সুলতানপুর জেলা
সুলতানপুর জেলা | |
---|---|
উত্তরপ্রদেশের জেলা | |
উত্তরপ্রদেশে সুলতানপুরের অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | উত্তরপ্রদেশ |
প্রশাসনিক বিভাগ | অযোধ্যা বিভাগ |
সদরদপ্তর | সুলতানপুর |
সরকার | |
• লোকসভা কেন্দ্র | সুলতানপুর |
আয়তন | |
• মোট | ২,৬৭২.৮৯ বর্গকিমি (১,০৩২.০১ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ২২,৪৯,০৩৬ |
• জনঘনত্ব | ৮৪০/বর্গকিমি (২,২০০/বর্গমাইল) |
স্থানাঙ্ক | ২৬°১৫′ উত্তর ৮২°০০′ পূর্ব / ২৬.২৫০° উত্তর ৮২.০০০° পূর্ব |
ওয়েবসাইট | [sultanpur |
সুলতানপুর জেলা হল ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের একটি জেলা। এই জেলাটি উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা বিভাগের একটি অংশ। জেলার প্রশাসনিক সদর দপ্তর হল সুলতানপুর শহর। সুলতানপুর জেলার মোট আয়তন ২৬৭২.৮৯ বর্গকিলোমিটার।[১] সুলতানপুর জেলার জনসংখ্যা ২,২৪৯,০৩৬ জন।[২]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]হিসামুদ্দিনই প্রথম মুসলমান যিনি প্রথমবার সুলতানপুরে আসেন এবং এখান থেকেই কুশভবনপুরে মুসলিম আধিপত্য শুরু হয়।[৩] খিলজি বংশের(১২৯০-১৩২০) শাসকরা যখন ১৪ শতকে এখানে ব্যবসা করতে আসেন, তখন তারা স্থানীয় শাসকদের সাথে যুদ্ধ করেন। এতে খিলজি বংশের সুলতানরা বিজয়ী হন এবং তারা কুশভবনপুরের নাম পরিবর্তন করে সুলতানপুর রাখেন। সুলতানপুরের পুরাতন নাম ছিল কুশভবনপুর।[৪]
১২৪৮ সালে দিল্লির সম্রাট পৃথ্বীরাজ চৌহানের ভাই চাহিরদেবের বংশধর বারিয়ার শাহ এসেছিলেন। জামুওয়া গ্রামে নিজের দুর্গ গড়ে তোলেন। পরবর্তী কালে তারা গোমতী নদীর উত্তরাংশ কেড়ে নেয় অন্যান্য ক্ষত্রিয় পরিবারের কাছ থেকে। ১৩৬৪ খ্রিস্টাব্দে মালিক সারওয়ার খাজা জৌনপুর শার্কি সুলতানের ভিত্তি স্থাপনের পাথর ও শাহগড়ে শার্কির অনেক মুদ্রা খুঁজে পেয়েছিলেন। এ থেকে স্পষ্ট যে সুলতানপুর শার্কি শাসকদের রাজত্ব ছিল।[৪]
শের শাহ সুরি যখন ১৫৩৯-৪০ সালে হুমায়ুনকে পরাজিত করেছিলেন, তখন নরওয়ালগড়ের (বর্তমানে হাসানপুর) রাজা ত্রিলোকচাঁদ ছিলেন বারিয়ার শাহের বংশধর যিনি বাবরের সময়ে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন এবং তার নাম ছিল তাতার খান। আকবরের সময়ে সুলতানপুরকে ছোট ছোট পার্টে বিভক্ত করা হয়েছিল।[৪]
১৮৫৭ সালে ৯ই জুন প্রথম ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রাম সুলতানপুরের তৎকালীন জেলা প্রশাসককে হত্যা করে স্বাধীন করা হয়েছিল। সংগ্রামকে দমন করতে ইংরেজ সেনাবাহিনী চান্দার কোহিরিপুরে ব্রিটিশদের সাথে প্রচণ্ড লড়াই করেছিল।
সকল আন্দোলনে মুক্তিযোদ্ধারা যে স্বাধীনতা ও বীরত্ব দেখিয়েছেন তা ঐতিহাসিক। কৃষক নেতা বাবা রাম চন্দ্র এবং বাবা রাম লাল এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য, তাদের আত্মত্যাগের বর্ণনা পন্ডিত জওহরলাল নেহরু তার আত্মজীবনীতে এই কথা লিখে গেছেন।[৪]
ভৌগোলিক অঞ্চল
