ভরতপুর প্রত্নক্ষেত্র

স্থানাঙ্ক: ২৩°২৪′৪৮″ উত্তর ৮৭°২৭′২৮″ পূর্ব / ২৩.৪১৩৪° উত্তর ৮৭.৪৫৭৮° পূর্ব / 23.4134; 87.4578
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ভরতপুর
ভরতপুর প্রত্নক্ষেত্র পশ্চিমবঙ্গ-এ অবস্থিত
ভরতপুর প্রত্নক্ষেত্র
পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান
অবস্থানভরতপুর, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
স্থানাঙ্ক২৩°২৪′৪৮″ উত্তর ৮৭°২৭′২৮″ পূর্ব / ২৩.৪১৩৪° উত্তর ৮৭.৪৫৭৮° পূর্ব / 23.4134; 87.4578
ধরনবসতি
ইতিহাস
প্রতিষ্ঠিত১৭৩৫–১৪১৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দ
সংস্কৃতিপ্রারম্ভিক কৃষি সংস্কৃতি
স্থান নোটসমূহ
খননের তারিখ১৯৭১–৭২, ১৯৭২–৭৩, ১৯৭৩–৭৪ ও ১৯৭৪–৭৫
অবস্থাধ্বংসাবশেষ
মালিকানাসরকারি
জনসাধারণের প্রবেশাধিকারহ্যাঁ

ভরতপুর প্রত্নক্ষেত্র হল প্রারম্ভিক কৃষি সংস্কৃতির স্থানগুলির মধ্যে একটি, যেটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমান সদর উত্তর মহকুমায় অবস্থিত। কার্বন ১৪ পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফল অনুসারে, বসতিটির নির্মাণ কাজ প্রায় ১৭৩৫–১৪১৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে শুরু হয়েছিল।[১]

ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের পূর্ব চক্র ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথভাবে ১৯৭১ সালে ভরতপুর গ্রামে প্রাগৈতিহাসিক বসতিটি আবিষ্কার করেছিল। ভরতপুরে ১৯৭১–৭২, ১৯৭২–৭৩, ১৯৭৩–৭৪ ও ১৯৭৪–৭৫ খ্রিস্টাব্দে খননকার্য পরিচালিত হয়েছিল।[২] খননকার্যের সময় কৃষ্ণ-লোহিত মৃৎপাত্র, টেরাকোটা বস্তু ও কাটা হাড়ের অস্ত্র আবিষ্কৃত হয়েছে।[১]

প্রত্নতত্ত্ব[সম্পাদনা]

ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের পূর্ব চক্র ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে ১৯৭০-এর দশকে জরিপ অন্বেষণ ও খননের একটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছিল। খননকার্যে মাধ্যমে এই বসতির আবিষ্কার হয়। ভরতপুরে প্রথম ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ এবং সর্বশেষ ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে খনন করা হয়েছিল, যা প্রত্নক্ষেত্রটিকে বাংলার প্রারম্ভিক গ্রামীণ কৃষি সংস্কৃতিকে কেন্দ্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। এই স্থানটি দামোদর নদের উত্তর তীরে পানাগড় থেকে ৬ কিলোমিটার (৩.৭ মাইল) দূরে অবস্থিত।

প্রত্নতাত্ত্বিকরা দাবি করেন যে বসতিটি পশ্চিমবঙ্গের প্রারম্ভিক গ্রামীণ কৃষি ও কৃষ্ণ-লোহিত মৃৎপাত্র সংস্কৃতির একটি কেন্দ্র ছিল।[১] ঢিবি থেকে প্রাপ্ত নমুনার কার্বন ১৪ পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী, ভরতপুর হল আধুনিক পশ্চিমবঙ্গে আবিষ্কৃত প্রারম্ভিক গ্রামীণ কৃষি সংস্কৃতির প্রত্নতাত্ত্বি বসতিগুলির মধ্যে একটি। প্রত্নক্ষেত্র থেকে ৩৭০০ বছরের বেশি প্রাচীন নমুনা পাওয়া গিয়েছে।[১] এখানে প্রারম্ভিক গ্রামীণ কৃষি সংস্কৃতি ১৭০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে বিদ্যমান ছিল,[১] যা প্রাক-হরপ্পা, হরপ্পা ও পরবর্তী-হরপ্পা সময়কালের সমসাময়িক ছিল।

খননকৃত ভরতপুর[সম্পাদনা]

খননকার্যে ভরতপুরে বৌদ্ধবিহার ও স্তূপ আবিষ্কৃত হয়েছে।[৩] এছাড়াও উদ্ধারকৃত নমুনা থেকে প্রারম্ভিক কৃষি সম্প্রদায়ের বসবাসের প্রমাণ মিলেছে।

বৌদ্ধ স্তূপ[সম্পাদনা]

স্তূপটি খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে নবম শতাব্দীর মধ্যে নির্মাণ করা হয়েছিল। এটি ইট ও পাথরের দ্বারা পঞ্চরথ শৈলীতে নির্মিত হয়েছিল, যার ভিতের ক্ষেত্রফল ১৩ বর্গ মিটার। বর্তমানে, স্তূপের ভিত কাঠামোটি টিকে আছে, যখন বাকি অংশ ধ্বংস প্রাপ্ত হয়েছে। স্তূপের ভিত কম্প্যাক্ট হলুদ বালুকাময় মাটির উপরে স্থাপিত আছে। নির্মাণে দুটি ভিন্ন আকারের ইট ব্যবহার করা হয়েছে, যেগুলির আকার হল যথাক্রমে ৩০ x ৮ x ৭ সেমি ও ৪৮ x ২১ x ৬ সেমি। গাঁথনির জন্য বালি ও চুনের মিশ্রণ ব্যবহার করা হয়েছিল। সম্মুখভাগগুলিকে কোরবেলড কোর্স, ছাঁচনির্মাণ ও চৈত্য গাবক্ষে পুষ্পশোভিত নকশার মোটিফ দ্বারা সুসজ্জিত। কর্বেলড কোর্সের উপরে স্তূপের দেয়ালে কুলুঙ্গি রয়েছে, যেগুলি মাটি থেকে মানুষের চোখের উচ্চতার সমতুল্য উচ্চতায় অবস্থিত। এই কুলুঙ্গিগুলি সম্ভবত বুদ্ধ মূর্তি দিয়ে সজ্জিত ছিল।[৪][৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Bandyopadhyay, KumKum; Chattopadhyay, Rupendra Kumar (১ জানুয়ারি ২০১৫)। "A Preliminary Study of the Worked Bone Industry in the Middle and Lower Ganga Valleys: From the Mesolithic to the Early Historic Periods"Studies in South Asian Heritage (essays in memory of M Harunur Rashid): 242–243। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০২৩ 
  2. "Excavations – Since Independence – West Bengal"asi.nic.in। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০২৩ 
  3. Singh, Shiv Sahay (২১ জানুয়ারি ২০২৩)। "Of a bygone era: excavations reveal Buddhist monastery complex at Bharatpur of Bengal"www.thehindu.com। কলকাতা: দ্য হিন্দু। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০২৩ 
  4. Majumdar, Somreeta (১ জানুয়ারি ২০২০)। "Archaeological Landscape of the Buddhist Stupa of Bharatpur"ArnavaVisva-Bharati University: 54–55। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০২৩ 
  5. Bhowmik, Rupam (৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩)। "Unearthing Bharatpur Stupa: A treasure trove of historical and cultural artifacts"Get Bengal। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০২৩