ইন্দুমতী গুহঠাকুরতা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইন্দুমতী গুহঠাকুরতা
জন্ম১৯০৫
মৃত্যু১৯৯১
পশ্চিমবঙ্গ
নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
 পাকিস্তান (১৯৬৪ সাল পর্যন্ত)
 ভারত
পেশারাজনীতিবিদ
পরিচিতির কারণব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্নিকন্যা
রাজনৈতিক দলভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
আন্দোলনব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন
অপরাধের অভিযোগআইন অমান্য আন্দোলন
অপরাধের শাস্তি১৯৩২
অপরাধীর অবস্থা৩ মাস
দাম্পত্য সঙ্গীকেদারনাথ গুহঠাকুরতা
পিতা-মাতা
  • রজনীনাথ ঘোষ (পিতা)
  • বসন্তকুমারী ঘোষ (মাতা)
আত্মীয়অমরেন্দ্রনাথ ঘোষ (ভাই)

ইন্দুমতী গুহঠাকুরতা (১৯০৫—১৯৯১) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের নারী বিপ্লবী।

জন্ম ও পরিবার[সম্পাদনা]

ইন্দুমতী গুহঠাকুরতা ১৯০৫ সালে বরিশালের গাভা গ্রামে ঘোষ দস্তিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু পিতৃভূমি ছিল বরিশালেই। তার পিতার নাম রজনীনাথ ঘোষ ও মাতার নাম বসন্তকুমারী ঘোষ।[১]

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

ইন্দুমতী পরিবার রাজনৈতিক পরিবার। অসহযোগ ও জাতীয় আন্দোলনে মা ও বৌদির সাথে যোগ দেন। ছোটবেলা থেকে ছাত্রাবস্থায় তিনি রাজনীতিমনস্ক হয়ে ওঠেন। ১৯৩০ সালের আইন অমান্য আন্দোলনে প্রকাশভাবে যোগদানের দেন। ১৯৩২ সালে আইন অমান্য আন্দোলনএ অংশ নেন এবং গ্রেপ্তার হন। তিনি সমাজ সেবা ও বিপ্লবী কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন।[১]

১৯৩৪ সালে নিজ বাড়িতে একটি বিদ্যালয় স্থাপন করেন। ১৯৩৫ সালে তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়। কাজের সুবিধার জন্য এবং কর্মীদের থাকা একটা স্থান রাখার জন্য ১৯৩৯ সালে তিনি তার পুত্রকন্যা ও কয়েকজন মহিলা কর্মীসহ ওই প্রতিষ্ঠানেই বসবাস করতে থাকেন। ১৯৩৯ সালে ঢাকার আশালতা সেনের সহকর্মী হয়ে মহিলা-সংগঠনের কাজে তিনি উত্তরবঙ্গের বহু স্থান ভ্রমণ করেন। ১৯৪০ সালে ভােলা থেকেই তিনি প্রাদেশিক কংগ্রেসের সভ্য নির্বাচিত হন; দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হন ১৯৪৬ সালে।

১৯৪১ সালে তিনি স্বর্গীয় নেতা মনােরঞ্জন গুহঠাকুরতার নামে ঐ প্রতিষ্ঠান-বাড়িতে। ‘মনােরঞ্জন শিল্পসদন’ স্থাপন করেন। সেখানে তাঁত, চরকা ও বিভিন্ন শিল্পকার্য পরিচালিত হত। রােগীদের সেবার জন্য একটি বিভাগও ছিল। এই সময় প্রতিষ্ঠান বাড়িতে স্থায়ীভাবে ১২ জন মহিলা ও পুরুষ কর্মী থাকতেন। তারা গঠনমূলক কাজ ও কংগ্রেসের কাজ করতেন। এটি কংগ্রেসের একটি প্রধান কর্মকেন্দ্রে পরিণত হয়। ‘মনােরঞ্জন শিল্পসদন’ প্রতিষ্ঠা দিবসে গান্ধীজী তার বাণীতে জানিয়েছিলেন– “ইন্দুমাতা, তােমার কর্মজীবন যেন পল্লীগ্রামেই সীমাবদ্ধ থাকে। তােমার কর্মপ্রচেষ্টাকে আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি।”

১৯৪২ সালের আন্দোলনে ইন্দুমতী গুহঠাকুরতা তিনজন মহিলা কর্মীসহ গ্রেপ্তার হন। প্রতিষ্ঠানের পুরুষ কর্মীরাও সকলেই গ্রেপ্তার হন। প্রতিষ্ঠানকে বে-আইনী ঘােষণা করা হয়। দশমাস কারাদণ্ড ভােগ করার পর ইন্দুমতী গুহঠাকুরতা ও যােগমায়া দত্তকে স্বগৃহে অন্তরীণ করা হয়। ১৯৪৫ সালের অক্টোবর মাসে অন্যরা মুক্তি পান।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

ইন্দুমতী গুহঠাকুরতা ১৯৫০ সালে তাঁকে কর্মভূমি থেকে চিরবিদায় গ্রহণ করে পশ্চিমবঙ্গে চলে আসতে হয়। ১৯৯১ সালের মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. কমলা দাশগুপ্ত (জানুয়ারি ২০১৫)। স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার নারী, অগ্নিযুগ গ্রন্থমালা ৯কলকাতা: র‍্যাডিক্যাল ইম্প্রেশন। পৃষ্ঠা ১৮৫-৮৭। আইএসবিএন 978-81-85459-82-0