[সম্পাদনা]সুলতানপুর জেলার উত্তর সীমান্তে ফৈজাবাদ ও আম্বেদকর নগর অবস্থিত, উত্তর-পশ্চিমে বারাবাঁকি, পূর্বে জৌনপুর ও আজমগড়, পশ্চিমে আমেঠি এবং দক্ষিণে প্রতাপগড় জেলা। গোমতী নদী এই জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলাটি দুটি ভাগে বিভক্ত। এই জেলার উত্তর-পশ্চিম দিক দিয়ে গোমতী নদী প্রবেশ করেছে এবং দক্ষিণ-পূর্বে জৌনপুরের কাছে শেষ হয়েছে। এ ছাড়াও গর্ভিয়া নালা, মাজুই নালা, জামুরিয়া নালা ইত্যাদি খাল রয়েছে এবং কারখারভা, শোভা মহনা হ্রদ রয়েছে। এই সুলতানপুর জেলায় পাঁচটি তহসিল - সদর,বলদিরাজ, জয়সিংহপুর, কাদিপুর এবং লুম্বুয়া।[৫]
জনসংখ্যা
[সম্পাদনা]২০১১ ভারতের জনগণনা অনুযায়ী সুলতানপুর জেলার জনসংখ্যা ছিলো ২,২৪৯,০৩৬ জন। জেলার জনসংখ্যার ঘনত্ব ৮৫৬ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (৪,৪৩৬ জন/বর্গমাইল)। জেলায় লিঙ্গ অনুপাত হলো ১০০০ জন পুরুষের পরিবর্তে ৯৮৩ জন নারী। জেলার সাক্ষরতার হার ৬৯.৩%। জনসংখ্যার ৪৮১,৭৩৫ (২১.৪২%) তফসিলি জাতি। এই জেলায় হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ।[৬]
হিন্দি হল জেলার সরকারি ভাষা এবং উর্দু অতিরিক্ত সরকারি ভাষা হিসাবে ব্যবহার করা হয়। জেলার মধ্যে কথ্য ভাষাগুলির মধ্যে আওধি উপভাষা যা মূলত আওধ অঞ্চলে ৩৮ মিলিয়নেরও বেশি লোক কথা বলে।[৭]
ভারতের ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, জেলার জনসংখ্যার ৭০.০৩% হিন্দি, ২৫.৩৮% আওয়াধি এবং ৪.৩৫% উর্দু তাদের প্রথম ভাষা হিসাবে কথা বলে।[৮]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "District Sultanpur, Government of Uttar Pradesh | The Land of Maharaja Kush | India" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৮ মার্চ ২০২১।
- ↑ "District Sultanpur Digital India"। sultanpur.nic.in। সংগ্রহের তারিখ ৩ এপ্রিল ২০২২।
- ↑ Nevill, H.R. (১৯০৩)। Sultanpur: A Gazetteer, Being Volume XLVI Of The District Gazetteers Of The United Provinces Of Agra And Oudh। Allahabad: Government Press। পৃষ্ঠা 76, 107–10, 134–8। সংগ্রহের তারিখ ২৩ নভেম্বর ২০২১।
- ↑ ক খ গ ঘ "History of Sultanpur from Kushbhavanpur to Sultanpur Story - JobInfoGuru.in" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-১৭।
- ↑ "Demography | District Sultanpur, Government of Uttar Pradesh | India" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-১৭।
- ↑ "District Census Handbook: Sultanpur" (পিডিএফ)। censusindia.gov.in। Registrar General and Census Commissioner of India। ২০১১।
- ↑ M. Paul Lewis, সম্পাদক (২০০৯)। "Awadhi: A language of India"। Ethnologue: Languages of the World (16th সংস্করণ)। Dallas, Texas: SIL International। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১১।
- ↑ "Table C-16 Population by Mother Tongue: Uttar Pradesh"। www.censusindia.gov.in। Registrar General and Census Commissioner of India।