আলজেরিয়া-ইন্দোনেশিয়া সম্পর্ক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আলজেরিয়া-ইন্দোনেশিয়া সম্পর্ক
মানচিত্র Algeria এবং Indonesia অবস্থান নির্দেশ করছে

আলজেরিয়া

ইন্দোনেশিয়া

আলজেরিয়া-ইন্দোনেশিয়া সম্পর্ক আলজেরিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া এর মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে। এই দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের মূল ভিত্তিই হল, ধর্ম এবং উপনিবেশবাদ বিরোধী মনোভাব। ইন্দোনেশিয়া ও আলজেরিয়া উভয় দেশেই ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষের সংখ্যা বেশি তথা মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্র। এর পাশাপাশি উভয় দেশের ইতিহাসেই উপনিবেশবাদ এর নিদর্শন রয়েছে।[১] আলজেরিয়া ১৯৬২ সালে স্বাধীনতা লাভ করে। আলজেরিয়া, তাদের স্বাধীনতা লাভের পিছে ইন্দোনেশিয়ার সমর্থনের ঘটনাকে স্মরণ করে। দুই দেশই সমন্বয় বৃদ্ধি এবং সম্পর্ক শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে একমত।[২] ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় আলজেরিয়ার একটি দূতাবাস রয়েছে। অবশ্য এই দূতাবাসের নিকটেই, সিঙ্গাপুর এবং ব্রুনাই সম্পর্কিত দায়িত্ব রয়েছে। এর পাশাপাশি আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্স-এ ইন্দোনেশিয়ার একটি দূতাবাস রয়েছে। উভয় দেশই জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম), গ্রুপ অব ৭৭ এবং অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি) এর সদস্য।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

আলজেরিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামে ইন্দোনেশিয়া সক্রিয়ভাবে সমর্থন জুগিয়েছিল। এর জন্য ইন্দোনেশিয়া কমিটি অব সাপোর্টিং ইন্ডিপেন্ডেন্স স্ট্রাগল অব নর্থ আফ্রিকান কান্ট্রিজ নামে একটি কমিটি গঠন করে যার প্রধান ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ নাতসির। এই কমিটি গঠন করা হয় ১৯৫১ সালে।[১]

১৯৫৫ সালে ইন্দোনেশিয়া বান্দুং -এ এশিয়ান-আফ্রিকান সম্মেলন এর আয়োজন করে। এই সম্মেলনে ইউরোপীয় উপনিবেশ থেকে এশীয় এবং আফ্রিকান দেশগুলোকে মুক্ত করার আহ্বান জানানো হয় এবং এর পাশাপাশি দেশগুলোর স্বাধীনতার দাবি জানানো হয়। সেই সময় আলজেরিয়া ফ্রান্স এর একটি উপনিবেশ রাষ্ট্র ছিল। ইন্দোনেশিয়া, আলজেরিয়ার প্রতিনিধিদের সেই বান্দুং সম্মেলনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানায়।

এই সম্মেলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আলজেরিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রাম আরও উজ্জীবিত হয়। সর্বশেষে ১৯৬২ সালের ৫ জানুয়ারী আলজেরিয়া ফ্রান্স এর কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে।[৩] অতি শীঘ্রই, ইন্দোনেশিয়া আলজেরিয়ার এই স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দান করে এবং দ্রুতই আলজেরিয়াতে নিজেদের দূতাবাস প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৬৩ সালে ইন্দোনেশিয়া আলজেরিয়াতে তাদের দূতাবাস প্রতিষ্ঠা করে। ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাস ছিল, আলজেরিয়াতে প্রথমেই প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন দেশগুলোর দূতাবাসের মধ্যে অন্যতম।[১]

ব্যবসা ও বাণিজ্য[সম্পাদনা]

আফ্রিকা মহাদেশের দেশগুলোর মাঝে, আলজেরিয়া হল, ইন্দোনেশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার। এক্ষেত্রে, দক্ষিণ আফ্রিকা, নাইজেরিয়া এবং মিশর হল প্রথম ৩ টি দেশ। ২০১১ সালে, ইন্দোনেশিয়া এবং আলজেরিয়া এর মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৪৮৯.০৫ মিলিয়ন (৪৮.৯০ কোটি) মার্কিন ডলারের। এউ পরিমাণ ছিল, আফ্রিকায় ইন্দোনেশিয়ার মোট বাণিজ্যের ৫.০৬ শতাংশ।[৪] আলজেরিয়ায়, ইন্দোনেশিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্যগুলো হল, পাম তেল, কফি, চিনি, টেক্সটাইল আঁশ, শুঁটকি মাছ এবং কাঠ[২] অপরদিকে ইন্দনেসিয়ায় আলজেরিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্য হল অপরিশোধিত তেল[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Bilateral Cooperation - Algeria"। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইন্দোনেশিয়া। ১৮ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৩ 
  2. tas (জুন ২৮, ২০১২)। "Algeria to strengthen relations with Indonesia"। দ্যা জাকার্তা পোস্ট। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৩ 
  3. মুনওয়ার সামান মাকিয়ানি (জুন ৩, ২০১৩)। "Algeria to commemorate Afro-Asian Conference in Bandung"। আন্ত্রা নিউজ। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৩ 
  4. "Exploring Africa, Mainstreaming Indonesia's Economic Diplomacy in Non-traditional Market"। Centre for Policy Analysis and Development on Asia-Pacific and African Regions, Policy Analysis and Development Agency। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইন্দোনেশিয়া: 80। ২০১২। 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]