বৈরাগীর ভিটা
বৈরাগীর ভিটা | |
---|---|
দেশ | বাংলাদেশ |
স্থান | শিবগঞ্জ, বগুড়া |
সময়কাল | খ্রিস্টীয় ৮ম থেকে ১১শ শতক |
বৈরাগীর ভিটা বাংলাদেশের বৃহত্তর বগুড়া তে অবস্থিত একটি প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। এটি করতোয়া নদীর বাঁকে মহাস্থান দুর্গনগরীর দক্ষিণ দিকে অবস্থিত। ১৯২৮-২৯ সালে খনন করা বৈরাগীর ভিটায় দুটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশ-ফ্রান্স যৌথ উদ্যোগে পুনরায় খনন কাজ পরিচালনা করে আসছে।[১]
নামকরণ[সম্পাদনা]
এই স্থানটি একটি পুরাতন রাজাবাড়ি ছিল বলে ধারণা করা হয়। অনুমান করা হয় রাজা কর্তৃক মুনি, ঋষি বা বৈরাগীর সেবা করা হত বলে স্থানটি নাম বৈরাগীর ভিটা নামে পরিচিত।
ইতিহাস[সম্পাদনা]
মহাস্থানগড় দুর্গ নগরীর প্রাচীরের দক্ষিণে অবস্থিত বৈরাগীর ভিটায় প্রত্নতাত্ত্বিক খনন চালিয়ে পাল আমলের প্রাথমিক ও শেষ যুগের দুটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে। মন্দির দুটির উত্তরে উন্মুক্ত প্রাঙ্গনে আরও কিছু স্থাপত্যকর্ম পাওয়া যায়।[২] প্রাথমিক পাল যুগের মন্দিরটির ভিত্তি প্রাচীর উত্তর দিকে ২৯.৮৭ মিটার ও পূর্ব দিকে ১২.৮ মিটার। প্রাচীরটি মোল্ডেড ব্যান্ড দ্বারা অলঙ্কৃত। এর দক্ষিণ দিকে অপর মন্দিরটি অবস্থিত। মন্দিরটিকে উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রবহমান একটি নালা বিভক্ত করেছে। নালাটির একটি অংশ ইট দিয়ে নির্মিত ও আরেকটি অংশ প্রাথমিক গুপ্ত আমলের কালো কষ্টি পাথর দিয়ে নির্মিত। দ্বিতীয় পাল যুগের মন্দিরটি আগেরটি অপেক্ষা বৃহত্তর এবং আয়তাকৃতির (৩৩.৮৩ মি × ১৩.৩৭ মি)। ধ্বংসাবশেষ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার জন্য এর স্থাপত্যশৈলী স্পষ্ট নয়। মন্দিরের পূর্ব দিকে একটি মঞ্চের ধ্বংসাবশেষ আবিস্কৃত হয়, যাতে ২৩টি কামরার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এছাড়া এই স্থানে লুকিয়ে থাকা গভীর গর্তে পাল যুগের কাঠামো ও তার পূর্ববর্তী গুপ্ত যুগের ধ্বংসাবশেষের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।[২] ২০১৪ সালে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন করে ২১০০ বছর আগের তিনটি পাতকুয়া আবিষ্কার করা হয়।[৩]
প্রাপ্ত নিদর্শন[সম্পাদনা]
এ প্রত্নস্থলে আবিস্কৃত অন্যান্য প্রত্নবস্তুর মধ্যে মাছ ধরার জালে ব্যবহারের জন্য তৈরি পোড়া মাটির বল, মাটির বদনা, ভাঙা পাত্রের অংশবিশেষ, গৃহস্থালীর কাজে ব্যবহার্য কিছু সামগ্রী, ফুলাংকিত ও পিরামিড আকারের নকশা করা ইট উল্লেখযোগ্য।[১][৪]
পরিচালনা[সম্পাদনা]
এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এর তালিকাভুক্ত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান হওয়ায় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এর রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে।[৫]
চিত্রশালা[সম্পাদনা]
আরও দেখুন[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ ক খ "বৈরাগীর ভিটায় চলছে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন"। আমাদের সময়। ৭ নভেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ আইয়ুব খান। "বৈরাগীর ভিটা"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ "মহাস্থানগড়ে ২ হাজার বছর আগের পাতকুয়ার সন্ধান"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। ১৯ নভেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ "মহাস্থানে মিললো গুপ্ত আমলের নানা প্রত্ন নিদর্শন"। জাগো নিউজ। ১ ডিসেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ "বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব ও এর কার্যক্রম"। বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০১৬।