সালাহউদ্দিন আহমেদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সালাহউদ্দিন আহমেদ
মৃত্যু১৯৯৫
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর উত্তম
পুরস্কারএকুশে পদক (১৯৯১)

সালাহউদ্দিন আহমেদ (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ১৯৯৫) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম খেতাব প্রদান করে। [১]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

সালাহউদ্দিন আহমেদের পৈতৃক বাড়ি চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলার দাসাদী গ্রামে। তার বাবার নাম সাইদউদ্দিন আহমেদ এবং মায়ের নাম আলপুমান নেছা।তার স্ত্রীর নাম সালমা আহমেদ। তাদের দুই মেয়ে, দুই ছেলে।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

সালাহউদ্দিন আহমেদ চাকরি করতেন ইপিআরে। ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন চট্টগ্রাম সেক্টরের অধীন হালিশহরে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে ভারতে যান। তিনি কিছুদিন প্রশিক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি মুক্তিবাহিনীর নৌকমান্ডো দলে অন্তর্ভুক্ত হন। স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ রাইফেলসে (বিডিআরে) (বর্তমানে বিজিবি) উপসহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা[সম্পাদনা]

মুক্তিযুদ্ধে নৌ-মুক্তিযোদ্ধাদের নানা অপারেশনের মধ্যে অন্যতম ছিলো পাকিস্তানি শিপিং কোম্পানির জাহাজ ‘এমভি সামি’ আক্রমণ। এ সালাহউদ্দিন আহমেদসহ তিনজন নৌমুক্তিযোদ্ধঅ অংশ নেন। ১৯৭১ সালের ৪ নভেম্বর সকালে চাঁদপুরে মেঘনা নদীর পাশে ছদ্মবেশে রেকি করছিলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। হঠাৎ খবর পান এখলাসপুরের কাছে এমভি সামিসহ দুটি জাহাজ নোঙর করে আছে। খবর পেয়ে তিনি দুটি লিমপেট মাইন, একটি স্টেনগানসহ সহযোদ্ধা শাহজাহান কবির (বীর প্রতীক) ও সেলিমউল্লাহ খানকে নিয়ে নৌকাযোগে এখলাসপুরে রওনা হন। গিয়ে তারা খবর পান জাহাজ দুটি ভেড়েনি। অদূরে নোঙর অবস্থায় আছে। তখন সহযোদ্ধাদের সঙ্গে আলাপ করে তখনই অর্থাৎ দিনের বেলায়ই অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এরপর তারা তাৎক্ষণিক ভাবে মেঘনা নদীর তীরে থাকা একটি পাল তোলা বড় নৌকায় উঠে পড়েন। নৌকা চলতে শুরু করলো। তবে ইতিমধ্যে এমভি সামিও গন্তব্যে রওনা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দেয়। নৌমুক্তিযোদ্ধারা কাছাকাছি গিয়ে দেখেন জাহাজের ডেকে তিন-চারজন পাকিস্তানি সেনা অস্ত্র হাতে পাহারায় নিযুক্ত। তখন দুপুর। সালাহউদ্দিন আহমেদ দেরি না করে শাহজাহান কবিরকে নিয়ে নৌকার পেছন দিয়ে পানিতে নেমে পড়েন এবং তখন নিজেদের বুকে গামছা দিয়ে বেঁধে নেন লিমপেট মাইন। সালাহউদ্দিন ও শাহজাহান প্রহরারত পাকিস্তানিদের সতর্ক চোখ ফাঁকি দিয়ে জাহাজের কাছে যান। সফলতার সঙ্গেই জাহাজের গায়ে মাইন লাগান। ফেরার পথে দ্রুত সাঁতার কাটতে দেখে সন্দেহ হয় পাকিস্তানি বাহিনীদের সদস্যদের। তবে ততক্ষনে মাইন বিস্ফোরিত হয়ে যায়। আর কিছুক্ষনের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত এমভি সামি অতল পানির নিচে হারিয়ে যায়।[২]

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ০১-১১-২০১২"। ২০১৯-১২-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-০৩ 
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (দ্বিতীয় খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা ৬৪। আইএসবিএন 9789849025375