সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুল
সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুল | |
---|---|
ঠিকানা | |
১এ, বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিট কলেজ স্ট্রিট কলকাতা , ভারত , পশ্চিমবঙ্গ , ৭০০০৭৩ | |
স্থানাঙ্ক | ২২°৩৪′৩৩″ উত্তর ৮৮°২১′৪৯″ পূর্ব / ২২.৫৭৫৬৯৭° উত্তর ৮৮.৩৬৩৭১৩° পূর্ব |
তথ্য | |
বিদ্যালয়ের ধরন | সরকার, সরকারি বিদ্যালয় |
নীতিবাক্য | সংস্কৃত: तमसो मा ज्योतिर्गमय (অজ্ঞানতার অন্ধকার থেকে আমাকে জ্ঞানের আলোকের দিকে পথ দেখান) |
ধর্মীয় অন্তর্ভুক্তি | ধর্মনিরপেক্ষ |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১ জানুয়ারি ১৮২৪ |
অবস্থা | সক্রিয় |
কর্তৃপক্ষ | পশ্চিমবঙ্গ সরকার |
প্রধান শিক্ষক | অরুণাভ আদক |
অনুষদ | বিজ্ঞান ও মানবিক |
শিক্ষকমণ্ডলী | ২২ |
শ্রেণী | প্রাক্ প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি |
লিঙ্গ | বালক বিদ্যালয় |
বয়স | ৬ বছর ১৯ বছর পর্যন্ত |
শিক্ষার্থী সংখ্যা | ৬০০ (প্রায়) |
ভাষা | বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত |
রং | সাদা ও জলপাই সবুজ |
অন্তর্ভুক্তি | পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মদনমোহন তর্কালঙ্কার, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, শিবনাথ শাস্ত্রী, সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত, কৃষ্ণকমল ভট্টাচার্য, বিমল কৃষ্ণ মতিলাল, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জগদীশচন্দ্র ভট্টাচার্য, বিষ্ণু দে, নব কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়,মধুসূদন গুপ্ত, রজনীকান্ত গুপ্ত,পঙ্কজ গুপ্ত, ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়, |
সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতা শহরে অবস্থিত একটি বিদ্যালয়। এটি কলকাতার প্রাচীন-আধুনিক শিক্ষা প্রণালীযুক্ত বিদ্যালয় এবং ভারতের প্রাচীনতম বিদ্যালয়গুলির অন্যতম। একইসঙ্গে এটি পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও ভারতের শ্রেষ্ঠতম সরকারি বিদ্যালয়গুলির মধ্যে একটি । এটি কলকাতার কলেজ স্ট্রিট(বইপাড়া) অঞ্চলে অবস্থিত। এটি ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে বহু কৃতবিদ্য ছাত্র উপহার দিয়েছে ।[১]
ইহা ভারত তথা কলকাতার একটি অন্যতম প্রাচীন বিদ্যালয়। পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদ ও পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ, পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাক্রম অনুযায়ী এখানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি অবধি পড়ানোর ব্যবস্থা আছে। এই স্কুলটি সম্পূর্ণ ছাত্রকেন্দ্রিক। এটি গড়ে ওঠে কলকাতা সংস্কৃত কলেজের সাথে। নথি অনুযায়ী এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দের ১লা জানুয়ারী। এটি প্রেসিডেন্সী বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ স্কোয়ার (বিদ্যাসাগর উদ্যান) ও হিন্দু স্কুলের পাশে এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-র বিপরীতে ইন্ডিয়ান্ কফি হাউজ ও হেয়ার স্কুল-র পরে অবস্থিত।
ইতিহাস[সম্পাদনা]
এটি মধ্য কলকাতার বিখ্যাত কলেজ স্ট্রীট এ অবস্থিত। এটি লর্ড আমহার্স্টর গভর্নর জেনারেলশিপের সময় এইচ টি জেমস প্রিন্সেপ ও থমাস বেবিংটন ম্যাকাওলিসহ অন্যান্যদের পরামর্শে তৈরি হয়। ১৮৫১ সালে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রিন্সিপল থাকাবস্থায় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গুরুত্ব অর্জন করে। তিনি ব্রাহ্মণ ছাড়াও অন্যান্য বর্ণের ছাত্রদের এখানে ভর্তি করিয়েছিলেন। প্রথম দিকে এই স্থানে লীলাবতী,বীজগণিত, ইতিহাস, দর্শন , সংস্কৃত, পালির মত বিষয় গুচ্ছ পড়ান হত। এই প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষক ও ছাত্র বিশেষ করে বাংলার নবজাগরণে অংশ নেওয়ার জন্য ইতিহাসে খ্যাত হয়ে আছেন। ভারতীয় ঐতিহ্য রক্ষার্থেও এদের বিশেষ ভুমিকা আছে।
