরিয়া যান এবং ইরাকে জেরুজালেমের মুফতি মুহাম্মদ আমিন আল-হুসাইনির সাথে যোগ দেন। ইরাকে তিনি সামরিক কলেজে ট্যাঙ্ক কমান্ডারের কোর্সে অংশ নেন। তিনি রশিদ আলি আল-কাইলানিকে সমর্থন দেন এবং ১৬৫জন ফিলিস্তিনি যোদ্ধার একটি দলকে নেতৃত্ব দেন। তিনি রশিদ আলির অভ্যুত্থান এবং ইঙ্গ-ইরাকি যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] [১] ১৯৪১ সালে অক্ষশক্তিপন্থি রশিদ আলির সরকারকে ব্রিটিশরা ক্ষমতাচ্যুত করে। অ্যাডলফ হিটলার ও মুফতি আল-হুসাইনির বৈঠকের সময় মুফতি সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য হাসান সালামা ও অন্যান্য আরব যোদ্ধাদের জার্মানি নিয়ে আসতে সক্ষম হন। হাসান জার্মানদের কাছে প্যারাট্রুপার হিসেবে প্রশিক্ষণ নেন।[২]

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও অপারেশন আটলাস[সম্পাদনা]

অপারেশন আটলাসে হাসান সালামা ওয়াফেন এসএস বাহিনীর বিশেষ কমান্ডো ইউনিটের একজন সদস্য ছিলেন। ১৯৪৪ সালের ৬ অক্টোবর রাতে হাসান সালামা এবং আরো চারজন কমান্ডো জার্মান হেইনকেল হেস ৩ বিমান থেকে ম্যান্ডেটরি প্যালেস্টাইনের জেরিকো অঞ্চলে অবতরণ করে। তাদের সাথে বিষ্ফোরক, সাবমেশিনগান, ডাইনামাইট, রেডিও যন্ত্রপাতি, ৫,০০০ পাউন্ড স্টারলিং ছিল বলে জানা যায়। সালামা ও একজন জার্মান গ্রেপ্তার এড়াতে সক্ষম হন। তিনি কুলায় আশ্রয় নেন এবং এখানে একজন চিকিৎসক তার ক্ষতিগ্রস্ত পায়ের চিকিৎসা করেন।[৩] স্থানীয় ফিলিস্তিনি আরব প্রতিরোধযোদ্ধাদেরকে রসদ ও অস্ত্র সরবরাহ করা এবং ইহুদি লক্ষ্যবস্তুগুলোতে আক্রমণের নির্দেশনা দেয়া এই মিশনের উদ্দেশ্য ছিল।[৪]

১৯৪৭–১৯৪৮ ফিলিস্তিন যুদ্ধ[সম্পাদনা]

ম্যান্ডেটরি প্যালেস্টাইনে বিদ্রোহের সময় হাসান সালামা, ১৯৩৯

১৯৪৭ সালে জাইশ আল-জিহাদ আল-মুকাদ্দাসের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হন। ১৯৪৭-৪৮ সালের গৃহযুদ্ধে ফিলিস্তিনি আরবদের এই অনিয়মিত বাহিনী গ্র্যান্ড মুফতি আল-হুসাইনিকে সহায়তা করেছে।[৫] এই বাহিনীকে আবদুল কাদির আল-হুসাইনির ব্যক্তিগত বাহিনী বলা হত।[৬] মাঠপর্যায়ের কমান্ড সংগঠিত করার জন্য ১৯৪৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি দামেস্ক অনুষ্ঠিত বৈঠকে সালামাকে লিডিয়া জেলার দায়িত্ব দেয়া হয়।[৭] তিনি জাফা, উপকূলীয় সমভূমি, রামলা ও লুদে বাহিনীর নেতৃত্ব দেন।

সালামা ফিলিস্তিন আরব পার্টির সদস্য ছিলেন।

১৯৪৮ সালের ২ জুন রাস আল-আইনের যুদ্ধে হাসান সালামা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর হাতে নিহত হন।[৮]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Israel/Palestine and the Politics of a Two-State Solution" by Thomas G. Mitchell, (London: McFarland & Co., Inc.; 2013) p. 136
  2. "Mitchell, Israel/Palestine", p. 136
  3. Nazi Palestine: The Plans for the Extermination of the Jews in Palestine by Klaus-Michael Mallmann and Martin Cuppers, tran. by Krista Smith, (Enigma Books, published in association with the United States Holocaust Museum, NY; 2010), pp. 200, 201
  4. The National Archives | The Catalogue | Full Details | KV 2/401 "...The object of the 'Commando', jointly operated by German Intelligence and their protege, the Berlin-based Mufti of Jerusalem, was, through contact with local Palestinians and the supply of cash and arms, to organise local resistance activity, including sabotage. This was to be directed against Jewish rather than British targets...."
  5. Albert Habib Hourani, Philip S. Khoury and Mary C. Wilson (২০০৪-০৩-০৪)। The Modern Middle East: A Reader। London: I.B. Tauris। পৃষ্ঠা 537আইএসবিএন 978-1-86064-963-9 
  6. Ilan Pappé (১৯৯৪-০৮-১৫)। The Making of the Arab-Israeli Conflict, 1947-51। London: I.B. Tauris। পৃষ্ঠা 65আইএসবিএন 978-1-85043-819-9 
  7. Haim Levenberg (১৯৯৩-০৯-০১)। Military Preparations of the Arab Community in Palestine: 1945-1948। London: Routledge। পৃষ্ঠা 198। আইএসবিএন 0-7146-3439-5 
  8. "Alphabetical & Chronological listing of Palestinian Personalities"Palestinian Academic Society for the Study of International Affairs। ৪ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০১৬