শিক্ষাঙ্গন[সম্পাদনা]
সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুল ও সংস্কৃত কলেজের সাধারণ ক্যাম্পাসটি কলকাতার অন্যতম বৃহৎ ক্যাম্পাস। যদিও এর মধ্যে কোন ক্রীড়াঙ্গন অন্তর্গত নয় তবুও শিক্ষার্থীরা প্রেসিডেন্সী কলেজের ক্রীড়াক্ষেত্র ব্যবহার করতে পারে। প্রথম দিকে স্কুলটি ভিক্টরিয়ান স্থাপত্যের আদলে নির্মিত কলেজের সাথে যুক্ত ছিল। ভারতের স্বাধীনতার পরে ১৯৬৩ সালের ২৫ শে ফেব্রুয়ারি সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের নতুন ৪ তলা ভবনের দ্বারোদ্ঘাটন করা হয়।
ছাত্র[সম্পাদনা]
স্কুলের ছাত্রসংখ্যা প্রায় ৬০০ র মত (মার্চ,২০০৬)। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে দুইটি বিভাগে পড়াশুনার সুবিধা বর্তমান- ১) বিজ্ঞান ও ২) কলা বিভাগ (মানবিক)
শিক্ষক[সম্পাদনা]
প্রায় ৪০ জন শিক্ষক ও কিছু শিক্ষাকর্মী এখানের সাথে যুক্ত। এদের মধ্যে জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত শিক্ষকও আছেন।
সহ-শিক্ষা কার্যক্রম[সম্পাদনা]
স্কুল এ প্রতি বছর গ্রীষ্মে একটি ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়। এছাড়াও শীতকালে স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এই সময়েই একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়জিত হয় স্কুলে।স্কুলের জিম সেন্টারে নিয়মিত শরীর চর্চার ব্যবস্থাও আছে।
বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এ দুটি ধাপ থাকে - প্রাথমিক বা নির্বাচনী ও চূড়ান্ত। সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতাতেও অনুরুপ হয়। এছাড়াও স্কুলে মাসিক সেমিনার, বিভিন্ন স্মরণ অনুষ্ঠান (বিদ্যাসাগর স্মরণ, মনীষী স্মরণ, বিপ্লবী স্মরণ) ; দিবস ভিত্তিক অনুষ্ঠান ( মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, সরস্বতী পূজা, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা দিবস) লেগেই থাকে, যা স্কুলের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল গড়ে তলে।
স্কুলের বার্ষিক পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠান হয়ে থাকে ডিরোজিও হলে। স্কুলের সব অনুষ্ঠান এ সব ধরনের শিল্প কলার চর্চার ব্যবস্থা করা হয়।
স্কুল সর্বদা ছাত্রদের যে কোন ধরনের প্রতিযোগিতায়ে জেতে সহায়তা করে। এবং ছাত্ররাও প্রতিটি আন্তঃ বিদ্যালয় ও অন্যান্য প্রতিযোগিতায় (অঞ্চল স্তর, রাজ্য স্তর, ও জাতীয় স্তর ) -এ নিজেদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখে।
স্কুলের সবচেয়ে বড় উৎসব হল সরস্বতী পূুজা এবং প্রত্যেকবার এই উপলক্ষে স্কুলে ছাত্রদের দ্বারা আয়োজিত শিল্প ও বিজ্ঞান প্রদর্শনী হয় দেখার মত।
স্কুলের সব অনুষ্ঠান ই জাতি ধর্মকে অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দেয়। স্কুলের একটি ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব (বিদ্যালয় পরিচালিত ইংরেজি ভাষা-উতকর্ষ সংঘ)ও আছে। এবং প্রত্যেক বছর স্কুলের সামগ্রিক ফলাফল কৃতিত্বের দাবি রাখে।
উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী[সম্পাদনা]
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
- সুরেন্দ্রনাথ দাসগুপ্ত
- কৃষ্ণকান্ত সন্দিকৈ
- বিমল কৃষ্ণ মতিলাল
- অবনীন্দ্র নাথ ঠাকুর
- জগদীশ চন্দ্র ভট্টাচার্য
- বিষ্ণু দে
- নব কৃষ্ণ ভট্টাচার্য
- সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়
- হরপ্রসাদ শাস্ত্রী
- শিবনাথ শাস্ত্রী
পোশাক[সম্পাদনা]
সাধারনত ছাত্রদের সাদা জামা ও জলপাই সবুজ রঙের প্যান্ট পড়তে হয়, বুট জুতো অথবা কেদস জুতোর সাথে। তবে শারীরিক শিক্ষার ক্লাসে পড়তে হয় সাদা ট্রাউসার ও সাদা কেডস। শীতে জলপাই সবুজ সোয়েটার পড়তে হয়। তবে সর্বদাই স্কুল নামাঙ্কিত ব্যাচ পরে স্কুলে ঢুকতে হয়।